অনেকেরই অনেক স্বপ্ন থাকে যে তার একটা সুন্দরী বউ থাকবে। একইভাবে অনেক মেয়েও এই স্বপ্নই দেখে রাজপুত্রের মত একজন জীবনসঙ্গী পাবার। এক কথায়, মানুষ মাত্রই সংসার সাজানোর স্বপ্ন দেখে। কিন্তু রাজকুমারের মত বর হোক আর লক্ষী রাজকুমারী বউ, তার জন্য তো বিয়ে করা চাই। বিয়ে ছাড়া নারী-পুরুষের একত্রে বসবাসে সমাজ তো আর স্বীকৃতি দেবে না। ভুলেও এ ধরনের কোন স্বপ্ন দেখে থাকলে সমাজের ঝড়ে আপনি হাওয়া হয়ে যাবেন। তাই জীবনসঙ্গীর সাথে বসবাসে বিয়েটাই একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু এই বিয়ে নিয়েও ঝক্কি-ঝামেলার শেষ নেই। পাত্রী দেখো, তার বংশ দেখ, তারপর পছন্দ কর; পাত্রের শিক্ষাগত যোগ্যতা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, চরিত্র, মন-মানসিকতা দেখো, তারপর পাত্রপক্ষকে হ্যাঁ-সূচক বাণী শোনাও। মাঝখানে পান থেকে চুন খসলেই সব বাতিল। আবার নতুন করে অন্য কোথাও দেখাদেখি শুরু। কিন্তু সব মিলে গেলে তো আর কথা নেই। একেবারে সোনায় সোহাগা। কিন্তু কি কি মিলে যায় বা কি কি বিষয়ে অমিল থাকে বা আপনি কোন পক্ষ হলে কোন ক্ষেত্রে কতটুকু এগিয়ে আছেন, সেটা দেখার জন্য আসুন একটা মৃদু হাসি নিয়ে পোস্ট পড়া শুরু করি-
১. রুপ-সৌন্দর্য: প্রথমত আমাদের সমাজে পাত্রীর রুপ-সৌন্দর্যই সবাই দেখে। মেয়ের গায়ের রং কি, চুল কত বড়? চোখ কি রকম? নাক কি রকম? হাসলে দাঁত কি রকম দেখায়? - একেবারে কমপ্লিট কোরবানীর গরুর প্যাকেজ। অনেকটা কোরবানীর গরু দেখার মত হলেও এটাই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। পাত্রী দেখা পর্ব শেষ হবার পর বাসায় ফিরে পাত্রপক্ষ নিজেদের মধ্যে যখন মতামত বিনিময় করে, তাতেও এই বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। / অন্যদিকে পাত্রের চেহারা-সুরত চোরের মত হলেও সমস্যা নেই, ডাকু সর্দার বা ছেলেধরার মত দেখালেও ঝাক্কাস চলবে। পাত্রের চেহারা-সুরত নিয়ে পাত্রীপক্ষ কোনদিনও আলোচনা করে না। তাই পাত্র্রপক্ষ হয়ে থাকলে আপনি প্লাস পয়েন্টে আছেন। কনগ্রাটস।
২. বংশ পরিচয়: পাত্রীর বংশ একসময় অতটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এখন ক্রমেই তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পাত্রী অমুকের মেয়ে, তমুক বংশের মেয়ে, এলাকায় বাপের ব্যাপক পরিচিতি-সুনাম ইত্যাদি বিষয় বেশ ভাল কাজে দেয় মেয়ে বিয়ে দেবার বেলায়। / অন্যদিকে পাত্রের বংশ মর্যাদা সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। কোন মেয়ে পক্ষই চাইবে না তাদের থেকে বংশমর্যাদায় খাট কোন বংশে মেয়ে দিতে। এক্ষেত্রে পাত্রীপক্ষ সবসময়ই নাকউঁচু স্বভাব দেখিয়ে থাকে, যদিও এখন বংশমর্যাদার ব্যাপারটায় দুপক্ষ থেকেই কিছুটা ছাড় দেয়া হয়। এক্ষেত্রে আপনি পাত্রীপক্ষ হলে প্লাস আপনার, তবে পাত্রপক্ষ হলেও কোন মাইনাস পাচ্ছেন না। চিলড আপ...
