-আব্বু আব্বু জঙ্গি আসলে কারা.?
.
নিজের ৬ বছরের বাচ্চা ছেলের মুখে
এই ধরণের প্রশ্ন শুনে কিছুটা বিচলিত
হয়ে গেলেন দেশের স্বনামধন্য নেতা
নাসির উদ্দিন শাহ।
তারপরও তিনি নিজেকে সামলে
নিয়ে জবাব দিলেন;
--যারা মাদ্রাসায় পড়ে তারাই জঙ্গি।
::
শিশুটি অবুঝ। বাবার কথাই সে বিশ্বাস
করে নিল।
ক্সমে ক্সমে নাসির শাহের বাণীটি সারা
দেশে ছড়িয়ে পড়লো।
"যারা মাদ্রাসায় পড়ে তারাই জঙ্গি।"
:
কথাটি পত্র পত্রিকা এবং মিডিয়াতে
প্রকাশ হতে লাগলো।
কিন্তু ক্ষমতাশীলদের বিরুদ্ধে যেতে
কেউ রাজি হল না। সবাই নিরবে
সহ্য করে গেল।
আর নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করে নিল
আসলেই জঙ্গিরা মাদ্রাসায় পড়ে।
দেশে মাদ্রাসা শিক্ষার হার দিনে দিনে
কমে যেতে লাগলো। মাদ্রাসায় পড়া
ছাত্র-ছাত্রীরা বিনা দোষেই নির্যাতনের
শিকার হতে শুরু করলো।
মাদ্রাসায় পড়লেই তাকে জঙ্গি উপাধি
দেয়া হয় পরিবার ও সমাজের কাছে
সে হয়ে ওঠে নিকৃষ্ট ব্যক্তি।
ফলে কেউ আর তাদের সন্তানকে
মাদ্রাসায় শিক্ষা দিতে চাইতো না।
::
এভাবে বন্ধ হয়ে গেল হাজার হাজার
মাদ্রাসা। শূন্যে নেমে গেল মাদ্রাসা
শিক্ষার হার। দেশে ঈমামের অভাবে
মসজীদ গুলোও বড় বিপাকে পড়লো।
বিদেশ থেকে হাজার হাজার মোল্লা
মুয়াজ্জিন আমদানি করা হলো শুধু
নামাজ পড়ানোর জন্য।
কিন্তু মসজীদে ততদিনে মুসল্লীর সংখ্যা
প্রায় শূন্যে নেমে গেছে।
যানাজা বাদেই মানুষকে দাফন করার
রিতি গড়ে উঠতে লাগলো।
::
কি করবে জনগন?
তারা তো অন্ধঁ, কানা, বধির! তারা তো
চোখ থাকতেও দেখেনা। কান থাকতেও
শুনেনা কানে।তারা যে নিরিহ প্রাণী!
ধনীব্যক্তিরা তাদের আত্মীয় স্বজনদের
যানাজা সম্পন্ন করতে বিদেশ থেকে
হুজুর আনতো কিন্তু মধ্যবিত্ত আর
গরীবরা.?
তাদের তো ধর্মই রইলো না....
::
এভাবে বছরের পর বছর পার হয়ে
যায়। নাসির শাহের মতো মতো নেতারাও
মারা যায়। কিন্তু তাদের বাণী রয়ে যায়
অক্ষত ভাবে।
এইদিকে ঈমান হারা বাঙালি জাতি
পরিণত হয় অভিশপ্ত জাতীতে।
বিদেশীরা বাংলাদেশের সাথে সকল
প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দিল।
বাংলাদেশের মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ
হয়ে গেল সারা বিশ্বে।
কিন্তু তখনো সবাই ঈমান আমল
হারা। ততদিনে ইসলামের শান্তির
ছায়া চলে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
::
তেমনি এক সময়;
সাগর উত্তাল হয়ে উঠলো,
যে কোনো মুহুর্তে বাংলাদেশ তলিয়ে
যাবে সাগর গর্বে।
সবাই জেনেও কিছুই করতে পারছেনা
মৃত্য মাত্রই সময়ের ব্যাপার!
কিন্তু তখনো সবাই ঈমান হারা....
তখনো আমরা বুঝতে পারিনি মাদ্রাসা
শিক্ষার গুরুত্ব কতক্ষানি?
:
কোনো এক সময় শুরু হল প্রচন্ড
ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস।
হু হু হু করে ধেয়ে আসলো ঝড়।
চারিদিক লন্ডভন্ড হয়ে গেল।
সাগর গর্বে বিলিন হয়ে গেল একটি
দেশ আর একটি অভিশপ্ত জাতী।
তখনি পৃথিবীর অপর এক কোনে
এক অবুঝ মুসলিম শিশু তার বাবাকে
প্রশ্ন করলো,
-বাবা বাবা, জঙ্গি আসলে কারা?
.
ছোট ছেলের মুখে এমন প্রশ্ন শুনে
বাবা নিজেও অবাক হয়ে গেলেন।
তারও উত্তরটি জানা ছিল না।
তাই তিনি ইন্টারনেটে চার্স করলেন
আর তখনি তার হোম পেইজে শো
করলো উত্তর "যারা মাদ্রাস পড়ে
তারাই জঙ্গি"...
::
পাশ থেকে শয়তান মুচকি হেঁসে উঠলো,
ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে আরো
একটি দেশ। অভিশপ্ত হতে যাচ্ছে
আরো একটি জাতী।
শয়তান হো হো করে হেঁসে উঠলো।
আর তখনি কড় কড় কড়াৎ শব্দে
দুরে কোথাও বাজ পড়লো।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