৫ বছর আগের কথা, বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ করেই সে কী দাঁতের ব্যথা। প্রায় দুই দিন হতে চললো ব্যথা কমবে কি আরও গাল ফুলতে শুরু করলো। কি আর করার শেষমেষ ধরণা দিলাম একটি ডেন্টিস্টের কাছে।
.
আমার অসুখের বর্ণনা শুনে সব বুঝে গেলেন ডেন্টিস্ট। প্রথমে তিনি আমাকে মুখ হাঁ করতে বললেন। তারপর ঠান্ডা গলায় বললেন ‘আপনার তো আক্কেল দাঁত উঠছে।’ এই কথা শুনে আমিতো রীতিমতো আকাশ থেকে পড়লাম। বলেন কী! আমার মতো বুড়ো ছেলেদেরও দাঁত ওঠে!
.
চিকিৎসক মৃদু হেসে বললেন, আক্কেল দাঁত উঠছে আপনার। গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলি করবেন। একটু ব্যথা লাগবে, সহ্য করে নেবেন। তবে ভয়ের কিছু নেই। ইটস ন্যাচারাল। সেই সঙ্গে লিখে দিলেন কিছু ব্যথানাশক ওষুধের নাম।
.
তারপরে আর কি করা! চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন নিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে সবাইকে এই আক্কেল দাঁতের কথা বলতেই তাদের অনেকের কথায় আস্থা ফিরে পেলাম ঠিক, কিন্তু দাঁতের ব্যথা মোটেও কমছে না। আমার এই অবস্থাতে সবার কি অট্টহাসি। আমি দাঁতের ব্যথায় মরি, আর ওরা সবাই হাসিতে খায় গড়াগড়ি।
.
চিকিৎসকের পরামর্শে কিছুটা ব্যবস্থা নিলাম। কিন্তু তারপরও দাঁতের ব্যাথা তো কমছেই না, বরং বেড়েই চলছে। সঙ্গে আবার হালকা জ্বরও এসেছে। এরই মধ্যে এক বড় ভাইয়ের সাথে কথা হলো, ওনার নাকি দাঁত অপারেশন করে তুলতে হয়েছিল। ভাইয়ের কথা শুনে আমি আবারও ভড়কে গেলাম।
.
আমি আরও বড় একজন দাঁতের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলাম। তারপরে দাঁতের এক্স-রে করালাম। আমার এক্সরে রিপোর্ট ধরে ম্যাডাম বললেন, ‘কোন সমস্যা নেই অস্বাভাবিকভাবেই আপনার দাঁত উঠছে। দাঁতে দাঁতে ঠোকাঠুকির যুদ্ধ শুরু হৈসে দাঁতটা শীঘ্রই তুলে ফেলতে হবে।’
.
এই কথা শুনার পরতো আমি অজ্ঞান। অপারেশনের কথা শুনলেই কেমন জানি আমার ডর করে। প্রেসার লো হয়ে যায়। বাই দ্যা রাস্তা পরবর্তীতে তিনি কিছু মেডিসিন দিলেন সেই গুলি খেয়ে ১ সপ্তাহ পরে অপারেশন করতে আসছি। ম্যাডাম ডেন্টিস্ট আমার দির্ঘ ১ ঘন্টা চেষ্টা করে আমার আক্কেল দাঁতটা তুলতে সক্ষম হলেন। সেদিন আমার খুব কষ্ট হয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৬