somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণেচ্ছা জাগতেই পারে!

২৮ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তোমরা যে হিজাবের সমালোচনা করছো তারে আমরা পর্দা বলি না। যা আল্লাহ নারীর প্রতি ফরজ করেছেন। এই সময়ে নারীরা যে হিজাব পড়ে তাকে আমি চরম ঘৃণার চোখে দেখি। কারণ, এই হিজাব নারীকে আবৃত রাখে না; বরং আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। আবেদনময়ী দেখায়। যৌনাগ্রহ আরো বেড়ে দেয়। এই হিজাব এখন একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোগল সার্চ করতে পারেন। আসলেই চরম আশ্লীল লাগে। মাইন্ড ইট।


ইসলামে নারীর চুল ঢেকে রাখার কথা বলা হয়েছে। হিজাবের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তনু গং’রা যে হিজাব পড়ে তা কিন্তু প্রকৃত হিজাব বা পর্দা না। এই হিজাব ইসলাম সমর্থন করে না। হিজাব অথবা পর্দার ব্যাখ্যাটি আরো ভালো করে পড়া উচিত। জানার ব্যর্থতা আছে। এই হিজাবে যৌন ইচ্ছে জাগবেই তো! কী সেক্সি দেখায়!! আসলেই যৌনবস্তু, ধর্ষণেচ্ছা জাগতেই পারে!!!

নারীর পর্দার ব্যাপারে পবিত্র কুরআনুল কারিমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
‘হে নবি! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে এবং মুমিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে এবং তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।’’-সূরা আহযাব : ৫৯

এ আয়াতে নারীর প্রতি একটি বেসিক নির্দেশনা এসেছে। আর তা হল, নারী যেনো বাইরে বের হলে তার ‘জিলবাব’ দ্বারা চেহারা ও শরীর আবৃত করে, পর্দার সাথে বের হয়, অশালীনভাবে বের না হয়। নতুবা ‘রুগ্ন’ পুরুষ তার প্রতি লোলুপ দৃষ্টিতে তাকাবে এবং কুদৃষ্টি দিবে। তাফসীরে কুরতুবীতে (১৪/২৪৩) ‘জিলবাব’র অর্থ করা হয়েছে, এমন বড় চাদর যা দ্বারা মুখমন্ডল ও পূর্ণদেহ আবৃত করা যায়। সুতরাং যে হিজাবের প্রচলন আমরা দেখতে পাই তা উপরোক্ত ব্যাখার উর্ধে। এই স্টাইলিশ হিজাবের পক্ষে আমরাও না। ইসলাম সাপোর্ট করে না। না জেনে ভুল তথ্য ছুঁড়ে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করার আহ্বান রাখছি।

কয়েকটি হাদিস
হজ্বের সফরে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা.-এর ঘটনা। ইহরামের কারণে তাঁরা চেহারা খোলা রাখতেন, কিন্তু যখন পুরুষরা নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তখন মুখমন্ডল আবৃত করে ফেলতেন। পুরুষরা চলে যাওয়ার পর নেকাব তুলে ফেলতেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৭৫৭।
কতক নারী আছে যারা পোষাক পরেও নগ্ন, যারা (পরপুরুষকে) আকর্ষণকারী ও (পরপুরুষের প্রতি) আকৃষ্ট। যারা বুখতী উটের হেলানো কুঁজের মতো মাথা বিশিষ্ট। এরা জান্নাতের সুবাস পর্যন্ত পাবে না।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২১২৮; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮৬৬৫।
কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে মিলিত হলে নিঃসন্দেহে তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান। (অর্থাৎ তখন শয়তান তাদের মনে কুমন্ত্রণা দেয়)।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৭১।
আরেক বর্ণনায় এসেছে, মাহরাম পুরুষ ছাড়া যেন কোনো নারী কোনো পুরুষের সাথে নির্জনে মিলিত না হয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৪১ ।


ইসলাম সবসময়ই নারীকে যথাযথ মর্যাদা দিয়েছে। সম্মান দিয়েছে। একমাত্র ইসলামই দিতে পারে নারীর প্রকৃত অধিকার। কিন্তু তাকে মানতে হবে ইসলামের কিছু বিধিবিধান। আল্লাহ পুরুষদের তাদের যৌনাঙ্গ হেফাজতের ব্যাপারে যেভাবে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন ঠিক নারীকেও বলেছেন, তার দৃষ্টি অবনত রাখতে, যাতে তার মনেও পুরুষকে দেখে কোনো কুমন্ত্রণা না আসে এবং নারীকে আরও বলেছেন, সে যেনো তার সৌন্দর্য্য ও সাজসজ্জা পর-পুরুষের সামনে প্রকাশ না করে। সবাই যদি স্রষ্টার এই নির্দেশনা মেনে চলে তাহলেই বাঁচবে ধর্ষণ নামীয় এ অন্যায় থেকে।

আচ্ছা কিছু প্রশ্ন করি, আপনি তনু’র মতো এভাবে আর ক’টা হিজাবি নারী ধর্ষিত হতে দেখছেন? নিকাব বা বোরকা পড়া কোনো নারী আদৌ ধর্ষিত হতে শুনেছেন কি? ইসলাম কী বলেছে তোমরা হিজাব পড়ে নির্জনে ছুটো? পুরুষহীনা নারী জঙ্গলে ট্যুার দাও? বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা শরীয়তের মানদণ্ড হতে পারে না।

উল্লেখ্য, সোহাগী জাহান তনু কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে। পরিবারের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে বাসার কাছেই অলিপুর গ্রামে প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাতেন তিনি। মাথায় হিজাব পরতেন তনু। গত রোববার বিকেলে প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়াতে ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তনু। পরে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাশের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছ থেকে সোমবার সকালে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

আমার এ লেখা মোটেও তনুকেন্দ্রিক না; মূলত হিজাব সংক্রান্ত একটি লেখা। দয়া করে কেউ কষ্ট পাবেন না। তনু হত্যাকাণ্ডে আমি, আমরা সবাই কষ্ট পেয়েছি। ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ক্যান্টনমেন্ট’র মতো একটি নিরাপত্তা বেষ্টিত জাগায় এমন কাণ্ড কেউ মেনে নিতে পারে না। ধর্ষণের পর হত্যা! কতো বড় কথা। শরীরের পশম পর্যন্ত প্রতিবাদ করে। ক্ষোভ করে। আরেকটি তনুকাণ্ড যেনো না ঘটে। আর যেনো কোনো নারী ধর্ষিতা না হয়। এই প্রত্যাশা রাখছি। আমাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×