somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ফাইপির পথে

১১ ই জুন, ২০১২ রাত ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভোর হতে এখনো অনেক দেরী। বাইরে ধুম বৃষ্টি হচ্ছে। থেমে থেমে পিলে চমকে উঠার মত বাজ আছড়ে পরছে এদিক ওদিক। তার সাথে জোড় ঝড়ো বাতাসের তান্ডব। এমন দূর্যোগপূর্ন রাতে ঘুমানোর কথা চিন্তাও করা যায় না। জুলাই মাসের পাহাড়ে মাঘের শীত নেমে এসেছে। বেড়ার ফাঁক ফোঁকর দিয়ে ঠেলে ঠুলে আসা তীক্ষ্ণ ঠান্ডা বাতাস গায়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছে। আমি আর মাইনুল ভাই রামথন দাদার রান্না ঘরে চুলার কোনায় বসে প্রকৃতির এই বিষম রুপ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছি। রান্নাঘর টা বেশ বড়। পুরো বাসা টি বিরাট কয়েকটি গাছের গুঁড়ির উপর বানানো। কাঠের থাম গুলোতে আলকাতরা লাগানোর প্রয়োজন হয়নি, লাকড়ির ঝুল-কালিতেই তৈলাক্ত হয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বার্নিশ হয়ে আছে। ঘরের পূর্ব দিকের বাঁশের তৈরী তাকে শয়ে শয়ে সেভেন-আপের বোতলে পানি সংরক্ষন করে রাখা। ট্যাপ খুললেই তো আর এখানে ঘরে বসেই পানি পাওয়া যায় না। এত দূরের ঝিড়ি থেকে প্রতিদিন পানি নিয়ে আসা সত্যি খুব কষ্টকর। ঘরের আরেকদিকে রান্নার হাড়ি-পাতিলের তাক। আর পশ্চিম কোনে মাটির প্ল্যাটফর্মের উপর লাকড়ির চুলা জ্বলছে। চুলার ঠিক উপরেই ছোট ছোট সাপ আর শুকরের মাংস আর চর্বির শুটকি শুকানোর জন্য রাখা । চুলায় এক টুকরো লাকড়ি দিয়ে আগুন টাকে আরেকটু উসকে দিতেই দেখি গায়ে চাদর জড়িয়ে রামথন দা ঘরে ঢুকছে।

রামথন দা কে দেখলেই মনে হয় মাইকেল এঞ্জেলোর খোদাই করা কোন নীরেট পাথরের গ্রীক বীর। চওড়া বুক, পেটে ছয় ভাজ, রোদে পুড়ে যাওয়া তামাটে শরীর। আরাকানী চেহারায় ক্ষুদে ক্ষুদে চোখ ভর্তি সাহস। এই রামথন দা’র বয়স পঞ্চাষোর্ধ বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হয়। প্রথম যেবার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ঝর্নার খোঁজে এখানে আসি তখনই তার সাথে আমার পরিচয়। তখন থেকেই আমার কাছে এক বিস্ময় এর নাম রামথন দা। এদিকে আসলেই তার রোমাঞ্চকর সব শিকার কাহিনী, জানা-অজানা সব পাহাড়ে উঠা, ঝর্না বেয়ে নামা, পাইথন শিকারের জন্য গুহায় ঢুকার অভিজ্ঞতা মন্ত্র-মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকি। তার ঘরে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন শিকারের ট্রফি গুলো দেখে রোমাঞ্চিত হই। পাহাড়ে কোথায় কোন ঝর্না আছে, কথায় কোন গুহা আছে সব তার নখদপর্নে। এবারও তার কাছে এক ঝর্নার খোঁজে এসেছি।

“আগামীকাল কি দাদারা ফাইপির দিকেই যাবা?” চুলার পাশে বসেই রামথন দা জিজ্ঞেস করল।

মাইনুল ভাই বলল- হ্যাঁ দাদা। কালকেই বের হয়ে যাব। আজকে যেই বৃষ্টি পরলো, ঝরনাতে কালকে অনেক পানি পাব। এটা মিস করতে চাই না।

রাস্তা এখন একটু ভালো পাবা। পারার জুম এবার ঐ পাহাড়ের ঢালের আগ পর্যন্তই কাটা হয়েছে। ঝোঁপ-ঝাঁড় কেটে একদম পরিষ্কার করা রাস্তা।

রাস্তা তো রাস্তাই দাদা। রাস্তার আবার ভালো-খারাপ কি?

