somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মঙ্গল গ্রহে কিউরিসিটি রোভার: নাসার নয়, মানবজাতীর জয়!

০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্রিকেট খেলায় মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। ৬ বলে ৬ রান। একটা বলও এদিক ওদিক করা যাবে না। আর যদি বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয় অস্ট্রেলিয়া অথবা দক্ষিন আফ্রিকার মতো দল আর সেটা যদি হয় ফাইনাল খেলা, তাহলে উত্তেজনা বলার অপেক্ষা রাখে না!

এ পর্যন্ত দুনিয়াবাসী ৩৯ বার চেষ্টা করেছে মঙ্গল গ্রহ জয়ের, ১৫ বার সফলতা এসেছে বাকী ২৪টা ব্যার্থতায় পর্যবসিত। এর মধ্যে খোদ আমেরিকা ১৮ বার চেষ্টা করে ১৩ বার সফলতা পায়। এটা ছিলো নাসার ১৯ তম পদক্ষেপ আর দুনিয়াবাসীর ৪০ তম।

বাজেট:

পুরো বিশ্বই কম বেশী ইকোনমিক রিসেশনে ক্ষতিগ্রস্হ। খোদ আমেরিকাতে ব হু শিক্ষিত মানুষ বেকার, যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তী অভিশাপ আমেরিকাকে ভালোই গ্রাস করেছে। এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয় ইউরোপও। ইউরো বাচে মারে সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ন একসময়ের ধনী দেশ গ্রীসের মানুষ আজ ঘরহারা, স্পেনে ব হু মানুষ কর্মহীনতার কারনে পথে বসে আছে!

এসব সমস্যার কারনেই ওবামা প্রশাসন ২০১০ সাল থেকেই মহাকাশ গবেষনার জন্য অর্থবরাদ্দ কমিয়ে দেয়। ভীন গ্রহবাসী খুজবার জন্য সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট SETI একসময় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদিও পরে পৃথিবীর বড় বড় ধন কুবের যারা বিশ্বাস করেন বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার উপর তাদের অনুদানে ফের এটি চালু হয়। একসময় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ওবামা প্রশাসন ২০১৩ সালে নাসার এই মঙ্গল জয়ের জন্য অর্থে অনুদান ৫৮৭ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ৩৬০ মিলিয়নে করে আনা।

"কিউরিসিটি রোভার" যাকে বলা হয় মঙ্গলের সায়েন্স ল্যাবরেটরী এটির পিছনে নাসার প্রায় এক দশকের মতো পরিশ্রম এবং ২.৫ বিলিয়ন ডলারের উপরে ব্যায় হয়েছে। যদিও এটা বলা হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের জন্য এটি সবচেয়ে অত্যাধুনিক ল্যাবরোটরী যার তুলনা হয় শুধু এটির সাথেই।

২০০৪ সালে জর্জ ডব্লু বুশ যখন নাসার মঙ্গল যাত্রার জন্য অর্থ ব্যায় অনুমোদন করলেন তখন সিনেটর লিবারম্যান বলেছিলেন এই দুর্দিনে মঙ্গল গ্রহের পিছে বিলিয়ন ডলার খরচ না করে মার্কিনীদের স্বাস্হ্যখাতে ব্যায় করা হোক।

তখন ছিলো অনেক শন্কা, যদি সফল না হয় তাহলে পুরো টাকা জলে যাবে। কিন্তু সেই সমালোচকদের মুখে কুলুপ এটে বিশ্ববাসী তাকিয়ে আছে কিউরিসিটি রোভার কি আবিস্কার করে আমাদের জন্য!

কিউরিসিটি রোভার

এর লক্ষ্য মাত্র ৪টা

১) মঙ্গলে আদৌ কি জীবনউপযোগী পরিবেশ বিরাজমান ছিলো?
২) মঙ্গলের বর্তমান আবহাওয়া, জলবায়ু, পরিবেশ কেমন?
৩) মঙ্গলের ভৌগলিক অবস্হা কিরকম?
৪) ভবিষ্যতে মানুষের মঙ্গল যাত্রা!

