somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

>>দেখুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভয়ংকর সেই মৃত্যুফাঁদ (সতর্কতামূলক পোস্ট)

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সব বন্ধ পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে আর চোখের সামনে মায়াবী সেন্টমার্টিন দ্বীপ এ নীল পানি গ্রাস করে নিচ্ছে কাছের বন্ধকে !! ভাবতেই গা শিউরে উঠে।
জায়গাটা সেন্টমার্টিন নেমে প্রথম বীচে হাটা শুরু করলেই কয়েক মিনিট পরেই ওত পেতে থাকে অর্থাৎ অনেক কাছেই।
ওখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে হতে কিছু বুঝে উঠার আগেই হয়ত ভুলবশত আপনিও পা দিতে পারেন এই জায়গাটিতে!! কারন নীল পানির আচ্ছাদনে আলাদা করে বোঝার কোণ উপায় ই নেই।
আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের সেই ৩৪ জনের মধ্যে একজন রাফিউজ্জামান সিফাত। নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাসে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিজের বন্ধ হারানোর জন্য তিনি দায়ী করেছেন সেন্টমার্টিনের স্থানীয় প্রশাসন ও কোস্ট গার্ডের চরম দুর্বলতা কে।
এরপরেও প্রায় প্রত্যেক বছর এই একি জায়গায় অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন আর এবার ২০১৪ তে এসে আহছান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির এতগুলো ছাত্র অকালে প্রাণ হারালো !! খুব নাড়া দিয়ে উঠলো আর ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করতেছে আমাদের নিষ্ঠুর বিবেক কে, এতটা নিশ্চিত জানা সত্তেও ওখানকার প্রশাসন কোণ ব্যবস্থা নেয়নি এই অভিশপ্ত জায়গা সম্পর্কে
বিপদজনক ঐ জায়গা সম্পকর্ে বর্ননা
===================
যার গেছেন তারা নিশ্চই জানেন যে প্রথমে জাহাজে করে সবাইকে সেন্টমার্টিন ফেরীলাইনে নামিয়ে দেয়া হয়। আর সেখান থেকে পায়ে হেটে ব্রীজটা পার হয়ে এসে নামতে হয় সেন্টমার্টীন দ্বীপে।
এখানে নামলেই হাতের ডানদিকে যে বীচ টা দেখতে পাই প্রায় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সবাই এই বীচ ধরে হাটি এবং ব্রীজের গোড়ার দিক থেকে পানিতে নামি আর কিনারা ঘেষে ডান দিকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি।।
পানিতে একবার নেমে পরলে আমরা আর কেউই কিন্তু বালিতে উঠে আসিনা সামনে এগুতে থাকি পানি ধরেই। ঠিক সোজা সামনের দিকে এগিয়ে গেলে এবার দ্বীপটা হাতের বা দিকে টার্ন নেয়। ঐ জায়গাকে বলা হয় “জিনজিরা উত্তরপাড়া” স্থানীয়রা বলেন উত্তর বীচ।।
দুইদিকের পানির স্রোত এবং ঐ ত্রিকোনাকৃতির মধ্যস্রোত এই জায়গাটিতে মিলিত হয়েছে এবং ত্রিমুখি স্রোতের কারনে পানির চাপ খুব বেশী ওখানটায় এবং চাপটা নিন্মমুখি।
স্থানটা দেখতে অনেকটা লম্ভাটে খালের মত, আর এই ত্রিমুখি স্রোতের কারনে অনেক জায়গাজুড়ে বড়সড়ো গর্ত তৈরী হয়েছে। জানিনা এবং কোন নির্দেশনা নেই বলেই আমরা সাতার কাটতে কাটতে এই টার্ন দিয়েই বা পাশের বীচের দিকে এগুতে থাকি, আর তখনি কিছু বুঝে উঠার আগেই সমুদ্রের অতলে হারিয়ে যায় অনেকেই।
কিছু উপদেশ
=======
এই কথাগুলো কেউ পড়লে এবং মেনে চললে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মত অনাকাঙ্খিত প্রাণহানি আর ঘটবে না।
১/ আপনি সাঁতার জানেন তো? সাঁতার না জানলে সমূদ্রে আপনার নিরাপদ এলাকা হচ্ছে, ভাটার সময় গোড়ালি পর্যন্ত আর জোয়ারের সময় হাঁটু পর্যন্ত (তাও যদি আশেপাশে সাঁতার জানা লোক থাকে)
২/ সমূদ্রে নামার আগে জেনে নিন জোয়ার চলছে, না ভাটা চলছে। ভাটার সময় সমূদ্রে নামা ভয়ঙ্কর বিপদজনক! খুব বেশি নিরুপায় হলে ভাটার সময় বড়জোর পায়ের গোড়ালি ভেজাতে পারেন, এর বেশি নয়।