আমার শরীর ভালো থাকলে তোমাদের সাথে যেতাম, আগে রোজ শিকারে যেতাম। এখন আর শিকার ও পাওয়া যায় না এসব জায়গায় যাওয়া ও হয় না।

তোমার যাওয়া লাগবে না দাদা, তুমি শুধু একটা ম্যাপ একে দাও। সালেহীন ডায়রী আর কলম টা নিয়ে আসো, দাদা ম্যাপ এঁকে দিক।

খানিকটা গাঁইগুঁই করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেক কষ্টে আগুনের পাশ থেকে উঠে পাশের ঘর থেকে ডায়েরী আর কলম নিয়ে দাদার পাশে বসে পরলাম।

আচ্ছা দাদা জায়গাটার নাম ফাইপি হল কেন? আগুনে জমে যাওয়া হাতের তালু সেঁকতে সেঁকতে আমি জিজ্ঞেস করলাম।

ফাইপি অর্থ আমাদের ব্যোম ভাষায় হাতির বাধা। মানে যে রাস্তায় হাতি চলতে পারে না। অনেকদিন আগে ঐ পাহাড়ের খাঁজে আমরা একটা হাতি শিকার করেছিলাম। গভীর মনোযোগ দিয়ে ম্যাপ আঁকতে আঁকতেই জবাব দিল রামথন দা।

বলেন কি দাদা? হাতি? শিকারের গন্ধে আমি নড়েচড়ে বসলাম।

হ্যাঁ। যুদ্ধের ঠিক পর পর। একটা হাতি কিভাবে যেন এদিকে চলে আসে। জুমের পাহাড় সব তছনছ করে দিচ্ছিলো। আমার জুমের সব ভুট্টা একরাতেই শেষ করে দিয়েছিল। পুরো তিন রাত তিন দিন লেগেছিল শিকার করতে।

কি দিয়ে শিকার করলেন দাদা?

দাঁড়ান দাদা, গল্প একটু পরে শুরু করেন। আগে একটু চা বসাই। চা আর চুরুট ছাড়া শিকারের গল্প জমে না, সওৎসাহে চুলায় চা বসিয়ে দিল মাইনুল ভাই।





কড়া লিকারে চুমুক দিয়ে বললাম, এইবার বল দাদা- কিভাবে শিকার করলা?

চায়ে চুমুক দিয়ে দাদা শুরু করল তার হাতি শিকারের কাহিনীঃ

বর্ষা তখনও শেষ হয় নাই। সেপ্টেম্বর মাস ছিল বোধ হয়। হঠাৎ একদিন সকালে জুমে গিয়ে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল। জুমের সব ফসল মাটিতে মিশে গেছে। কোন ধান গাছ নাই। একটা ভুট্টা নাই। সব শেষ হয়ে গেছে।

গল্প বলতে বলতে রামথন দাদা যেন অতীতে ফিরে গেলেন। প্রচন্ড ক্রধেই বুঝি তার চোখ দুটো চকচক করছে। আর ক্রোধ হবেই না বা কেন? কত অমানুষিক পরিশ্রম করে তারা জুমের পাহাড় কেটে পরিষ্কার করে, বীজ বোনে, ফসল ফলায়। আগামী পুরো বছরের ভাত তাদের এই পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে। অনা-বৃষ্টি, অধিক বৃষ্টি, বন্য শুকর, ভাল্লুক , বুনো হাতি, ইঁদুর বন্যা- যে কারনেই ফসল নষ্ট হোক না কেন এর ভুক্তভোগী তো তাদের কেই হতে হয়। ভাতের অভাব কি জিনিস, দূর্ভিক্ষ কি জিনিস সেটা লিখে বুঝানো যাবে না। সেই পরিস্থিতিতে নিজে না পরলে কেউ বুঝবেও না। এইসব প্রতিকূলতার সাথে এখনো তাদের প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যেতে হয়। জীবনের এই সংগ্রামী কঠোরতাই তাদের বাঁচিয়ে রেখেছে।

