ডঃ ইউনূস প্রসঙ্গে জনাব গোলাম মোর্তোজা সাহেবের বাংলাদেশ... ড. ইউনূস! শীর্ষক চাটুকারিতামূলক প্রবন্ধটি পড়ে দেখুন ঃ
Click This Link
ওনার এহেন নির্লজ্জ চাটুকারিতামূলক কলামের তীব্র নিন্দা জানাই এবং ওনার কথাগুলোর অসারতা এখানে পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
মেক্সিকো যাচ্ছিলাম আমস্টারডাম হয়ে। ইউরোপের ট্রানজিট ভিসা ছিল। বোর্ডিং পাস নেয়ার সময় পাসপোর্ট হাতে নিয়ে ভুরু কুঁচকে উল্টেপাল্টে দেখতে থাকলেন। একবার আমার মুখের দিকে তাকান, আবার পাসপোর্টের দিকে। একজন আরেক জনের সঙ্গে কথা বলছেন।
কোথা থেকে আসলেন?
বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশ?
ওহ! বাংলাদেশ!! ড. ইউনূস!!!
আমাকে দু’এক মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখার জন্যে যেন লজ্জা পেয়ে গেলেন।
উত্তরঃ
ক) ওখানে ফ্রান্স-জার্মানি-যুক্তরাজ্যের যাত্রীও নিশ্চয়ই ছিলেন। ওনাদের নোবেল বিজয়ী নিয়ে উচ্ছসিত না হয়ে কর্মকর্তাটি বাংলাদেশী নোবেল বিজয়ী নিয়ে মাতলেন। চাপা মারার আর জায়গা পান নি ? লেখকের নির্লজ্জতা দেখে হয়তো কর্মকর্তাটি লজ্জিত হতে পারেন।
খ.
পরিচিত অনেকেই আছেন, যারা দেশের বাইরে থাকেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রবাসে কঠিন জীবন সংগ্রাম করছেন। অনেকে প্রতিষ্ঠিত বিত্তবান। এদের সম্পর্কে বিদেশিদের ধারণা বাংলাদেশ বন্যা, খরা, অসহায়ের দেশ, দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যের মানুষ। সেই দেশের মানুষকে খুব ভালো চোখে দেখার কথা না।
কিন্তু ড. ইউনূস নোবেল পাবার পর তাদের অনেকের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে গেছে। মালিক বা সহকর্মীরা বলেন, ‘তোমরা ড. ইউনূসের দেশের লোক!’
এমন সম্মান তারা অন্য কোনো কারণে কখনো পাননি!! গর্বে বুক ভরে যায় প্রবাসীদের। (এমন একটি লেখা এ সংখ্যার প্রবাসে ছাপা হলো।)
উত্তরঃ
খ) ডঃ ইউনূসের আগে আমরা কখনোই নোবেল প্রাইজ পাইনি দেখে আমাদের মনের মধ্যে যে খেদ বা আত্মগ্লানি রয়েছে,তা লাঘব করার জন্যই আমরা ডঃ ইউনূস সাহেবের নাম নিয়ে অতিরঞ্জিত বাগাড়ম্বরের মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে সম্মানিত হওয়ার চেষ্টা করি। প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশের খবরাখবর সম্পর্কে কতটুকু জানেন ? শুধু অনলাইন পত্রিকা পড়ে আর চাক্ষুষ না দেখে কি দেশের প্রকৃত অবস্থা জানা যায় ? প্রবাসী বাংলাদেশিগণ বিদেশে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করেন,বলার মত তেমন কিছুই নেই বলে এবং স্থানীয় দক্ষ বিদেশিদের কাতারে নিজেদের ম্রিয়মাণ অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে তারা গভীর মনঃকষ্টে ভোগেন,তাই ডঃ ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তির কথা গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করে সেই গ্লানি নিরসনের চেষ্টা করেন তারা।
গ.