৩/ জোয়ারের সময় যদি সাতার কাঁটতে বা গোসল করতে পানিতে নামতে চান, তাহলে প্রথমে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জেনে নিয়ে নিশ্চিত হোন কোন জায়গাটা সাতার/গোসলের জন্য নিরাপদ। সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ কক্সবাজারের বিশাল সৈকতে সাতারের অভিজ্ঞতা নিয়ে টেকনাফ বা সেন্ট মার্টিনের সৈকতে সাতার/গোসল করতে নেমে বিপদে পরে। এই বিষয়টা ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নিন যে, কক্সবাজারের মত এত ধীর ঢালের এবং দীর্ঘ সৈকত পৃথিবীর খুব কম জায়গাতেই আছে। তাই হাটু পানি থেকে কোমর পানিতে যাবার আগে অবশ্যই দশবার চিন্তা করুন। ভালোভাবে নিশ্চিত হয়ে নিন ওখানে কোন বিপরীত তলদেশীয় স্রোত বা ডুবো গর্ত আছে কী না।
৪/ আপনি নিশ্চিত সাঁতার জানেন। কিন্তু এটা খেয়াল আছে কী কতদিন আগে আপনি শেষবারের মত সাঁতার কেটেছেন? এ কথা সত্যি যে সাঁতার শিখলে তা ভোলা সম্ভব না। কিন্তু সাঁতার হচ্ছে একটি কঠিন ব্যায়াম যাতে শরিরের প্রায় প্রতিটি পেশি কাজ করে। যে কারণে দীর্ঘদিন পর সাঁতার কাটতে গেলে অনেক সময় পায়ের পেশি সংকোচন সমস্যা (কাফ মাসল বা থাই মাসল পুল) দেখা দেয়। পেশি সংকোচন হলে যে যন্ত্রণা হয় তাতে সাঁতার অব্যাহত রাখা মুশকিল হয়ে পরে। এই কারণে সমূদ্রের গভীর এলাকায় সাঁতার কাটতে গিয়ে অনেকে সাতার জানা থাকার পরও ডুবে যান।
৫/ সেন্ট মার্টিনে গিয়ে কখনো জেটি থেকে নেমেই ডান দিকের (দ্বীপের পূর্ব দিক) সৈকত ধরে আগাবেন না (ম্যাপে নীল চিহ্নিত দাগ)। তা না করে বরং মূল রাস্তা ধরে দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম অংশে চলে যান। সেখানে গিয়ে সমূদ্রে নামুন। তারপরও জোয়ার-ভাটার বিষয়ের সাথে সাথে খেয়াল রাখুন সেন্ট মার্টিন একটি প্রবাল দ্বীপ। এর সৈকত খুবই সংকীর্ণ এবং এখানে হাটু-পানির চেয়ে বেশি দূরত্বে যাওয়া মোটেই নিরাপদ নয় (তা আপনি যত বড় সাঁতারুই হোন)।
৬/ জেটি থেকে নামার পর নিতান্তই যদি আপনি সৈকতে হাটার লোভ সামলাতে না পারেন, তাহলে নীল দাগ ধরে হাটতে চাইলে হাটুন। তবে সাবধান! কোন ক্রমেই পানিতে নামবেন না। একবার পানিতে নামলে আপনার আর উঠতে ইচ্ছে করবে না এবং হাটতে হাটতে আপনি সেন্টমার্টিনের মৃত্যু অন্তরীপ উত্তর-পূর্ব সৈকতে চলে যাবেন। দ্বীপের এই সৈকতে পরষ্পর বিপরীতমূখী পৃষ্ঠ ও তলদেশীয় স্রোতের কারণে অনেকগুলো ডুবো গর্ত তৈরী হয়েছে। তাছাড়া তলদেশীয় বিপরীত স্রোত (বটম কারেন্ট) আপনাকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং অবশ্যই এই লাল চিহ্নিত বিপদজনক এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন।
শিক্ষার্থীদের নিয়ে সফরে যাবার বাজে অভিজ্ঞতার দিক হচ্ছে, ওখানে গেলে ওরা কেউ আর আমাদের কথা শুনতে চায় না, নিষেধ মানতে চায় না। ওরা স্বাধীনভাবে সব কিছু করতে চায়; সাহস দেখাতে চায়। অভিজ্ঞদের পরামর্শ না শুনে এবং অতিরিক্ত সাহস দেখিয়ে আর কোন জীবন যেন ঝরে না যায় সে বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে বোঝানোর প্রয়োজন অনুভব করছি।
রাষ্ট্রের প্রতি আমার কোন দাবী নেই। টানা পনেরো বছর পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তা বিধানের অনুরোধ করে উপেক্ষিত হবার পর এটা বুঝেছি যে, রাষ্ট্র শুধু আমাদের মত আম জনতার কাছ থেকে নিতেই জানে। তারা দেয় কেবলমাত্র উঁচু তলার মানুষকে। তাই আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের নিজেদেরই দেখতে হবে।
আপনাদের কে জায়গাটা একটূ ছবি দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাচ্ছি।।
পরিশেষে ওয়ার্ল্ডভিউ-২ উপগ্রহ থেকে তোলা ছেঁড়া দ্বীপসহ সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কিছু ছবি দিচ্ছি, সবার কাছে অনুরোধ রইলো এই স্থানটা সম্পর্কে আপনার কাছের সবাইকে সচেতন করে দিন। ছবিগুলো ফোনে নিয়ে নিন যখন যার সাথে কথা হবে দেখিয়ে দিন, যদি আর একটি প্রাণ ও বাঁচে আপনার এই ছোট্ট কাজ থেকে তাহলে অনেক বেশী উপকৃত হবেন।। বুঝার সুবিধার্থে কিছু ছবি দিচ্ছিঃ


বিস্তারীত দেখুন
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:২৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×