কোথা থেকে এল হ্যালোউইন?
ব্রিটিশ আইলস সংলগ্ন এলাকায় ছয়টা জাতি রয়েছে যাদের বলা হয় সেলটিক জাতি। এই সেলটিক জাতিগুলোর রয়েছে নিজস্ব আচার-আচরণ এবং উৎসব। এ রকমই একটা সেলটিক উৎসবের নাম Samhain (সা-উইন)। এ উৎসবটা বছরের আলোকিত অংশের সমাপ্তি শেষে অন্ধকার অংশে প্রবেশের শুরু নির্দেশ করে। সা-উইন শব্দটা এসেছে প্রাচীন আইরিশ থেকে। যার ইংরেজি অর্থ হচ্ছে ‘End of Summer’। অক্টোবরের ৩১ তারিখ থেকে নভেম্বরের ১ তারিখ পর্যন্ত গ্রীষ্মের সমাপ্তি হিসেবে এই উৎসব পালন করা হতো। এটাকে কিছুটা নবান্নের সাথেও তুলনা করা যায় কারণ এতে নবান্নের মত “হার্ভেস্ট ফেস্টিভেল”-ও থাকে। অনেকের মতে এ উৎসব সেলটিক নববর্ষ উদযাপনের উৎসবও, কেননা নভেম্বর থেকে তাদের ক্যালেন্ডারে নতুন বছর শুরু হতো।
সেলটিক অধিবাসীরা মনে করতো ৩১ অক্টোবর এবং ১ নভেম্বরের মাঝে যে রাত, সেটা বছরের আলোকিত এবং অন্ধকার অংশের মাঝে একটা সীমানা যেখান দিয়ে খুব সহজে অন্যজগতের অধিবাসী তথা মৃত আত্মারা আমাদের জগতে চলে আসতে পারে। তারা বিশ্বাস করতো এই আত্মাদের কেউ কেউ ভালো, আবার কেউ কেউ খারাপ। এই খারাপ আত্মাদের থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্যে তারা এই দিনে আত্মার ছদ্মবেশ নিত। অর্থাৎ বিভিন্ন মুখোশ এবং পূর্ণাঙ্গ পোশাকে নিজেদের ঢেকে তারাও মৃত আত্মা সেজে যেতো। তারা মনে করত, “সাহেইন”, মৃত্যুর দেবতা, আঁধারের রাজ পুত্র, সব মৃত আত্মাদের ডাক দেয়। এই দিন জীবিতদের বিশ্ব যোগদান করতে মৃত আত্মাদের অনুমোদন করে। একটি লোককাহিনী থেকে বর্ণিত আছে যে সমস্ত মৃত ব্যক্তিরা ৩১শে অক্টোবর রাত্রিতে জীবিতদের বিশ্বে আসে আগামী বছরের নতুন দেহ নেওয়ার জন্য। এজন্য গ্রামবাসীরা এই খারাপ আত্মাদের থেকে বাচাঁর জন্য ব্যবস্থা নেয়। এই প্রথাটি ছিল পবিত্র বেদিতে আগুন জ্বালানো হতো বা বন-ফায়ার (যেটি নতুন বছরের আগমন প্রতীক ছিল তাদের জন্যে)। এছাড়া চলতো বিভিন্ন রিচুয়ালস। পরবর্তীতে একেকটা সেলটিক জাতি তাদের মত করে এই উৎসবে যোগ করেছে নূতনত্ব। যদিও এটা সেলটিক উৎসব, তবে বেশী জনপ্রিয় ছিল আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডে-এ। ফলে এই দুই জাতির সংযোজন ছিল মুখ্য। যেমন আইরিশ দ্বীপের জনপ্রিয় স্পিরিট জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন ছাড়া এখন এই উৎসবই কল্পনা করা যায় না। এছাড়া ট্রিক-অর-ট্রিট বলে একটা খেলা রয়েছে যেটা যুক্ত হয়েছে স্কটল্যান্ড থেকে। এই খেলায় বাচ্চারা মুখোশ এবং পোশাকে নিজেদের ঢেকে বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার এবং উপহার তোলে।
নামকরণ
সা-উইন এর পাশাপাশি এই সময়ে আরেকটি উৎসব পালিত হতো ক্রিশ্চিয়ান ধর্মাবলম্বী রাষ্ট্রগুলোতে। এ উৎসবের নাম ছিল অল সেইন্টস ডে। জগতের যাবতীয় জানা এবং অজানা সেইন্ট দের স্মরণে এই উৎসব পালিত হতো নভেম্বরের ১ তারিখে। এই উৎসবেরই আরেকটা নাম ছিল “অল হ্যালোস”। পরবর্তীতে “অল হ্যালোস” এবং “সা-উইন” একত্রিত হয়ে “হ্যালোউইন” নামের উৎপত্তি। অল সেইন্টস ডে ধর্মীয় উৎসব হলেও হ্যালোউইন কিন্তু কোন ধর্মীয় উৎসব নয় এবং এটা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই পালন করে থাকে।