পায়ের ছাপ দেখে বুঝলাম একটাই বুনো হাতি, কোন ভাবে দল ভেঙে খাওয়ার লোভে এদিকে চলে আসছে। পায়ের ছাপ দেখে কিন্তু চেনা যায় কোনটা শুকর, কোনটা মায়া হরিন, কোনটা ভাল্লুক। সেই রাতে গীর্জার সামনের মাঠে সবাইকে নিয়ে জরুরী মিটিং বসল। কারবারীকে বললাম হাতিটা খাবারের দেখা পেয়ে গেছে। তাড়ালেও ঐটা বারবার আসবে। যেভাবেই হোক হাতিটাকে মারতেই হবে। আর কেউ না হোক আমি একা হলেও ঐটারে শিকার করতাম। ঐ রাতেই পারার সব জোয়ান গাদা বন্দুক আর বল্লম নিয়ে হাতির খোঁজে বের হয়ে গেলাম। তিন রাত তিন দিন কেউ ঘুমাতে পারি নাই। সারারাত জেগে পাহারায় ছিলাম সব জুম পাহাড়ে। ঠিক একদিন পর মাঝরাতে হাতিটাকে দেখতে পাই। বিশাল শরীর, ছোট ছোট চোখ। মশাল জ্বালিয়ে সাথে সাথে সবাই হাতি টাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলি। আগেই প্ল্যান করেছিলাম, হাতিটাকে তাড়িয়ে প্রাংশায় নামিয়ে আনব আর যেই পাহারের খাঁজে কালকে তোমরা যাবা সেখানে হাতিটাকে আটঁকে ফেলব। ঐ খাঁজ টা আমার আগেই দেখা ছিল। ঐখানে অনেক আগে শিকার করতে যেতাম। ওখানে অনেক উল্লুক আর পাখি পাওয়া যেত। খাঁজের উপরের পাহাড়ে অনেক বিশাল বিশাল পাথর ছিল। আমরা কয়েকজন পাহারের উপরে চলে গেলাম। বাকীরা মশাল জ্বালিয়ে হাতি টাকে ধাওয়া দিয়ে পাহাড়ের খাঁজে নিয়ে আসলাম। হাতিটার কোন উপায় ছিল না। খাঁজের ভিতর আটকা পরে গেল। হাতি খাজের ভিতর যেই ঢুকলো উপর থেকে বিশাল পাথর গুলো বাকিরা গড়িয়ে নীচে ফেলে দিল। এভাবেই হাতিকে খাঁজে আটকে ফেললাম। বিশাল পাথর গুলো ডিঙগিয়ে পিছনে আর যাওয়ার রাস্তা ছিল না। তারপর কাজ সহজ হয়ে গেল। বন্দুক দিয়ে গুলি করে আর বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলি। কালকে গেলে দেখতে পাবা বিশাল বিশাল পাথর একটার উপর একটা পরে আছে।

শিকার করা হাতিটা কি করলেন পরে দাদা? আমি আর বিস্ময় চেপে রাখতে পারলাম না।

কেটে কেটে পারায় নিয়ে আসলাম। সারারাত নাচ-গান আর প্রার্থনা সঙ্গীত গেয়ে উৎসব করি। হাতির মাংস খেতে স্বাদ নাই। কেমন যেন রাবারের মত ছাবড়া ছাবড়া। বিস্বাদ মাংসের স্মৃতি মনে পরে যাওয়ায় রামথন দা’র মুখ বেঁকে গেল।

প্রথম প্রথম এসব শুনে গা কেমন যেন গুলিয়ে উঠত। কিন্তু এখন আর তেমন হয় না। পাহাড়ী এই বুনো পরিবেশের সাথে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছি। মুগ্ধ হয়ে গল্প শুনে গেলাম। নিজের স্বত্তা হারিয়ে গেল প্রাচীন এক শিকারী দলের মাঝে। কেন যেন খৃষ্টের জন্মের দশ হাজার বছর আগের ম্যামথ শিকারের ছবি ভেসে উঠল কল্পনায়।

