জলপদ্ম ফুটলেও
এ সিজনে দেরি হয়ে গেছে,
আর আমি দেরি করি ত্রস্ত কাজে।
মাছরাঙার আর যাবে কোথায়
মাছরাঙা একটা মাছ ধরতে একশ ঘণ্টা কঞ্চিতে বসে।
পানি গলে গলে ছোট নদীর নাব্যতা বাড়িয়ে দিয়ে যায়;
গ্রীষ্মে শুকর...
জৈষ্ঠের গবাদিপশু, আমার অফিস
বড্ড দেরি করে বাড়ি ফিরে এসেছি
চপ চপ,
দরজায় দু কপাট খুলে জুতো ঠুকলাম
হেসে ওঠে আঙরাখায় ওপাশ
রোহিনী, পায়ের আওয়াজ শুনতে এক কণা বিলম্ব হয় না তোমার!
২
কাঠঠোকরা রাত
আমার দুটি চোখ খেয়ে নেয়,
মিস্ত্রি হয়ে চোখের দেয়ালে লাল রঙ করে
বাকি যা অবদান বিদায়ের, সময়ের, হারানোর, আহ্লাদের এবং
নখর শকুনের মত ঘৃণার অনুভূতির,
একবার আমার চোখ ডুবে গেল ওর পাতাল স্টেশনে,
আমি বললাম বাঁচবো না,
সে বলল, আমি কালো, আমি তোমার শ্যামলা মেঘ হবো না,
মুফতে পাওয়া রাত ফুটখইয়ের মত খেয়ে নেই,
শেষ হবে না,
মাঝে মাঝে ছেঁড়া পকেট থেকে
টুং করে ঝুন ঝুনির মত
ঠান্ডা অচল পয়সা গড়িয়ে নামে..
৩
জলাশয়ে পাখি এসে নামলো; যেন ডুবে মরেছে তোমার প্রিয়,
জলে ভেসে থাকে সোডিয়াম স্টেরয়েড,
স্বচ্ছ কাঁকরের ভেতর, জলের গহনে কার পায়ের নূপুর
জীবদ্দশায় জীবনের চলাচল, পায়ের কোণায় এক চিলতে কাদা, বিভৎস ছবি হয়ে যায় তার
অনিশ্চিত রঙ।
জীবন ভাগ করে দু:খ ভাগ করে মায়াময় জিপগাড়িতে করে
পথে হাঁটছি। কৈশোর সাথে করে, লাল গাড়ির আশা সাথে করে, আমি
নিজেকে স্পর্শ করি মানিব্যাগের অর্থ ও কড়ির দাম্পত্যের মত।
আমার ভালবাসার কথা জলাশয়ে বালুখেকো ঝিনুকের মত অসহনীয়
পুড়ছে হরিণ জ্যোৎস্না, কাপালিক হয়ে রাতের ইচ্ছেমত কালো বৃষ্টি পড়ে
ভাবছি আমি না বুঝে এসবে একাকার হবো।
৪
ম্যানিকিনের পোশাক গায়ে পরতে গিয়ে দেখি আমার হাতের রঙ হাড়ের মত শাদা, মেয়েটি মাথার চুল নদী হয়ে নেমে গেছে, আর বো এর মত সেতু,
মানে ওখানে আর দেখবো না,
শাদা মাখন হয়ে আমি কার স্তন চেপে ধরেছি,
আকাঙ্খিত নারীর ঠোঁট, আর, ঘুমের ভেতর দেখা জাপানী সৈনিকের মত সমুদ্র সাঁতরে পার হচ্ছে যে অনুগত সৈনিকেরা।
আকাশ কাল করে দেবে, সন্ধ্যা করে দেবে,
মেঘ আমার জয়সালমিরের ভ্রমণে দেখা তাবু আর উট!