ইউরোপের দরিদ্র দেশ আলবেনিয়া। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ঘুরছেন ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে। সবাই তাকে বলেছেন অবস্থার পরিবর্তনের জন্য ড. ইউনূসের কাছে যাও। তিনি বুদ্ধি দিতে পারবেন কী করে গরিব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা যায়। অনেক চেষ্টা করে ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। ড. ইউনূসের দেয়া বুদ্ধি অনুযায়ী তিনি বেশকিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।
উত্তরঃ
গ) আলবেনিয়ার চেয়ে দরিদ্র বাংলাদেশ, বাংলাদেশের দারিদ্র দূরীকরণ হলোনা আর আলবেনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান নাকি ইউনূসের পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন ! লেখকের শিশুসুলভ চপলতা দেখে সত্যিই হাসি পায়।
ঘ.
কলম্বিয়ার কালদাস প্রদেশের গভর্নরও ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন একই উদ্দেশ্যে। তিনিও ড. ইউনূসের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করছেন।
উত্তরঃ
ঘ) ঐ
ঙ.
পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি নোবেল বিজয়ী ড. রামোস হোর্তা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তার দেশ সফরের জন্য। ড. ইউনূসের পরামর্শ নিয়ে তিনি তার দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চান।
উত্তরঃ
ঙ) এক নোবেল বিজয়ী আরেক নোবেল বিজয়ীর পরামর্শ নিতে চায়। কেন,ড. রামোস হোর্তার কি নিজস্ব জ্ঞানবুদ্ধি নেই ? তাহলে উনি নোবেল বিজয়ী কেন ? নির্লজ্জ আরেকটি মিথ্যাচার।
চ.
আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানরা উন্নত দেশ সফরে গেলে সে দেশের প্রথম শ্রেণীর মিডিয়ায় প্রায় কোনো সংবাদই প্রকাশিত হয় না। দূতাবাসের চেষ্টায় বড় দু’একটি কাগজে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা কখনো কখনো হয়।
ড. ইউনূস কোনো দেশ সফরে গেলে বিশ্ব মিডিয়ায় সংবাদ শিরোনাম হয়।
নিউইয়র্কের কোনো রাস্তায় ড. ইউনূস হাঁটতে বের হলে তাকে ঘিরে কয়েক’শ মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তারা কিন্তু সবাই বাংলাদেশের মানুষ নন। আমেরিকানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ।
জাপানের বিখ্যাত ফুটবলার নাকাতা। সব বয়সী জাপানিজদের আইকন। তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অনুনয় বিনয় করেন কত জনের কাছে!
উত্তরঃ
চ) ডঃ ইউনূস নিজ দেশে রাস্তায় হাঁটেন না, আর বিদেশের রাস্তায় নাকি হাঁটতে বের হন! ড. ইউনূস হাঁটতে বের হলে তাকে ঘিরে নাকি কয়েক’শ মানুষ জড়ো হয়ে যায়!দুনিয়ায় আর যেন কোন নোবেল বিজয়ী নেই,ইউনুস যেন একক বিজয়ী! চামচামির কি নিদারুণ উদাহরণ লেখক নিজে! এরপর লেখক দাবি করবেন, মেসি রোনাল্ডো রাও ইউনূস ভক্ত !
ছ.
আমাদের জাতির জনকের জীবনী পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে কত রাজনীতি! সেখানে দেশের বাইরে উন্নত কোনো দেশের পাঠ্যবইয়ে বাংলাদেশের কোনো মানুষ স্থান পেতে পারেন? বিষয়টি ভাবা যায়? অত্যাশ্চর্যজনক হলেও জাপানের পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছেন ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক! জাপানের একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের পাতায় হাস্যোজ্জ্বল ড. ইউনূসের ছবি। সঙ্গে আছে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রাহক নারীদের ছবি। জাপানি ভাষায় ২২ পৃষ্ঠাজুড়ে পুরো একটি অধ্যায় ড. ইউনূসের ওপর!
উত্তরঃ
ছ) জাতির জনক নিয়ে খবর নাই, কোথাকার কোন সুদখোর মহাজন নিয়ে এত প্রচারণা!
