অফিসে ঢোকার আগে ফিরোজ মামার টং দোকানে ১টা চা-বিড়ি খাওয়া আমার বহুদিনের অভ্যাস। আজও সিগারেটটা ধরিয়ে আস্তে করে যখন চায়ে একটু একটু করে চুমুক দিচ্ছিলাম, তখন দোকানে ৫-৬ বছরের ২টা ছেলে আসলো। একজনের বেশভুষা দেখে যা বুঝলাম মুটামুটি অবস্থা সম্পন্ন ঘরের ছেলে। ১টা মিমি চকলেট কিনলো সে। তারপর দোকানে দাড়িয়েই প্যাকেট খুলে চারকোনা একটা অংশ ভেঙ্গে মুখে দিল। আরেকজন দেখি হা করে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তার ছেড়া ফাটা পোশাক'ই বলে দিচ্ছে তার জরাজীর্ণ দির্ণতার কথা। দোকানদার তারে ধমকিয়ে বলল "ওই তুই কি লইবি?"
- চক্কেট
- কোন চকলেট?
সে এক টাকার একটা কয়েন বাড়িয়ে দিল। কিন্তু তার চোখ আরেকজনের মিনি চকলেটের দিকে। আরেকজন দেখি সেটা খেয়ালও করেছে। সে তার মিমি চকলেট চাটতে চাটতে বলল,
"আমি তরে চক্কেট দিবার পারি, কিন্তু আমার লগে কুত্তা কুত্তা খেলন লাগব! খেলবি?"
সে মাথা ঝুকিয়ে বলল খেলবে।
তারপর দেখি ভালো পোশাক পরা ছেলেটা মিমি চকলেটের একটা করে টুকরা সিলভার রঙের কাগজ দিয়ে মুড়ে দূরে ছুড়ে মারছে আর অন্যজন সেটা দৌড়ে দৌড়ে খুঁজে বের প্যাকেট খুলে মুখে দিচ্ছে।
পাশে এক মুরুব্বি বসে ছিলেন।
বললেন, "দেখেন, আমরা ওই ছেলেটাকে শিখাইতে পারিনি যে কাউকে এরকম ছোটো করতে হয়না, আর এই ছেলেটাকেও শিখাইতে পারিনি যে নিজেও ওপর একটা সন্মানবোধ রাখা উচিত।
ক্যামনে শিখাবো বলেন, আমরা নিজেরাও যে এরকমই।"