somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আংটি এবং মাইকেলের আত্মা (ii)

২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আংটি এবং মাইকেলের আত্মা (ii)
.
প্রচন্ড শীতেও মারিয়া ঘামাচ্ছে। সে
অনেক বড় ভুল করে ফেলেছে।
মাইকেল কে তার খুন করা উচিৎ
হয়নি। মাইকেল নির্দোষ। তার বাবা
মায়ের আসল খুনি তার বাবার প্রিয়
বন্ধু এলভিন।
শুধু একটি আংটির জন্য কেউ তার
প্রিয় বন্ধুকে খুন করতে পারে?
ভাবতেই মারিয়া ঘৃনা আর প্রতিশোধের
আগুনে পুড়ে মরছে।
এইদিকে তার নিজের প্রতিও ঘৃনা হচ্ছে।
কি দোষ ছিল মাইকেলের। বেচারা
সত্যিই মারিয়াকে ভালোবাসতো।
.
একটি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মারিয়া
উঠে দাঁড়ালো।
তার চোখে মুখে প্রতিশোধের তীব্র
আগুন। যে করেই হোক মারিয়াকে
তার বাবা মায়ের খুনের প্রতিশোধ
নিতেই হবে।
নিউইয়র্কের তুষার ঢাকা হীম শীতল
পথ ধরে মারিয়া হেঁটে চলেছে।
উদ্দেশ্য তার বাবার বন্ধু এলভিনের
বাড়ি। আর সাথে নিয়ে যাচ্ছে তীব্র
ঘুমের ঔষধ।
.
অনেক্ষন হাঁটার পর অবশেষে মারিয়া
পৌচে গেল এলভিনের বাড়ি।
প্রায় দু'তিন বার কলিং বেল চাপতেই
এলভিন এসে দরজা খুলে দিল।
প্রথমে মারিয়াকে দেখে হকচকিয়ে
উঠলেও নিজেকে সামলে নেয় এলভিন।
হাঁসি মুখে মারিয়াকে ভেতরে আসতে
অনুরোধ করে। মারিয়াও হাঁসি
মুখে ভেতর ঢুকলো।
বেশ গোছালো একটি ঘর। এর আগেও
বাবার সাথে এ বাড়িতে অনেক
বার এসেছে মারিয়া। কিন্তু আজ
বাবা নেই, ভাবতেই মারিয়ার বুকের
ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো।
.
এইদিকে এলভিন মারিয়া আর তার
জন্য ড্রিংকস তৈরি করে নিয়ে এলো।
এলভিন খুব শান্ত প্রকৃতির মানুষ।
কথা খুব কম বলে। এসেই মারিয়াকে
ড্রিংকস নিতে অনুরোধ জানায়।
মারিয়া খেয়াল করে এলভিন ড্রিংকসের
ভেতর বরফ দেয়নি।
মারিয়া এলভিনকে অনুরোধ করে
সে যেন তার জন্য এক টুকরো
বরফ নিয়ে আসে।
এলভিন মনে মনে বেশ অবাক
হয়ে যায়। এই শীতের মধ্যেও মারিয়া
বরফ চাচ্ছে। সে কি বাবা মায়ের
মৃত্যু শোকে পাগল হয়ে গেল!
ভাবতে ভাবতে এলভিন ভেতরের
রুমে গেল বরফ আনতে। আর এ
সুযোগে মারি তীব্র ঘুমের ঔষধ
মিশিয়ে দিল এলভিনের ড্রিংকসে।
.
কিছুক্ষণ পরেই এলভিন মারিয়ার
জন্য বরফ নিয়ে ফিরে এলো।
মারিয়া হাঁসি মুখেই ড্রিংকস হাতে
নিল। এলভিনও ড্রিংকস হাতে
মারিয়ার পাশে বসলো।
এলভিন প্রথমেই মারিয়ার বাবা মায়ের
মৃত্যুর জন্য খুব শোক প্রকাশ
করলো, কিন্তু মারিয়া কথা গুলো
কানেই নিলনা। তার মন শুধু একটা
কথাই বলছে, প্রতিশোধ চাই প্রতিশোধ।
.
প্রতিশোধের কথা ভাবতে ভাবতেই
মারিয়া তার ড্রিংকসে চুমুক বসায়...
.
.
.
দীর্ঘক্ষণ পরে মারিয়ার জ্ঞান ফিরে।
সে নিজেকে আবিষ্কার করে একটি
বদ্ধ ঘরে। তার হাত-পা বাধা।
মারিয়া একটুও নড়তে পারছে না।
মারিয়ার হুস ফিরেছে দেখেই এলভিন
মারিয়ার দিকে এগিয়ে আসে।
একটি চেয়ার টেনে বসেই এলভিন
হাঁসতে হাঁসতে বলে,
"হা হা হা... শুন মেয়ে তুমি কি আমায়
এতটাই বোকা ভেবছ যে আমি তোমার
চালাকি বুঝতে পারবো না?
