এখন আর শব্দ দেখতে পাই না। শব্দ খুঁজে পাই না। জানালার ভাঙা কাঁচটার মধ্য দিয়ে হু হু করে আসা হিম বাতাসের মতই শব্দরা বেরিয়ে গেছে অন্য কোনও এক চোরা ফাটল দিয়ে।
চোরা ফাটলে হঠাৎই হয়ত চমকে যায় কোনও আলো। আবারো অন্ধকার। ফাটলটা হারিয়ে ফেলি। শব্দরা আবার পালাতে থাকে।
অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াই। সবদিক শূণ্য। হাতে ঠেকে না কিছুই। শব্দেরা হারিয়ে গেছে। শব্দ অথবা অক্ষর অথবা যতি চিহ্ন আর সাদা স্পেসের বিরতি কিংবা বিন্দু, তিনটা ডট । অদৃশ্য হয়েই আবার হয়ত শব্দেরা ফিরে আসছে পর্দার আড়ালে । এদিকে পর্দাটা স্বচ্ছ হতে গিয়েও হতে পারছে না। অর্ধস্বচ্ছ অবস্থাতেই ফেরত পাঠাচ্ছে শব্দগুলোকে। শব্দগুলোকে পর্দার আড়াল থেকে বের করতে পর্দায় ফুটো করা দরকার আর এজন্য চাই সুঁচাগ্র ছেদন যন্ত্র । অথবা তার চেয়েও ছোট, চায়ের লিকার বাঁধা থাকে যে ব্যাগে, তার মত । ব্যাগেপোড়া চা-পাতার মত শব্দগুলোকে বন্দী করে ছেড়ে দেই টগবগে ফুটন্ত কেটলীর ভেতরে । কিংবা কেটলীর নলের বাষ্পতে ক্রমশ সিক্ত হওয়া শব্দগুলোকে দেখবো কাঁচা সোনা অথবা ধূসর কিছু রঙ ছড়াতে।
*
অদৃশ্য এক লাইনে অদ্ভুত এক রেলগাড়ি চলছে। বগির সংখ্যা অনির্দিষ্ট। ছোট ছোট স্কয়ার, রেক্ট্যাঙ্গুলার বাক্স চেপে তৈরি হচ্ছে এক একটি বগি। বগিগুলোকে বিচ্ছিন্ন দেখা গেলেও আসলে কিন্তু বিচ্ছিন্ন নয়। একসাথে বেশকয়েকটি মিলে তৈরি হচ্ছে গাড়ি।
চলছে গাড়ি। কখনো উলটো তীরের বাক্স চেপে বগিগুলোকে অদৃশ্য করে ফেলা হচ্ছে। কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে রেলপথ অসমাপ্ত। তখন অসমাপ্ত পথ থেকে দিক পরিবর্তন করে আবার নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটছে গাড়ি।
চলছে গাড়ি,
কুঁ ঝিক ঝিক শব্দ তুলে
ভাবনাগুলো দিচ্ছে পাড়ি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৫২