এই ৪ টা লক্ষে কাজ করার জন্য এর ছয়টি প্রধান কাজ:

১) মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশে এবং পৃষ্ঠদেশের কাছাকাছি খনিজের পরিমান নির্ধারন
২) জীবন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক রাসায়নিক উপাদানের ব্লকের খোজ করা
৩) বিবর্তিত পাথর এবং মাটির গঠনপ্রক্রিয়া বোধগম্য করা
৪) মঙ্গলগ্রহের ৪ বিলিয়ন বছরের জলবায়ুর পরিবেশ কিভাবে বিবর্তিত হলো সেটা নির্ধারন করা।
৫) পানি এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের বর্তমান অবস্হা, কিভাবে আছে এবং তার জীবনচক্র অনুধাবন করা
৬) পৃষ্ঠাদেশে পরিবর্ধিত মাত্রার তেজস্ক্রিয়তার কি অবস্হা সেটা দেখা যেমন আন্তঃ নাক্ষত্রিক তেজস্ক্রিয়তা, কসমিক তেজস্ক্রিয়তা, সৌর প্রোটন বিচ্ছুরন এবং সেকন্ডারী নিউট্রনের খোজ।

টেকনিক্যাল খুটিনাটি:

আয়তন:

৯.৮ ফুট দৈর্ঘ্যের ৯০০ কেজি ওজনের রোভরটিতে প্রায় ৮০ কেজি ওজনের সায়েন্টিফিক এক্সপেরিমেন্টের সরন্জ্ঞাম আছে।

গতি:

এর চলার পথে ৩০ ইন্ঞ্চি উচ্চতার যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে পারবে। সর্বোচ্চ গতি ৩০০ ফিট পার ঘন্টা সমতল পাহাড়ী এলাকায় সামনে এবং পিছনে। এর নেভিগেশন স্বয়ংক্রিয় এবং প্রতিকূল পরিস্হিতিতে এর চলা ক্ষমতা ৯৮ ফিট পার ঘন্টা।

পাওয়ার সোর্স:

কিউরিসিটি রোভারকে শক্তি সরবরাহ করা হচ্ছে রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেক্ট্রিক জেনারেটর সংক্ষেপে আরটিজি। আরটিজি হলো একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ যখন ক্ষয় হতে থাকে তখন তাপের সৃষ্টি হয়। এই তাপমাত্রা থার্মোকাপলারের সাহায্যে এর তাপমাত্রা পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে বিদ্যুতের সৃষ্টি করা হয় (সীবেক এফেক্ট)।
এখানে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হিসবে প্লুটোনিয়াম-২৩৮ ব্যাবহার করা হয়েছে।এর ফলে দিনে রাতে সমান ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে এবং বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা খরচ করে বাকী তাপমাত্রা পুরো রোভার সিস্টেমের অন্যান্য কাজে ব্যাবহার করা হবে। বোয়িং কোম্পানীর সরবরাহকৃত এই আরটিজিকে আরো একটু উন্নত করে নাম দেয়া হয়েছে মাল্টি মিশন আরটিজি যার ক্ষমতা ২০০০ ওয়াটের তাপ থেকে ১২৫ ওয়াট বিদ্যুৎ উটপাদন করতে পারবে। যেহেতু প্লুটোনিয়াম ব্যাব হার করা হয়েছে তাই এর এই ১২৫ ওয়াটের বিদ্যৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ বছর পর্যন্ত অক্ষুন্ন থাকবে এর পর এর উৎপাদন ক্ষমতা ১০০ ওয়াটে নেমে আসবে। প্রতিদিন এর বিদ্যূৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২.৫ কিলোওয়াট পার ঘন্টা যেটা এর আগে ব্যাবহ্রত সোলার প্যানেলের ক্ষমতার চাইতে বেশী (.৬ কিলোওয়াট প্রতি ঘন্টা)

কম্পিউটার:

