বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা আপনারা সবাই জানেন ......।ভারত মহাসাগরে পাকিস্তান সেনাদের সাহায্যার্থে প্রেরিত ইঙ্গ- মার্কিনীদের রণতরীগুলকে প্রতিরোধ , জাতিসংঘে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় প্রশ্নে পৃথিবীর একক বৃহৎ শক্তি হিসাবে পর পর দুবার ভেটো দেওয়া ইত্যাদি ঘটনা প্রমাণ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল এক আপোষহীন এবং অকৃত্রিম বন্ধু।
তাই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২৫ এ জানুয়ারি সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় এবং দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
এর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিওনিদ ব্রেজনেভ , বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুকে যাতে পাকিস্তান সরকার শর্তহীন মুক্তি দেয় এবং তিনি যাতে নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে পারেন এই বিষয়ে পাকিস্তান সরকারকে প্রবল চাপের মুখে রাখেন এবং এক পর্যায়ে তিনি জল্লাদ ইয়াহিয়া খানকে সরাসরি টেলিফোনে হুমকি প্রদান করেন।
পরবর্তীতে ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর , ২৭ এ জানুয়ারি সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিওনিদ ব্রেজনেভ তাঁকে সোভিয়েত সফরের আমন্ত্রন জানান।
সাধারণত অন্তর্জালে “বঙ্গবন্ধুর রাশিয়া সফর” , “রাশিয়াতে বঙ্গবন্ধু” , “Mujib in Russia” , Bangladesh-Russia relation” ইত্যাদি শব্দে খুঁজলে একটি খুব জনপ্রিয় ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওটি বঙ্গবন্ধুর সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করার সময় , সোভিয়েত ইউনিয়নের জাতীয় টেলিভিশনের রুশ ভাষায় আড়াই মিনিটের একটি সংবাদ। তাছাড়া যে ছবিগুলো পাওয়া যায় , ওই ছবিগুলো সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের তোলা । মুক্তিযুদ্ধ গবেষক “অমি রহমান পিয়াল” তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে এই ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন এবং আরিফ রহমান ছবিগুলো মুক্তিযুদ্ধ আর্কাইভে প্রকাশ করেছেই, তাই আমরা সবাই তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।
আজ আমি যে ছবিগুলো আজ এই ব্লগে প্রকাশ করলাম এবং যে ভিডিও ফুটেজগুলো আমার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রকাশ করলাম , সেগুলো আগে কখনো প্রকাশিত হয় নি। আমার বন্ধু, মস্কোর রিয়া নভস্তির (RIA NEWS) সাংবাদিক “ পেসকোভ এডউওয়ারড ইসইফোবিচ” বঙ্গবন্ধুর সোভিয়েত সফরের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন আলোকচিত্রী হয়ে কাজ করছিলেন এবং তিনি ছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী লিওনিদ ব্রেজনেভর ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী।
সপ্তম নৌবহর সম্পর্কিত , সামহোয়্যারইন...ব্লগ এর জন্য লেখা প্রস্তুত করার সময় আমি তাঁর দরজায় ই-মেইল এর মাধ্যমে কড়া নারি , তিনি বিরক্ত না হয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভে সংরক্ষিত “বঙ্গবন্ধুর সোভিয়েত সফর” সম্পর্কিত যাবতীয় ছবি এবং ভিডিও ফুটেজগুলো আমাকে পাঠিয়ে দেন এবং বলেন এগুলো এখনো অপ্রকাশিত।
সামহোয়্যারইন...ব্লগ এর সাথে আমার পরিচয় সেই ২০০৯ সাল থেকে। এই ব্লগের সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িত। তাই এই অপ্রকাশিত , দুর্লভ ছবি এবং ভিডিও ফুটেজগুলো আমি আমার অনেক মমতা ও ভালবাসার জায়গা এই সামহোয়্যারইন...ব্লগে প্রথম প্রকাশ করলাম।
বঙ্গবন্ধুর তৎকালীন সফর ছিল তিনটি ভাগে বিভক্ত। এটি ছিল ৬ দিনের একটি সফর। ১লা মার্চ থেকে ৬ই মার্চ, ১৯৭২।
এই ভিডিও লিঙ্কটি দেখুন (১ম পর্ব )
১লা মার্চ ১৯৭২ , মস্কোর ভূণোকোভা বিমান বন্দরে অবতরণের পর তাঁকে বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা জানান সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদের সভাপতি কোসিগিন অ্যালেক্সই নিকলাইওবিচ , প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গ্রেচকো আন্দ্রেই আনতোনবিচ , পররাষ্ট্র মন্ত্রী গ্রোমাইকো আন্দ্রে আন্দ্রেওবিচ এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন সামরিক কর্মকর্তা।
