somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিমের ডজনখানেক রান্না-2ঃ ডিম ভাজা/ওমলেট/খাগিনা

০৯ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিম ভাজাও একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের রান্না। কোনো রেসিপি বইতেই পাওয়া যাবে না। তবে 'ওমলেট' বলে যে বাহারি নামটি চালু আছে তা পাওয়া যাবে সব বইতেই। আমরা তো আর পাঁচতারা হোটেলের শেফ হওয়ার আশা করছি না। নিতান্তই ক্ষুধায় উদরপূর্তির সহজ উপায় খুঁজছি। সেজন্য ডিম ভাজা আদর্শ। তো যে কয়টা ডিম খেতে চান সে কয়টা ভেঙে একটা পাত্রে নিয়ে ডিমের সাদা অংশ আর কুসুম ফেটে মেশাতে হবে। মেশানোর জন্য হুইস্কার ব্যবহার করতে পারেন। যত ভালো ফেটা হবে তত মজা হবে খেতে। এখন গরম ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে ফেটানো ডিম ছেড়ে দিয়ে আঁচ কমিয়ে বাদামী করে নিলেই হয়। একপাশ হয়ে গেলে আরেক পাশ উল্টে ভেজে নিন।

প্রশ্ন হচ্ছে ভাজতে হলে সাথে কি দেবেন। এ ক্ষেত্রে আপনার সৃষ্টিশীল হওয়ার বিপুল সুযোগ। সাধারণত: বাংলাদেশে আমরা যে ডিম ভাজা খাই তাতে ফেটার সময়ই কিছু পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি আর লবণ দেয়া হয়। এগুলো আমাদের জিহ্বায় খেলে ভালো। তবে এই বাড়তি মসলা-পাতি যোগ করার ক্ষেত্রে আপনার অবারিত স্বাধীনতা রয়েছে। জিনিসটা তো খাবেন আপনি। পানিপোচের লেখায় অরূপ মন্তব্য যোগ করেছেন তাতে তিনি নানারকম ধনেপাতা কুচি, টম্যাটো দেয়ার কথা বলেছেন। তেলের বদলে বাটার, ডিম ফেটানোর সময় পনির, রসুন গুঁড়া, বা ডিম ভাজার উপর শুকনো মরিচ গুঁড়া ছড়িয়ে দেয়ার কথাও বলেছেন। অবশ্যই আপনার রুচিমত এসব জিনিস যোগ করতে পারেন। তবে পরিমাণটার দিকে খেয়াল রাখবেন। বেশি মসলা মসলা হয়ে গেলে খেতে ভালো লাগবে না।

মসলার স্বাধীনতা যদিও আপনার রয়েছে তবু মনে রাখতে হবে যেসব মসলার কাঁচা গন্ধ সহ্য করা যায় না সেগুলো দেয়া ঠিক হবে না। কারণ ডিম ভাজতে খুব কম সময় লাগে। এর মাঝে মসলাগুলো খুব একটা ভাজা হয় না। কাঁচা কাঁচাই থাকে। অনেকে ধনে গুঁড়া দেন ডিমে। ব্ল্যাক পিপার গুঁড়াতো দেয়াই হয়।

আমি ডিম ভাজার সময় ডিম প্রতি এক চা-চামচ পানি দেই। এতে ডিমটা ফোলে ভালো। মুখে তুললেই সুড়ুৎ করে পেটে চলে যায়। একটু ভিনিগার বা সয়াসসও আমি দেই। (তবে উস্টার সস দেয়াটাই শাস্ত্রসম্মত)।

মসলা ছাড়াও নানা ধরনের সব্জি দেয়া যায়। যেমন টম্যাটো দিতে পারেন। তবে টম্যাটো দেয়াটা দু'ভাবে হতে পারে। যদি ফেটানো ডিমটা প্যানে দেয়ার পর টম্যাটো কুচি উপরে ছড়িয়ে দেন তাহলে একে আমরা ওমলেট বলবো। আর টম্যাটো কুঁচি (বা টম্যাটো পেস্ট) যদি ডিমের সাথে ফেটিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নেন, যখন ডিম আর টম্যাটো আলাদা করা যাবে না, তখন আমরা একে খাগিনা বা ইন্ডিয়ান ওমলেট বলি। খাগিনাতে বাটার তো দেবেনই একটু ইয়োগার্ট বা মিস্টি দইও দিতে পারেন।


