গারো পাহাড়ের পাদদেশ শেরপুর ভ্রমনের বিস্তারিত তথ্যঃ
প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি সীমান্ত কন্যা গারো পাহাড়ের সুষমা মন্ডিত শেরপুর একটি অতি প্রাচীন জনপদ। দেশের ছোট্ট সুন্দর প্রান্তিক জেলা শেরপুর। অতি প্রাচীনকালে শেরপুর কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। মোগল সম্রাট আকবরের শাসনামলে বিশাল চওড়া ও খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র পার হয়ে শেরপুর পৌঁছতে সময় লাগত এক প্রহর বা তিন ঘন্টারও বেশী। এই পারের পারানি ছিল দশকাহন কড়ি বা সুলতানী দশ টাকা। তাই এ অঞ্চলকে তখন বলা হতো ‘দশকাহনিয়া বাজু’(বিভাগ)। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ভাওয়ালের গাজীগণ ঈশা খাঁর বংশধরদের কাছ থেকে দশকাহনিয়া পরগণা দখল করে নেয়। গাজী বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজীর নামানুসারে দশকাহনিয়ার নামকরণ করা হয় - শেরপুর। ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ইক্তার উদ্দিন উজবেগ তুগ্রলখা, ১৪৯১ খ্রিস্টাব্দ থেকে দ্বিতীয় ফিরোজ শাহ, ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে হুসেন শাহ, পরবর্তীতে পাঠান সম্রাট শেরশাহ, মোগল সম্রাট বাবর, হুমায়ুন, আকবর- এমনি আরও অনেক রাজা-বাদশাহগণ এ অঞ্চল শাসন করতেন।
এই ডক এ যা যা আছেঃ
১. ঢাকা থেকে কিভাবে যাওয়া যায়?
২. যাতায়াত ভাড়া কেমন পরবে?
৩. রাতে থাকার ব্যবস্থা কোথায়,কিভাবে, খরচ?
৪. খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ?
৫. দর্শনীয় স্থান গুলোর লিষ্ট।
৬. লোকাল ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা ও খরচ।
৭. ক্যাম্পিং এর সুবিধা আছে কি নাই?
৮. কোন ঋতুতে গেলে কি কি সুবিধা/অসুবিধা?
৯. কি কি জিনিস সাথে নেয়া প্রয়োজন?
১০. টিপস ।
ঢাকা থেকে কিভাবে যাওয়া যায়? যাতায়াত ভাড়া কেমন পরবে?
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ফিডার রোড নির্মিত হওয়ায় শেরপুর জেলার যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে সাড়ে চার ঘণ্টায় শেরপুর পৌঁছানো যায়। ঢাকা থেকে শেরপুর আনুমানিক দুরত্ব ১৯৮ কিঃমি । এখানে আসার জন্য সড়ক পথে যাতায়াত খুব সহজ।রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মসৃণ পিচঢালা পথ। রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াতই সবচেয়ে উত্তম। উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল-জামালপুর হয়েও আসতে পারেন সড়ক পথে।
ঢাকা মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে শেরপুর জেলা সদরে বেশ কিছু ভালো বাস সার্ভিস রয়েছে। এদের মধ্যে নন এসি- সাদিকা (Its the Speed Master of Dhaka - Sherpur Road ফোনঃ01712-119181), বধুয়া, শাহীমনি, সোনার বাংলা, SA পরিবহন (ফোনঃ 01724191118 ) ও স্পেশাল ড্রীমল্যান্ড সার্ভিস উল্লেখযোগ্য। সবগুলো গাড়ি হিনো। সীট গুলোও বেশ ভালো। জনপ্রতি ভাড়া হচ্ছে ২৫০ - ৩০০ টাকা। এসি সার্ভিস - (ফোনঃ 01734190665, 01735621796) এসি ডিলাক্স ও এসি সুপার ছাড়ে দুপুর ২টায়, জনপ্রতি ভাড়া হচ্ছে ৪০০ টাকা। এছাড়া গুলিস্তান বাইতুল মোকাররম মার্কেট এর সামনে / ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম ৪ নং গেইট থেকে সরাসরী বিকাল ৩-৪টায় থেকেও বেশ কিছু ভাল বাস ছেড়ে যায় শেরপুর এর উদ্দেশ্যে। এদের মাঝে নন এসি- শেরপুর চেম্বার অব কমার্স, শেরপুর শিল্প ও বনিক সমিতি, শেরপুর কালেক্টরেট কর্মচারী সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠনের বাস সার্ভিস আছে। জনপ্রতি ভাড়া হচ্ছে ২৫০ - ৩০০ টাকা। কিছু কিছু বাস শহরের নবীনগর এ অবস্থিত আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পর্যন্ত যায়, আবার কিছু বাস শহরের ভেতরে নিউমার্কেট পর্যন্ত যায়। এক্ষেত্রে বাস টার্মিনাল এ নামলে রিকশা নিয়ে শহরের ভিতরে যেতে হবে ভাড়া ১৫-২০ টাকা। ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক দিয়েও যেতে পারেন ভাড়া ৫-১০ টাকা জনপ্রতি।
রাতে থাকার ব্যবস্থা কোথায়, কিভাবে, খরচ?
