মন খারাপের নগরে হিমুদের প্রবেশ নিষেধ, তারপরও আজ নীল নিয়ন আলোয় ঘেরা এই টাইমলাইনে আসতেই হলো,আসতে হলো রুপার জন্য । আমার এই একাঊন্টটি রুপার খুলে দেওয়া । রুপাকে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম ফেসবুকে আমার কাজটা কি ? রুপা তার কাধ ঝাকিয়ে চুলগুলো পিছনে সরিয়ে শীতল গলায় উত্তর দিল " তোমাকে ভালোবাসা দেখার আমন্ত্রণ তোমাকে ভালবাসা শিখার আমন্ত্রণ । " হিমুদের মায়া ভালোবাসার বাধন থেকে অনেক দূরে থাকতে হয় । তাই এই তথা কথিত ভালোবাসার আবাস ভূমি থেকে নিজেকে অনেক দূরে রেখেছি সব সময় ।
কিন্তু আজ আমি এসেছি । কারণ আজ আমার জন্মদিন । হিমুদের জন্মদিন বলে কোন উদযাপন দিবস নেই । কিন্তু রুপা সবসময় নিরবে এইদিনটাকে উদযাপন করে । " নীল শাড়ী আর ভুবন ডানার হাসি । " মাঝে মাঝে মনে হয় আমার জন্মই হয়েছে এই উপহার উপভোগ করার জন্য । নীল শাড়ি পড়া রুপাকে দেখলে ট্টয় নগরীর হেলেনও নিশ্চিত একবার বলতো "সুন্দর কিন্তু আমার মত না , শাড়িটার পাড় সুন্দর না । "
রাত বাড়ছে, সাথে সাথে ফেসবুকের ফিডও মানুষের আর্তনাদ আর ভালোবাসাই, দুঃখবিলাসী বার্তা, আনন্দমাখা চেক ইন আর দৃষ্টিনন্দিত ছবি আর সেলফিতে ভরে উঠেছে । আর এরই আড়ালে মেসেজে ভালবাসা মুগ্ধমন্ত্রে মগ্ন কপোতীরা । আচ্ছা কেমন এই মন্ত্রগুলো ? মাসের পর মাস,দিনের পর দিন ধরে রাতগুলোকে ঘুম পাড়িয়ে একজন আরেককে সতেজ করে তুলে এই মন্ত্রমহে । আমার প্রায়ই ইচ্ছা হয় বাক্য আলাপের নিরব দর্শক হতে । ফেসবুকে অনেকে মেসেজের ইস্কিনশর্ট দেয়, সবই অহেতু । কেউ এইসব মন্ত্র দেয় না । যাই হউক আমি আমার ফিডলাইনে হেঁটেই চলেছি । কিন্ত রুপার নীলপদ্মে সাজের আর দেখা নেই ।
ফিডলাইনে মাঝে মাঝে কিছু অনলাইন শপের এড আসে , দেখতে ভালোই লাগে । মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে কিছু অর্ডার করতে । আমার একটি মাস্টারকার্ড আছে । কিন্তু আমার কাছে তার পাসওয়ার্ড নেই । এই কার্ড আমাকে রুপা দিয়েছে । রুপাকে পাসওয়ার্ড জিজ্ঞাসা করতেই রুপা বলো, তুমি হিমু তোমার পাসওয়ার্ডের কাজ কি ?
রাত শেষে ভোর হয়ে আসছে রুপার নীলঙ্গনা হওয়ার কোন খবরই নেই । পথিমধ্য ফিডলাইনে চোখ আটকে আসে তারানা হালিমের নীলশাড়ি পড়া ছবি । রুপা নয়তো তারানা হালিমই সই । নিজেকে নিজের জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিয়ে ফেসবুক অফ করার সময় দেখি রুপার নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে । মনের অজান্তে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে । মাঝে মাঝে সবুজ আলোর বাতি লাল বাতি থেকেও খারাপ আর বেদনাময় ।
(**এই মুহুতে রুপার নামের পাশে সত্যি সবুজ বাতি জ্বলছে , নিষিধাদেশক্রমে মন বলছে রুপা এই লিখা পড়ছে , দাতে ঠোট চিপে যেই হাসি হাসছে , তা দেখা যে কোন মানুষের জন্যই অনেক সুখকর অনুভূতি । হিমুরা এই দৃশ্য থেকে বরাবরই বঞ্ছিত , কারণ হিমুদের মায়ার জাল থেকে দূরে থাকতে হয় । )
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:১২