দুটো কম্পিউটার একই মানের ব্যাব হার করা হয়েছে যার নাম রোভার কম্পিউট এলিমেন্ট। এই কম্পিউটারে RAD750 প্রসেসর ব্যাব হার করা হয়েছে যার প্রসেসর স্পিড ১১০ থেকে ২২০ মেগাহার্জের যার ক্ষমতা ৪০০ মিপস।২৫৬কিলোবাইটের ইইপিরোম আর ২৫৬ মেগাবাইটের ডির্যা০ম যুক্ত করা হয়েছে। এই কম্পিউটার উচ্চরেডিয়েশনে কাজ করবার জন্য উপযুক্ত। এর ইনার্শিয়াল মিজারম্যান্ট ইউনিট এর অবস্হান জানায়।
যোগাযোগ: এই রোভার সি্স্টেম পৃথিবীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্হাপন করতে পারে এবং এর সাথে পৃথিবীর যোগাযোগের সময়ের পার্থক্য হলো ১৩ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। এর অরবিটার যেটা মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরছে সেটার সাথেও যোগযাগের ব্যাবস্হা রয়েছে


যেখানে নেমেছে:

এওলিস মনস পর্বতের পার্শ্বস্হ নীচু সমতল গেল গিরীখাতে নেমেছে এই ৬ চাকার রোভার। এর সাথে লেগে থাকা রকার বগী সাসপেনশনের কারনে এই পর্বতের ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারবে। ধারনা করা হয় এই পাহাড়ের বয়স ৩-৩.৬ বিলিয়ন বৎসর।

যন্ত্রপাতী:

সায়েন্টিফিক অনুসন্ধান কাজে ব্যব হ্রত ১০ টি যন্ত্র এর মধ্যে আছে!

১) মেস্টকেম:

২ মেগাপিক্সেলের রঙ্গিন ক্যামেরা যেটা বায়ে এবং ডানে নজর রাখতে পারবে এবং ছবি থেকে শুরু করে ভিডিও এবং ৩ডি ইমেজ পর্যন্ত নিতে পারবে!

২) কেম ক্যাম:

কেমিস্ট্রি ক্যামেরার সাথে আছে পাথর বাষ্পীকরন লেজার আর টেলিস্কোপ এক সাথে যেটা ২৩ ফুটের যেকোনোকিছুকে টার্গেট করতে পারবে, জ্বালাতে পারবে সাথে একে পর্যবেক্ষন, নীরিক্ষন করতে পারবে। যখন পাথরটি জ্বলতে থাকবে তখন এর মধ্যে হতে উদ্ভূত আলো থেকে নির্নয় করতে পারবে এর মধ্যে কি কি উপাদান বিদ্যমান!

৩) আলফা পার্টিক্যাল এক্সরে স্পেকট্রোমিটার:

এটা একটা রোবাটিক হাত যেটা পাথর এবং মাটিতে থাকা রাসায়নিক উপাদান সনাক্ত করতে পারবে!

৪) মার্স হ্যান্ড লেন্স ইমেজার:

রোবোটিক হাতের শেষ প্রান্তে থাকা একটা রঙ্গিন ক্যামেরা যার কাজ হলো মাটির দিকে খুব কাছ থেকে দৃষ্টি রাখা।

৫) কেমিন হলো কেমিস্ট্রি হলো খনিজ খোজবার জন্য ব্যাব হ্রত রসায়ন। এর কাজ হলো গুড়ো করা পাথর আর মাটির উপর এক্সরে করে নীরিক্ষা করা

৬) স্যাম হলো স্যাম্পল এনালাইসিস এট মার্স যার কাজ হলো কার্বনের যৌগ খুজে বের করা যেগুলো মূলত জীবন সৃষ্টির জন্য মৌলিক রাসায়নিক ব্লক। এগুলো কি অবস্হায় আছে এগুলো কিভাবে বিবর্তিত হচ্ছে এসবের সবকিছু নীরিক্ষা করাই এর কাজ

৭) রোভার এনভায়রেনম্যান্ট মনিটোরিং স্টেষনের কাজ হলো প্রতিদিন এবং প্রতিটা ঋতুর পরিবর্তন রেকর্ড করা।