কেউ যদি শেরপুর এসে রাত্রিযাপন করতে চান তবে শেরপুর জেলা সদরেই থাকতে হবে। কারণ সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার কোনো স্পটেই রাত্রীযাপনের কোনো ব্যবস্থা বা অনুমতি নেই। এছাড়া নিচে উল্লেখিত স্থানগুলোতে এমনকি ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ি, শ্রীবর্দী উপজেলা সদরে রাত্রিযাপন করার মতো কোনো ভালো আবাসিক হোটেল নেই। শেরপুর জেলা শহরে হাতে গোনা দুই/তিনটি ভালো মানের আবাসিক হোটেল ছাড়াও ভিআইপিদের জন্য জেলা সার্কিট হাউজ, জেলা পরিষদ ও এলজিইডির রেস্ট হাউজ রয়েছে। ঝিনাইগাতী ডাকবাংলো অথবা বন-বিভাগ ডাকবাংলোও থাকতে পারবেন। সেগুলোতে রাত্রি যাপন বা রেস্ট নিতে গেলে সংশ্লিষ্ট অফিসে অগ্রিম বুকিং দিতে হবে।
জেলা পরিষদের রেস্ট হাউজের প্রতিরুম এক রাতের জন্য ভাড়া ৫০ টাকা, এলজিইডির প্রতিরুম ৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং সার্কিট হাউজের প্রতিরুম ৪০০ টাকা ভাড়া নেয়া যায়। তবে ওই রেস্ট হাউজে সরকারি কর্মকর্তাদের নামমাত্র ২০ থেকে ৫০ টাকা দিয়ে রাত্রীযাপন করতে পারবেন। এছাড়া শহরের আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে- হোটেল সম্পদ ও কাকলি গেস্ট হাউজ অন্যতম। এসব হোটেলের রুম ভাড়া নন এসি ডাবল ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে এসি রুমের ভাড়া ৮০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত।
যোগাযোগঃ
হোটেল সম্পদ প্লাজা (আবাসিক)
টেলিফোন নম্বর
০৯৩১-৬১৭৭৬
কাকলী গেষ্ট হাউজ (আবাসিক)
টেলিফোন নম্বর
০৯৩১-৬১২০৬
বর্ণালী গেষ্ট হাউজ (আবাসিক)
টেলিফোন নম্বর
০৯৩১-৬১৫৭৫
আরাফাত গেষ্ট হাউজ (আবাসিক)
টেলিফোন নম্বর
০৯৩১-৬১২১৭
খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ?