শিকারের গল্পের সাথে সাথে রামথন দা’র ম্যাপ আঁকাও শেষ হয়ে গেল। আমি আর মাইনুল ভাই ভালো ভাবে রাস্তা আর আশে-পাশের পাহাড় সম্পর্কে ধারনা নিয়ে নিলাম।

আমি ঘুমাতে গেলাম, তোমরাও এখন শুয়ে পর। অনেক রাত হয়ে গেছে। এই বয়সে আর বেশীক্ষন জেগে থাকতে পারিনা- বলেই দাদা ঘুমাতে চলে গেল।

আর এক রাউন্ড চা শেষ করে আমরাও উঠে পরলাম। পাশের ঘরের মেঝেতে বেশ কয়েকটা চাদর মেতে বিছানা করে নিলাম দুজন। এটা তাদের বসার ঘর। পাশেই দুটি ছোট ছোট ঘরে রামথন দাদা আর তার ছেলে তাদের পরিবার নিয়ে ঘুমিয়ে আছে। চাদর মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি করে শুয়ে পরলাম। তখন চোখে ছিল হাতি শিকারের ছবি। কল্পনায় ভেসে উঠল শিকারের সময় হাতিটির বুকফাটা বিদীর্ন চিৎকার আর আর বেঁচে থাকার জন্য তীব্র আস্ফালন। বাহিরে তখনো চলছিল আকাশের একটানা আর্তনাদ।



ঘরের নীচে শুকর-মুরগীর চেঁচামেচি আর ঘরের ভিতর পিচ্চিপাচ্চা দের হাউকাউ শুনে যখন ঘুম ভাঙলো তখন অনেক বেলা হয়ে গেছে। জিপিএস বের করে দেখলাম সকাল আট টা বাজে। ধড়ফড় করে উঠে বসলাম। মাইনুল ভাই ও দেখলাম উঠে চাদর ভাঁজ করছে। ঘুম মাখা চোখে চাদর ভাঁজ করতেই গরম ধোঁয়া ওঠা চা এসে গেল।

চা শেষ করেই একটা ঝোলা ব্যাগে দুই প্যাকেট নুডলস, একটা হাড়ি, ছুরি আর পানির বোতল নিয়ে ট্রেকিং এর জন্য তৈরী হয়ে গেলাম। রামথন দা’র ঘরেই আমাদের ব্যাকপ্যাক দুটো রেখে যাব। গত রাতেই পরিকল্পনা করেছিলাম ফাইপি ফলস দেখে আবার আগামীকালই থাইকিয়াং পাড়ায় ফিরে আসব। তাই এত ভারী দুটো ব্যাকপ্যাক নিয়ে ট্রেকিং করার কোন মানেই হয় না।

