ঢাকার রাজারবাগে 'সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ' এর নামে ভন্ডামি করে অর্থ উপার্জন আর মামলাবাজির মাধ্যমে নিরীহ মানুষের জমিজমা হাতিয়ে নিলেও নিশ্চুপ ছিল সরকার। বরং হেফাজতে ইসলাম সহ সরকার বিরোধী ইসলামী দলগুলোকে দমনে রাজারবাগী মুরিদদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
প্রতারণার ফাঁদে পড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে শতশত মামলার আসামি হলেও তদন্তের নামে টালবাহানা করে সরকারি গোলন্দাজ বাহিনী পুলিশ। কিন্তু মসনদের শেষবেলায় রাজারবাগীর বিরুদ্ধে নড়েচড়ে বসেছে সরকার! এক ভন্ডপীরের পেছনে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে সরকারি পোষা পুলিশ ও মিডিয়া সন্ত্রাস! কিন্তু কেন?
১৯৯৮ সালের দিকে প্রকৌশলী বাবার মৃত্যুর পর রাজারবাগের বাড়িতে আস্তানা গড়ে নিজেকে পীর দাবি করে মুরিদের সংখ্যা বাড়াতে থাকেন ভন্ড দিল্লুর রহমান। মুরিদের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পত্তি নজরে এলে সেসব দখলের জন্য গড়ে তোলেন ‘মামলাবাজ সিন্ডিকেট’। পুলিশের সহায়তায় সারাদেশে ৮০০ ভুয়া মামলা করেছে। নানা ধরণের ভুয়া মামলায় ফাঁসিয়ে জোরপূর্বক দলিল নেয়া বা জবরদখল করা হয় জমিজমা। দখলী জমিতে সারাদেশে ৭৩টি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যেগুলো নানা ধরণের অপকর্মে ব্যবহার করা হয়। সেসব পুরনো কাহিনী।
সমস্যাটা হলো গত ২ বছর ধরে হিন্দু ধর্মের ব্যক্তিবর্গের নামে দেশের কয়েকটি জেলার নাম পরিবর্তনে স্বোচ্চার এই রাজারবাগী। জলসা/ওরশ ছাড়াও তার মালিকানাধীন ‘দৈনিক আল ইহসান’ ও ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত' নামে দুটি পত্রিকা ও অনলাইন ভার্সনে এ নিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এতে গোপালগঞ্জের নাম গোলাপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের নাম নূরানীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও-এর নাম নূরগাঁও, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম আমানবাড়িয়াসহ বিভিন্ন উপজেলা শহরের হিন্দু ধর্মীয় নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছেন তিনি। এতেই তেলেবেগুনে সরকারের সঙ্গে।
কারণ গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার অস্তিত্ব প্রতিবেশি দেশ ভারত। ভারতীয় সরকার ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা'র নোটে বাংলাদেশের সংসদ, পুলিশ, প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদপদবী দেয়া হচ্ছে হিন্দুদের মধ্যে ভারতে যারা যোগাযোগ করছেন তাদের।
ডিজিএফআই, এনএসআই, এসবি সহ গোয়েন্দাসংস্থাগুলো এগুলো মনিটরিং করছে এবং নিয়মিত ভারতকে তথ্য প্রদাণসহ যোগাযোগ রাখছেন। তাদের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা। যে কারনে রাজারবাগীর হিন্দু বিরোধী প্রচারণা ভারত এবং তাদের আওয়ামী বন্ধু ভাল চোখে দেখছে না। এতে গত ২ বছর ধরে রাজারবাগী এই ভন্ডপীরের জমিদখলের তদন্ত নিয়ে উঠপড়ে লেগেছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের হাতে গড়ে নাট্যকার সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এখন রাজারবাগে জঙ্গির গন্ধ পাচ্ছে। তারা বলছে, রাজারবাগীর মাধ্যমে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাদের সাথে প্রচারণার কারণে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে কেউ কেউ লোন উলফ ( জঙ্গিদের একক হামলার কৌশল) হামলা করতে পারে।
সরকার ও পুলিশ বাহিনীর প্ররোচণায় সম্প্রতি আরটিভিতে একটি প্রতিবেদন করা হয়। এর আগে একযোগে রাজারবাগীর বিরুদ্ধে নিউজ করে সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া ও পুলিশ নিয়ন্ত্রিত সাংবাদিকেরা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৪৩