আমি ম্যানিকিনের দিকে চেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছি বাকি জীবন
অশত্থের কথা শুনছি কিন্তু যাবো আমি অযাত্রায়, আকাশের মত অযাত্রায়, পেঁচার মত শব্দ শুনে বসে থাকা অন্ধকারের অযাত্রায়।
আমি সংস্কারে যার সঙ্গে থাকবো ভাবলাম
তার সাথে আছি, অমাবস্যায় চাঁদের হাড়ি জ্বলে মানুষের জন্য আলো তুলে দিতে।
ক্রেনের মত নামে সন্ধ্যা নামে। কেউ হয়তো জোর করে নামিয়ে দিয়ে যায়!
কিন্তু তার আশাহত হাইব্রিডের ধান, একবারই হয়েছিল তার সাথে বাড়িঘর,
ঘুমুতে যাবার আগে মানুষ স্বপ্নের একটা তালিকা থাকে
লিখে না রাখলে তাকে কি করে ফেরত পাবো?
৫
চর জাগছে,
আমার আশা বাড়ছে,
আমার ইচ্ছে বাড়ছে নদীর ভেতর বাড়ি হবে,
পলল মাটির সঙ্গে
বাড়ি হবে আমার,
আমি বড়শিতে মাছ ধরে
ফিরে আসবো ঘরে,
জলের মত মিলে যাবো
জলের মত,
আশা বাড়ছে
স্রোতের অস্ফুট ব্যথা মিলিয়ে যায়,
পূর্ণিমায় মরা কটাল শিথিল করে
তার হাত, রাক্ষুসী রাহুর গর্ভ
ফিরিয়ে দেবে আলো,
আলো,
চর জাগছে,
আমার স্বপ্ন বাড়ছে,
তটিনির গর্জনে জেগে রব বাকি রাত
ঘুমিয়ে যাবো না
৬
একটা মালটানা রিক্সাঘোড়ার পিঠে
তোমাকে তুলে এনেছিলাম,
>
পিঠ ঘেঁষে বসে থাকার সময়টা ছিল প্রেম,
>
কে বলবে মানুষ এভাবে খুব কাছে থাকে,
>
তারপর ডাকটিকেটের খাম শুকিয়ে গেলে
>
অযথা বিশ্রি ভাবে লেগে থাকে বাকিটা সময়,
ছিঁড়ে ফেলা বড় কঠিন, কাগজের নরম জায়গাটা
>
নষ্ট করে ফেললো পিছুটান, কেউ বলে হবে হয়তো
সময়ের রীতিতে,
>
দেখো না টেবিলে শুকিয়ে পড়ে আছে আঙুর
টসটসে সরবতের বদলে শুকনো কিশমিস,
>
ডাকন খুলে রাখলে কর্পুরের ঘ্রাণ নাকে আসে না,
আমাদের দেখলে অবশ্যমনে হবে না ঘুরে যায় আকাশ,
আমাদের দেখলে মনে হবে না বেতস নগর
যন্ত্রণার ডাকাতের অত্যাচারে মানুষ শুধুই পালায়!
৭
তুমিও দেখি কাঁদো পিশাচ?
জানালার ওপাশে মৌসুমী রঙ জ্বলা কাপড়, আর আকাশশূন্য আসমান,
স্কুল থেকে বাচ্চাকে ফেরানোর পথে একটা পতঙ্গের ভয়ে কাঁদো,
বড় এক ঘুড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেল পরীদের দেশে
নরম আপেল আর নাশপাতি টেবিলে সাজানো
আপেলের ভয়ে আর এখনও তুমি কাঁদো?
পা টিপে টিপে কোথায় যাচ্ছে পরীদের রাণী,
স্মৃতির জঞ্জাল সরিয়ে মাটি খুঁড়ে কোন মাটির মোহর তুলে আনে?