৩. শিক্ষাগত যোগ্যতা: আপনি পাত্র হয়ে থাকলে আপনি কি পাস, কোন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, ক্ষেত্রবিশেষে আপনি কোথা থেকে পাস করেছেন, তাও দেখার বিষয়। আপনি যত বেশি শিক্ষিত, তত বেশি প্লাস আপনার ঘরে। আর শিক্ষাদীক্ষায় ডাব্বা মানেই শিক্ষিত পাত্রীর স্বপ্ন দেখা আপাতত বাদ দেন। বসে বসে মাইনাস গুনেন, সাথে আকাশের তারা। কোন শিক্ষিত মেয়ে আপনার নায়কসূচিত চেহারা দেখে বিয়ে করতে চাইবে না, আবার পাত্রীপক্ষও এতটা কন্যাদায়গ্রস্ত হয়নি যে অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বা অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত ছেলের হাতে তাদের শিক্ষিত মেয়েকে তুলে দেবে। / অন্যদিকে শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে এটি পাত্রীর জন্য কোন প্লাস পয়েন্ট না, বরং একটি মাইনাস পয়েন্ট। আপনি যদি পাত্রী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি যত ডিগ্রি পাস, পাত্রপক্ষের কাছে তত ডিগ্রি ফেল। আপনি লেখাপড়া করেন, লিখতে-পড়তে জানেন, এটাই পাত্রপক্ষের কাছে অনেক বেশি কিছু। আপনার শিক্ষার সনদপত্র কেউ পড়েও দেখবে না যে আপনি আসলেই শিক্ষিত কিনা। পাত্রী শিক্ষাদীক্ষায় পাত্রের চেয়ে বেশি শিক্ষিত, এটা আমাদের আঁড়চোখা সমাজে কোনভাবেই কাম্য নয়।-
* পাত্রী তিনবার ম্যাট্রিক ফেল, তাই বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছে। চলবে। পাত্রী পাস।
* পাত্রী ইন্টার পড়ে বা ইন্টার পাস। চলবে। এই বয়সের মেয়েদের ভাল সেপ দেয়া যায়।
* পাত্রী গ্রাজুয়েশন করছে, এর মানে পাত্রী মোটামুটি শিক্ষিত। লোকসমাজে মুখ থাকবে পাত্রপক্ষের। এতেও পাত্রী পাস।
* পাত্রী গ্রাজুয়েশন করে ফেলেছে, এর মানে আর দেরি নাই, অনেক পড়ে ফেলেছে, তাকে এখনই রান্নাঘরে পাঠাতে হবে। নইলে বড্ড দেরি হয়ে যাবে।
* পাত্রী মাস্টার্স করে ফেলেছে। কি সর্বনাশ!!! মেয়ে তো বেশি শিক্ষিত, এই মেয়ে তো কথা শুনবে না, কথায় কথায় বেয়াদবি করবে। এক্ষেত্রে পাত্রের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স বা মন-মানসিকতা খুব বেশি উপরে না হলে এখানে পাত্রী কনফার্ম ফেল।
এক্ষেত্রে পাত্র হিসেবে বেশি শিক্ষিত হয়ে থাকলে প্লাস আপনার, আবার পাত্রী হিসেবে বেশি শিক্ষিত হয়ে থাকলে কিন্তু মাইনাস। কারণ, এখনও আমাদের সমাজে শিক্ষিত নারীদের সম্মান দেয়া হয় না, উল্টো দোষ ধরা হয়।
৪. আর্থিক সামর্থ: আর্থিক সামর্থের ব্যাপারে পাত্র হিসেবে আপনাকে এবং পাত্রপক্ষ হিসেবে আপনার পরিবারকে অবশ্যই সচ্ছল হতে হবে। কারণ, বিয়েতে অনেক ব্যাপার আছে, যা পাত্র পক্ষকে বহন করতে হয়। বিয়েতে মোহরানা আর সেই মোহরানা অনুযায়ী লাখ হিসেবে বিয়ে রেজিস্ট্রি ফি কিন্তু আপনাকেই পরিশোধ করতে হবে। আবার এতদিন আপনি একা ছিলেন বা, বাবা-মা, ভাইবোনের নিদ্দিষ্ট ক'জন সদস্য