somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

|||ফিরে আসার গল্প||| (মায়ের প্রতি ছেলের ভালোবাসা)

০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-আমি তোমাকে ভালোবাসি।
(প্রিয়ন্তি)
=কিন্ত! (নাজিম)
-কিন্তু কি?
=তোমাকে যদি আমার মায়ের পছন্দ
না হয় তবে তোমাকে আমি কখনো
আপন করতে পারবো না।
-ওহ এই কথা। তোমার মাকে আমি
নিজের মায়ের মত ভালোবাসবো
সেবা যত্ন করে তার মন যুগিয়ে নিব।
তিনি অবশ্যই আমাকে পছন্দ করবেন।
=কিন্তু?
-এভাবে আর এত কিন্ত কিন্তু করোনা।
আমাকে তোমার মায়ের সাথে দেখা
করাও। দেখাযাক কি হয়।
:
অতঃপর নাজিম প্রিয়ন্তিকে তার
মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
প্রথম দেখাতেই প্রিয়ন্তিকে তার
মা বেশ পছন্দ করলো। ফলে তাদের
এক হওয়ার আর কোনো বাধা রইলো
না। তাদের যেদিন বিয়ে সেই দিন
নাজিম প্রিয়ন্তিকে গোপনে বলেছিল,
"আমি আমার মাকে খুব ভালোবাসি
আশা করি তুমি আমাকে কখনো
আমার মায়ের থেকে আলাদা করার
চেষ্টা করবেনা। তুমি কথা দাও?"
.
প্রিয়ন্তি সেদিন নাজিমকে কথা
দিয়েছিল সে তার নিজের মায়ের
মতই শ্বাশুরিকে ভালোবাসবে।
সে তার কথা রেখেও ছিল। ভালোই
চলতে লাগলো তাদের সাংসারিক
জীবন। এক বছরের মাথায় তাদের
ঘর আলোকিত করে জন্ম নিল একটি
ফুটফুটে ছেলে সন্তান। তাদের সুখের
সংসার আরো সুখের হয়ে উঠলো।
.
দেখতে দেখতে সাত বছর কেটে গেল।
নাজিম প্রিয়ন্তির ছেলে রিহাম ছয়
বছরে পা দিয়েছে।
প্রিয়ন্তির ইচ্ছা ছেলেকে সে ডাক্তার
বানাবে। অনেক আগে থেকেই সে
তার ছেলের জন্য ভবিষ্যত পরিকল্পনা
করে রাখলো। এখন প্রিয়ন্তির
একটিই সখ ছেলেকে শহরে কোনো
ভালো স্কুলে ভর্তি করাবে।
কিন্তু এতো ছোট ছেলেকে তো আর
আলাদা রাখা যায় না তাই নাজিমকে
শহরে বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য চাপ
দিতে লাগলো।
নাজিম প্রথমে রাজি না হলেও পরে
রাজি হয়। কিন্তু বাদসাধে তার মা'কে
নিয়ে। প্রিয়ন্তি কিছুতেই নাজিমের
মা'কে তাদের সাথে নিতে রাজি
হচ্ছিল
না। এই নিয়ে পারিবারিক অশান্তির
সৃষ্টি হয়। প্রিয়ন্তি ভুলে যায় তার
ওয়াদার কথা। অনেক দফারফার
পর নাজিমের মা বলেন, "তিনি
গ্রামের মানুষ আর তিনি গ্রামেই
থাকতে চান। তাই নাজিম যেন
প্রিয়ন্তিকে নিয়ে শহরে ভাড়া বাসায়
চলে যায়।"
এইদিকে নাজিম পারিবারিক
কলহে একদম দুর্বল হয়ে পড়েছিল
তাই অগ্যতায় পড়ে প্রিয়ন্তিকে নিয়ে
শহরে যেতে বাধ্য হয়।
.
ভাড়া বাসায় ওঠার পরে দিনটা কোনো
রকমে ব্যস্ততায় কাটায় নাজিম।
কিন্তু রাতের বেলায় একদমই ভালো
লাগছিলনা তার। মায়ের কথা খুব
মনে পড়ছিল আর ঘুমও আসছিলনা।
দীর্ঘক্ষণ পর তার চোখে তন্দ্রা নেমে
আসলো। আর সে স্বপ্নে দেখলো,
"বিশাল একটি নদী। নদীর একপাড়ে
নাজিম দাঁড়িয়ে আছে আর অপর
পাড়ে তার মা। তার মা বিষন খুশি।
হেঁসে হেঁসে যেন কার সাথে কথা
বলছেন।
নাজিম তার মাকে দেখে মা-মা বলে
ঢাকলো কিন্তু তার মা শুনতে পেল
না। নাজিম তার মায়ের কাছে যাওয়ার
জন্য নদীতে যাপ দিয়ে সাঁতার কাটার
চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু না।
সে পারছেনা। কোনো অদৃশ্য এক
শক্তি তাকে পানির নিচে টেনে নিয়ে
যাচ্ছে। আর সে ঐ অবস্থাতেও মা-মা
বলে চিৎকার করতে লাগলো।"
.
অদ্ভুত এই স্বপ্ন দেখে নাজিমের ঘুম
ভেঙে গেল। নিজেকে তার অপরাধী
মনে হচ্ছে। বাকি রাতটাতে আর
একটুও ঘুমাতে পারলোনা সে।
ভোরবেলা ফজরের নামাজ পড়েই
নাজিম গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।
বাড়ি পৌছাতে প্রায় সকাল ১০টা
বেজে গেল। বাড়ি পৌছেই নাজিম
মা-মা বলে চিৎকার দিতে লাগলো।
তার চিৎকার বাতাসে মিলিয়ে গেল।
কারো কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেল
না। নাজিম ধীর পায়ে তার মায়ের
রুমের দিকে এগিয়ে গেল।
হালকা ধ্বাক্কা দিতেই রুমের দরজা
খুলে গেল। কিন্তু কোথায় তার মা।
রুম তো একদম খালি।
মূহুর্তেই নাজিমের বুকের ভেতরটা
কেমন যেন করে উঠলো।
ঠিক তখনি সে তার পিঠে কারো
মৃদু স্পর্শ অনুভব করলো। পিছনে
ফিরে দেখতে পেল তার মা।
নাজিম তার মায়ের পা-দুটো জড়িয়ে
ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
"মা তুমি আমায় মাফ করে দাও।
তোমাকে ছেড়ে যাওয়া আমার উচিৎ
হয়নি মা। মা আমি তোমাকে অনেক
অনেক ভালোবাসি মা। অনেক অনেক
ভালোবাসি।"
নাজিমের মা ও আর নিজেকে সামলে
রাখতে পারলেননা। তিনিও অজর
ধারায় কাঁদতে শুরু করলেন।
তিনি তার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে
ধরলেন। আলতো তার ছেলের
মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
"আমি জানতাম বাবা তুই আমাকে
ছাড়া থাকতে পারবিনা। আমি
জানতাম তুই আমার বুকে ফিরে
আসবি।"
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অচেনা মানুষ আপনাদের দীপাবলীর শুভেচ্ছা

লিখেছেন আজব লিংকন, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:২১



আমারই বুকে না হয় শিবেরই বুকে
নাচো গো... ও নাচো গো...
পবন দা'র গলায় ভবা পাগলার গানটা কারা জানি ফুল ভলিউমে বাজিয়ে গেল। আহ.. সে সুরের টানে বুকের মাঝে সুখের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×