দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা সমুদ্রবন্দরের অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এই বন্দর দিয়ে জাহাজ থেকে মালামাল খালাসের প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম চলতি বছরের ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে। কলাপাড়া থেকে কুয়াকাটা সড়কের ৩ নদীতে ৩টি সেতুও যোগাযোগের জন্য খুলে দেওয়া হবে ডিসেম্বরেই। তাই আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই বরগুনার উপকূলীয় এলাকা পর্যটন ও অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিচ্ছে। তবে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রার কার্যক্রম পুরোদমে ২০১৮ সালে শুরু হলে এবং ততদিনে পদ্মা সেতুও চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পুরো উপকূলীয় এলাকা হয়ে উঠবে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট এবং জিডিপিতে প্রভাব বিস্তারকারী একটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক জোন। পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্ন যখন এই স্তরে তখন পায়রা বন্দরকে ঘিরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এজন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছে সরকার। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরে শুধু জেটি নয়, থাকছে মোট ২০ ধরনের অবকাঠামো। পায়রা বন্দরে টার্মিনাল-জেটির পাশাপাশি তেল শোধনাগার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, অর্থনৈতিক অঞ্চল, এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট অঞ্চল, বিমানবন্দর এবং জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতের ব্যবস্থাও থাকবে। পায়রা বন্দরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর প্রাকৃতিক গভীরতা। এ গভীরতায় সহজেই গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সম্ভব। ২০২৩ সালের মধ্যে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বন্দরের প্রাথমিক কার্যক্রম সীমিত আকারে শুরুর সময় নির্ধারণ করেছে সরকার। দ্বিতীয় ধাপে ২০১৮ সাল নাগাদ এ বন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক আমদানি-রপ্তানি পণ্য ওঠানামা শুরুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) এর আন্তর্জাতিক জাহাজ এবং বন্দর স্থাপনা নিরাপত্তা কোড বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে পায়রা সমুদ্রবন্দর গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তরিত হলে পর্যটন ও অর্থনীতির উজ্জ্বল সম্ভাবনা হবে আরো বেগবান, আর সে প্রত্যাশাই বাংলার জনগণের।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১০