শেরপুর জেলা শহরে ভালো মানের খাবার হোটেল রয়েছে হাতে গোনা ৪ থেকে ৫টি। সকালের নাস্তায় শেরপুর শহরের কাকলি মার্কেট এর নিচে প্রিন্স হোটেলের ভুনা খিচুরি খেতে ভুলবেন না। দুপুর ও রাতে খাবার জন্য নিউ মার্কেট এর হোটেল শাহজাহান, শাহী খানা খাজানা, বাগান বাড়ি রেস্টুরেন্ট, হোটেল আহার কিংবা কাকলী মার্কেটের হোটেল প্রিন্স বিখ্যাত।এসব হোটেল অগ্রীম বুকিং ও অর্ডার সরবরাহ করা হয়।
শাহী খানা খাজানা
টেলিফোন নম্বর
০৯৩১-৬১৬৪৭
হোটেল শাহজাহান
টেলিফোন নম্বর
০১৯১১৪১১৭৭১
সীমান্ত এলাকায় ভালো মানের কোনো খাবার হোটেল নেই। তবে জেলার বাইরে থেকে এ সীমান্ত এলাকার গারো পাহাড়ে বেড়াতে এসে রান্নার ব্যবস্থা না করতে পারলে শহরের ওইসব খাবার হোটেল থেকে খাবারের জন্য অগ্রিম বুকিং দিলে প্যাকেট সরবরাহ করা হয়।
নয়ানী বাজার গোয়ালপট্টি থেকে নন্দগোপাল এর মালাইকারি মিষ্টি, দই, রসমালাই, রাজ বল্লভ এর জিলাপি খেতে ভুলবেন না। সত্যবতি ও লিখন সিনেমা হলের সামনে পান দোকান থেকে ১০০ আইটেম এর অধিক মশলা দিয়ে মিষ্টি পান খেতে মিস করবেন না।
শেরপুর এর খাবার মান যথেষ্ট ভাল ও দাম অনেক কম।
দর্শনীয় স্থান গুলোর লিষ্ট ও বিবরনঃ
১. গজনী অবকাশ কেন্দ্র , ঝিনাইগাতি।
২. মধুটিলা ইকোপার্ক, নন্নী, নালিতাবাড়ি।
৩. অর্কিড গার্ডেন পর্যটন প্রকল্প, কান্দাপাড়া, কলাবাগান, শেরপুর।
৪. জরিপ শাহের মাজার, বারদুয়ারি মসজিদ , গড় জরিপার দুর্গ, শ্রীবরদি, শেরপুর।
৫. হজরত শাহ কামালের মাজার ,কসবার মুঘল মসজিদ ,নয় আনী জমিদার বাড়ি, শেরপুর।
৬. সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান, সন্ধাকুড়া, ঝিনাইগাতি।
৭. বারোমারি খ্রিস্টান মিশন, নন্নি, নালিতাবাড়ি।
৮. নাকুগাও স্থল বন্দর, নালিতাবাড়ি।
৯. রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনা
১০. সূতানাল দীঘি
১১. বন্যহাতির অভয়ারন্য নয়াবাড়ির টিল
১২. পানিহাটা-তারানি পাহাড়
১৩. লাউচাপড়া , জামালপুর
গজনী অবকাশ কেন্দ্র , ঝিনাইগাতিঃ
পাহাড়ের ঢালে, গায়ে অথবা পাহাড় চূড়ায় সারি সারি শাল, সেগুন, মহুয়া, গজারী, আকাশমনি, ইউকেলিপটাস, মিলজিয়ামসহ আরো নাম না জানা কত শত পাহাড়ি গাছ, বনফুল ও ছায়াঢাকা বিন্যাস যেন বিশাল ক্যানভাসে সুনিপুন শিল্পীর রঙ-তুলির আঁচড়। শিল্পীর এ আঁচড় খুব সহজেই প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যেতে পারে বলেই প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার প্রকৃতিপ্রেমী নারী-পুরুষ, শিশু, বয়োবৃদ্ধসহ সবাই ছুটে আসেন শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী গারো পাহাড়ের মন ছুঁয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে। ঢাকা হতে ২৩৫ কিলামিটার উত্তরে শেরপুর জেলা শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে গারো পাহাড়ের পাদদেশে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত গজনীতে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন অবকাশ কেন্দ্র। ঢাকার সন্নিকটে এমন পর্যটন কেন্দ্র আর একটিও নেই যেখানে একই সাথে পাহাড়, হ্রদ, বন জঙ্গল ও হাজার পাখির কলতান পাওয়া যায়।