ভোরেই বাসার সবাই জুমে কাজ করতে চলে গেছে। রওনা দেবার সময় দাদার সাথে আর দেখা হয় নি। ঘর থেকে বেড়িয়ে ট্রেকিং যখন শুরু করি তখন জিপিএস এ নয়টা বেজে গেছে। একদম পরিষ্কার আকাশ। ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে সূর্যের আলো লেগে বেশ আরাম লাগছে। এমন আবহাওয়ায় সারাদিন কোন রকম ক্লান্তি ছাড়াই ট্রেকিং করা যায়। চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। রাতের বৃষ্টি পরিবেশকে সজীবতা দান করে গেছে। গাছের পাতা গুলোর ক্লোরোফিলে সূর্যালোক পরে চিকচিক করছে। বিরাট পাড়া থাইকিয়াং। উত্তরে মাউন্ট কেওক্রাডাং, পূর্বে মদক রেঞ্জ, পশ্চিমে আছে বিখ্যাত মিজু পাহার “ক্যাপিটল” আর দক্ষিনে তাজিনডং। পাসিং পারা থেকে গাড়ীর রাস্তা পশ্চিম দিক থেকে তাইকিয়াং পারা পর্যন্ত এসে গেসে। গরমের সময় এখানে চান্দের গাড়ী মালামাল নিয়ে আসে। পাসিং পারা থেকে থাইকিয়াং পারায় প্রবেশ করার মুখে চোখে পরে পুরানো এক সমাধিক্ষেত্র। সামনেই একটা ভাঙা বাশেঁর বেঞ্চ। বেঞ্চের বা’পাশ দিয়ে চওড়া একটা রাস্তা চলে গেছে তাম্লো পারার দিকে। প্রায় ষাট ঘর পরিবার বাস করে এই পাড়ায়। সবাই মূলত ব্যোম জাতিগোষ্ঠীর। পাহাড় কেটে মাটি সমান করে তারা মাচার উপর বাঁশ, গাছের গুড়ি আর ছনের ছাউনি দিয়ে তাদের ঘর বাঁধে। চওড়া লাল মাটির রাস্তার দুই পাশে সারি সারি মাচার ঘর। প্রতিটি ঘরের পাশেই স্থুপ করে রাখা লাকড়ি আর মুরগীর খোয়াড়। এই পারার মত এত গরু অন্য কোন পারায় আমার চোখে পরেনি। সারাদিন তারাই রাস্তা দখল করে রাখে। শুকরের আধিক্যের কারনেই হয়ত পারাটা মোটামটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। খেয়াল করলাম শহুরে আধুনিকায়নের হালকা ছোঁয়া এদিকেও কিছুটা স্পর্শ করে গেছে। কয়েকটি ঘরে চকচকে টিনের চাল সেটাই প্রমান করে। পারার প্রায় সব কটি ঘরের ছাউনিতে শোভা পাচ্ছে সোলার প্যানেল। উজ্জ্বল রোদের স্পর্শ পেয়ে ঝিলিক দিয়ে উঠছে সিলিকনের বর্গ গুলো। সন্ধ্যা নামলেই পাহারে এখন আর অন্ধকার ঝুপ করে নেমে আসে না। এনার্জী সেভিং বাল্ব গুলো আলোকিত করে রাখে পারার ঘর গুলো। একটা দোকান ঘরে ল্যাপটপ ও দেখলাম এইবার। সন্ধ্যা নামলেই পারার লোকজন ল্যাপটপে সিনেমা-নাটক দেখে সময় পার করে। দেখে মনে হয় প্রযুক্তি এখানে অযথাই অনুপ্রবেশ করছে। মন্তব্য টা বিতর্কিত হয়ে গেল মনে হয়। এটাও হয়ত আমাদের এক ভন্ডামী। কিন্তু আধুনিকতার লেবাস পরে স্বীয় জাতিস্বত্তাকে বিসর্জন দিয়ে দেয়া টা আমি অন্তত মেনে নিতে পারছিলাম না। রামথন দা’কে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, “দাদা সবাই তো সোলার লাগায় ফেললো, তুমি কবে লাগাবা?” তার কথায়, তার বাপ দাদা যেভাবে থাকতেন তিনিও ঠিক সেভাবে থাকতে চান। এগুলো জীবন কে নাকি অহেতুক জটিল করে ফেলে। অতিরিক্ত চিন্তায় মাথা ব্যাথা করে। ব্যাটারী পাল্টাও, নিয়ম মত পানি দাও…ধুর ধুর। শুধু সময় নষ্ট। করার এক বছর হয়ে গেল, এখনো উনি প্যানেল লাগান নাই, এখনো তাই তার ঘরে প্রাচীন কুপি বাত্তি জ্বলে। এইসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে পাড়ার সব ঘর ছাড়িয়ে সদ্য তৈরী করা গীর্জার সামনে চলে আসলাম। গীর্জার পাশ দিয়ে ঠিক উত্তরে সুনসাং পারার রাস্তা চলে গেছে। পাশ দিয়ে আর একটি রাস্তা পূর্বে থিনদ্যোলতে পাড়ার দিকে চলে গেছে ম্যাপ ধরে ধরে আমরা সেই রাস্তায় ট্রেকিং শুরু করলাম।