ছিল আপনার পরিবারে, এখন আরও একজন সদস্য যোগ হচ্ছে। পাত্র হিসেবে আপনি আর্থিকভাবে সচ্ছল না হলে বিয়ের মত একটা ধাপে দয়া করে পা বাড়ানোর সাহস দেখাবেন না। অসচ্ছলতা নিয়ে এদিকে পা বাড়ালেই বিপদ। আপনিও মরেছেন, আর সাথে আরেকজনকেও মেরেছেন। এজন্য পাত্র হিসেবে আপনি কি করছেন, চাকরি করছেন নাকি ব্যবসা করছেন, তা অনেক বেশি ভালভাবে যাচাই করা হয়। সচরাচর পাত্রীপক্ষ এটাই দেখে যে পাত্র কি করে। কি চাকরি করে বা কিসের ব্যবসা করে? তার আয়-উপার্জন কি রকম? তার চাকরি-ব্যবসার ভবিষ্যৎ কি? এক্ষেত্রে আপনি কতটা সচ্ছল সেটাই দেখার বিষয়। পাত্রীপক্ষ এটাই দেখবে, আর আপনিও আপনার বোন বা মেয়ে বিয়ে দিতে গেলেও সেটাই যাচাই করবেন। তবে আপনি যদি মেরুদন্ডহীন প্রাণী হিসেবে ঘরজামাই হয়ে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে পুরো আলোচনাই বৃথা। প্লাস-মাইনাসের কোন হিসাব করে লাভ নেই, কারণ, আপনি তা বুঝবেন না। এখানে অসচ্ছলতা মানেই পাত্রের মাইনাস, ঘোরতর মাইনাস। / অন্যদিকে পাত্রীর আর্থিক সচ্ছলতা থাকা না থাকা একই। কারণ, ধর্মীয়, আইন ও সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে স্ত্রীর খোরপোশের দায়িত্ব সবসময়ই স্বামীর। তবে মেয়ের সচ্ছলতা আসলে বেশ গুরুত্ব বহন করে। শিক্ষিত-চাকরিজীবী তথা আর্থিক ভাবে সচ্ছল মেয়ে যেকোন পরিস্থিতিতেই ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এদিকে পাত্রী টোটালি প্লাস।
৫. রান্নাবান্না: একটা সময় রান্নাবান্না ছিল পাত্রী নির্বাচনে প্লাস পয়েন্ট। এখন সময়ের স্রোতে সেটা হয়ে গেছে কাজের বুয়া নির্বাচনে প্লাসপয়েন্ট। পাত্রী চা বানাতে পারে তো? তাহলেই চলবে। বাড়িতে মেহমান এলে ওটাই আগে দরকার হয়। আর বেশি দরকার হলে সিদ্দিকা কবির'স রেসিপি তো আছেই। এযুগে এই ক্ষেত্রে প্লাস-মাইনাস বিষয়টাই দুধভাত। তাই বিয়ের পর প্রয়োজনীয় রান্না শিখে নিতে পারবে এই প্রত্যাশায় পাত্রী আপাতত প্লাস আর পাত্রের প্লাস-মাইনাসের কোন চিন্তাই নেই। নো চিন্তা-ডু ফুর্তি।
৬. উচ্চতা: এটাও অপশনাল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে অনেক পাত্র-পাত্রী হাকিম নড়ে, তবু হুকুম নড়ে না অবস্থানে থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া হয় না। কারণ, অন্য সব কিছু মিলে গেলে এমনও দেখা যায় যে সাড়ে পাঁচ ফুটি পাত্রীকে সাড়ে চার ফুটিয়া পাত্রের হাতে সপে দেয়া হয়েছে। তাই এখন আসলে এক্ষেত্রে প্লাস-মাইনাসের কোন বালাই নেই। অন্য সব কিছু মিললেই হল। তবে লম্বা-চওড়া ছেলেদের নাকি বিয়ের বাজারে ভাল দাম। তাই লম্বা-চওড়া পাত্র হয়ে থাকলে আপনি অপশনাল বিষয়েও প্লাস। আর পাত্রীরও কোন মাইনাস নেই।
৭. বয়স: এবার আসা যাক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, যা সময়ের আগে হলেও ক্ষতি, আবার পরে হলেও ক্ষতি। তাই সময় থাকতেই হও পার, নইলে এ কুলও যাবে, ও কুলও যাবে। তা হল পাত্র-পাত্রীর বয়স।-