হ্যালোউইন দেশে দেশে
যদিও হ্যালোউইন-এর সূচনা আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড থেকে তবে বর্তমানে এই উৎসব ছড়িয়ে পড়েছে সারা পৃথিবীতে। প্রথমে সম্পূর্ণ বৃটেনে এবং তারপর বৃটেন সংলগ্ন মেইনল্যান্ড ইউরোপে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিস্তার ঘটে নর্থ আমেরিকা তথা যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যানাডায়। এই দুই দেশে হ্যালোউইন ছড়িয়ে পড়ায় কালক্রমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এই উৎসব।
১৮৪৫ থেকে ১৮৪৯ সন পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে হয়েছিল “গ্রেট ফেমিন” বা “আইরিশ পটাটো ফেমিন”। এই দুর্ভিক্ষে আয়ারল্যান্ডের প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ মারা যায় এবং আরো এক মিলিয়ন মানুষ দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা সাথে করে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সংস্কৃতি। তাদের নিয়ে যাওয়া দুটো জনপ্রিয় ফেস্টিভেলের একটা সেইন্ট প্যাট্রিক’স ডে এবং অন্যটা হ্যালোউইন। ১৮৭০ সনে স্কটিশরা প্রথমে ক্যানাডা এবং পরে আসে যুক্তরাষ্ট্রে। তারা তখন নিয়ে আসে হ্যালোউইনের তাদের সংস্করণ। এভাবে ধীরে ধীরে আটলান্টিকের পূর্ব পাড় থেকে হ্যালোউইন পৌঁছে যায় পশ্চিম পাড়ে।
এশিয়ার কিছু দেশ যেমন জাপানে বেশ উৎসব উদ্দীপনার ভেতর দিয়ে হ্যালোউইন উদযাপিত হয়। বাংলাদেশে কি হ্যালোউইন পালন করা হয়? আমি শুনেছি কিছু কিছু এলাকায় হয় খুব সীমিত আকারে, তবে আমার চোখে পড়েনি।
উদযাপনের উপকরণ এবং ঐতিহ্য
হ্যালোউইনের অন্যতম ঐতিহ্য হল বাড়ি সাজানো। এ সময় বাড়ির দরজায় কাপড় দিয়ে বানানো আত্মার ছবি টাঙ্গানো, বাড়ির সামনে আত্মার প্রতিকৃতি বানানো এবং আত্মার জন্য তোরণ ইত্যাদি তৈরি করা এক ধরণের রেওয়াজ। হ্যালোউইনের এক মাস আগে থেকেই বাচ্চারা শুরু করে দেয় তাদের তোরজোড়। অক্টোবরের শেষ নাগাদ দেখতে দেখতে পুরো এলাকা হয়ে উঠে উৎসবমুখর।
হ্যালোউইন সজ্জা
জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন
হ্যালোউইনের সবচেয়ে জনপ্রিয় আত্মা জ্যাক-ও-ল্যানটার্ন। আক্ষরিক অর্থেই এটা হ্যালোউইনের প্রতীক। পামকিন কেটে তৈরি করা এই ভূত বা আত্মা ছাড়া হ্যালোউইন যেন কল্পনাই করা যায় না। এই ভূতকে নিয়ে রয়েছে দারুণ সব গল্প-গাঁথা। একটা শোনা যাক। জ্যাক ছিল আয়ারল্যান্ড দ্বীপের একজন মদ্যপ এবং অলস কৃষক। এক রাতে দ্বীপের কোন এক কান্ট্রিসাইডের রাস্তা ধরে মদ্যপ অবস্থায় চলছিল জ্যাক। এমন সময় সে রাস্তায় শুয়ে থাকা একটা শয়তানকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দেয়। আর