কিছুদিন আগে রাত ১২ টার পরে একটা রং নাম্বার থেকে ফোন আসে। সে আমাকে ফোন করে বলে আমি কে? এটা কোন জায়গা? আমি খুব বিরক্তিকর রাগান্বিত কন্ঠে বললাম আমি এস.আই অমুক, ফ্রম গুলশান থানা, এতো রাতে পুলিশের নাম্বারের ফোন করেছেন নিশ্চই কোন এমার্জেন্সি পারপাস??
-
সে এই কথা শুনে ভয়ে ভয়ে বললো সরি স্যার ভুল হয়ে গেছে রং নাম্বার। এর মাঝেই আমার মেজাজটা আরো হট হয়ে গেল। সেই সাথে সেও বুঝতে পারলো আমি তার সাথে এতক্ষণ ফাঁফর নিছি। প্রায় ১৫ মিনিট পরে সে আবার আমাকে ফোন দিয়ে নিজিকে ডিবি পরিচয় দিল এবং আমাকে বনানী থানায় আসতে হবে। ওরে বললাম ঠিক আছে থাইকো তুমি জুম্মাবার তোমার সাথে দেখা হবে বনানী থানায়।
-
তারপর ওর নাম্বারটা আমি নিজেই নিজেই ট্র্যাক করলাম। এবং বিস্তারিত তার টোটাল ইনফোরমেশন কালেক্ট করলাম। কিভাবে ট্র্যাক করলাম সেটা পরে বলছি। মজার বিষয় হচ্ছে সে জাকের পার্টির একজন সক্রিয় কর্মী।
-
এই কাহিনীর পর আমারে আর কে আটকায়। ঠিক করলাম ওরে নিয়ে একটা গেম খেলবো যেহেতু সে নিজেকে ডিবি পরিচয় দিয়েছে সেহেতু সে বিরাট হেডেক ওয়ালা।
-
দেরি না করেই সাথেসাথেই ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতারে জানাইলাম ও বললো দেখতেছে ব্যাপারটা। তারপরের দিন গুলশান, বনানী, খিলক্ষেত, ভাটারা সহ পরিচিত মোট ৪ টা থানার এস.আইকে ওর নাম্বারটা টেক্সট কৈরা পাঠাই দিলাম। তারপর একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা আরেকজন র্যাবের অফিসারকে নাম্বারটা দিলাম।
-
মালিবাগের ডিবির হেড কোয়াটারে এক বড় ভাই ডিবি পুলিশকেও নাম্বারটা দিয়া দিলাম। যেহেতু সে ডিবি সেহেতু ডিবি পুলিশ ডিবিকে চিনতে পারবে। এরপর সব দিক থেকে পুলিশদের ফোনে বেচারা ভুপেন তো অস্থির হৈয়া গেল। এবার আমি ফোন দিলাম অন্য নাম্বার থেকে বেচারা আর ফোন ধরে না একটু পরপর মোবাইল বন্ধ। অত:পর বুঝলাম তার হার্ট এটাক হওয়ার মত অবস্থা।
-
তারপর এই ঘটনার ইতি টানলাম। আমার বিবেক বাধা দিল। যেহেতু ফাঁফরটা আমি আগে নিয়েছি সেহেতু সে পরে আমার সাথে আলগা ফাঁফর নিয়েছে এতে দোষের কিছু নেই। তাই শাস্তি সরুপ তার শখের আইডিটা রিপোর্ট মেরে পার্মেন্টলি ব্যান করে দিলাম। সুতরাং ঘটনার এখানেই সমাপ্তি।
-
এবার আসুন আমি কিভাবে সেই রং নাম্বারের ভুপেনকে ট্র্যাক করলাম!!!
-
জেনে রাখুন, আপনাকে বার বার ফোন করতেই থাকা বিরক্তিকর নাম্বরটিকে কিন্তু আপনি ট্র্যাক করতে পারেন ফেসবুকের মাধ্যমে। ফেসবুকের সার্চ অপশনে গিয়ে ফোন নম্বরটি টাইপ করুন। সে ব্যক্তি যদি এই ফোন নম্বরটি তার একাউন্টে ব্যবহার করে (করার সম্ভাবনা খুব বেশী), তাহলে তাকে সহজেই খুঁজে পাবেন ২০০% সিউর।
-
এভাবে আপনি তার নাম, এড্রেস, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, প্রেজেন্ট এড্রেস, পার্মানেন্ট এড্রেস, তার জব লোকেশন, তার ফ্যামিলি মেম্বার, বন্ধু বান্ধব, সে কি খাইতে, কি খেলতে পছন্দ করে ইত্যাদি ঘরে বসেই ট্র্যাক করতে পারবেন।
-
বিরক্তিকর কলারদের নাম্বার ট্র্যাক করার আরো জটিল এবং কঠিন প্রয়োগ আছে তবে সেগুলি সবার প্রাইভেসির স্বার্থে গোপন রাখাই উত্তম। আপাতত ফেইসবুকের মাধ্যমে সহজ নিয়মেই ট্র্যাক করুন। কেউ আবার এই সিস্টেমের মিস ইয়ুজ করে ভুপেনের মত আলগা ফাঁফর নিতে যাইয়েন না। কারণ আমার মতো পাবলিকের হাতে ধরা খাইলে পরে আপনারও ভুপেনের মতো মরে যাই অবস্থা হবে।