ভারতের মেঘালয়ের কোল ঘেঁষে ও বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে অরণ্যরাজি আর গারো পাহাড়ের পাদদেশে পাহাড়ি নদী ভোগাই, চেল্লাখালি, মৃগী, সোমেশ্বরী, মালিঝি, মহারশীর ঐশ্বরিক প্রাচুর্যস্নাত অববাহিকায় সমৃদ্ধ জনপদ শেরপুর। এ জেলার বিশাল অংশজুড়ে গারো পাহাড়ের বিস্তৃতি। লাল মাটির উঁচু পাহাড়। গহীন জঙ্গল, টিলা, মাঝে সমতল। দু’পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে ছন্দ তুলে পাহাড়ী ঝর্ণার এগিয়ে চলা। পাহাড়, বনানী, ঝরণা, হ্রদ এতসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যেও কৃত্রিম সৌন্দর্যের অনেক সংযোজনই রয়েছে গজনী অবকাশ কেন্দ্রে। গজনী খুব সহজেই প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে রেখাপাত করতে পারে বলেই প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে যান শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনীতে। যেখানে প্রায়ই হানা দেয় বুনো হাতির দল।
ঝিনাইগাতির সীমান্তবর্তী এলাকার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝে ১৯৯৩ সালে তত্কালীন জেলা প্রশাসক আতাউর রহমান মজুমদার গড়ে তোলেন ‘গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র’। সেখানে প্রায় ২শ’ ফুট উঁচুতে পাহাড়ি টিলার উপর নির্মিত হয় ৩ কক্ষবিশিষ্ট অবকাশ ভবন। প্রাচীনতম বটবৃক্ষকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয় অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র।
এটি ঝিনাইগাতি উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গজনীতে অবস্থিত। যাবার পথে রাংটিয়া ছেড়ে কিছু দূর এগোলে দুপাশে গজারি গাছের ছাউনিতে ঢাকা কালো পিচঢালা পথটি সবার মন কাড়বে। এ পথ গিয়ে শেষ হয়েছে একটি হ্রদের সামনে। লালমাটির উচু-নিচু,পাহাড়,টিলা, পাহাড়ী টিলার মাঝে সমতল ভূমি। দুই পাহাড়ের মাঝে পাহাড়ী ঝর্ণা একে বেঁকে এগিয়ে চলছে। ঝর্ণার পানি এসে ফুলে ফেপে উঠছে। সেখানে বাধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম লেক। লেকের মাঝে কৃত্রিম পাহাড় এবং পাহাড়ের উপর “লেক ভিউপেন্টাগন”। সেখানে যাতায়াতের জন্য রয়েছে দোদ্দুল্যমান ব্রীজ। লেকে নৌ-ভ্রমণের জন্য আছে পা চালিত নৌকাসহ ময়ূরপঙ্খী নাও। এখানে দূর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পাহাড় চূড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠে দূরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সীমানা চোখে পড়ে শেরপুর জেলায়। সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে যেদিকেই দৃষ্টি যাবে সবুজ আর সবুজ। দূরে পাহাড় চূড়ার সঙ্গে মেঘের মিতালী। এখানকার কৃত্রিম পাতালপথটির নাম পাতালপুরী।
পাহাড়ের চুড়ায় রয়েছে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট বৈদ্যুতিক সুবিধাসহ আধুনিক “দুতলা রেষ্ট হাউজ”। যে রেষ্ট হাউজ থেকে পাহাড়ের পাদদেশে নামার জন্য আঁকা-বাকা “পদ্মাসিড়ি” রয়েছে। অবকাশের পাদদেশে সান বাঁধানো বেদীসহ বট চত্বর।
নৈস্বর্গীক সৌন্দযের লীলা ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ গারো পাহাড়। এখানকার সবুজ প্রকৃতি আপন করে নেয় ভ্রমন পিপাসুদের। শ্যামল বৃক্ষরাজীর মাঝ দিয়ে আকাঁ-বাকাঁ পাকা সড়ক পথ যেন সবুজ সুড়ঙ্গের দিকে ঢুকে যাচ্ছে ক্রমশঃ।
যা যা দেখবেনঃ
