বিজ্ঞানের এ-যুগে একটি ভাইরাস রাতারাতি পৃথিবীকে পুরোপুরি কাবু করে ফেলবে তা কেউ ভাবতেই পারেনি। অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতিসহ পুরো মানবসভ্যতা থমকে দাড়িয়েছে ।কিন্তু কোভিড-১৯ এর সংক্রমন শেষ হবে কবে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে -সহসাই এ রোগের ভ্যাকসিন তৈরি হবে না, বছর দু'য়েক সময় লাগতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ধারনা করছে, এ রোগটি এন্ডেমিক আকারেই (টিটেনাস,জ্বলাতংক সহ) অনান্য রোগের মতই থেকে যাবে। এরকম হলে দেশের অতিনির্ভর দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের জীবিকার কি হবে? যেখানে গত দু'মাসের লকডাউনে দেশ অর্থনৈতিক ভাবে চরম বির্পয়ে আছে।ধারণা করা হচ্ছে কোভিড-১৯ এর ক্ষতিকর অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় কয়েক দশক সময় লাগবে । তাই সমগ্র বিশ্বেই প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে জীবন নাকি জীবিকা? বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য তা আরো নির্মম সত্য।
এ পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে সরকারের একার পক্ষে যে সম্ভব নয়, তা সহজেই অনুমেয়।তাই প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান হতে শুরু করে সংঘবদ্ধ উদ্যোগের বিকল্প নাই।অবশ্য বেশ কিছু জায়গায় এরকম সংঘবদ্ধ উদ্যোগ চোখেও পড়েছে। স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে বিভিন্ন ব্যাচভিত্তিক সাহায্য চোখে পড়ার মতো।সরেজমিনে এমন একটি উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ "শঠিবাড়ি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়" এর প্রাক্তন ছাত্রদের এস.এস সি-'০৫ ব্যাচের অ্যালামনাই এসোসিয়েশনকে।
এ সংগঠনের একজন মুখপাত্র,মেহেদী চৌধুরী জানান-"প্রাথমিকভাবে দেশে- বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে ঈদের পূর্বে শতাধিক পরিবারের মাঝে এক মাসের ব্যায় নির্বাহের মত নগদ অর্থের একেকটি খাম বাসায় গিয়ে গিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।।এর মধ্যে রয়েছে বিধবা,বয়স্ক,স্বল্প আয়ের মানুষ সহ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বিপর্যস্ত একটি পরিবার"।তিনি আরো জানান- "তাদের এ সাহায্য অব্যাহত থাকবে। বিশেষকরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত পরিবারটির সাহায্য সহযোগিতা তাদেরকে নতুন করে ভাবাচ্ছে"।
এ ব্যাপারে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর স্বামী লাল মিয়া বলেন-" হামরা গরিব মানুষ,দিন আনি দিন খাই,এখন ভ্যান চলাও বন্ধ। আর একদিকে বাড়িত ওগি (রোগি), দুই মাস পরে পরে অক্ত (রক্ত) দেওয়া নাগে(লাগে)। সরকার থাকিও কোন সাহায্য পাই নাই। এবার তাও স্কুলের ছাত্ররা তিনহাজার দুইশত সত্তর ট্যাকা দিচে।এটা দিয়া কিছু দিন চলবে। তারপর হামরা ক্যাংকা করি বাচঁমো??
এদিকে আরেক বিধবা মহিলার সাথে কথা বললে, তিনি বলেন- একমাস আগে একনা (একটু) সাহায্য পাছনো (পেয়েছিলো),কিন্তু সেকনা কয় দিন চলবে? প্যাট (পেট)তো বসি থাকেনা,প্রতিদিন খায়। হামার স্কুলের ছলগুলা (ছেলেগুলো) আজক্যা ঘামত করি ট্যাকা দিচে।এটা দিয়ে চলবে মাসখানেক। শ্যাষ হলে যে কি হবে আল্লাই (আল্লাহ'ই) জানে!
সত্যি তো বড় কঠিন প্রশ্ন- শ্যাষ হলে কি হবে?
তাই শেষ হয়ে যাওয়ার আগে নিজ নিজ অবস্থান হতে সম্মিলিত উদ্যোগে এসব গ্রাম থেকে শহরে,নিম্নবিত্ত হতে মধ্যবিত্তদের মাঝে বেঁচে থাকার জ্বালানি সরবরাহ করা।আমরা কি পারিনা এসব বিপন্ন মানুষদের পাশে দাড়াতে???
#Stand 4 Humanity #Be the reason of Smile
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১৭