হা হা হা! আমার তখনি সন্দেহ হয়েছিল
যখন তুমি প্রচন্ড শীতের মধ্যেও বরফ
চাইছিলে। আমার ড্রিংকসে কি
মিশিয়েছ হুম? ঘুমের ঔষধ?"
.
মারিয়া চুপচাপ বসে আছে। বুকভরা
প্রতিশোধের আগুন জ্বললেও এখন
তার নিজেকে বিষন অসহায় মনে হচ্ছে।
এইদিকে এলভিন বলেই চলেছে,
"হ্যাঁ মেয়ে তুমি ঠিকি ধরেছো। তোমার
মা-বাবাকে আমি মেরেছি। কি করবো
বলো। কতবার বলেছি আংটিটা
আমায় দিয়ে দাও, আমি এর পরিবর্তে
দশ হাজার ডলার দিতে রাজি।
কিন্তু শুনলো না।
আমার তখন খুন করা ছাড়া কোন
উপায়ই ছিল না।
কিন্তু তোমাকে এসব বলছি কেন
জান? কারণ তোমারও তোমার
মা-বাবার মতো অবস্থা হতে চলেছে।"
.
এই বলে এলভিন ধারাল চুরি হাতে
মারিয়াকে মারতে এগিয়ে এলো।
মারিয়া ভয়ে চোখ দু'টো বন্ধ করে
ফেলেছে।
ঠিক তখনি মেঝেতে ধপাস করে
শব্দ হলো। মারিয়া ভয়ে ভয়ে চোখ
খুললো। চোখ খুলে দেখে এলভিন
ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আর তার
পাশেই দাঁড়িয়ে আছে রক্তাক্ত
মাইকেলের আত্মা।
মাইকেলের আত্মা কিছুক্ষণ মারিয়ার
দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে
রইলো। পরক্ষণেই মারিয়ার
হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দিল।
মারিয়া আর একটুও সময় নিলনা।
সেই ধারালো চুরি দিয়ে মুহুর্তের
মধ্যেই এলভিনের দেহকে ক্ষতবিক্ষত
করে দিল।
মারা গেল এলভিন। মারিয়ার
প্রতিশোধের ফালা শেষ হয়েছে।
এবার তার প্রাক পুরুষ লিওনার্দো
ভিঞ্চির সেই আংটিটি উদ্ধারের
করতে হবে।
এই মূল্যবান আংটির জন্যেই এলভিন
মারিয়ার মা-বাবাকে হত্যা করেছে।
মারিয়া লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির
বংসধর।
.
মাইকেলের আত্মা মারিয়াকে পথ
দেখিয়ে নিয়ে গেল একটি বদ্ধ
আলমারির কাছে।
মারিয়াকে ইশারা করলো আলমারি
খুলতে। মারিয়া আলমারী খুলতেই
দেখতে পায় আলমারির
উপরের সেলে স্বযত্নে রাখা একটি লাল
রঙের বাক্স। মারিয়া দেখেই চিন্তে
পারে আংটির বাক্সটি।
বাক্সটি নিয়ে মারিয়া খুলে দেখে।
সব ঠিকঠাক আছে।
মারিয়া মাইকেলের আত্নার দিকে
কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।
.
পরক্ষণে দৃষ্টি সরাতেই,
হঠাৎ মারিয়ার নজরে পড়ে আলমারির
মধ্যের সেলে একটি নীল ডায়েরী।
ডায়েরীটি দেখেই মারিয়ার মনেপড়ে
ছোট বেলায় তার বাবার হাতে
ডায়েরীটি দেখেছিল।
মারিয়া হাত বাড়িয়ে ডায়েরীটি হাতে
নিল। ডায়েরীর কভারে লেখা,
"দ্যা হিস্ট্রি অব লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি।"


writer:
fb:
Absent-minded Rafee
(Akram H Rafee)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অচেনা মানুষ আপনাদের দীপাবলীর শুভেচ্ছা

লিখেছেন আজব লিংকন, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:২১



আমারই বুকে না হয় শিবেরই বুকে
নাচো গো... ও নাচো গো...
পবন দা'র গলায় ভবা পাগলার গানটা কারা জানি ফুল ভলিউমে বাজিয়ে গেল। আহ.. সে সুরের টানে বুকের মাঝে সুখের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×