ভ্রমন পিপাসুদের জন্য গজনী অবকাশ কেন্দ্রে রয়েছে ক্রিন্সেন্ট লেক, লেকের ওপর রংধনু ব্রীজ, কৃত্রিম জলপ্রপাত, পানসিতরী নৌকা, প্যান্ডেল বোড , মুক্তিযুদ্ধ স্মুতিসৌধ, শিশু পার্ক, কবি নজরুল ইসলাম ও কবি রবিন্দ্র নাথ ঠাকুরের স্মৃতিফলক, মাটির নিচে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাতায়তের জন্য ড্রাগন ট্যানেল মুখের ভিতর দিয়ে পাতালপুরি, লাভলেইন, মৎস্য কুমারী, কবিতাবাগ, হাতি, বাঘ, জিরাফ, হরিণ, ডাইনোসরের প্রতিকৃতি। অবকাশ কেন্দ্রে অন্যতম আকর্ষণ সাইট ভিউ টাওয়ার। ৮০বর্গফুট উচ্চ এ টাওয়ারে উঠলে দেখা যাবে পাহাড়ী ঢিলার অপরূপ বৈচিত্রময় দৃশ্য। বন বিভাগ প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সখ্য গড়ে তুলতে গজনী অবকাশ কেন্দ্রে একটি ক্যাকটাস পল্ল¬¬ী এবং মিনি চিড়িয়াখানাও গড়ে তুলেছে। বর্তমানে শেরপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে গজনীতে শিশু পার্কের শিশু কিশোরদের বিনোদনের জন্য পুতুল নাচসহ নাগরদোলা ও বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ আর সৌন্দর্য্যে ভরপুর গারো পাহাড়ের গজনীতে পর্যটক বা ভ্রমন পিপাসুদের বারতি পাওনা হলো আদিবাসী সম্প্রদায় গারো, কোচ, হাজং, বানাই, হদীসহ বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর চাষাবাদ, জীবন প্রবাহ, কৃষ্টি, শিল্প এবং ভাষা ও সংস্কৃতি, এ জন্যই প্রতিদিন পর্যটক ও ভ্রমন পিপাসুদের ঢল নামে গজনীতে । গজনী অবকাশ কেন্দ্রে রেষ্ট হাউজে প্রতিকক্ষ ব্যবহার করতে চাইলে (কেবল দিনের বেলার জন্য) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত শাখা থেকে অনুমতি ও বুকিং নিতে হয়। প্রতি কক্ষের জন্য ভাড়া ৫শ টাকা। নতুন করে সংযোজন করা হচ্ছে “ পবিত্র গজনী কুন্ড”। মাধবকুন্ডের আদলে তৈরি হচ্ছে এটি।
যেভাবে যেতে হবেঃ শেরপুর শহর থেকে গজনী যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাস, টেম্পোসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন রয়েছে।
ভাড়াঃ
শেরপুর থেকে ঝিনাইগাতি বাস ভাড়াঃ ৪০ টাকা। তারপর রিক্সায় প্রকৃতির রূপ দেখতে দেখতে গজনী ভাড়া ৮০- ১০০ টাকা ।
শেরপুর থেকে গজনী আসা-যাওয়া সারাদিন সিএনজি ভাড়াঃ ১০০০ টাকা। থানার মোড় ও খোয়ারপাড় মোর এ সিএনজি ভাড়া পাওয়া যায়। (ভাড়া দর-দাম করে নিবেন)।
মধুটিলা ইকোপার্ক, নন্নী, নালিতাবাড়িঃ
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেষা শেরপুর জেলার প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গারো পাহাড়। এই গারো পাহাড়ে দেশের পার্বত্য এলাকার মতো সুউচ্চ পর্বত বা পাহাড় ও লেক না থাকলেও এখানকার শাল-গজারি, ইউকিলিপটাস-একাশিয়া, সেগুন-মেহগিনি, মিনঝিরিসহ নানা প্রজাতির গাছগালি ঘেরা ঊঁচু নিচু টিলা আর পাহাড়ি টিলা বেয়ে সমতলের দিকে ছুটে চলা ছোট ছোট ঝর্ণা, ঝোড়া ও ছড়া দিয়ে বয়ে যাওয়া পানির কলকল শব্দ যে কোন প্রকৃতি প্রেমির হৃদয়কে আন্দোলিত করবে। ওই সব পাহাড়ি টিলার উপর এবং সমতলে শত শত বছর ধরে বসবাসকারী নৃ-গোষ্ঠির নানা সম্প্রদায়দের লোকদের সংস্কৃতি ও জীবন-জীবিকা পাহাড়ের সৌন্দর্যকে আরো বৃদ্ধি করেছে। পাহাড়ের চূড়ায় ওয়াচ টাওয়ারে দাড়িয়ে উচু-নিচু পাহাড়ের গায়- মেঘ-রোদ্দুরের খেলা আর সীমান্তের ওপারের ভারতীয় অধিবাসিদের ঘর-বাড়ি’র দৃশ্য মন ছুয়ে যায়, হৃদয়কে উদ্বেলিত করে।সেসঙ্গে এই গারো পহাড়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা হাজার হাজার নর-নারী ও প্রেমিক-প্রেমিকার মিলন মেলা ও হাট বসে।
