আমরা সবাই কম-বেশী চা খাই (মানে পান করি)। এমনও অনেকে আছেন যারা ভাতের চেয়ে চা বেশী খান (যেমনঃ আমি)। চা আবার হয়ও বেশ কয়েক রকমের। চা তো আমরা সবাই পান করি, কিন্তু বানাতে পারি কয়জন?
তো আসুন আজকে চা বানানো শিখি। এই পোষ্ট শেষে আপনি অনায়াসে ২/৩ রকম (বেশিই পারবেন কম না!) চা নিজে বানিয়ে খেতে (থুক্কু পান করতে) পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে শুরু করা যাক...
প্রথমে দেখে নেই কি কি লাগবে...
উপকরণঃ চা পাতা অথবা টি ব্যাগ, চিনি, আদা, পানি ফোটানোর পাত্র, কাপ, ছাকনি, কন্ডেন্সড মিল্ক, লেবু।
১। লাল চা বা রঙ চাঃ
লাল চা বা রঙ চা বা র' চা আমাদের অতি পরিচিত। এর সাথে আদা মিশিয়ে দিলেই হয়ে গেল আদা চা।
প্রণালীঃ (২ জনের জন্য)
একটি পাত্রে তিন কাপ পানি নিয়ে স্টোভে তুলে দিন। ফুটে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আদা চা খেতে চাইলে শুরুতেই পানিতে সামান্য আদা কুচি করে মিশিয়ে দিন। এবার একটি ছাকনি নিয়ে তাতে ১ চা চামচ চা পাতা নিন। এরপর সাবধানে গরম করা পানিটুকু আস্তে আস্তে ছাকনির উপরে ঢালতে থাকুন। ( নিচে কাপ রাখতে আবার ভুলবেন না যেন! ) দেখুন লাল চা তৈরী হয়ে গেছে চিনি মিশিয়ে পান করুন।
বিকল্প প্রনালীঃ আগের প্রক্রিয়ায় পানি গরম করে নিন। গরম পানি কাপে ঢেলে তাতে একটি টী ব্যাগ ডুবিয়ে দিন। মনমতো রঙ হলে টী ব্যাগ টি উঠিয়ে ফেলে চিনি মিশিয়ে পান করুন আপনার চা!
২। লেবু চাঃ
লেবু চা পান করতে যে কী মজা, যারা এখনো টেস্ট করেননি, আজই টেস্ট করুন, না হলে মিস করবেন।
প্রণালীঃ লাল চা'র মত করে পানি গরম করে নিন। (অবশ্যই আদা দেবেন না) আগের মত করে লাল চা বানিয়ে নিন। এবারে একটি প্রমাণ সাইজের লেবু নিয়ে এর চারভাগের একভাগ অংশ কেটে নিন। লেবুর রস এক কাপ চায়ে মিশিয়ে চিনি দিয়ে নাড়ুন। তৈরী হয়ে গেলো লেবু চা।
৩। দুধ চাঃ
চা খোর দের প্রিয় চা!
প্রনালীঃ (২ জনের জন্য)
আগের মত পানি গরম করে নিন (অবশ্যই আদা ছাড়া)। ছাকনি তে দেড় চা চামচ চা পাতা নিন। দুটো কাপের অর্ধেক পর্যন্ত চায়ের লিকার ঢালুন (লিকার কড়া হলে ভালো)। এবারে উভয় কাপে এক চা চামচ কন্ডেন্সড মিল্ক ঢেলে নাড়ুন। ও হ্যা, চিনি মেশাতে ভুলবেন না। তৈরী হয়ে গেলো দুধ চা।
বিকল্প প্রণালীঃ পানি গরম করে কাপের অর্ধেক পরিমাণ ঢালুন। ১ চা চামচ কন্ডেন্সড মিল্ক মেশান। একটি টী ব্যাগ কাপে নিয়ে মন মতো রঙ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। চিনি মিশিয়ে পান করুন।
৪। বরফ চা! বা আইস টীঃ
প্রণালীঃ (২ জনের জন্য)
চার গ্লাস পানি নিয়ে অর্ধেক পানি আলাদা করে অন্য পাত্রে নিন। বাকী অর্ধেক পানি চুলায় চাপিয়ে এর মধ্যে ৩ টি টী ব্যাগ ছেড়ে দিন। ফুটতে দিন। এদিকে যে পানিটুকু রেখে দিয়েছিলেন, সেটা নিয়ে তাতে এক কাপ পরিমাণ চিনি দিন ( আইসড টী তে চিনি বেশী লাগে)। পুরো একটি লেবুর রস এই পানিতে গুলে চিনিসহ ভালোমত মিশিয়ে নিন। এই পানিটুকু গরম করবেন না! চুলায় দেয়া পানি ফুটে উঠলে নামিয়ে নেড়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে টী ব্যগ গুলো তুলে ফেলুন। এরপর আগের পানির সাথে চুলা থেকে নামানো লিকার যুক্ত পানি মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে নাড়ুন। ঠিকমত মিশে গেলে বরফের কিউব দিয়ে পরিবেশন করুন।
বিকল্প প্রনালীঃ চার গ্লাস পানি একটি পাত্রে নিয়ে চুলায় চাপিয়ে দিন। একটি খালি পাত্রে এক কাপ চিনি, একটি লেবুর রস এবং তিনটি টী ব্যাগ নিন। পানি ফুটে এলে যে পাত্রে চিনি, টী ব্যাগ ও লেবুর রস আছে, সেই পাত্রে সাবধানে ঢালতে থাকুন। এরপর ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। মেশানো হয়ে গেলে মিশ্রনটি কে ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হয়ে এলে আইস কিউব যোগ করে পান করুন। আপনি চাইলে লেবু ছাড়াও আইসড টী বানাতে পারেন।
৫। সবুজ চা বা গ্রীন টীঃ
ক্যান্সার প্রতিরোধক। খুবই উপকারি চা।
প্রণালীঃ সবুজ চা'য়ের প্রণালী দিয়েছেন ব্লগার আকাশ_পাগলা। প্রণালীটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
৬। মরিচ চাঃ
ইহা একটি হুমায়ূন আহমেদ প্রযোজনা!
প্রণালীঃ সঠিক রেসিপি জানিনা। একবার মরিচ কেটে পানিতে দিয়ে লাল চার মত করে বানিয়েছিলাম, ভয়ংকর একটা বস্তু হয়েছিলো, তাই খেতে চাইলে নিজ দায়িত্বে খাবেন!!!
চা তো হয়ে গেল, এখন চা কি এমনি এমনি খাবেন???
চলুন দেখি চায়ের সাথে কি কি খাওয়া যায়!
চানাচুর
ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ
ক্রীম রোল
টোস্ট
এবং খবরের কাগজ
তাহলে আজকেই শুরু করে দিন চা বানানো!
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ (বিবাহিতদের পুরুষদের জন্য)
আপনি যত ভালোই চা বানাতে জানেন না কেন, স্ত্রী কে কখনোই তা জানতে দেবেন না!
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ চা বানাতে গিয়ে কোন প্রকার ভেজালে পড়লে লেখক কে দায়ী করা চলবে না, নেভার এভার