somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশা দেশাইয়ের পানে তাকিয়ে থাকার অবসান হবে কবে

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিএনপি সম্ভবতঃ বেশ প্রত্যাশা নিয়ে বসেছিল, নিশা ম্যাডাম কিছু একটা করবে। তাদের নিজেদের প্ল্যান প্রোগ্রাম দেখেও মনে হচ্ছিল, আওয়ামীরা একটু নরম সুরে কথা বললেই, তারা নিজেরা গলার আওয়াজ চড়া করবে। প্ল্যান মত কিছুই হল না। নিশা দেশাইকে সময় দিলেন না আওয়ামী নেত্রী। ফলে চাপ দেয়ার কোন প্ল্যান নিয়ে আসলেও কাজটা সামনাসামনি করতে পারলেন না। এর ওপর যুক্ত হল আশরাফ সাহেবের ‘দুই আনার মন্ত্রী’ উপাধি।
রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দের কমবেশি সবাই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী সময়টার অপেক্ষায় থাকেন। সরকারী দল আশায় থাকেন কখন সময়টা পার হবে, আর বিরোধী দলের প্রত্যাশা থাকে মাঠ কতোটা গরম করা যায়। গতশীত অবরোধ দিয়ে পার হয়েছে। কিছু জ্বালাও পোড়াও আর কিছু গ্রেফতার। বেশ কিছু মানুষের দুর্ভোগ, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কৃষিজ উৎপাদন ঢাকায় না পৌঁছান এবং তাদের সীমাহীন ক্ষতি। এই ছিল মোটামুটি গতবারের সারাংশ।
এবার কি হবে, বোঝা যাচ্ছে না। ম্যাডাম অনেকদিন পরে বোতল থেকে বেরিয়েছেন। কুমিল্লায় কিছু হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ফখরুল সাহেব গতবছর এমন অসংখ্য হুমকি দিয়েছিলেন এবং কিছুই করতে পারেননি। ফলে হুমকিকে এবারও কেউ খুব সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। অনেকটা গা সওয়া হয়ে এসেছে। সবাই আসলে অপেক্ষা করছে, কর্মসূচি কি দিচ্ছে এবং সে কর্মসূচি পালন করতে কয়জন জাতীয়তাবাদী রাস্তায় নামে, তা দেখার জন্য।
বেশ কিছু ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আছে। সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি হচ্ছে জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক নিয়ে। ভাঙ্গন ধরেছে? না ধরেনি। তারা কি এখনও সঙ্গে আছে? বা সত্যিই একে অপরকে বিশ্বাস করছে? না, বোঝা ভাবছে। বিএনপির ভেতর একটি অংশ তো ছিলই, যারা জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগে আগ্রহী। সেই অংশ আগে বেশ দুর্বল ছিল। যুদ্ধাপরাধী বিচার ইস্যু নিয়ে তারা সবল হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় কথা এই ব্যাপারে ম্যাডামের মত কি? তিনি শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নিতে চান। খুব খোলাসা করে তিনি বলছেন না।
ওদিকে ইতিহাস শেখানোর প্রচেষ্টাটা খুব ভালো কাজে দিচ্ছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। দলের আদর্শে মুক্তিযুদ্ধকে প্রধান করতে গেলে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে জামায়াত। আবার জামায়াতের সঙ্গ ছাড়বার ঝুঁকি তারা নিতেও সাহস পাচ্ছে না। বিশেষ করে বেশ কিছু এলাকায়, যেখানে ‘নেক অ্যান্ড নেক’ ফাইট, সেখানে ঐ দুইএকটি ভোটই খেলার ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। হিসাব কিতাব চলছে। একটা সম্ভাবনা হয়তো খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ‘রাজাকার বিহীন জামায়াত’। তবে তেমনটা হলে, আওয়ামীরাও মনে হয় ঘরে বসে থাকবে না। জোট বাঁধতে তারাও আদাজল খেয়ে নেমে পড়বে।
অবস্থা দেখে যেটা মনে হচ্ছে, দেশের রাজনীতিতে খুব ভাইটাল একটা রোল প্লে করছে ভারত। ভারত কাকে চায়, তার ওপর নির্ভর করছে এদেশের পরবর্তী রাজনিতি। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে তাদের ইচ্ছে, ‘স্টাটাস কো’ বজায় রাখা। আপাততঃ বাংলাদেশের ব্যাপারে নাক গলানোর ইচ্ছে নেই। মোদী এখন অনেক বেশি উৎসাহী পশ্চিমা বিশ্বে নিজের ইমেজ তৈরিতে। সার্কে কিছু ক্যারিশমা দেখাতে চেয়েছিলেন। নাওয়াজ শরীফ সাহেব হতে দিলেন না। তবে সেখান থেকে আওয়ামী নেত্রী কোন ইঙ্গিত নিয়ে এসেছেন কি না বোঝা যাচ্ছে না। তবে হবিগঞ্জে তার বক্তব্য বলছে, ‘আই আম কনফিডেন্ট’।
জিয়া অরফ্যানেজ নিয়ে জল ঘোলা হবে কি না কিংবা এই কেসটিকে ব্যবহার করা হবে কি না, সময় বলে দেবে। আসলে সব কিছুই নির্ভর করছে, বিএনপি আদৌ কিছু করার সক্ষমতা দেখায় কি না তার ওপর। অন্তর্কলহে জর্জরিত দলটির পক্ষে আদৌ কোন আন্দোলন সংগঠিত করার ক্ষমতা আছে বলে কেউ মনে করছেন না। দল যে গোছাবেন, তাও পারছেন না। তাল গাছটা সবারই চাই। তারচেয়েও বড় কথা হচ্ছে, আস্থা। কেউই মনে করছেন না, আওয়ামীদের সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব। আর এই ব্যাপারটা আওয়ামীরা বেশ ভালোই বুঝে গেছে।
নিশা দেশাইয়ের আগমন এবং সময়, দুটোই বেশ কিছু প্রশ্ন জাগিয়েছিল। আমেরিকা কি সত্যিই পরিবর্তন চায় কি না। কিংবা মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে কঠোর কোন অবস্থান নিতে চায় কি না। নিশা দেশাইয়ের ‘ফ্লপ শো’ দেখে মনে হল, ‘চায় না’। ফলে যদি কিছু করতে হয়, বিএনপিকে নিজেকেই করতে হবে। আর অলৌকিক কিছু না ঘটলে, মনে হয় না, বিএনপি কিছু ঘটাতে পারবে। একথাটা তারা জানে বলেই, বারবার তাকিয়ে থাকে কবে ঘটবে সেই অলৌকিক ঘটনা।
সময় যত যাচ্ছে, বিএনপির মেরুদণ্ডের অবস্থা ততোই প্রতীয়মান হচ্ছে। ততোই দেশবাসীকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, নিজেদের আন্দোলন করার ক্ষমতা বলে কিছু নেই। তাদের যা আছে তা হচ্ছে প্রত্যাশা, কবে আসবে কোন বিদেশি কোন মন্ত্রী। কবে তিনি তার নিজের ‘দুআনা’ অবস্থান ঝেড়ে ফেলে ‘ষোলোআনা’ হবেন। কবে তিনি আওয়ামীদের ওপর থেকে আশীর্বাদের হাত সরাবেন। আর কবে তিনি বলবেন, ‘হে আওয়ামীলীগ, মধ্যবর্তী নির্বাচন দাও।‘
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×