১৯৯৯ সনে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার উত্তরে ময়মনসিংহ বন বিভাগের ব্যবস্থাপনাধীন পোড়াগাঁও ইউনিয়নের মধুটিলা ফরেষ্ট রেঞ্জের সমেশ্চূড়া বীটের আওতায় ৩৮০ একর পাহাড়ি টিলার উপর “মধুটিলা ইকো পার্ক” নামে মনোরম পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয়েছে। গারো পাহাড় এলাকায় নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক নৈস্বর্গিক ওই পিকনিক কেন্দ্রে এখন হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারনায় ভরে উঠেছে। প্রতি বছর শীত মওসুমে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষা সফর ও বনভোজনে বাস, মাক্রোবাস, প্রাইভেট কার করে হাজার হাজার ভ্রমন পিপাসুরা বেড়াতে আসছে। ফলে জেলা প্রশাসন ও সরকারের রাজস্ব খাতে প্রতি বছর আয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ময়মনসিংহ বন বিভাগ ১৯৯৯ সন থেকে ইকো পার্কের প্রাথমিক অবকাঠামো ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ দুই পর্যায়ে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শেষ করে ২০০৬-০৭ অর্থ বছর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইকো পার্কের যাত্রা শুরু হয়। ওই বছরই ইকো পার্কের বিভিন্ন খাত থেকে সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হয় ৫২ হাজার ৮৩১ টাকা। এরপর ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ১৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৬৫৮ টাকা এবং ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে আয় হয় ২৮ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩০৬ টাকা এবং ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা এবং চলতি বছরে আরো আয় বৃদ্ধি হবে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এই ইকো পার্কে বর্তমানে সুদৃশ্য প্রধান ফটক, ডিসপ্লে¬¬ মডেল, তথ্য কেন্দ্র, গাড়ী পার্কিং জোন, ক্যান্টিন, ওয়াচ টাওয়ার, মিনি চিড়িয়াখানা, মনোরম লেক ও বোটিং, স্টার ব্রীজ, স্ট্রেম্পিং রোড বা সুউচ্চ পাহাড়ে উঠার জন্য ধাপ রাস্তা (সিঁড়ি), মিনি শিশু পার্ক, মহুয়া রেষ্ট হাউজ, স্টীলের ছাতা, ইকো ফ্রেন্ডলি বেঞ্চ, আধুনিক পাবলিক টয়লেট, পার্কের প্রবেশ পথ ধরে যাওয়া বিভিন্ন সড়কের পার্শ্বে স্থাপন করা হয়েছে হাতি, হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, বানর, কুমির, ক্যাঙ্গারু, মৎস্য কন্যা, মাছ, ব্যাঙসহ বিভিন্ন জীব জন্তুর ভাষ্কর্য। এছাড়া আরো রয়েছে বিরল প্রজাতি, পশু পাখি আকৃষ্ট, ঔষধি ও সৌন্দর্য বর্ধক প্রজাতির গাছের বাগান, মৌসুমী ফুলের বাগান এবং সাত রঙের গোলাপ বাগান। পার্কের উচু টিলার উপর ৩ কামরা বিশিষ্ট সুদৃশ্য বাংলো বা ‘মহুয়া রেস্ট হাউজ’ ব্যাবহার করতে হলে ময়মনসিংহ অথবা শেরপুর বন বিভাগ অফিস থেকে প্রতিদিনের জন্য ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং ২০০ টাকা ভ্যাটসহ মোট ৪৭০০ টাকায় ভাড়া নিতে হবে।আর ছোট ছোট পিকনিক স্পটগুলোর ভাড়া দৈনিক ৬৫০ টাকা। সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত থাকতে পারবেন এখানে। সপ্তাহে সাতদিন খোলা। পিকনিক স্পট ভাড়া নেবার জন্যে যোগাযোগ করতে পারেন জনাব এনায়েত সাহেবের সাথে যিনি এখানকার রেঞ্জ অফিসার। তাঁর ফোন নম্বরটি হলো: ০১৭১২২৭২০২৪।