পনের বিশ মিনিট ট্রেকিং করতেই আমরা পাড়ার সীমানা বেড়া টপকে উঁচু জুম পাহাড়ে উঠা শুরু করলাম। রাস্তা ক্রমেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এটেল মাটি বৃষ্টির পানি পেয়ে প্রচন্ড পিচ্ছিল হয়ে আছে। আমার পায়ের স্যান্ডেল একটু পর পর স্লিপ কাটায় মাইনুল ভাই থেকে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছি। কি কাঁদা আর কি পিচ্ছিল, মাইনুল ভাই দেখি তরতর করে পাহাড় বেয়ে উঠে যাচ্ছে। সূর্যের তেজ বাড়ার সাথে সাথে আরামের ভাব টুকুও মিলিয়ে গেল। মাথায় গামছা পেঁচিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম। সামনের একটা চড়াই উঠেই প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে একদম থতমত খেয়ে গেলাম। যতদূর চোখ যায় শুধু জুমের পাহাড়। যে জমির ধান কাটা হয়ে গেছে সেগুলো বাদামী হয়ে আছে। বাকী সব সবুজ। রঙের এই আশ্চর্য কন্ট্রাস্ট সত্যি ভয়ংকর সুন্দর। দূরের মদক রেঞ্জের পাহাড় গুলো অহংকারীর মত মাথা উঁচু করে দাড়িঁয়ে আছে। জুমের রাস্তা দিয়ে আমরা আরো এগিয়ে গেলাম। রাস্তার দু’পাশেই সারি সারি জুম ঘর। আরো ঘন্টা খানিক ট্রেকিং করে শেষ জুম ঘর টিও পার হয়ে গেলাম। রাস্তা এখন ক্রকশ নীচের দিকে নামছে। রাস্তা হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে গেল। একটা পুরানো জুমের রাস্তা নীচে নেমে গেছে। ম্যাপ অনুযায়ী এভাবে নীচে নেমে গেলে আমরা প্রাংশা খালে নেমে যাব। এতক্ষন কোন জোঁকের দেখা পাই নি কিন্তু এই জঙলের রাস্তায় এখন আর মাফ নাই। পা থেকে জোঁক সরাতে সরাতে নীচে নামতে শুরু করলাম। মাঝে মাঝেই পাহার একদম নব্বই ডিগ্রি খাড়া হয়ে নেমে গেছে। গাছের শিকর আর ডাল ধরে নীচে নামছি। আবাক করার বিষয় হল, যখনই নামার জন্য কোন সাপোর্ট দরকার হবে, ঠিক সেই জায়গাটাতেই কেন যেন কাঁটা গাছ থাকবেই। এটা পরীক্ষিত সত্য। এবার ও এর অন্যথা হল না। কিছুক্ষন নামতেই শ্বাস ঘন হয়ে গেল। কপাল বেয়ে দরদর করে ঘাম বেয়ে পরছে। পাহার বেয়ে নামার সময় হাঁটুর উপর অনেক প্রেশার পরছিল। এমন সময় গুলোতে মনে হয়, ধুর ছাই কেন যে আসলাম। এই ছুটিতে আচ্ছামত ঘুমানো যেত বাসায়। কিন্তু পরক্ষনেই যখন নীচে ঝিরির আওয়াজ কানে আসে নিজেকে অনেক শক্তিশালী মনে হয়। নতুন উদ্যোমে আবার ট্রেকিং শুরু করি। এই এত কষ্ট আর ঘামের পুরষ্কারের নাম প্রাংশা। সেই মুহূর্তে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হয়। এই জীবনের জন্য, এই আনন্দটুকুর জন্য। দু’হাজার ফিট নামতে আমাদের প্রায় আধা ঘন্টা লেগে গেল, কিন্তু নামার সময় মনে হচ্ছিলো যেন যুগ যুগ ধরে নামছি। ইতোমধ্যেই আমাদের দুই পা রক্তে ভেসে গেছে। কিন্তু সব ক্লান্তি গুলে গেলাম প্রাংশার রূপ দেখে। এই সেই প্রাংশা-রামাক্রি। নির্মল পানির স্রোত পাথুরে বোল্ডারে বাধা পেয়ে চোখের সামনেই রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে। ছোট বড় পাথরে বাড়ি খেয়ে গর্জন করছে বিপুল পানির স্রোত। প্রাংশার পাড়ে ছোট একটা চা বিরতি নিলাম। খড়-কুটো জোগাড় করে মুহুর্তের মধ্যেই আগুন জ্বালিয়ে ফেলল মাইনুল ভাই।

