কেউ যদি আপন স্ত্রীর ভালবাসা পরিমাপ করার চেষ্টা করে তাহলে সে ব্যক্তি ধরা খাবে। তার সাংসারিক জীবনে অসুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে অবিবাহিত পুরুষ সম্প্রদায় অনাগত বৌ-কে নিয়ে নানা কল্পনার জাল বিস্তার করে। আর দ্বীনদার ব্যক্তিরা তাদের স্ত্রীদের কাছ থেকে যেন জান্নাত প্রত্যাশা করে। বাস্তবিকই আমরা স্ত্রীর কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করি। আমি যদি লেখক হই সে আমার পাঠক হবে। সে হবে আমার গরমের দিনের শরবত, শীতের দিনের খেজুরের রসের ভাপা পিঠা। সে আমার সংসারকে, আমার মা-বাবাকে দেখেশুনে রাখবে। সে হবে আমার বাড়ির সকলের অলিখিত গার্জেন। কিন্তু এত কিছু প্রত্যাশা করা ঠিক নয়। আসলে একজন স্ত্রী যদি ঈমানদার হয় এবং নিজেকে হেফাজত করে তাহলে আমার মনে হয় তার কাছে এর চেয়ে আর বেশী কিছু চাওয়া জুলুমের পর্যায়ে পরে। ঢালকানগর হুজুরের কাছেই সম্ভবতঃ শুনেছিলাম, আল্লাহ তায়ালার অলীরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য স্ত্রীদের দুর্ব্যবহার সহ্য করেন। এমনকি অসুন্দরী স্ত্রীতেও সন্তুষ্ট থাকেন। এমনও ঘটনা আছে যে, এক আল্লাহর অলী তার দুরাচারী স্ত্রীকে তালাক দেয় না এই ভয়ে যে, সে মহিলা হয়তো তার আরেক মুসলিম ভাইয়ের জীবন বিষিয়ে ফেলবে।
তাই আমার কথা হল, আমার স্ত্রী আমাকে কতটুকু ভালবাসে সে হিসেব না করে, আমি তাকে কতটুকু ভালবাসি সে হিসেব করা দরকার। আসলে আমি তাকে কতটুকু ভালবাসি সে হিসেবও করার দরকার নেই। আমি তার আখিরাতে জান্নাত লাভের জন্য কতটুকু সহযোগিতা করছি সে হিসেবটাই জরুরী।
আর আমার স্ত্রী আমার কাজ করে দিবে, মজার মজার রান্না করে খাওয়াবে -সে আশা করাও অনুচিত। এসব কাজ করলে আলহামদুলিল্লাহ। না করলে ঠিক আছে। বিয়ের সময় আমিই শপথ নিয়েছিলাম আমি আমার স্ত্রীর খাওয়া পরার ব্যবস্থা করব, আমার স্ত্রী শপথ নেয়নি। সে শপথ নিয়েছে, সে আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে। তাই এতটুকুই তার দায়িত্ব।
_____________________
ডাঃ জহির
১ জুন, ২০১৫