সাধারণত এইসব জায়গায় মইনের তেমনের একটা যাওয়া হয় না। খুব সাধারণ একটা টেবিলে একগাদা দুর্লভ খাদ্যদ্রব্য আর মুঠো ভরা অসস্তি। মিয়-আলোয় ইমার হীরের নাকফুলটা ঝলঝল করে আরো বেশি ঝিলিক ছড়াচ্ছে । এই নাকফুলটাই ছিলো মইনের অপারগতা আর অক্ষমতার সবচেয়ে বড় কলল্ক।“শেষবারের মত ভেবে দেখো আমি কি করবো ? বাসা থেকে আর সময় দিতে চাচ্ছে না। আর পরীক্ষাও শেষ, আর কি বলে আটকে রাখবো? বাবারও শরীরের অবস্থার কোন ঠিক নেই। ৪ বছরতো হলো এখন কিছু একটা বলো !!! মইনের মাথা ঘুরছে,চারপাশ উড়ছে। আজই সে মাস্টার্সে ভর্তি হলো মাত্র।সে তার পরিবারের আদর্শ ছেলে,বাবা মারা যাবার পর থেকে মা অনেক কষ্টে তাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। সেই মা আর পরিবারের সবার স্বপ্ন তাকে ঘিরে। অন্যদিকে ইমা সেই মেয়ে যে তার আসন দিয়েছে পথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরুষ হিসেবে। রেস্টুরেন্টটা ছাড়তে হবে বাহিরে ইমার গাড়ি চলে এসেছে। মইনের খুব ইচ্ছা হলো শেষবার ইমার হাতটা ধরতে সামনে দাড়িয়ে ইমার চোখে চোখ রেখে কিছু কথা বলতে,যেসব আবেগের কথা শুনতে রাতের পর রাত ইমা কেদেছে,আকুতি করেছে।
সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। মইনের পুরো রুম বই খাতায় ছড়াছড়ি। ২রাত একদম ঘুম হয়নি। একটু চা খেলে ভালো হতো। বাসায় কাউকে বিরক্ত করতে একদম মন চাইছে না। যাই তসলিম মামা দোকানেই যাই। হঠ্যাৎ মোবাইল ফোন। স্যার,আপনার একটা পার্সেল আছে।হুম্মম!! কুরিয়ারে যাই নিজেই নিয়ে আসি। কুরিয়ার অফিসে গিয়ে থ মইন !! ইমার পার্সেল। ৬ মাস relation break মাঝে মাঝে মেসেজে খবর নেওয়া কিন্তু এর বেশি কিছু নয়। আজ একেবারে পার্সেল !!! পুরো পার্সেলে মইনের জন্য কোন হাতে লেখা চিঠি নেই। একটা বিয়ের কার্ড, একটা আধখাওয়া সিগারেটের প্যাকেট (যা কখনও রাগ করে নিয়ে গিয়ে ছিলো),মইনের পাসপোর্ট সাইজের ছবি। কিন্তু যুগল ছবি আর মইনের গিটার বিক্রির টাকায় কেনা ইমার হাতে রিং ।
তার মানে ইমা তার জীবন আবার শুরু করছে। ভালোতো ভালো না। ৪ বছরের অভিশাপের সহজ সমাপ্তী। বিয়ের কার্ড খুলে মইন অবাক!! বিয়ে আজ রাতেই। এই শহরের সবচেয়ে অভিজাত্য বিয়ের আসরে। হউক তার কি যাই আসে ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার মত ভালো কোন কাপড়ও তার নেই। অনেক রাত হয়ে গেছে তসলিম মামার চায়ের লিকার কড়া হয়ে যাবে। তাড়াতাড়ি যেতে হবে বাসায় কাল আবার operation management পরীক্ষা ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৭