জ.
কয়েকশ’ জাপানি ছাত্রছাত্রী হোটেলের সামনে ভিড় করেছেন। এমনটা হওয়ার কথা নয়। পুলিশ বুঝতে পারছে না কেন তারা এখানে এসেছে। পরে জানতে পারে তারা পাঠ্যবইয়ে ড. ইউনূসের ওপর পড়ছে। সেই মানুষটিকে একবার সামনাসামনি দেখতে চায়!
‘ইউনূস চেয়ার’ প্রতিষ্ঠা হয়েছে ইউরোপের অনেক দেশে। পৃথিবীর সবচেয়ে স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আয়োজন করছে ড. ইউনূসের বক্তৃতার।
উত্তরঃ
জ) পুলিশ বুঝতে পারছে না আর ছাত্ররা বুঝতে পারছে ! হাহা, কথার অসংলগ্নতা থেকেই বোঝা যায়, লেখক ইউনূসের ধামাধরা একটা চাটুকার।
গোলাম মোর্তোজা ঃ ক্ষুদ্রঋণের পক্ষে-বিপক্ষে অনেক আলোচনা সমালোচনা আছে। সেটা থাকতেই পারে। যিনি কাজ করবেন তাকে নিয়ে সমালোচনা হবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। উত্তরঃ ৪০% সুদে ঋণ দিলে তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হতে বাধ্য। সরকারগুলো পারেনি বলেই তারা কাজ করতে এসেছেন। কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। সরকার সফল হলে তো ড. ইউনূসের কোনো প্রয়োজন ছিল না।সোনালী, রূপালী, জনতা, কৃষি ব্যাংকগুলো কত শতাংশ গরিব মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে? আর গ্রামীণ ব্যাংক কত মানুষের কাছে পৌঁছেছে?
উত্তরঃ সরকারী সুযোগসুবিধা ( ৪০% সুদের হার অনুমোদন, কোল্যাটেরাল এর ঝামেলা না থাকা উপরন্ত করমুক্তির সুবিধা) পেয়ে ডঃ ইউনূস বিত্তের পাহাড় গড়েছেন। এই সুবিধাগুলো অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলো পেলে তারাও গ্রামীণব্যাংকের মত ফুলে ফেঁপে উঠত। সোনালি রূপালী ব্যাংক যদি এই সুবিধা পেত, তাহলে তারা কাজটা আরো ভাল্ভাবে করতে পারত কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মীরা অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত যেখানে অন্য ব্যাংকের কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যা রয়েছে। সরকার পারেনি কথাটা ভুল, সব দেশের সরকারই প্রাইভেটাইজেশন কে উৎসাহিত করে কমবেশি। একটি রাষ্ট্র বা তার কর্ণধারদের প্রধান দায়িত্ব কী? কাজ করা না অন্যের সমালোচনা করা? নিশ্চয় সমালোচনা করা নয়। উত্তরঃ আপনি সরকারের সমালোচনা করতে পারেন, সেটা দোষের কিছু না অথচ ইউনূস নিয়ে সমালোচনা করা সহ্য করতে পারেন না! আপনি তো মহা হিপোক্রিট দেখছি !
গোলাম মোর্তোজা ঃ ড. ইউনূস সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতিনিধি, আর একটি সমালোচনা। উত্তরঃ কথাটা চরম সত্যি, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতিনিধি না হলে ক্লিনটনদের কাছে নাকি কান্না কাঁদতেন না ইউনূস মহাজন, যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে বাংলাদেশকে হুমকি দেওয়াতেন না। নিজের দেশের প্রতি ভালবাসা থাকলে প্রতিমন্ত্রী ব্লেককে অনুরোধ করতেন, এমন হুমকিমূলক কথাবার্তা না বলার জন্য। নিজের সন্তানকে সাম্রাজ্যবাদীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোতে কোনো সমস্যা নেই। বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো শিক্ষার সুযোগটা তারা গ্রহণ করছেন। পড়াশোনা শেষে অধিকাংশই মনে করছেন ছেলেমেয়েদের সেখানে থেকে যাওয়াটাই নিরাপদ এবং থেকে যাচ্ছেনও। আবার দেশে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রাজনীতির ঝড় তুলছেন।
উত্তরঃ আন্দাজে ঢিল না ছুড়ে এই মানুশগুলোর উদাহরণ দিয়ে তারপর কথা বলুন। common noun use না করে proper noun এ specifically বলুন। আপনি নিজেই তো আমস্টারডাম থেকে মেক্সিকো সহ বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান। নিজে যেই দোষে দুষ্ট,সেই দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপাতে আপনার লজ্জা করেনা ?
