সময় আসলেই বদলে গেছে অথবা বাস্তবতা বদলে যেতে বাধ্য করেছে, তা না হলে দারুচিনি দ্বীপে যাবো বা গেলে কেমন হয়: এই রকম প্রশ্ন শুনে কেউ কি না শোনার ভান করে? করতেই পারে কিন্তু আমি যাদের কথা বলছি তারা এই রকম প্রশ্ন শুনে পাল্টা প্রশ্ন করত 'তাহলে কখন আমরা রাওনা হচ্ছি....!!' দিন গুলো হারিয়ে গেছে আমাদের জীবন থেকে তাই তিন মাস আগেই যখন জানালাম যেতে চাই প্রিয় দারুচিনি দ্বীপে তখনই ঝরে পড়ল একে একে, কেউ বল্ল আরো আগে বলা দরকার ছিল, কেউ বল্ল ছুটি নাই, কেউ বল্ল বউ বাচ্চা রেখে ঘুরতে গেলে আর বাড়ি ফিরে আসতে হবে না....!! শেষে আট জন রাজি হল এবং ভেজালও শুরু হয়ে গেল, হোটেল/ রির্সোট বুক দাও, গাড়ির টিকিট কাটো, জাহাজের খবর নাও, আবহাওয়ার খবর লাগাও............!! আমি বলি এই সবের দরকার কি? যেখানেই রাত সেখানেই কাত...! ঠিক আগের দিন গুলোর মত। বন্ধুরা আমার সাথে এক মত হলেও তারা জানাল তাদের ইনস্পেক্টরা এই গুলো পছন্দ করছে না। সুতারাং শুরু হল দৌড় ঝাপ। ভাবিরা (ইনস্পেক্টরা ) দেখতে চাইলো কোন রির্সোট/ কোন বাস/ জাহাজের নাম/ টিকিট... দুই জন ইনেস্পেক্টর তো সাফ বলেই দিল সব ব্যাবস্থা ভালো না হলে তাদের হাবিলদার কে তারা ছাড়বে না, তার মানে ভালো রির্সোটই ভাড়া করতে হল। সো এক মাস আগেই সব প্রস্তুতি শেষ। ইনস্পেক্টরা হাবিলদারদের সাবধান করে দিল যেন পাঙ্খা না গজায়.....!!
এলো সেই দিন, রাতে গাড়ি, দুপুর নাগাদ একজন ঝরে পড়ল, বাসে উঠতে যেয়ে দেখা গেল আরেকজনও উধাও.....!! অগত্য ছয়জনই রাওনা দিলাম..... বাসে উঠার সাথে সাথে সবার সত্যিই পাঙ্খা গজায় গেল । এই দারুচিনি দ্বীপে প্রথম পা পড়েছিল আমাদের প্রায় নয় বছর আগে, তখন আমরা বারোজন ছিলাম, সেই বারোজনে একজন না ফেরার দেশে চলে গেছে, আর অন্য পাঁচ জন আসেনি (শেষ সময়ে দুইজন ঝরে পড়েছে)। আমরা আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম এবার পায়ে হেটে পুরো দারুচিনি দ্বীপ ছেড়া দ্বীপসহ ঘুরে দেখব।
টেকনাফ থেকে ক্রুজে উঠছি আমরা।
আমাদের ক্রুজ থেকে তোলা।
ক্যাপটেনের রুম/ ককপিট।
নাফ নদীর পাড়ে....!
নাফ নদীতে জেলেরা মাছ ধরায় ব্যাস্ত।
পাহাড়ের মাঝ দিয়ে টেকনাফ শহরে যাবার রাস্তা।
ঐ দূরে বার্মার ভিতরে মন্দির।
আমাদের পিছনের ক্রুজ।
ঐ দূরে গ্রীন লাইনের নতুন ক্রুজ। এটা অনেক জোরে চলে।
দূরে অন্য ক্রুজ গুলো।
আমাদের ক্রুজ থেকে তোলা।
সমুদ্রে যাত্রীবাহী ট্রলার।
দারুচিনি দ্বীপ নামলেই এই রকম দৃশ্য চোখে পড়বে।
মানুষ।
এই পয়েন্টেই মানুষ বেশি থাকে।
ঐ যে আমাদের আমাদের গ্রুপের কয়েকজন। একটাও সাঁতার জানে না!!
এই কচ্ছপটিকে কারা যেন পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। অনেক বড়।
সূর্য ডুবি....!
মুগ্ধ।
আমাদের কোন ভালো ক্যামেরা নাই, যা আছে তাই দিয়েই.....!
স্মৃতি রাখবার জন্য ছবি গুলো তোলা।
পায়ে হেটে সারা দ্বীপ ঘুরে বেড়ানো।
জাল নিয়ে ব্যাস্ত জেলে।
সদ্য ধরা মাছ/ কাকড়া।
কেউড়া গাছ/ফল।
ওর স্বপ্ন জেলে হবার। নিজেই নৌকা বানাবে।
এভাবেই মানুষ পুকুর বানিয়ে পানি সংগ্রহ করে রাখে।
ঐ যে প্রবাল দ্বীপ এবং ছেড়া দ্বীপ।
আমরা হেটেই চলেছি।
জোয়ার আসলে ঐ পানির জায়গা মূল দ্বীপ থেকে প্রবাল দ্বীপ এবং ছেড়া দ্বীপ বিচ্ছন্ন করে।
এই রকম জায়গা পার হয়ে যেতে হবে প্রবাল দ্বীপ এবং ছেড়া দ্বীপ।
খুধা!! খাও কাকড়া ভাজি।
চাইলে পাখি ভাজি খাওয়া যেতে পারে ছেড়া দ্বীপে। পাখি ধরা বা খাওয়াতে আমাদের আগ্রহ নাই।
প্রবাল প্রাচির।
ব্যাস্ত জেলে।
নেভির জাহাজ।
ঘাট।
শুটকি।
শুটকি২।
শুটকি এখনও রেডি হয়নি।
বিষন্ন পাহাড়।
ঐ তো আমি
ধন্যবাদ সবাই কে।
নোট- দারুচিনি দ্বীপ= সেন্ট মার্টিন, ইনস্পেক্টর= বন্ধুদের বউ, হাবিলদার = বন্ধুরা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৫