চায়ে চুমুক দিতেই আবার চাঙা হয়ে গেলাম। প্রাংশা ধরে দক্ষিনে হাঁটা শুরু করলাম। প্রায় এক কিলোমিটার পর পশ্চিম দিক থেকে একটি ঝিড়ি মুখ প্রাংশায় এসে মিশেছে। এটাই ফাইপি ঝিড়ি। এখন এই ঝিড়ি ধরেই আমরা আবার উপরে উঠে যাব। এই সেই পাহাড়ের খাঁজ। এখানেই রামথন দা হাতি শিকার করেছিল। এই খাঁজের শেষ মাথায় একটা ওয়াটার ফল আছে।

ভয়ানক ঝোঁপঝাড় পেড়িয়ে ফাইপি ঝিড়ির কিছুটা উপরে উঠতেই দেখা পেলাম সেই বিশাল আকারের পাথর গুলোর। হাতিটিকে আটকানোর জন্য যেগুলো পাহাড়ের উপর থেকে ফেলে দেয়া হয়েছিল। আসলেই বিশাল বিশাল পাথর। এক্টার উপর একটা পরে আছে। এত সময়ের পর পাথর গুলোর উপর শ্যাওলা জন্মে গেছে। হাতি তো পরের কথা খর্বকায় মানুষ হয়ে শ্যাওলা ধরা এই পিচ্ছিল বিশাল পাথরের পাঁচিল কিভাবে পার হব সেই চিন্তাতেই আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম। মাইনুল ভাইকে দেখি তরতর করে পাথর বেয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। কি যে লাগানো আছে উনার পায়ে কে জানে। চুম্বকের মত উনার পা পাথরের দেয়ালে আঁটকে যায়। মাঝে মাঝে উনাকে স্পাইডার ম্যান মনে হয়। উনি পারলে আমি পারব না কেন? জিদ চেপে গেল মাথায়। আমিও সামনে পিছে চিন্তা না করে উনার নকল করে উঠে যেতে লাগলাম। মাইনুল ভাই বলে পা স্লিপ করার কথা বেমালুম ভুলে যাও, তাহলেই আর পা স্লিপ কাটবে না। এই কথার বাস্তবিক উদাহরন পাচ্ছিলাম পাথরের দেয়াল ডিঙানোর সময়। কিছু কিছু জায়গায় আবার দুই পাথরের সংকীর্ন চিপা দিয়ে শরীর গলিয়ে সামনে এগুতে হচ্ছে। পাথরের নীচে মাথা ঢুকানোর সময় ভয়ভয় লাগে। যদি মাথা ভর্তা হয়ে যায়? একসময় পাথরের বাধা পার করে ঝর্নার ঠিক সামনে পৌছে গেলাম। ছোট্ট কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর একটা ঝর্না। ঝর্নার ঠিক নীচে একটা বিশাল পাথরের দিকেই সবার আগে চোখ চলে যায়। ডুবন্ত জাহাজের আকৃতির পাথর টাইটানিকের কথাই মনে করিয়ে দেয়। আকারে ছোট হলে কি হবে এই ফাইপি ঝর্নাই প্রাংশা-রামাক্রির একটি অন্যতম প্রমিনেন্ট সোর্স। ঘন জঙল পাহারের খাঁজ টাকে যেন চারপাশ থেকে চেপে রেখেছে। নাম না জানা পাখিদের কিচিরমিচির, ঝিঁঝি পোকার প্রণয়সঙ্গীকে খোঁজার জন্য করা বাঁশির মত তীক্ষ্ণ আওয়াজের সাথে পাথরের দেয়ালে পানির অবিরাম আঁছড়ে পরার আওয়াজ জায়গাটাকে রহস্যময় করে রেখেছে। চিনে জোঁকের ব্যাথা আর শরীর জুড়ে ক্লান্তি দূর করতে তৃষ্ণার্থের মত ফাইপির সৌন্দর্য পান করতে লাগলাম।





