হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারের ফলে শব্দ দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শব্দদূষণ নীরব ঘাতক। পরিবেশ ও দূষণমুক্ত জনস্বার্থ রক্ষা নিশ্চিতকরণের প্রেক্ষাপটে শব্দদূষণ মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যার রূপ পরিগ্রহ করেছে। নদী-খাল-বিল এবং অন্য জলাশয়গুলো দূষণ ও দখলের ঘৃণ্য প্রতিযোগিতার ফলশ্রুতিতে অবধারিত বায়ুদূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শব্দদূষণ। আসলে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা। নদী দখল ও দূষণ এবং বিপর্যয়কর বায়ু ও মারাত্মক শব্দ দূষণের কবলে পড়ে ঢাকার পরিবেশ ভয়ঙ্কর দূষিত হয়ে পড়ছে। ফলে এসব এলাকায় বসবাসকারী অসহায় মানুষগুলোকে প্রতিনিয়ত প্রচন্ড স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে। বুড়িগঙ্গার ভয়ঙ্কর দূষিত পানি, ভারি সীসাযুক্ত বাতাস, মারাত্মক শব্দদূষণ এবং ত্রুটিপূর্ণ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে মহানগরী ঢাকাকে। বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে মেগাসিটি ঢাকা এবং পরিস্থিতি বিস্ফোরণোন্মুখ। ঢাকায় বায়ু দূষণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে এ মাত্রা আরও বেশি। এসব এলাকার নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্যের কোটায়। এছাড়া শব্দ দূষণ কোথায়ও সহনীয় মাত্রায় নেই। দূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় এসব জায়গায় বিশুদ্ধ পানি ও বায়ুর অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। বাংলাদেশে এখন ভয়ঙ্কর দূষণের নাম হচ্ছে শব্দ দূষণ। সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি শব্দের মধ্যে বাস করতে হচ্ছে রাজধানী ঢাকার মানুষদের। ৮০ ডেসিবেলের বেশি মাত্রার শব্দ স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নিরাপদ শব্দমাত্রা ৪৫ ডেসিবেল। ৬০ ডেসিবেলের বেশি মাত্রার মধ্যে দীর্ঘদিন বাস করলে শ্রবণশক্তি কমে যায়। হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বৃদ্ধি পায়। শিশুদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা হয় বাধাগ্রস্ত। শব্দদূষণের কারণে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, মাথাধরা-মাথাব্যথা এমনকি অস্বাভাবিক আচরণ করার মতো নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৬