৮) রেডিয়েশন এসেসম্যান্ট ডিটেক্টরের কাজ হলো সূর্য্য থেকে আগত উচ্চ শক্তির পার্টিক্যাল এবং সাব এটমিক পার্টিক্যালের তেজস্ক্রিয়তার পরিমান নির্ধারন করা যার ফলে ভবিষ্যতে মানুষের জন্য মঙ্গল যাত্রায় কোনো ক্ষতি না করে।

৯) ডাইনামিক আলবেডো অব নিউট্রন হলো রোভারটি যেখানে নেমেছে সেই পৃষ্ঠের ২০ ইন্ঞ্চি নীচে পানির অস্তিত্ব আছে কিনা সেটা নিরূপন করা!

১০) মার্স ডিসেন্ট ইমেজার:

এর কাজ হলো এর অবতরনের কিছু আগের সময় থেকে ধারন কৃত পুরো দৃশ্যটি ভিডিও আকারে রেকর্ড করা। কিছু ছবি পাঠাতে প্রথম প্রথম কয়েকদিন সময় লাগতে পারে সে হিসাবে একটা ভিডিও পাঠানোর প্রক্রিয়া একটু দীর্ঘ ব্যাপার। তাই এটা পরের যেকোনো সময়ের জন্য রেখে দেয়া হবে!


কিভাবে নামছে রোভার:



৩৫৪ মিলিয়ন মাইল অতিক্রম করে যে মহাকাশ যানে করে রোভার মঙ্গল গ্রহের বায়ুমন্ডলে পৌছানোর ১০ মিনিট আগে তখন ঐ রোভার বহনকারী ক্যাপসুলটা ক্রুজ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। মঙ্গলে ঢুকবার মুহুর্ত থেকেই এর তাপমাত্রা নিরোধক মেডলি তাপমাত্রা মাপতে শুরু করবে। বায়ুমন্ডলে ঢুকবার সাথে সাথে ঘর্ষনের কারনে প্রচুর তাপের সৃষ্টি যেটা মূলত ধারনা করা হয়েছে পৃথিবীতে ঢুকলে যতটা গরম হয় তার চেয়ে দ্বিগুন হবে।

এর পরের স্টেজে যখন ক্রুজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ৫.৮ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে নামতে থাকবে তখন ক্যাপসুলটি ৭৫ কিলোগ্রাম বিশিষ্ট দুটি ধাতব ট্যাংস্ট্যান নিক্ষেপ করবে যাতে করে যানটি তার ভর কেন্দ্র বরাবর নীচের দিকে ধাবিত হতে থাকে। এর সাথে থাকা দুটো ছোট থ্রাস্টারের মাধ্যমে এর ল্যান্ডিং একুরেসী কয়েকশ মাইল থেকে মাত্র ১২ মাইলের মধ্যে নিয়ে আসে। এর ফলে রোভারটি যেন তার অভীষ্ট স্হানে ল্যান্ড করতে পারে সেটা নিয়ন্ত্রনে আনা!

মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশের ৮০ কিলোমিটার উপরে থাকবার সময় এর ইডিএল মানে প্রবেশ, ধাবিত হওয়া এবং ল্যান্ডিং এর লাইনে আসা। এসময় বায়ুর ঝাপটা যানটির উপরের অংশে উপযুপরী আলোড়নের সৃষ্টি করে। এই বন্য আন্দোলনকে বশে আনবার জন্য যানটির পিছনের শেলে থাকা ছোট থ্রাস্টার দিয়ে এর ল্যান্ডিং এর কৌনিক অবস্হান আর দিক নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়।পুরো ল্যান্ডিংএর ধরন ইংরেজী অক্ষর S শেপ করা হয় ফলে এর গতি ১৩২০০ মাইল প্রতি ঘন্টা থেকে ১০০০ মাইল প্রতি ঘন্টায় নেমে আসে।

বায়ুমন্ডলে ঢুকবার ৮০ সেকেন্ডের পর এর তাপমাত্রা হয়ে যায় ২১০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড, ইন্জ্ঞিনিয়াররা তাই রোভার শেলের প্রকোষ্ঠটা বিশেষ আবরনে জড়ায় রাখে ফলে আভ্যান্তরীন তাপমাত্রা ০ থেকে ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে।

গতি কমে যাওয়ার ফলে এর বাইরের জ্বলুনি বা উচ্চতাপমাত্রা কমতে থাকে এর ফলে এর গতিশক্তি বায়ুমন্ডলে ঢুকবার সময় যতটা ছিলো তার ৯০ শতাংশ কমে আসে!

