যা হোক ২ দিন লাগিয়ে ফেব্রিক কেটে, সাইড সেলাই করে কম্বল বানানো হলো। প্রতিটি ৪.৫ফুট বাই ৮ ফুট। ফেব্রিকের ডায়ার কারনে সাইজে একটু এদিক ওদিক হয়ে যায়। এবং সুন্দর করে প্রতিটি প্যাকেট করা হয়।আমাদের যাত্রা দিন ছিলো ১জানুয়ারী রাত ১১টায়। ২টা নাবিল বাসের সব সিট নিয়ে আমরা প্রায় ৬৮ জনের একটা দল যাত্রা করি। এবং বহরে থেকে একটা কাভার্ড ভ্যান।
১)
গাড়িতে উঠে সবাই মোটামুটি হইচই করেই ২ ঘন্টা কাটিয়ে দেয়া হল। এর মধ্যে বেশির ভাগ লোকেই ঘুমিয়ে পড়ে। যখন বাস দুটো এসে সিরাজ গন্জ ফুড ভিলেজে থামে তখন দেখি রাত ১.২০ বাজে। সাথে সাথে চোখ বড় হয়ে গেলো শালা করলো কি? তুফান বেগে গাড়ি চালালো। ফুড ভিলেজে খেয়ে দেয়ে আবার রওয়ানা করি। যথারীতি সবাই ঘুম দিলো। আমি কিছুক্ষন জেগে থেকে ড্রাইভারের তামাশা দেখছিলাম। এমন স্পীডে চালাচ্ছিলো যে মনে হলো সে মুখস্ত বাস চালাচ্ছে। ঘন কুয়াশাকে কোন পরোয়া নাকরেই গাড়ি টেনে নিয়ে গেলো। আর সইতে না পেরে আমিও চোখ বুজে থাকলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। বাস যখন আমাদের হোটেলের সামনে দাঁড়ালো তখন ভোর ৫টার কাঁটা ছুই ছুই।বাস থেকে নেমে ঠান্ডায় জমে গেলাম। যাহোক নেমে সোজা হোটেলে ঢুকে পড়লাম। আমরা ২জন এক টি ডবল রুম পেলাম ভাগে। বাকি সবাই বেডশেয়ার করে উঠে পড়লো। আসলে হোটেলের ক্রাইসিস ছিলো শুরু থেকেই। ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে যাব দেখি হোটেল থেকে পাতলা একটা কম্বল দিলো কি করবো গায়ে নিলাম। মেজাজ টাই গরম হয়ে গেলো কম্বলে সিগারেটের ধোয়ার গন্ধ। বাসা থেকে বের হবার সময় আমার একমাত্র আপন বউ আমার ব্যাগে একটা কাঁথা দিয়ে দেয়। সেটা বের করে কাঁথার উপরে কম্বলটা একটু নীচের দিকে নামিয়ে শুয়ে পড়ি। আমরা রুম মেট আমার বস শীতে এবং পুরোনো কম্বলের শুয়ে মোটামুটি অবস্থার ব্যবস্থা হয়ে গেলো।সকাল ৭.৩০টায় ঘুম থেকে উঠলাম, ফ্রেশ হয়ে নীচে নেমেই দেখি সহ কলিগরা খেজুরের রসওয়ালা এনে হাজির তা আর কি করা রস খেয়ে রসাল হতে চাইলাম, পারলাম না কারন রসে ভেজাল ছিলো।
২)
নাস্তা করতে গেলাম। নাস্তা করে একটা রিক্সা ঠিক করে শীতের মধ্যে শহর দেখতে বের হলাম। রিক্সা ওয়ালা মোটামুটি পুরো শহর দেখিয়ে নিলো। এক যায়গা পৌছে বলে এটা এমপি সাহেবের বাড়ি। মানে নুরের বাড়ি।
যাই হোক হোটেলের সামনে রিক্সা থেকে নেমেই নজরে পড়লো অগ্রনী ব্যাংকের শাখা। দেয়ালে কাগজ মত কি যেন সাঁটানো,ম কিন্তু মানুষ জন তেমন নেই ৩/৪ জন। যা হোক কাছে গিয়ে দেখেই মহা খুশি..............।
আমাদের বহরের কম্বল বাহী কাভার্ড ভ্যান তখনো পৌঁছায় নি। সবাইকে সময় দেয়া হয়ে ছিলো বেলা ১২টায়। কিন্ত অবস্থা দেখে ৯টায়ই জানিয়ে দিলাম ৩টায় কম্বল বিতরন হবে। দুপুরে খেয়ে দেয়ে ২টার দিকে আমরা অনুষ্ঠান স্থল নীলফামারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে যাই। কাভার্ড ভ্যান বিভিন্ন প্রতিকুলতা পেরিয়ে বিতরন স্থলে পৌছায় বিকেল ৩.১৫ মিনিটে। কাভার্ড ভ্যান আসতেই শুরু হয়ে গেলো আমাদের কার্যক্রম। আমাদের স্থানীয় ভাবে স হযোগীতা করেছিলো নীলফামারি প্রাইমারি শিক্ষক সমিতি। ৭দিন আগে থেকেই ওদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিলো। সে অনুযায়ী ওরা আগেই স্লিপ বিতরন করে রেখেছিলো। বাকি টা ছবি কথা বলবে-
৩) কাভার্ড ভ্যান থেকে কম্বল নামানো হচ্ছে
৪) আমাদের কর্মকর্তারা নিজেরাই মাথায় নিয়ে কার্টন গুলো নিয়ে যাচ্ছে
৫)
৬)
৭) বিতরন স্থলে সারি করে রাখা কার্টন গুলো
৮) সারিবদ্ধ ভাবে বসে থাকা অপেক্ষা রত শীতার্ত মানুষ গুলো
৯)
১০)
১১) বিতরনের প্রস্তুতি
------
১২) বিতরনের সুচনা
১৩) কিছু ছবি.....
১৪)
১৫)
১৬)
১৭)
১৮)
১৯) আমার একটা ছবি তোলেন
৩শত মত এক্সট্রা সোয়েটারও নিয়ে গিয়েছিলাম। দিয়েছি শিক্ষক সমিতির কাছে যাতে আরো কিছু মানুষকে শীত থেকে বাঁচাতে পারে।
২০) আমাদের টিমের একটা অংশ
২১) আমাদের অফিস মাতিয়ে রাখা লোক, একদিন অফিসে না আসলে সবাই যাকে মিস করে। একজনের কোলে.......
২২) লুলামি সবখানেই
২৩) বিতরন শেষে আমাদের নীলসাগর ও অতিথি পাখি দেখতে যাওয়া ততক্ষনে সন্ধ্যা নেমে যায়। তাও রওনা করলাম।
২৪)
খুবই সুশৃংখল এবং সুন্দর ভাবে আমরা কম্বল বিতরন শেষে ফিরে আসলাম হোটেলে। একটা মামুলী কম্বল ফিরে নিয়ে এসেছে ওদের হাসি মুখ, কত অল্পতেই তারা সুখী হতে পারে এটা যদি আমাদের থিংক ট্যংকরা বুঝতো। এই অল্পটুকুই করার লোক কয়জন।
পরদিন আমরা তিস্তা ব্যরেজ ও তিনবিঘা করিডোর দেখতে গেলাম।