তবে টম্যাটো ও অন্যান্য সব্জি যদি ডিম ভাজাতে যোগ করতে চান তবে আরেকটি উপায়ে তা করতে পারেন। তা হলো সব্জিগুলো ভেজে পরে ডিম গোলা এতে ঢালতে পারেন। বেশ জম্পেশ একটি ডিশ হবে এতে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে তেল গরম করে তাতে মাশরুম কুচি (বা আপনার পছন্দমত সব্জি) ভেজে নিন। টম্যাটো কুচি দিন। পরে ডিম গোলা ঢেলে দিয়ে ওমলেটটা বানিয়ে ফেলুন। স্পেনিস ওমলেটে ছোট আলুর টুকরো কেটে দেয়। জুখিনি বা অন্য সব্জি দেয়ারও চল আছে।

ভাত দিয়ে খাওয়ার জন্য ডিম ভাজতে গেলে আমি ডিম প্রতি আধা চা-চামচ গুঁড়ো দুধ দিয়ে ফেটিয়ে নেই। এতে নরোম কেকের মত বা পুডিং-এর মত স্বাদ হয়। যদি কাঁচা মরিচ না দেন এবং চিনি যোগ করেন তবে মিষ্টি মিষ্টি হবে। যা খেতে পারেন ডেজার্ট হিসেবে। বা যারা মিষ্টি মিষ্টি খাবার ভালোবাসে তাদের জন্য মজার।

ওমলেটকে আবার ওভেনে ঢুকিয়ে বেকড করাও হয়। একটা ওমলেটই যেক্ষেত্রে মেইন ডিশ সেক্ষেত্রে এই কায়দাই ইউরোপের দেশে চালু আছে। বেকড করার আগে ফ্রাইং প্যানে কিছুটা ভেজে বাদামী করতে পারেন। অথবা কাঁচা ডিম-সব্জির মিশ্রণটাই বেক করতে পারেন। বেকিং করতে পারেন দুই ভাবে। সরাসরি ওভেনে ঢুকিয়ে 180 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ডিমের ওপরটা বাদামী করে নামাতে পারেন।

বেকড্ ওমলেট করার আরেকটি পদ্ধতি হলো যে পাত্রে বেকিং করবেন সেটি আরেকটি পানি ভরা পাত্রের মধ্যে ভাসিয়ে দিন। এ পদ্ধতি সাধারণত পুডিং টাইপের খাবার বানাতে ব্যবহার হয়। সে ক্ষেত্রে ডিম গোলার সাথে সমপরিমাণ দুধও দেয়া হয় ওমলেট তৈরিতে। সব্জি না দিয়ে এতে পনির দেয়া হয়। আর জমাট বাঁধার সুবিধার্থে পাউরুটি কুচি করে দেয়া হয়। বেকিং পাত্রটি যেন তিন ভাগের এক ভাগ ডুবে থাকে। এখন মিশ্রণটি ঢেলে ওভেনে ঢুকিয়ে 180 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে বেক করুন। জমাট বাঁধলে বের করে নিন। তৈরি হয়ে গেলো সুস্বাদু বেকড চিজ (পনির) ওমলেট।

ডিম ভাজার মধ্যে বেকিংয়ের কথা আলোচনা করা ঠিক হলো না বোধহয়। তবে সুগৃহিনীরা পড়লে হয়তো নিরাশ হবেন না। টার্মিওনোলজিতে ভুল থাকতে পারে। ভুল থাকতে পারে পদ্ধতিতে। রান্না-বান্নায় কোনো ডিগ্রি নেই। যারা জানেন দয়া করে ভুল ধরিয়ে দেবেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×