সন্ধ্যা নামতে আর দেরী নেই, চল সালেহীন এবার রওনা দেয়া উচিৎ। ফাইপি ঝর্নার ঠিক পাশ দিয়েই একটি ফাটল উপরের পাহাড়ে উঠে গেছে। সিদ্ধান্ত নিলাম এই ফাটল দিয়েই উপরের পাহাড়ে উঠে যাব। এই পাহাড়ের উত্তরেই শেষ জুম ঘর টা আছে। রাস্তা খুঁজে পেতে খুব একটা সমস্যা হবে না। যেই ভাবা সেই কাজ। ফাটল ধরে আমরা দু’জন পাহাড়ের উপরে উঠে গেলাম। বুনো লতা আর ঝোঁপের জঙল ভেদ করে, শত শত জোঁকের কামড় খেয়ে আমরা উত্তরদিক বরারবর ট্রেকিং শুরু করলাম। পিকে পৌছে নিঃশ্বাস একটু স্বাভাবিক করার জন্য থামতেই দেখি সামনে মদক রেঞ্জের এক অদ্ভুত দৃশ্য। ঘন কালো মেষ পুরো পূব আকাশ ঢেকে ফেলেছে। মদকের পিক গুলো ধীরে ধীরে গিলে ফেলছে দৈত্যাকার মেঘ গুলো। চারিদিকে কেমন ভ্যাপসা গুমোট ভাব। হাজার হাজার পাখি আর উল্লুকদের আর্ত চিৎকারে পরিবেশ কেমন যেন ভীতিকর হয়ে গেল। যে কোন সময় অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। বৃষ্টির মধ্যে এই রাস্তায় ট্রেকিং করতে কেমন মজা হবে কল্পনা করতেই বুঝি আমাদের হাঁটার গতি দ্বিগুন হয়ে গেল। জিপিএস এ শেষ জুম ঘর টা মার্ক করা ছিল বলে রাস্তা খুঁজে পেতে তেমন সমস্যা হল না। বৃষ্টি আসার আগেই আমরা জুম ঘরে পৌছে গেলাম। আকাশ ইতোমধ্যেই কালো হয়ে গজরাচ্ছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল প্রকৃতির তান্ডব।

আজকে রাতে এই জুম ঘরেই থেকে যাই, কি বল? কালকে একবারে শিলোপি ঝিড়ি টা এক্সপ্লোর করে আসব। যা আছে কপালে। কোন সমস্যা হবে নাতো?

কি যে বলেন ভাই। সমস্যা কিসের। সাথে টেন্ট, স্লিপিং ব্যাগ, চাল-ডাল কিছু নাই। বেশ থ্রিলিং একটা ব্যাপার। এই বৃষ্টিতে পাড়ায় ফেরার কোন মানেই হয় না। খুশি হয়ে আমি উত্তর দেই।

রাতের খাবার রান্না আর পান করার জন্য তাই মহা উৎসাহে রেইন কোট পরে কলা পাতা দিয়ে বৃষ্টির পানি জমানো শুরু করে দিলাম।

মাইনুল ভাই লাকড়ি জ্বালিয়ে চুলায় চা বসিয়ে দিল। শরীরে কাঁপুনি তোলা এমন বৃষ্টির মধ্যে এক মগ গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দিলে মনে হয় জীবন টা কতই না মধুর।

আগামীকাল আবার নতুন একটি দিন, নতুন কোন জায়গা, অন্য কোন ঝর্না…


বিশাল বিশাল পাথুরে বোল্ডার- ফাইপির শুরু

পাথরের নীচে দিয়ে পার হবার সময় ভয়ভয় করছিল। যদি চাপা পরে যাই?

খাড়া দেয়াল বেয়ে উঠে যাও

পিচ্ছিল আর শ্যাওলা ধরা পাথর।

ফাইপি

মেঘে ঢেকে যাচ্ছে দূরের মদক রেঞ্জ

যথাচারঃ কলাপাতা দিয়ে পানি সংগ্রহ
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×