বঙ্গবন্ধুর সফর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ , বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক নুরুল ইসলাম , তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব এস।এম শাহ কিবরিয়া সহ প্রমুখরা।
এখানে উল্লেখ্য যে তৎকালীন সময়ে মস্কোয় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা বিমান বন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছিল। তাদের একজন ছিলেন আমার প্রিয় সিনিয়র ভাই নির্মল দা। তাঁর মুখ থেকে শোনা “ আমরা সমস্ত ছাত্ররা বাংলায় লেখা ব্যানার নিয়ে বিমান বন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছিলাম এবং সবাই জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু বলে চিৎকার করছিলাম। সোভিয়েত সরকারের উদ্যোগে বিমান বন্দরেই বাংলায় এবং রুশ ভাষায় বিশাল বড় করে ব্যানার টাঙ্গানো হয়েছিল। লাল সাদায় লেখা ব্যানার “হে প্রধানমন্ত্রী আপনাকে স্বাগতম”। বিমান বন্দরে পত পত করে উড়ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং সদ্য জন্ম নেওয়া স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। সোভিয়েত টেলিভিশনে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে নিয়মিত সম্প্রচারের কারনে মস্কোর জনসাধারন আগে থেকেই এই ব্যাপারে জানতো। তাই তারা স্বতস্ফূর্তভাবে বিমানবন্দরে এসেছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নের বন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী “শেখ মুজিবুর রহমান” কে বরন করে নিতে। এদের মধ্যে ছিল বয়স্ক পুরুষ, মহিলা সহ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণতরুণী। সবার হাতে ছিল ফুল ( রুশদের অভ্যর্থনা জানানোর অনেক পুরনো ঐতিহ্য)। প্রায় দশ হাজার লোকের সমাগম হয়েছিল। ফিদেলকাস্ত্রোর মস্কো সফরের পর এটাই ছিল একজন বাইরের দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমান বন্দরে সাধারন মানুষের এত বড় গনজমায়েত”।
১লা মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু হোটেল কসমসে বাংলাদেশী ছাত্রদের সাথে সাক্ষাত করেন। প্রায় ২৫ জন ছাত্র ছাত্রী সেদিন উপস্থিত ছিলেন।
২রা মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সোভিয়েত প্রিমিয়ার, সোভিয়েত ইউনিয়ন কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব, সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান লিওনিদ ব্রেজনেভের সাথে সাক্ষাত করেন। তাদের সাক্ষাৎকার স্থল ছিল সোভিয়েত প্রিমিয়ারের বাসভবন “ক্রেমলিন”। এ সময় প্রায় ৪০ মিনিটের মত তিনি লিওনিদ ব্রেজনেভের সাথে কাটান। এ সময় বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ এবং সোভিয়েত ইউনিয়নে নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামসুর রহমান। বঙ্গবন্ধু সোভিয়েত প্রিমিয়ার লিওনিদ ব্রেজনেভেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে তাঁর শর্তহীন মুক্তিতে চাপ প্রয়োগ করার জন্য ধন্যবাদ জানান। এরপর তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিগত আলাপ হয়। লিওনিদ ব্রেজনেভ , বঙ্গবন্ধুকে সস্ত্রীক মস্কো সফরের আমন্ত্রন জানান।
এইদিন সোভিয়েত ইউনিয়নের মন্ত্রীসভার তৎকালীন প্রেসিডিয়াম নিকোলাই পাদগোরনির আমন্ত্রণে , ক্রেমলিনে আয়োজিত এক মধ্যাহ্ন ভোজ সভায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সফর সঙ্গীরা অংশগ্রহন করেন।
পৃথিবীর সমস্ত রাষ্ট প্রধানরা যখন ক্রেমলিন সফরে যান , তখন তাঁরা অবশ্যই দুটি জায়গায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সফর সঙ্গীরাও তাঁর ব্যতিক্রম না।
সর্বপ্রথম তাঁরা ক্রেমলিনে অবস্থিত ২য় বিশ্বযুদ্ধে শহীদ সৈনিকদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন (The Tomb of the Unknown Soldier)। একই সাথে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ক্রেমলিনের লাল ময়দান (Red square) এ অবস্থিত সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা “ভ্লাদিমির উলিয়ানভস্ক লেনিনের” মাউসোলিউমে , যেখানে লেনিনের মৃতদেহটি সংরক্ষন করা আছে।
