ফেইসবুক এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার বদৌলতে পশুদের নানাবিধ শিক্ষনীয় এবং আকর্ষণীয় আচরণ দেখে হতবাক হতে হয়। অনেক সময় এক পশুর প্রতি অন্য পশুর মমত্ববোধ মানুষের মমত্ববোধকেও হার মানায়।
ঈদের তিন দিন আগে দু'টি ছাগল আনা হয়েছিল আমাদের বাসায়। ছাগল দু'টো বেশ খোশ মেজাজেই ছিল। একদিন পর একটিকে অন্যত্র নেয়া হলে অবশিষ্ট ছাগলটিও ওটির সাথে যাওয়ার জন্য দড়ি ছেড়ার মতো লাফা লাফি করতে থাকে এবং প্রায় সারাটা দিন কিছু না খেয়ে ম্যা-ম্যা করে শোক প্রকাশ করতে থাকে।
রাতে এটিকে গরুর পাশে বাঁধার ব্যবস্থা করি। গরুর দেখা দেখি সেও ভূষি খেলো এবং গরুর সাথে মোটামুটি ভাব তৈরী হয়ে কান্নাকাটি বন্ধ হলো। সকালে যায়গা পরিস্কার করার জন্য গরুটি যেই না পার্কিং এর বাহিরে নেওয়া হলো, সাথে সাথে শুরু হলো গরুর জন্য আহাজারি। তাকেও গরুর কাছে নিয়ে যাওয়ার পর শান্ত হলো।
মনে পড়ে গেলো ১৯৭১ সালের একটি ঘটনা। বাবা তখন সখ করে একটি খাসী ছাগল পোষছিলেন। ২৭ মার্চ আমরা শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাগলটিকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য গলার দড়ি খুলে দেয়া হলো। আমরা যথাসাধ্য বহন যোগ্য তল্পি তল্পা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। কোন দড়ি ছাড়াই ছাগলটি আমাদের পিছু নিয়েছিল এবং আমরা যখন রিকশায় চেপেছি তখন রকশার পেছনে দৌঁড়েছে, নৌকায় যখন চেপেছি তখন নৌকায় উঠে আমাদের সাথে গন্তব্যে গিয়ে পৌঁছেছিল।
নির্মমতার এ সন্ধিক্ষণে পশুর আচরণ থেকেও আমরা মানুষেরা শিক্ষা নিতে পারি।
- লোকমান ভাই (ফেবু)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:২৩