ছোট বেলা থেকেই টিভিতে দেখে আসছি ফেয়ার এন্ড লাভলী ইয়ুজ করলেই নাকি মাত্র ৬ সপ্তাহে রঙ ফর্সা হয়ে যায়। তাই তখন থেকেই নিয়মিত দিনে ৩ বেলা ফেয়ার এন্ড লাভলী দুই হাতের তালুতে নিয়ে হালকার উপ্রে একটু ঘষা দিয়ে মুখে আলতো করে ৩ মিনিট ডলাডলি করতাম।
-
কি তাজ্জব ব্যাপার ৫ মিনিট পরেই আমার ত্বক আরো উজ্জ্বল হয়ে গেল। অত:পর ভেবে নিলাম এই ফেয়ার এন্ড লাভলী আসলেই একটা কার্যকর ক্রিম। একদিন হয়তো আমি ব্রিটিশদের মতো সাদা হয়ে যাব। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায়, বছর যায় কিন্ত আমি আর ব্রিটিশ প্রিন্স হতে পারি না। এভাবেই ক্লাস থ্রি থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকলো। কিন্ত ফলাফল জিরো।
-
কলেজ লাইফে উঠে ছেলেদের জন্য ফেয়ার এন্ড লাভলী হ্যান্ডসাম বের করলো ইউনিলিভার। ততদিনে পুরনো সৃতি মনে করে নিজেরে ধিক্কার জানাইতে লাগলাম ইয়া মাবুদ! তবে কি এতোদিন মেয়েদের ক্রিম ইয়ুজ করায় আমি ফর্সা হতে পারি নি?? এরপর টানা ৪ বছর ফেয়ার এন্ড লাভলী হ্যান্ডসাম ইয়ুজ করলাম কিন্ত তামিম ইকবাল বা সাইফ আলি খানের মতো হ্যান্ডসাম হৈতে পারলাম না। একবালতি আপসুস..
-
ইউনিভার্সিটি লাইফে এসে টিভিতে শাহরুখ খানের বিজ্ঞাপন দেখলাম ইমানি ফেয়ারনেস হ্যান্ডসাম। অত:পর ভেবে নিলাম শাহরুখ যেহেতু এই ক্রিম ইয়ুজ করে ৬০ বছরের বুইড়া হয়েও নিজের বয়সটাকে এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছে আর যেহেতু বলছে এটাই ছেলেদের জন্য বিশ্বের নাম্বার ওয়ান ক্রিম সেহেতু এটাই বেষ্ট হতে পারে।
-
এটাও পুরা চার বছর ইয়ুজ করতে লাগলাম। কিন্ত চেহারায় ওয়াইটনেস ভাবটা আজও এলো না। পিচ্ছিকাল থেকে এডাল্ট বয়স পর্যন্ত অন্তত ২ লাখ টাকার ক্রিম এবং ফেইস ওয়াস ইয়ুজ করছি কামের কাম তো কিছুই হৈল না উল্টা ব্রণ হৈছে এইবার এই ব্রণ রিমুভ করতে আরো হাজার হাজার টাকা উড়াইতে হৈসে।
-
তবে কি ভেবে নিব এইসব ফেয়ারনেস কোম্পানি গুলি ফেইক। তারা আমাকে বোকা বানিয়ে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে?? শুধুই কি আমার সাথে প্রতারণা করেছে নাকি শ্যাম বর্নের এদেশের নিরিহ সব ছেলে-মেয়ে সবার সাথেই দিনের পর দিন এমন প্রতারণা করে যাচ্ছে? সত্যিই যদি তাই হয় তবে এইসব কোম্পানিদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করে না কেন????