৩রা মার্চ ১৯৭২ সকালে বঙ্গবন্ধু ক্রেমলিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন মন্ত্রীপরিষদের সভাপতি “কোসিগিন অ্যালেক্সই নিকলাইওবিচ” এর সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় এক ঐতিহাসিক চুক্তি “Soviet Union –Bangladesh Joint Declaration 1972”. এই চুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু , সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা, শিক্ষা , চিকিৎসা , সামরিক ইত্যাদি বিষয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেন। এই চুক্তির একটি বিশেষ দিক ছিলো স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ছিল পুরোপুরি অচল। তার কারন পাকিস্তান সেনাবাহিনী , এই এলাকাগুলোতে প্রচুর স্থল মাইন রেখে গিয়েছিলো। ওই সময়ে চট্টগ্রাম এবং মংলা সমুদ্র বন্দর ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতির মুল চালিকা শক্তি। এই চুক্তির কারনেই ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে (বঙ্গবন্ধুর সোভিয়েত সফরের ঠিক একমাস পরে) সোভিয়েত নৌবাহিনীর একটি মাইন অপসারণকারী দল বাংলাদেশে আসে এবং তিন মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম এবং মংলা সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে।
এই দিন বিকেলে বঙ্গবন্ধু , মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের “আন্তর্জাতিক সম্পর্ক” বিভাগের প্রধান “পাপোভা নিনা ভাসিলিয়েভনার” আমন্ত্রনে একটি সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। এই পাবলিক সেমিনারে মস্কোর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,লেখক, কবি, সাহিত্যিক এবং মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এখানে বঙ্গবন্ধু প্রায় ৪ মিনিট বাংলায় বক্তব্য রাখেন। তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ আমি তুলে ধরছি “ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের জনগন এবং সোভিয়েত সরকার আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের যে সমর্থন এবং সাহায্য - সহযোগিতা করেছিলো , তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আমি আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি”।
এইদিন তিনি মস্কোর “বালসই থিয়েটারে” ব্যলেট “ডন কিহতে” উপভোগ করেন।
এই ভিডিও লিঙ্কটি দেখুন (২য় পর্ব )
৪টা মার্চ ১৯৭২ , এদিন সকালে লেনিনগ্রাদের (বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গ) এর উদ্দেশ্যে মস্কো ত্যাগ করেন। এই লেনিনগ্রাদ সম্পর্কে একটু বলে রাখা ভাল। লেনিনগ্রাদের বর্তমান নাম সেন্ট পিটার্সবার্গ। ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব এই শহরে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই শহরটি হিটলারের নাৎসি বাহিনী ৯০০ দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। উৎসাহী পাঠকরা এই চলচ্চিত্রটি দেখতে পারেন “Attack on Leningrad”.
বঙ্গবন্ধু লেনিনগ্রাদে এসেই সরাসরি চলে যান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদদের সবচেয়ে বড় সমাধি স্থল “Piskaryovskoye Memorial Cemetery” তে। এখানে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এটা ইউরোপের সবচেয়ে বড় সমাধি,যেখানে ৪, ২০,০০০ নাগরিক এবং ৫০,০০০ সৈনিক চিরনিদ্রায় শায়িত।
তিনি লেনিনগ্রাদ ট্রেড ইউনিয়নের আমন্ত্রনে তৎকালীন সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় কারখানা “ইলেক্ট্রসিলা” সফর করেন । লেনিনগ্রাদ শহরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জাদুঘর “The Hermitage museum”. বঙ্গবন্ধু প্রায় ২ ঘণ্টা নিয়ে এই জাদুঘরটি পরিদর্শন করেন।
এই দিন বিকেলে তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্গত আরেকটি রিপাবলিক “উজবেকিস্তান” এর রাজধানী তাসখন্দের উদ্দেশ্যে লেনিনগ্রাদ ছেড়ে যান।