যায় কোথায়? শয়তান তখনই তাকে নরকে নিয়ে যেতে উদ্যত হয়। জ্যাকও বুঝতে পারে তার সময় শেষ হয়ে এসেছে। তাই সে শেষ ইচ্ছা স্বরূপ শয়তানকে অনুরোধ করে তাকে যেন পাবে নিয়ে মদ্যপানের সুযোগ দেয়া হয়। শয়তান সেই অনুরোধ রক্ষা করে। কিন্তু জ্যাক পাবে গিয়ে মদ খেতে খেতে এক ফন্দি আঁটে। প্রচুর পান শেষে যখন বিল আসে তখন জ্যাক শয়তানকে বলে এবার বিল দাও। কিন্তু শয়তান কোথা থেকে টাকা পাবে? শেষে জ্যাক শয়তানকে বুদ্ধি দেয় যে তুমি একটা রৌপ্যমুদ্রায় পরিণত হও। আমি সেটা দিয়ে বারটেন্ডারকে বিল পরিশোধ করে ফিরে আসছি। শয়তানও এই বুদ্ধিতে রাজী হয়ে যায়। এরপর সে যখন কয়েনে পরিণত হয়, তখন জ্যাক তাকে পকেটে ভরে বন্দি করে ফেলে। জ্যাকের পকেটে একটা ক্রুশ ছিল যার কারণে শয়তান আর বের হতে পারছিল না। তখন শয়তান জ্যাকের সাথে এই চুক্তি করে যে জ্যাক যদি তাকে ছেড়ে দেয় তাহলে জ্যাককে সে ১০ বছর জীবন দান করবে। জ্যাকও সেই মত রাজি হয়ে শয়তানকে মুক্ত করে দেয়।
অন্য একটা গল্পে আছে, একদিন জ্যাক দেখে শয়তান এসে হাজির হয়েছে। তাকে মৃত্যুর দেশে নিয়ে যেতে। জ্যাক তখন ফন্ডি আটে, আর শয়তানকে বলে সে একটা আপেল খেতে চায়। শয়তান রাজী যায়। তারপর নিজেই গাছে চড়ে আপেল পাড়তে উঠে। জ্যাক তখন তার ক্রুশ নিয়ে গাছের গোড়া সিল করে দেয় যাতে শয়তান কোন দিন আর গাছ থেকে না নামতে পারে। শয়তান কাকুতি মিনতি করে জ্যাকের সাথে চুক্তি করতে চায়। জ্যাক বলে তাকে কোন দিনই শয়তান নরকে নিতে পারবে না, এই শর্তে মুক্তি মিলবে। শয়তান রাজী হয়।
আরো বেশ কিছু বছর পর জ্যাক মারা যায়। তখন জ্যাকের আত্মা আনন্দের সাথে হ্যাভেনে ঢুকতে গেলে তাকে দ্বার রক্ষী ঢুকতে বাধা দেয়। তাকে কারণ দেখানো হয়, সে পৃথিবীকে এত এত মদ্যপান এবং খারাপ কাজ করেছে যে তাকে হ্যাভেনে ঢুকতে দেয়া যাবে না। এবার জ্যাকের আত্মা যায় হেলে। কিন্তু শয়তান যেহেতু তাকে কথা দিয়েছিল, তাই সেও আর হেলে ঢুকতে দেয় না জ্যাককে। ফলে জ্যাকের আত্মাকে ভালো এবং মন্দের মাঝামাঝি একটা ফাঁকা জায়গায় বন্দি করা হয় এবং সেখানে জ্বালিয়ে দেয়া হয় কয়লার আগুন। সেই থেকে জ্যাককে আমরা দেখতে পাই একটা বৃত্তাকার বস্তুর মধ্যে লালচে-কমলা আলোয় বন্দি হয়ে থাকতে।
একটা জ্যাক-ও-ল্যান্টার্ন
ট্রিক-অর-ট্রিট
হ্যালোউইন-এর সময় “ট্রিক-অর-ট্রিট” একটা খুবই জনপ্রিয় খেলা। স্কটল্যান্ড থেকে এ খেলার উৎপত্তি হলেও এটা এখন সব স্থানেই খেলে থাকে বাচ্চারা। তারা আত্মার ছদ্মবেশ নিয়ে বিভিন্ন বাসায় যায় এবং প্রশ্ন করে “ট্রিক-অর-ট্রিট?” যদি আপনি বলেন ট্রিট তারমানে আপনি তাকে চকোলেট-ক্যান্ডি বা উপহার দিয়ে পুরস্কৃত করবেন। আর যদি বলেন ট্রিক, তবে বাচ্চারা কোন একটা দুষ্টুমি করে আপনাকে ভয় দেখাবে, বা আপনাকে গান কিংবা কবিতা শোনাবে এবং তার উপহারটা অর্জন করে নেবে। কোন কোন জায়গায় মৃত আত্নাদের শান্তি কামনা করে গানও গেয়ে থাকে তারা।