গায়ের সব জামা খুলে নগ্নিকার মত অমাবস্যায় স্নান করে
সে, ছড়ড়া বন্দুকের শব্দ হয়েছি, নিহত হয়েছিল বনপাংসুল
৮
আমার ইচ্ছে হয় ঝরা ধুতুরা ফুলের মত কামুক কীট হয়ে
উপুর হয়ে মাটি আঁকড়ে ধরি,
এত সব ভাল মানুষের যৌবন, নিশ্চল হয়ে যাচ্ছে, আমি জানি
মানুষের মৃত্যুর পর
পাইকারী শরীরের আশ্বাস থাকে, জীবনে না পাবার পরিতাপ থাকে
বিষ ছড়িয়ে দেয়া সাপের মত আমার ইচ্ছে হয় নীল করে দেই
ব্যথায় ব্যথায়, আরকের রসে সেই ব্যথা সেরে যাচ্ছে,
পিরামিড থাকো - কেউ বলছে না,
বজ্রপাত হয়ে কিছু এটা নামছে মেরুদন্ডের গহনে,
প্রজাপতির শুড় ডুবিয়ে দেই সুসিক্ত আলপনার কানে,
ঝরা হাওয়ার মতো উড়ন্ত তুলোর কানে কানে
ভালবাসি বলে দেব
আমি না হয় বদলে যাচ্ছিলাম, গতকাল টের পেয়েছি
গিয়েছিও
৯
দু'চোখে বয়ে যায় তটিনি
শ্যাডো ক্লোজশট হয়, মেমোরি দেয়াল হয়ে তৃতীয় মঙ্গলবার ডাকে,
হৈ হৈ মানুষ অথচ তুমি খুব দু:খিনী ছিলে মেয়ে,
মুখ খানি মনে পড়ে যায়
আমি কনফিউজড আর বারবিকিউ এর মত মতো আগুন
জ্বালিয়ে দিয়েছি আমার মাংস, পোড়া গন্ধ!
অভিমান ফেলে দিয়ে আমি মাটিতে তারা হয়ে
খসে পড়তে পারতাম!
আমি মেডিটেশনের সুরের মত শুধুই ভাবি, আছি
বেঁচে থাকছি। ইলাস্টিকের গুলতির মত মেঘেরা যেমন
বাড়ে কমে, হুড় হুড় করে জল ঝরায়, শুধুই কিছু অক্ষমতা
মানুষকে জোয়ার থেকে ড্রেজিং এর অপেক্ষায় থাকা
মরা নদী করে রাখে।
১০
এক দঙ্গল মন খারাপের কুকুর ডেকে যাচ্ছে,
বর্ষিয়ান দৈনিক পৃথিবী, মহাজাগতিক হাসপাতালে বয়স কাটিয়ে
মরে যাবে
আর আমার দুটি চোখে সমতল দিনরাত্রি যাপন।
আমার ফেরা যায় না পিছনে,
টেকেন ফর গ্র্যান্টেড, সব পেরেও নিষিদ্ধ হতে পারি নি।
১১
আমি বাঁচছি বলেই স্বার্থপর দর্শনের জন্ম,
বিধাতার জন্ম, যত স্বর্গীয় কৃতদাস বৃষ্টি ঝরাবে, গান শোনাবে
আমি নেই আর অমনি
স্বার্থপর অন্ধকার।
অথচ কি ঠুনকো এই হাড়, মাংসের ভেতর খুত, যখন তখন
পঁচে যায়, নিভতে চায় আয়ু!
আমি যেই যাবো কি করে থাকবে অনাত্মীয় সব কিছু,
কাঁদবে না যারা কোন দিন এই আমিটির জন্য, ওরা কি
সিনেমার পর্দার মত মুহুর্তে ছায়া হয়ে মিলিয়ে যাবে?
আমি থাকছি, তাই আশা হয়ে আগামী কাল আসছে,
অথবা অসীমে টেনে যাওয়া অনিশ্চিত বোমারু বিমান চলে যাবার মত রেখা!
-
ড্রাফট ১.০ / এত জিনিস পড়ে থাকে ডেক্সটপে। ধান জড়ো করার মত ...ওটাই প্রাযুক্তিক আঙিনা, সব এক করে পোস্ট করে দিচ্ছি ...খোদা সহায় কোন কবির লেখা কবে মিক্স করে ফেলি।