* পাত্রীর বয়স ১৬ এর নিচে: কোন শিক্ষিত পরিবার সেই মেয়ে ঘরে এনে জেলের ভাত সেবনের ইচ্ছা করবে না। অঁজো পাড়াগাঁয়েই চুপিসাড়ে এসব ঘটে অজ্ঞতার কারণে।
* পাত্রীর বয়স ১৬-১৮: অবাক হলেও সত্যি যে মেয়ে বড় হয়ে গেছে ভেবে অনেক বাবা-মা মেয়েকে এই বয়সেই পাত্রস্থ করেন, আবার অনেক পরিবার বিয়ে রেজিস্ট্রি করান না, কিন্তু মেয়েও হাতছাড়া করেন না। বাল্যবিবাহের আওতায় পড়লেও কিছু শিক্ষিত পরিবার এই কাজটি করে থাকেন।
* পাত্রীর বয়স ১৮-২১: এই বয়সের পাত্রীদের বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায়। বয়স কম থাকাতে নাকি মেয়েকে ছেলের পরিবার থেকে নিজেদের মত করে সেপ দেয়া যায়। কথাটি খারাপ শোনালেও এই কারণে বলছি যে আজও পাত্রীদেখা আর কোরবানীর গরুদেখার মধ্যে আমরা খুব একটা পার্থক্য রাখি না। এটা আইনসিদ্ধ বয়স, আবার লেখাপড়া মানেই স্নাতক শুরু বা মাঝামাঝি। বিয়ের পর পড়বে বলে ফাঁকি দেয়া, এরপর রান্নাঘর সামলানো।
* পাত্রীর বয়স ২১-২৪: পাত্রীর গ্রাজুয়েশন শেষ বা শেষের পথে। এই সময়টাতেই মেয়ের বিয়ের ধুম উঠে। অধিকাংশ বাবা-মাই মেয়েকে আর ঘরে রাখতে চান না। লোকে নাকি মন্দ বলে। কে কি মন্দ বলে তা সেই ভাল জানে।
* পাত্রীর বয়স ২৪-২৬: অনেক হয়েছে। মেয়েকে এতদিন ঘরে বসিয়ে খাওয়ানোর মানে কি? সব তো জলেই যাচ্ছে। আর মেয়ে শিক্ষিত শহুরে পরিবারের গ্রাজুয়েট হলে কিছুটা ছাড় পায়। এক্ষেত্রে পরিবার থেকে অন্তত একটা চাকরি খোঁজার সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। বিয়ের পর চাকরি করবে কি না তা ঠিক নেই, তারপরও এতদিন লেখাপড়া করে যে ডিগ্রি নিয়েছে, চাকরি নেয়াটা তার একটা সান্ত্বনামাত্র।
* পাত্রীর বয়স ২৬+ মানেই পাত্রী মাস্টার্স করা, বেশি শিক্ষিত, বেয়াদপ। পাত্রপক্ষ যেখানে এই বয়সের মেয়ে পারে তো ঘরেই নিতে চায় না, সেখানে কিন্তু অনেক সময় মেয়েই বিয়েতে রাজি হয় না তার সমবয়সী প্রেম ধরে রেখে মনের মানুষকে প্রতিষ্ঠিত হতে সময় দেয়ার জন্য। তবে এটা রেয়ার কেস। সাধারণত এই বয়সের মেয়ের বিয়ের প্রস্তাবে মেয়েও অমত করে না, মেয়ের পরিবারও না। তবে ২৬+ কোন মেয়েকে ঘরে আনতে পাত্রপক্ষের অমত থাকে বেশি।
* আল্লাহ না করুক, যদি পাত্রীর বয়স হয় কোন কারণে ২৯+ তাহলে ঐ মেয়ে বিয়ে দিতে রীতিমত হুজুর-ফকির-পীর-মুরশিদ ডাকতে হয় ঘরে। এই বুড়িকে আবার বিয়ে করবে কে? কেউ ফিরেও তাকায় না এই অবস্থায় পাত্রীর নামে গাড়ি-বাড়ি, দোকান, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান লিখে দেয়ার ব্যাপারে লিখিত স্ট্যাম্পে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। আর খেয়ে-দেয়ে কাজ না থাকা কিছু মানুষের এ নিয়ে থাকে হাজারটা প্রশ্ন। কেন এতদিন মেয়ের বিয়ে হল না? মেয়ের নিশ্চয়ই দোষ আছে। মেয়ের চরিত্র ভাল তো? এতদিন তার জীবনে নিশ্চয়ই কোন পুরুষের আনাগোনা ছিল, যার জন্য এতটা কালক্ষেপন... (নাউযুবিল্লাহ)
