দিন গুণলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বহু দূরে। ইভিএম নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে নির্বাচন কমিশনাররা। রাজপথ গরম রাখার ফর্মুলায় বিএনপি। বিদেশি হস্তক্ষেপ বা দেন-দরবারও বেশ চাঙ্গা। যেমনটি হয়েছিল ২০০৬ সাল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের গোধূলী লগ্নে।
সামনের নির্বাচনেও তেমনটি দেখা যাচ্ছে। কূটনৈতিক পাড়ায় দৌড়ঝাপ করে দারুন সময় কাটাচ্ছে বিএনপি। জামায়াতের সঙ্গেও প্রেম প্রেম খেলা শেষ পর্যায়ে। মার্কিনিরা প্রতিনিয়ত জনগণের অংশগ্রহন মূলক এবং সবকটি দলকে নির্বাচনী মাঠে দেখতে চাচ্ছে। এককথায় বিএনপিকে। র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞায় সুখের হাওয়া বিরোধী দলে। টার্গেট নির্বাচনকালীন সময়ে তত্বাবধায়ক বা জাতীয় সরকার যে কোন ফরমেটে বর্তমান শেখ হাসিনার সংসদ বিলুপ্ত করা। তাতেই বিএনপির ভোটের বাক্স ভর্তি!
তবে সরকার যে পশ্চিমাদের চাপে আছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাধারন সম্পাদকের দৌড়ে থাকা বা প্রেসিডিয়াম মেম্বার ড. আব্দুর রাজ্জাক বা আইনমন্ত্রী মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে কথা বলেন তখসন দৃশ্যত প্রমাণ পায়। বৃহস্পতিবার একযোগে হাসিনা সরকারের এই তিন মন্ত্রী একযোগে/একই সুরে বললেন তত্বাবধায়ক হবে না।
তার মানে তারা তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কঠিন মুখোমুখি। বিএনপির ক্রমবর্ধান আন্দোলনকে সরকার বিন্দুমাত্র ভয় না পেলেও পশ্চিমা চাপে তেমনটাই আওয়ামী রেজিমে স্পষ্ট হচ্ছে।
ওইদিন ওবিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চিন্তা মাথা থেকে নামিয়ে ফেলুন।
সোজা কথা সোজা পথে আসুন, নির্বাচনে আসুন। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে। সরকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন পালন করবে। সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। তাই বিএনপি যতই দাবি করুক না কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আর ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।
আর কম কথায় বেশি বোঝানো মানুষ ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশে কাজ করা বিশ্বের সব দেশের রাষ্ট্রদূত মিলে বললেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে না।
ড. আব্দুর রাজ্জাকের কথা প্রতীয়মাণ হচ্ছে রাষ্ট্রদূতরা তাদের চাপ দিচ্ছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে বিদেশিরা আমাদের চাপ দিবে কেন? উত্তর সোজাসাপ্টা পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে অর্থসহায়তা ছাড়াও প্রচুর বিনোয়োগ বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তারা চাইবে না রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে কোন দেশে অর্থ লগ্নি করতে।
২০১৩-১৪ সালে সারা দেশে নির্বাচনি সহিংসতা সেটাই মনে করিয়ে দেয়। প্রশ্ন হলো, এবারও কী আওয়ামী লীগ সরকার তাদের কারিশমা দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে কীনা!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৪