হ্যালোউইন কস্টিউম সজ্জিত একদল শিশু ট্রিক-অর-ট্রিটে বেরিয়েছে
বনফায়ার
বনফায়ার হচ্ছে ক্যাম্প-ফায়ারের মত একরকম আগুন যা জ্বালানো হয় উৎসবের আয়োজনে, এবং বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট পোড়ানো হয়। এটা বেশ বড় করে করা হয়। এটাও একটা সেলটিক প্রথা। সেলটিক গ্রামবাসীরা খারাপ আত্মাদের থেকে বাচাঁর জন্য এই প্রথার আয়োজন করত। প্রথাটি ছিল পবিত্র বেদিতে আগুন জ্বালানো। আগুন জ্বালানো হত মৃত গবাদী পশুর হাড়-গোড় থেকে।
অ্যাপল ববিং
অ্যাপল ববিং হচ্ছে একটা মজার খেলা যাতে একটা জলাধারে আপেল ছেড়ে দেয়া হয়, আর প্রতিযোগীরা (সাধারনত বাচ্চারা) হাত পেছনে বেধে মুখ দিয়ে আপেল সংগ্রহ করতে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে যে যত বেশি আপেল পাবে সেই বিজয়ী হবে।
এছাড়াও হ্যালোউইনে বিভিন্ন রকম খেলার আয়োজন করা হয়। আমরা ছোটবেলা স্কুলের প্রতিযোগিতায় খেলতাম চামচ দৌড়, চকলেট লম্ফ মনে পড়ে? ঠিক সেরকম।
ভুতুরে ট্যুর!
হ্যালোউইনের রাতে বন্ধুরা মিলে ভুতুরে যায়গায় বেড়াতে বের হয় আমেরিকান দেশগুলোতে। কিছু কিছু যায়গায় এসব হন্টেড যায়গা ভাড়াও দেয়া হয় সেরাতের জন্য। মূলত অ্যাডভেঞ্চারের শখেই এটা করে তারা।
এছাড়া হ্যালোউইনে হরর মুভি দেখা, বন্ধুদের ভয় দেখানো ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয় ঐতিহ্য।
হ্যালোউইনের খাবার
হ্যালোউইনের খাবারের তালিকাটা বেশ মজার এবং বৈচিত্রপূর্ণ। বার্মব্রাক হ্যালোউইনের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খাবার যা এসেছে আয়ারল্যান্ড থেকে। এটা হচ্ছে একরকম ফ্রুট কেক, যেটা তৈরীর সময় খামিরে দিয়ে দেয়া হয় একটা আস্ত রিং (আংটি) একটা কয়েন, একটি কাঠি, একটা মটর দানা, এবং একটুকরো কাপড়। আইরিশরা বিশ্বাস করে, এর প্রতিটাই এক একটা অর্থ বহন করে। যদি আপনি খেতে গিয়ে মটর দানাটি পান, তাহলে সে বছর আপনার বিয়ে হবে না। যদি কাঠি পান, তবে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হবে। যদি কাপড় পান, তাহলে দুর্ভাগ্যের শিকার হবেন। যদি কয়েন পান তবে সম্পদশালী হবেন, আর যদি আংটি পান তবে কিছুদিনের ভেতরেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন।
বার্মব্র্যাক কেক
এছাড়াও আয়ারল্যান্ড থেকে আরো এসেছে ম্যাশপটাটো দিয়ে বানানো কলক্যান্যান। ক্যান্ডি এ্যাপেল হ্যালোউইনের অন্যতম প্রতীক যার উৎপত্তি মূলতঃ নর্থ আমেরিকায়। প্রথমে এটাকে বাচ্চাদের খেতে দেয়া হত না। এর একটা ব্রিটিশ সংস্করণ রয়েছে যাকে বলা হয় টফি এ্যাপেল। এটা বানানো হয় আস্ত আপেলটাকে পুরোপুরি চিনির সিরাপে ডুবিয়ে। এখন এর সাথে বিভিন্নরকম বাদাম ও যোগ করে হয়। ক্যান্ডি কর্ন এবং ক্যান্ডি পামকিনও এসেছে নর্থ এ্যামেরিকা থেকে। এছাড়াও সোল কেক হ্যালোউইনের জন্যই তৈরি একটা বিশেষ খাবার। মোটকথা যতরকম মিষ্টি মন্ডা হতে পারে, সবই খাওয়া হয় হ্যালোউইনে!