যেভাবে যাবেন : শেরপুর জেলা সদরের লোকাল বাস স্ট্যান্ড থেকে নালিতাবাড়ি উপজেলার নন্নী বাজার পর্যন্ত লোকাল বাসে যাওয়া যাবে। এরপর মধুটিলা ইকো পার্ক পর্যন্ত রিক্সা বা ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় যাওয়া যাবে। এছাড়া শেরপুর জেলা শহর থেকে ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিক্সা অথবা মাইক্রোবাস ভাড়া করেও ইকো পার্কে যাওয়া যাবে।
ভাড়াঃ
শেরপুর থেকে নন্নী বাজার বাস ভাড়াঃ ২৫ টাকা। এরপর মধুটিলা ইকো পার্ক পর্যন্ত রিক্সা ৬০/- বা ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা ১২০/- ও সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় ১৫০/- যাওয়া যাবে।
শেরপুর থেকে মধুটিলা ইকো পার্ক আসা-যাওয়া সারাদিন সিএনজি ভাড়াঃ ১০০০ টাকা। থানার মোড় ও খোয়ারপাড় মোর এ সিএনজি ভাড়া পাওয়া যায়। (ভাড়া দর-দাম করে নিবেন)।
অর্কিড গার্ডেন পর্যটন প্রকল্প, কান্দাপাড়া, কলাবাগান, শেরপুরঃ
সবুজের সাথে মিতালি করতে চাইলে চলে আসুন শেরপুরের অর্কিড পর্যটন প্রকল্পে। শেরপুর জেলা শহরের মধ্যেই ব্যাক্তি উদ্দোগে গড়ে তোলা হয়েছে অর্কিড পর্যটন প্রকল্প। এ প্রকল্পে’র চারিদিকে রয়েছে সারি সারি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ গাছ, মাঠ জুড়ে রয়েছে সবুজ ঘাস আর সান বাঁধানো পুকুর। পুকুরের চারপাশে মাছ খেতে বসে থাকে সাদা-সাদা বক। সবুজ বাতায়নের ওই অর্কিড প্রঙ্গনের খাঁচায় খেলা করছে বানর, টার্কিছ, খোরগোশসহ দেশীয় বিভিন্ন জীবজন্তু। পিয়জন অথবা বন্ধ-বান্ধবদের নিয়ে বসে আড্ডা দেয়ার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি ছাতা এবং ছাতার নিচে রয়েছে বসার জন্য রয়েছে চেয়ার। চা, কফি ও সেভেন-আপ বা কোকাকোলা পানের জন্য রয়েছে ছনের তৈরী সুদৃশ্য ক্যান্টিন এবং রেস্ট হাউজ। এ যেন শহরের মধ্যে এক খন্ড সবুজের লীলা ভুমি। পরিবার-পরিজন নিয়ে হাতে কাছে বেড়ানো বা শহুরে জীবনের এক ঘিয়েমি কাটাতে চমৎকার একটি পারিবারিক বিনোদক কেন্দ্র এই ‘অর্কিড পর্যটন কেন্দ্র’।
শেরপুর জেলা শহরের পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের শেরপুর-ঝিনাইগাতী ফিডার রোডর সংলগ্ন কান্দাপাড়া মহল¬লার স্থানীয় চাতাল ব্যাবসায়ী ও সৌখিন মনের অধিকারী মো: আজাহার আলী ১৯৯০ সালে প্রাথমিক ভাবে তার ধানের খলার পাশেই প্রায় সারে ৫ একর জমির উপর সম্পুর্ন ব্যাক্তি খরচে নানা জাতের দেশী-বিদেশী বনজ ও ফলদ গাছ-গাছরা রোপন করে গড়ে তুলেন ‘অর্কিড’ বাগান। সেসময় ওই বাগান ‘কলা বাগান’ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছিল। এরপর নানা প্রতিকুলতার মধ্যে ওই বাগানের সৌন্দর্য হারানোর পর আবার ২০০৮ সাল থেকে অর্কিড মালিক আজাহার আলী তার মনের মাধুরি মিশিয়ে প্রচুর টাকা খরচ করে নানা অবকাঠামো তৈরীর মাধ্যমে নতুন করে গড়ে তুলেন ‘অর্কিড পর্যটন প্রকল্প’। এবার তার অর্কিডে প্রবেশ করতে সেচ্ছাদান হিসেবে ২০ টাকা করে ধার্য করেছেন। প্রতিদিন ওই অর্কিডে প্রেমিক জুটিসহ বন্ধু-বান্ধবসহ ক্লান্ত জীবনের একটু অবকাশ কাটাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসছে শহরবাসী এবং জেলার অন্যান্য স্থানের লোকজন। বিশেষ করে ছুটির দিনে বেড়াতে আসা লোকজনের ভিড় বেশী হয়। কেউ যদি অর্কিড রিজার্ভ করে কোন প্রতিষ্ঠান বা পারিবারিক কোন অনুষ্ঠান করতে চায় তবে দিন চুক্তি ৫ হাজার টাকায় বুকিং করতে হয়। আপাতত রাত্রি যাপনের কোন ব্যাবস্থা না থাকলেও ভবিষ্যতে এখনে আবাসিক বাংলোসহ ভ্রমনবিলাসী ও বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য নানা সুযোগ সবিধা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান অর্কিট মালিক আজাহার আলী। বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত (সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত) অর্কিডে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সন্ধ্যার পর কোন দর্শনার্থীকে ভিতরে থাকতে দেওয়া হয়না।
যেভাবে যাবেন : শেরপুর জেলা শহর অর্কিড পর্যটন প্রকল্প পর্যন্ত রিক্সা বা ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় যাওয়া যাবে।
ভাড়াঃ
শেরপুর থেকে অর্কিড পর্যটন প্রকল্প পর্যন্ত রিক্সা ৬০/- বা ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা ১২০/- ও সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় ১৫০/- যাওয়া যাবে।
লোকাল ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা ও খরচঃ :
রেন্ট-এ কার-এর জন্যে। হযরত ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন রেন্ট-এ কার-এর জন্যে। ফোন: ০১৭১৪৯৯০৩৪৭ অথবা সুমন ভাইয়ের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন: ০১৭৩৪১৮৩০৩৫। সিএনজি চালিত অটো রিক্সার জন্য হাসমত এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফোন: ০১৭২৭ ৫৮০ ৪৯০।
ক্যাম্পিং এর সুবিধা আছে কি নাই?
ক্যাম্পিং এর সুবিধা নাই। কারন সন্ধার পর পাহাড়ে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ।
কোন ঋতুতে গেলে কি কি সুবিধা/অসুবিধা?
ভ্রমনের জন্য মূলত শরৎকাল, শীতকাল আর বসন্তকাল বেস্ট.. বর্ষাকালে গেলে একটু পর পর বৃষ্টি তে ভিজতে হতে পারে, যথেষ্ট কাদা পাবেন আর কিঞ্চিত জোকের সমস্যা আছে পাহাড়ে।
কি কি জিনিস সাথে নেয়া প্রয়োজন? ও টিপসঃ
তেমন কিছুই নেয়া লাগবে না, সব-ই পাওয়া যাবে, এরপরও যদি কিছু লাগে তাহলে শেরপুর শহরে পাওয়া যাবে। আপনার একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিষ ও ঔষধ সাথে নিন। একটি ভ্রমন পিয়াসি সুন্দর মন ও মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার মন মানসিকতা সাথে নিন। টিপস ? লোকাল ট্রান্সপোর্ট এর ক্ষেত্রে ড্রাইভার এর সাথে দর কষা কসি করুন। পাহাড়ে আদিবাসীদের ছবি তুলবেন না। দলছুট হয়ে পাহাড়ে ঘুরবেন না। সীমান্ত এলাকায় নো-ম্যান্স ল্যান্ড এর দিকে যাবেন না। সর্বোপরি কোনপ্রকার ইন্ডিয়ান মাদক ক্রয়/ গ্রহন/পরিবহন/সীমান্ত এলাকায় এ সংক্রান্ত কোন দালাল এর সাথে কথা বলা বা লেনদেন করবেন না। সন্ধার আগে পাহাড়ি এলাকার স্পট গুলো ত্যাগ করবেন।
ধৈর্য ও মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য সকল কে ধন্যবাদ। আরও তথ্য লাগলে আমার ইনবক্স এ নক করতে পারেন, যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
হ্যাপি ট্রাভেলিং !!!
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