বাংলাদেশের জন্মটা হচ্ছে দৈত্যকূলে প্রহ্লাদের মত। এই নোংরা উপমহাদেশের একটা ভয়ংকর রকমের মিশ্র, যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক এবং মোটামুটি অপদার্থ একটা জাতির একাংশ(পূর্বপাশের মানুষগুলো) কোন এক ঘোরের বশে অল্প কয়টা বছরের জন্যে মহান হয়ে দাড়িয়েছিলো। আমাদের পিতা-পিতামহের সৌভাগ্য তারা সে সময়ের মানুষ, আমাদের সৌভাগ্য আমরা তাদের সন্তান। হাজার বছরের বাঙ্গালির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবের সময়টুকুর এক প্রজন্মের সাক্ষী আমরাও। কিন্তু এ জাতি তো মহত্ত্ব ধারণে সক্ষম নয়, হাজার বছরের পানা ভরা পচা ডোবার মত ইতিহাসে যার একটা ঢেউ নেই, সে কিভাবে ধরবে প্রবল প্রমত্তা পদ্মার স্রোত? মুনীর চৌধুরী থেকে আহমদ শরীফ, হুমায়ুন আজাদ বা বিভ্রান্ত ছফা অথবা ভীষণ সরল আরজ আলি মাতুব্বর কিংবা জাহানারা ইমাম; আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ও কিছুটা সফলও হয়েছিলেন ৭১-এর আগে-পরে বাংলাদেশকে শকুনের ভাষায় 'হিন্দু-নাস্তিক-ধর্মহীন' ইত্যাদি করে তোলার; আর হঠাৎ মহান হয়ে ওঠা আমাদের পিতা-পিতামহের ভাষায় 'শুদ্ধ-সত্য-সুন্দর' বাংলা করে তোলার। বাংলাদেশের ও এ জাতির তা সহ্য হয়নি, অনেকদিন ধরে বাংলা মায়ের শরীরে নিজেই ঢুকিয়ে দিয়েছিলো ক্যান্সার, কারণ নিজের মা'কে খুন করা যায়, কিন্তু বিধর্মী হতে দেয়া যায় না, যেতে পারে না। কিন্তু কিছু ভুল সময়ে জন্ম নেয়া তরুণ ও বয়সে বৃদ্ধ হয়েও মননে সজীব যুবকেরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করেই যাচ্ছিল, হেরে যাওয়া এক লড়াই। গতকাল রাতে আর অপেক্ষা করতে না পেরে বাঙ্গালিরা, যারা আজ থেকে নিজেদের বাঙালি নয় বরং মুসলমান বলতেই গর্ব বোধ করবে; বাংলাদেশকে সহস্তে খুন করেছে। খুন করবার আগে সারা দেশ ও নষ্ট এ জাতিকে তওবা করিয়ে গেছে, আর যেন দিকভ্রষ্ট না হয় সে বিষয়ে হুমকিও দিয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশ আজ মৃত, তার নিথর দেহের আর কোন কষ্ট হবে না, প্রতিবাদ জাগবে না, নিশ্চল হয়ে থাকা তার লাশটা যে আস্তাকুড়ে তাকে ফেলা হয়েছে, সেখানেই থাকবে অনন্তকাল।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৫১