ক্যান্ডি অ্যাপল
হ্যালোউইনের বিভিন্ন খাবার দাবার
হ্যালোউইন কস্টিউম
হ্যালোউইনের সবচেয়ে জনপ্রিয় পোশাক সম্ভবত কঙ্কাল। কালো কাপড়ের উপর কঙ্কাল আঁকা কস্টিউমটা দেখলে মনে হয় আপনি নিজেই কঙ্কাল হয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও ভ্যাম্পায়ার, ডাইনি, জাদুকর, ভুত, শয়তান, কি নেই হ্যালোউইনের পোশাক তালিকায়?? এখন অবশ্য সুপারন্যাচারাল ক্যারেকটার দের পাশাপাশি সুপারহিরো, জলদস্যু, প্রিন্স-প্রিন্সেসের পোশাক বা নিজের তৈরি করা পোশাক পড়ারও চল দেখা যায়। বৈচিত্রময় পোশাক পড়াটা হ্যালোউইনের অন্যতম ঐতিহ্য। এই পোশাক পড়াটা অনেক আগে থেকে চলে আসলেও বিংশ শতাব্দীতেই জনপ্রিয় হয়েছে বেশী। এরকম পোশাক পড়ে কোন কোন যায়গায় বন্ধুরা মিলে পালন করা হয় হ্যালোউইন কস্টিউম পার্টি।
হ্যালোউইন সাজে সজ্জিত একদল শিশু
ট্রিভিয়া
পুরো আমেরিকায় সারা বছর যত চকোলেট-ক্যান্ডি বিক্রি হয়, তার এক চতুর্থাংশ বিক্রি হয় হ্যালোউইনের সময়।
হ্যালোউইন নিয়ে সাহিত্য, মুভি
হ্যালোউইন নিয়ে একটি জনপ্রিয় বই হচ্ছে “দ্য বুক অফ হ্যালোউইন” এটি লিখেছেন Ruth Edna Kelley ১৯১৯ সালে। বইটা এখান থেকে পড়তে পারবেন।
হ্যালোউইন নিয়ে অনেক মুভি আছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বোধহয় ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া জন কার্পেন্টারের “হ্যালোউইন"। সময় করে দেখে ফেলতে পারেন।
শেষ কথা
হ্যালোউইন কিন্তু কোন ধর্মীয় উৎসব নয় এবং এটা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই পালন করে থাকে। আমার কাছে এই উৎসবটা বেশ উৎসাহদায়ক এবং মজার বলে মনে হয়। এটা অবশ্য আমার নিজস্ব মতামত! বাংলাদেশে বৃহৎ আকারে এটা পালন করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার।
সবশেষে দেখুন হ্যালোউইন নিয়ে গুগলের করা আজকের ডুডল ভিডিওটি।
হ্যাপি হ্যালোউইন!!!
আরো দেখুনঃ (রেফারেন্স)
http://en.wikipedia.org/wiki/Halloween
http://www.sachalayatan.com/niazmc/35997
http://www.history.com/topics/halloween