গোলাম মোর্তোজা ঃ বাংলাদেশের কোনো মানুষ, পৃথিবীর কোথাও ড. ইউনূসের কারণে সমস্যায় পড়েছেন? ড. ইউনূসের ইমেজের কারণে তার অসম্মান হয়েছে? অপদস্ত হতে হয়েছে?
উত্তরঃ বাংলাদেশ এবং তার সরকার, উভয়কেই ডঃ ইউনূসের কারণে মার্কিনী হুমকির মুখে পড়তে হলো। এর চেয়ে আর বড় কি উদাহরণ চান, বলুন ? বিতর্কিত নোবেল শান্তি পুরস্কারের মিথ্যা গৌরব আমাদের দরকার নেই, আমরা চাই ডঃ ইউনূসের মত লোভী কুমীরের যাবতীয় দুর্নীতির তদন্ত হোক, নোবেল প্রাপ্তিকে পুঁজি করে ইউনূস যেভাবে সুদের ব্যবসা করে গেছেন তা অত্যন্ত নিন্দার্হ।
গোলাম মোর্তোজা ঃ আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বয়স কত? সাবেক আমলা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের বয়স কত? এই সরকারের সময়ও কী কোনো কোনো আমলার চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাওয়ার পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না?
উত্তরঃ আমাদের দেশের প্রচলিত জব আইনে বয়সসংক্রান্ত বিধিনিষেধ আছে, কিন্ত মন্ত্রীর বয়সসংক্রান্ত এমন কোন নীতিমালা নেই।তাই অর্থমন্ত্রীর বয়স নিয়ে প্রশ্ন অবান্তর। আর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তিরা ডঃ ইউনূসের মত আইনভংগকারী নন। ইউনূসকে চুক্তিভিত্তিক এমারিটাস কোন পদে নিয়োগ দেওয়ার তাই প্রশ্নই আসেনা। "অসম্মান করার যোগ্যতা" উত্তরঃ অসম্মান করার ধৃষ্টতা হয়, যোগ্যতা হয়না, হায়রে মূর্খ, ভাষার ব্যবহারও জানে না।
গোলাম মোর্তোজা ঃ ড. ইউনূসের ‘সামাজিক ব্যবসা তত্ত্ব’ নিয়ে পৃথিবীজুড়ে আলোচনা চলছে। এবার অর্থনীতিতে ড. ইউনূস নোবেল পাবেন, এ আলোচনা জোরদার হবে। আর একবার নোবেল পেয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
উত্তরঃ ডঃ ইউনূস যে আসলে ব্যবসায়ী, কোন অর্থনীতিবিদ নন এখান থেকেই সুস্পষ্ট। হাহা, গর্দভের অলীক স্বপ্ন।
গোলাম মোর্তোজা ঃ ‘বেশি বাড়লে ঝড়ে ভাঙে’ গ্রামীণ প্রবাদ।
উত্তরঃ ডঃ ইউনূস বেশি বেড়েছিলেন, বছরের পর বছর অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকে স্বীয় পদ আঁকড়ে ধরে ছিলেন, স্বজনপ্রীতি আর দুর্নীতির মহাকাব্য রচনা করে যাচ্ছিলেন, তাই এবার তাকে ঝড়ে ভেঙ্গে পড়তে হলো।