ঢাকায় বায়তুল মুকাররমের গেটের পাশে বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি করত একজন বৃদ্ধ। বয়স সত্তরের কোঠায়। বয়সের ভারে নুজ্হ শরীরে দৃষ্টিশক্তিও এখন বেশ ক্ষীণ। তার ক্রেতারা দোকানে কিছু কিনতে এসে তার সাথে অল্প একটু কথা বললেই তার ক্ষিণ দৃষ্টি'র বাপারটা ধরতে পারত। ফলে যা হত, অনেকেই টাকা কম দিত, অচল নোট দিত, অথবা হয়ত দিতই না।
বৃদ্ধ যে ব্যাপারটা একদমই বুঝত না তা নয়, বুঝত। সে প্রার্থনায় বলত, "হে সৃষ্টিকর্তা, তুমি তাদের কে ক্ষমা করে দিও। সবারই প্রিয়জন থাকে, ছোটোছোটো ছেলেমেয়ে থাকে, কিন্তু তাদের জন্যে সুখ কেনার পয়সা সবার থাকেনা, হাড়ভাঙ্গা পরিস্স্রম করে বেচে থাকার রসদ উপার্জন করতে গিয়ে অনেকেই তাদের মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে, এমন হয়। আমি তাদের ওপর কোন ক্ষোভ রাখিনি সৃষ্টিকর্তা, তুমিও রেখো না। বরং তুমি তাদের জীবনকে আরো সহজ করে দাও।"
এভাবে সময় বয়ে যায়, দিন বয়ে যায়...একসময় দেহাবসান ঘটে বৃদ্ধের।
স্বর্গের দরজায় দাড়ালে তার সামনে অতীত ভেসে ওঠে, তার কৈশোর, তার যৌবন, তার জীবনের পড়ন্ত বিকেল। সে লজ্জিত হয়, অনুতপ্ত হয়, সে নুয়ে পরে ভেঙ্গে।
"হে সৃষ্টিকর্তা, আমি পাপী......
কত খারাপ কাজ করেছি, কত পাপ করেছি, আমার জীবন সেই অচল নোটের চেয়েও মূল্যহীন, তুমি আমাকে ক্ষমা কর!"
ঠিক সেই মুহুর্তে স্বর্গের দরজা খুলে যায় এবং অপূর্ব মহিমায় চারদিক ধ্বণিত হয়ে তার কানে একটি কন্ঠ ভেসে আসে...
"আমার কি ক্ষমা করার কিছু আছে? ...সেই মানুষটিকে যে সবাইকে ক্ষমা করেছে?"