ক্যাপসুলের আকার এবং ভর এমন ভাবে করা যে এই সময়টায় যানটির একদিকে বাতাসের চাপ কম থাকে। যদিও যানটি হাইপারসনিক স্পিডে চলছে তবুও এরোপ্লেনের ডানার মতো এর দিক নিয়ন্ত্রন কিছুটা করা যায়। এই গতিতে আশেপাশের বায়ুমন্ডলের কনাগুলো ভেঙ্গে যায় আর যানের আশেপাশে উত্তপ্ত প্লাজমার সৃষ্টি করে। শকওয়েভ বাতাসের চাপ এবং ঘনত্ব দুটোই অনেকখানি কমিয়ে ফেলে।

পৃষ্ঠদেশের ৭ মাইল উপরে এবং প্রায় ২৫৫ সেকেন্ড পর (বায়ুমন্ডলে প্রবেশের) এর প্যারাস্যুট খুলে যায়।৯০০ মাইল প্রতি ঘন্টায় পড়তে থাকা যানটি হঠাৎ করে প্যারাস্যুট খূললে ঝাকি লাগবার কথা। কিন্তু এটা এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে সে এর গতিশক্তির মাত্র ৯% কমিয়ে ফেলে।

পতনস্হলের ৫ মাইল উপরে থাকতে এর গতিবেগ হয় ৩১০ মাইল প্রতি ঘন্টা এবং এর তাপনিরোধক ঢাকনা খুলে যায় নীচ থেকে।

এই পর্যায়ে ক্যামেরা ছবি তুলতে থাকে এবং এ থেকে রাডার সিস্টেম ৬ টা রাডার বীমের মাধ্যমে ডাটা সংগ্রহ করতে থাকে পৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতায় কত গতি আর এর অবস্হানের ক্যালকুলেশন শুরু করে দেয় স্বয়ংক্রিয় ভাবে। ততক্ষনে এটি প্রায় ৬৫০০ ফিটের কাছাকাছি এসে পড়বে।প্রকৌশলীরা ১.২ মাইলের ভিতর আসার সাথে সাথে রাডার লক করার সিস্টেম রেখে দেন স্বয়ংক্রয় ভাবে যাতে করে রোভারে কখন পাওয়ার চালু হবে সেটা নির্ধারন করতে পারে। রাডারের এই কাজটি মাত্র ২ মিনিট চলবে যদিও এটা টেস্ট করতে দুনিয়াতে সবাইকে ১০০ ঘন্টার উপর ব্যায় করতে হয় মোজেভ আর ডেথভ্যালীতে হেলিকপ্টার উড়িয়ে।

তাপনিরোধক শিল্ডের খুলে যাওয়ার ৮০ সেকেন্ড পর এর পিছনের শেলটা তখনও যুক্ত থাকে সার সাথে একটা প্যারাস্যুট লাগানো। এবার এটাকে খুলে ফেলার সময় হয় আর রোভারটিকে মুক্ত পতনে ছেড়ে দেয়া হয়। তখন রোভারটি মাত্র .৯ মাইল উপরে থাকে আর ১৮০ মাইল প্রতি ঘন্টায় নীচে পড়তে থাকে। এভাবেই এটা মঙ্গল বাড়ী চলে আসে!

ভিডিও দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন!


রেফারেন্স:

http://en.wikipedia.org/wiki/Curiosity_rover
http://marsprogram.jpl.nasa.gov/msl/
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:২৯
৪৭টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×