স্বজনের বাঁচা-মরার সন্ধিক্ষণে যখন মন ভার, তখন চলছিল ফাগুনের আগুন ঝড়া বসন্ত। পরদিনই প্রাশ্চাত্য থেকে আমদানি করা হাইব্রিড ফ্যাস্টিবল ভ্যালেন্টাইনস ডে।
উত্তরা থেকে দুপুরে উঠলাম পাবলিক বাসে। বাসের নাম রাইদা। গন্তব্য রামপুরা। সিট পেলাম না, সিটিং হিসেবে চলা ওই গাড়িতে দাঁড়ানোর নিয়ম না থাকলেও জরুরি মুহূর্ত থাকায় দাঁড়িয়েই পথ পাড়ি দেয়ার চেষ্টা।
গাড়ির আগাগোরা ভরপুর। সবাই সবাইকে নিয়ে ব্যস্ত। হঠাৎ চোখ পড়লো দুই সিট সামনের একটি সিটে। যেখানে বসা টিনেজ যুগল। বয়স খুব বেশি হলে ১৫-১৮ এর কাছাকাছি। একটু অন্যরকম তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ।
উত্তরা পেরোতেই একটি সিট খালি হলো, বসলাম। ঘটনা ক্রমে তাদের পেছনেই। সুতরাং বুঝতেই পারছেন সবই পরিস্কারভাবে দেখা যাওয়ার কথা। তাই।
দেখলাম, ১৪ ফেব্রুয়ারির যে দিনটিকে আমরা ভালোবাসা দিবস হিসেবে আমদানি করেছি, মানছি, পালন করছি, ধারণ করছি তার সম্পূর্ণ রূপ।
সংক্ষেপ করলে এমন হয়- ছেলেটি মেয়েটিকে ভেতরের সিটে বসিয়ে বাসের যাত্রীদের সমনেই যা করার সবই করলো। তাও একটু একটু নয়, পুরো সময় জুড়েই তারা নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছে একে অপরের মাঝে। এরবেশি বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
তবে, একটি বিষয় খুবই চিন্তায় এসেছে। দেখলাম, বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রী নামছে-উঠছে। নতুন যারা উঠছেন তারা সবাই ওই তরুণ যুগলের ক্ষুধাময় যৌনতার বহিঃপ্রকাশ দেখেছেন, অবাক খানিকটা হয়েছেন বটে, কিন্তু কেউ কিছু বললেন না। আমিও না।
কারণ, কেন বলবেন? বলার রাস্তা আছে কি? যে দেশে অবৈধতাই বৈধতা, বিজাতীয় সংস্কৃতিই সংস্কৃতি, উৎসবের নামে তরুণ-তরুণীদের মাতাল হওয়ায় দুলিয়ে তোলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায়, অনৈতিকতাই আপডেট থাকার নিদর্শন, চারিত্রিক অবক্ষয় যেন কোনো অপরাধ নয় বরং প্রগতি!
যাই হোক, বিনা বাধায় তারা রামপুরা ব্রিজে নামলো। ছেলেটির গলায় ছিল ব্রিটিশ কাউন্সিল লেখা ফিতা। সে দেখলাম হেলপারকে ১০ টাকা বকশিস দিয়ে গেলো বাস থেকে নেমে।
এটি একটি পাবলিক বাসের চিত্র। এর বিপরীতে অন্দরমহলের দৃশ্য নিশ্চয় সহজেই অনুমেয়।
তাই নিজেকে প্রশ্ন করলাম, ভালোবাসা নাকি যৌনক্ষুধা!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৩৪