বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝে অসংখ্য প্রবাল রাশি মিলে মিশে একাকার হয়ে তৈরি করেছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। সাগরের সুনীল জলরাশি আর নারিকেল গাছের সারি এ দ্বীপকে দিয়েছে অপার সৌন্দর্য। প্রকৃতি দুহাত মেলে সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে এখানে। বালুকাময় সৈকত, প্রবালের প্রাচীর আর কেয়া গাছের সারি এ দ্বীপকে দিয়েছে আলাদা এক বৈশিষ্ট্য যা আর কোথাও নেই। উত্তাল সাগরের নোনা জল যখন আছড়ে পড়ে কেয়া গাছের ফাকে, ঝিরি ঝিরি বাতাসে তৈরি হয় সফেদ ফেনা, সে এক মাতাল করা দৃশ্য। এটি সত্যিই একটি ভিন্ন প্রকৃতির দ্বীপ। একদিকে যেমন প্রবাল প্রাচীর ঘিরে রেখেছে, অন্যে দিকে বালুকাময় সৈকত প্রহর গুনছে আপনার অপেক্ষায়। সমুদ্রজলে অনায়েসেই আপনি করে নিতে পারেন স্নান কাজটি। এই সৈকতের লাল কাকড়া আর নুরি পাথর আপনাকে নিঃসন্দেহে আকৃষ্ট করবে। বাংলাদেশে যতগুলো দৃষ্টিনন্দন পর্যটন এলাকা রয়েছে সেন্ট মার্টন তার ভীতর অন্যতম ও নান্দনিক। দ্বীপটি দৈর্ঘে প্রায় ৮ কিলোমিটার এবং প্রস্থে কোথাও ৭০০ মিটার আবার কোথাও ২০০ মিটার। এখানে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল মোটেল ও কটেজ রয়েছে। ব্লুমেরিন, অবকাশ পর্যটন সহ বেশ কয়েকটি উন্নতমানের হোটেল রয়েছে। কটেজগুলোও চমৎকার। কটেজের বারান্দায় বসে চা খেতে খেতেই উপভোগ করতে পারবেন সাগরের মায়াবীরূপ। এখানকার তাজা রুপচাঁদা মাছের ফ্রাই আপনার জ্বীভে জল আনবেই। আপনি চাইলে জেলেদের কাছ থেকে তাজা মাছ কিনে এনে হোটেলে ভেজে নিতে পারেন। আর একটি বিখ্যাত জিনিস এখানে পাবেন, সেটা হলো শুটকী। নানান প্রজাতী মাছের হরেক রকম শুটকী এখানে পাওয়া যায়। খুব সহজে ও সুলভ মূল্যে এখান হতে শুটকী সংগ্রহ করতে পারেন। এখানে রাস্তা বলতে একটাই মুল সড়ক। হাতে গোনা কয়েকটি স্থপনা তৈরি হয়েছে তবে সেগুলো পরিকল্পিত নয়। বালুচরের পরিবেশ নোংরা, অস্বাস্থ্যকর মনে হল। স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণ একটু সচেতন হলেই এই দ্বীপকে আমরা অত্যাধুনিক এবং বিশ্বের দৃষ্টি নন্দন পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে তুলতে পারব।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