৫ই মার্চ তাঁকে “উজবেকিস্তান” মন্ত্রী পরিষদের প্রধান “খুদাইবেরদেভ জুরাইবিচ” , তাসখন্দে সাদর অভ্যর্থনা জানান। এই দিন তাসখন্দের জাতীয় এসেম্বলিতে খুদাইবেরদেভ জুরাইবিচের দেওয়া এক ভোজসভায় অংশগ্রহন করেন এবং উজবেকদের জাতীয় নৃত্য উপভোগ করেন। এই সময় তিনি উজবেকদের জাতীয় পোশাক পরিধান করেন। তিনি তাসখন্দের অদূরে মরুভূমিতে সোভিয়েত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৃষ্টি করা কৃষিক্ষেত্র পরিদর্শন করেন।
৬ই মার্চ সকালে তিনি তাসখন্দ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান।
আমার এই লেখাটির সাথে যে প্রামাণ্য চিত্রটি আমি প্রকাশ করেছি তার নাম হচ্ছে রুশ ভাষায় “ দ্রুজভা ই স্রেদনস্ত” এর বাংলা মানে দাঁড়ায় “বন্ধুত্ব ও অন্তরের সম্পর্ক”। এই প্রামাণ্য চিত্রটি প্রযোজনা করেছেন বিখ্যাত সোভিয়েত চিত্রপরিচালক “ভাদিম নিকলাইওবিচ রামেন্সকি”।
নিচের অপ্রকাশিত আলোকচিত্র গুলো যিনি তুলেছেন তাঁর নাম “ পেসকোভ এডউওয়ারড ইসইফোবিচ”। তাঁর পরিচয় আমি আগেই দিয়েছি।
১ম ছবি (উপরে) এই ছবিটিতে বঙ্গবন্ধু লেনিন মাউসোলিউমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন। সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ এবং অন্যান্যরা।
২য় ছবিঃ মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে ভাষন দান কালের আগ মুহূর্তে তাঁকে ফুল দিয়ে বরন করে নিচ্ছেন অভ্যর্থনা তৎকালীন “আন্তর্জাতিক সম্পর্ক” বিভাগের প্রধান “পাপোভা নিনা ভাসিলিয়েভনা”।
৩য় ছবিঃ মস্কোর ভূণোকোভা বিমান বন্দরে অবতরণের পর তাঁকে গার্ড অফ অরনার প্রদান করছে সোভিয়েত প্রতিরক্ষা বাহিনী।
৪র্থ ছবিঃ লেনিনগ্রাদ (বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গ) বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে স্কুল , কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা, সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদের সভাপতি কোসিগিন অ্যালেক্সই নিকলাইওবিচ।
৫ম ছবিঃ সোভিয়েত প্রিমিয়ার লিওনিদ ব্রেজনেভের সাথে ক্রেমলিনে আলোচনায়।
৬ষ্ঠ ছবিঃ ক্রেমলিনে বাংলাদেশ – সোভিয়েত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষর হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু , কোসিগিনের সাথে আলাপ করছেন।
৭ম ছবিঃ মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে ভাষন দানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষকদের সাথে বঙ্গবন্ধু।
৮ম ছবিঃ ক্রেমলিনে বাংলাদেশ – সোভিয়েত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষর করছেন বঙ্গবন্ধু এবং কোসিগিন।
৯ম ছবিঃ গার্ড অফ অরনার গ্রহন করছেন বঙ্গবন্ধু এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গ্রেচকো আন্দ্রেই আনতোনবিচ।
১০ম ছবিঃ মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু।
১১তম ছবিঃ মস্কোর “বালসয় থিয়েটারে” ব্যলেট শুরু হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু
১২তম ছবিঃ ব্রেজনেভের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় পাইপটি হাতে।
১৩তম ছবিঃ কোসিগিনের সাথে আলাপ করছেন বঙ্গবন্ধু।
১৪তম ছবিঃ ব্রেজনেভের সাথে আলোচনা শেষে ক্রেমলিনে তাঁদের গ্রুপ ছবি।
১৫তম ছবিঃ রেডস্কয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন বঙ্গবন্ধু।
১৬তম ছবিঃ ক্রেমলিনে বাংলাদেশ – সোভিয়েত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষর করছেন বঙ্গবন্ধু এবং কোসিগিন।
১৭তম ছবিঃ ব্রেজনেভ ও অন্যান্য সোভিয়েত নেতাদের সাথে বঙ্গবন্ধু।
১৮তম ছবিঃ উজবেকিস্তানের মন্ত্রী পরিষদের প্রধান “খুদাইবেরদেভ জুরাইবিচ” এর সাথে বঙ্গবন্ধু।
১৯তম ছবিঃ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষর হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু , কোসিগিনের সাথে করমর্দন করছেন।
২০তম ছবিঃ লেনিনগ্রাদে গার্ড অফ অরনার গ্রহণ করছেন বঙ্গবন্ধু এবং কোসিগিন।
Reference:
1. http://docs.cntd.ru/document/1901804
2. Click This Link
3.https://www.rbth.com/opinion/2017/02/22/russia-smaller-south-asian-countries-706698
4. Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৪