অন্যদিকে আপনি পাত্র হয়ে থাকলে আপনার বয়স নিয়ে কেউ কোনদিন কথা তুলবে না। কেউ কথা তুললেই তার গালে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ বসিয়ে দিতে পারবেন। কোন ব্যাপার না। যুক্তি দিতেই পারেন, লেখাপড়া শেষ হয়নি বা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে একটু সময় লেগে গিয়েছে, তাতে কি? ঠিকই দেখবেন আপনার জন্য অনেক কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা তার অষ্টাদশী কন্যাকে আপনার হাতে তুলে দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। শুধু সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে পাত্র হিসেবে এ যাত্রায় আপনি প্লাস পেয়ে গেলেন। কিচ্ছু বলার নেই। সাবাশ !!!
সমাজের মানুষের এসব কথা নিয়ে কিছুই বলার থাকে না। কারণ, আমি-আপনি ভুক্তভোগী হলেই বুঝবো, অন্যথায় আমি-আপনিও এই সমাজের সেই লোকগুলোর সাথে মিশে কন্ঠে আওয়াজ তুলবো, "মেয়ের আসলেই দোষ আছে, না হলে বিয়ে হবে না কেন?" এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেও আমি আপনি কিছু করতে পারবো না। তার কারণও আছে। আর সেটা বিজ্ঞানসম্মত। একজন পুরুষ মানুষ একরকম সারাজীবনই প্রজননক্ষম, অন্যদিকে মেয়েদের বেলায় এটা একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত। তারপর আবার ত্রিশের পর সন্তান ধারণের ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া আছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পক্ষ থেকেই। তাহলে বেশি বয়সী মেয়েদের বিয়ের ব্যাপারে আমাদের সমাজের ধ্যানধারণাকে আমরা কিভাবে কাঁচকলা দেখাই? ঘুরে ফিরে আমরা সেই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির কাছেই বন্দী। আর এখানে বিজ্ঞান তার পক্ষ সমর্থন করছে।
কবি বলেছেন, "এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।"
কবির কবিতা ভুলে যান, বুড়া বয়সে এসে সংসারের স্বাদ পাবেন না, পানসে লাগবে।
তাই নিয়ত ধরেন, "এখন যৌবন যার, বিয়ে করার তার শ্রেষ্ঠ সময়।"
নয়তো জীবনের এই সময়টা আর ফিরে পাবেন না...
উপরে সবকিছু যাদের পক্ষে গেছে, তারা অযথা আরও কিছুদিন মুক্তবিহঙ্গের মত একা থাকার স্বপ্ন দেখবেন না। এটা নিছক বোকামি। নিদ্দিষ্ট একজন মানুষের সাথেই নিজের সারাজীবনের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেয়ার মধ্যেই আনন্দ। এই আনন্দ আর কোথাও পাবেন না। তাই পোস্ট পড়ে সবগুলো বিষয়ে যারা প্লাস অর্জন করেছেন, তারা স্বাধীন থাকার অহেতুক স্বপ্ন না দেখে ঝড়ের গতিতে বিয়েটা সেড়ে ফেলুন...
স্বপ্নঝড়-এর পক্ষ থেকে আগ্রহীদের সবাইকে আগাম শাদী-মোবারক
# একটি স্বপ্নঝড় প্রকাশনা #