রিসেশন বা দুর্ভিক্ষ কি চলেই আসছে?
ফেইসবুক ১১,০০০ কর্মী ছাটাই করেছে।
Peleton ৪,৬০০, এখন পর্যন্ত টুইটার ৩,৭০০ কর্মী ছাটাই করেছে।
Salesforce, Lyft, Stripe, Microsoft, Intel ইত্যাদি জায়ান্ট কোম্পানিগুলো কর্মী ছাটাই শুরু করেছে।
এবার বড় বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ার ভ্যালু আপডেট দেখা যাক:
মাইক্রোসফট এর শেয়ার ভ্যালু কমেছে ২৭%, এমাজন ৪৫% , ফেইসবুক এর কমেছে ৬৫%, টেসলা এর কমেছে ৪৬%, গুগল এর কমেছে ৩৫%, নেটফ্লিক্স এর কমেছে ৫৮%, ইনটেলের কমেছে ৪১%, Adobe এর কমেছে ৪৯% ,সেলসফোর্স এর কমেছে ৪৮%।
পরিসংখ্যান চিত্রগুলোর দিকে তাকালেই বুঝা যাচ্ছে ২০২৩ সালে আসছে ভয়াবহ রিসেশন।
এ মুহুর্তে হাত গুটিয়ে বসে না থেকে কি কি বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন হতে পারি, জেনে নেওয়া যাক:
১. চাকুরিজীবি হলে আজ থেকেই অহেতুক খরচ একদমই অফ করে দেন। অফ মানে পুরোই অফ। ভালো পরিমান টাকা সেইভ করে রাখুন। যাতে আপনার প্রতিষ্ঠানে ছাটাই শুরু হলে ভাগ্য দোষে আপনার চাকুরিটি হারালেও ৬ মাস বা ১ বছর এর যাতে জমানো টাকা দিয়েই পরিবার নিয়ে সারভাইভ করতে পারেন।
২. যদি কোন কারণে কোম্পানিকে কর্মী ছাটাই করতে হয়। তখন কম যোগ্য, কম দরকারি লোকজন আগে ছাটাই করে। আর বেশি যোগ্য, বেশি পারফর্মিং, বেশি স্কিলড, মাল্টি ডিসিপ্লিন এর কর্মীদের রাখতে হয়। তাই চিন্তা করে দেখেন আপনার কাজ, কোম্পানির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কন্ট্রিবিউশন কোম্পানির জন্য কতটা জরুরি। কোর বিজনেস এর অংশ কিনা। যদি হয় তাহলে আপনার অবস্থা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। আর যদি বিপরীত হয়ে থাকে , তাহলে এখন থেকেই কিছু প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। বর্তমান বাজারের সর্বোচ্চ চাহিদা অনুযায়ি দ্রুত কোন স্কিল ডেভেলপ করে ফেলুন। অফিসের খুব অ্যাসেনসিয়াল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রমান শুরু করুন। মাল্টি স্কীল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করুন।
৩. যাদের নিজেদের বিজনেস রয়েছে, আপাতত হায়ারিং ফ্রিজ রাখেন। কোন বিশেষ কাজে প্রয়োজন হলে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে কাজ করিয়ে নিন। কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিন। ফাইনান্সিয়াল স্ট্রেংথ হওয়াটা এখন খুব জরুরী।
.
৪.যারা বর্তমানে চাকরি খুজছেন, তাদের জন্য এবারের দুটি পরামর্শ ।
পরামর্শ-১: খুব ভালোভাবে জোর দিয়ে চাকুরি খোজার ব্যাপারে নেমে পড়ুন। সব দিকে ট্রাই করুন। পার্ট টাইম চাকুরি, ফুল টাইম চাকুরি কিংবা রিমোট জব, সব দিকে একই সাথে ট্রাই করুন।
দ্রত কোথাও অ্যাংগেজ হয়ে যান।
কারণ অবস্থা খারাপ হলে হায়ারিং কমে যাবে। বা হায়ারিং হলে যাদের স্কিল বেশি তাদের গুরুত্ব বাড়বে। কম স্কিলদের সময় বেশি লাগবে।
পরামর্শ-২: যারা নেক্সট ইয়ারে জব মার্কেটে প্রবেশ করার পরিকল্পনা, তাদের আগেই সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ মার্কেট খারাপ হলে কম্পিটিশন বেশি হবে। তবে জব ১০০% নাই হয়ে যাবে না। কিছু না কিছু জব থাকবেই। হয়তো স্যালারি কম অফার করবে। কিন্তু কিছু হায়ারিং হবেই।
এছাড়া দুনিয়ার সব জায়গায় সমান ইমপ্যাক্ট পড়ে না। আবার সব সেক্টরে সমান ইমপ্যাক্ট পড়ে না। সব স্কিল এ সমান ইমপ্যাক্ট পড়ে না।
সবশেষ পরামর্শটি সবার জন্য:
Plan A, Plan B, Plan C রেডি রাখুন। একটি মাত্র ইনকাম সোর্সের উপর নির্ভর না করে আরও কয়েকটি ইনকাম সোর্স রেডি রাখুন।
আতংকিত না হয়ে, সিরিয়াস হন, স্ট্র্যাটেজিক হন। ধৈর্য্য ধরে, হার্ডওয়ার্ক শুরু করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ি আমদানী নির্ভর খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করে দেশীয় উৎপাদন হয়, এমন খাবারগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং নিজেদের জায়গাতে কিংবা ছাদে বেশি বেশি সবজি ও ফলের গাছ রোপন করুন।
কপালে যেটা আছে সেটা হবেই। তবে চেষ্টার কমতি রাখা যাবে না। বাকিটা আল্লাহর কাছে চাইতে হবে, আল্লাহ ভরসা।
১. ১২ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫০ ০
তবে সবাই খরচ কমিয়ে দিলে মন্দা আরও তাড়াতাড়ি আসবে। এখন বড় লোকদের উচিত হবে বেশী বেশী খরচ করা। কারণ মন্দায় এরা কখনও বিপদে পড়ে না। আর মধ্যবিত্ত আর গরীবেরা একটু সতর্কভাবে খরচ করবে। বাংলাদেশের মানুষকে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে নিজেরা তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে ভবিষ্যতে।
রাষ্ট্র যারা চালায় তাদের বলতে হবে যে মন্দা আসলেও কোন সমস্যা হবে না। সরকার প্রস্তুত আছে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য। কোন নেতিবাচক কথা প্রচার করা যাবে না। নেতিবাচক কথা বললে ব্যবসায়ীরা কেউ বিনিয়োগ করবে না। সবাই খরচ কমিয়ে দিলে মন্দা আরও তাড়াতাড়ি আসবে।