বংশের বাতি নিভিয়ে চলে গেল জর্জ
ওদের গড় আয়ু ২০০ বছর। সে অনুযায়ী আরও শ-খানেক বছর বেঁচে থাকতে পারত সে। কিন্তু তা আর হলো না। আয়ুষ্কালের অর্ধেক সময় পার করেই বিদায় নিতে হলো তাকে। তাও বংশের বাতি নিভিয়ে।
যার কথা বলা হচ্ছে, সে লোনসাম জর্জ নামের এক বিশাল ভূচর কচ্ছপ।
ইকুয়েডরে গালাপাগোস ন্যাশনাল পার্কে ঘুরে বেড়াত সে।
গত রোববার তার মৃত্যু হয়েছে বলে ওই পার্কের একজন কর্মকর্তা বিবিসি অনলাইনকে জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, জর্জের মৃত্যুর মাধ্যমে কচ্ছপের একটি উপপ্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেল।
জর্জের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তার শবের ময়নাতদন্ত করা হবে।
৪০ বছর ধরে জর্জের দেখভাল করার দায়িত্ব পালনকারী ফোসতো লিরেনা জানান, জর্জ তার বিচরণ ক্ষেত্রেই মারা গেছে।
১৯৭২ সালে গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের পিন্টা দ্বীপে হাঙ্গেরির একজন বিজ্ঞানী জর্জকে প্রথম দেখতে পান।
গ্যালাপাগোস ন্যাশনাল পার্কের প্রজনন কর্মসূচির আওতায় জর্জের লালন পালন চলছিল।
গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ওলফ ভলকানোর কাছের এক নারী কচ্ছপের সঙ্গে ১৫ বছর ছিল জর্জ। পরে স্ত্রী কচ্ছপটি ডিমও পাড়ে। কিন্তু ডিমগুলো নিষিক্ত হয়নি।
এরপর জর্জকে এসপানোলা দ্বীপের কয়েকটি স্ত্রী কচ্ছপের সঙ্গে এক খাঁচায় রাখা হয়। কিন্তু এখানেও জর্জের বংশ বাড়ানো সম্ভব হয়নি।
জর্জ ছিল গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের এক প্রতীক। তাকে দেখতে বছরে প্রায় দুই লাখ পর্যটক দ্বীপটিতে আসত।
পার্কের কর্মকর্তারা জানান, ভবিষ্যত্ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে জর্জের মৃতদেহ মমি করে রাখা হতে পারে।
উনিশ শতক পর্যন্ত গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে প্রচুর কচ্ছপ ছিল। পরে নাবিক ও জেলেরা কচ্ছপ শিকার করতে শুরু করলে বিলুপ্ত হতে থাকে বিভিন্ন প্রজাতি।
বর্তমানে এ দ্বীপপুঞ্জে বিভিন্ন প্রজাতির ২০ হাজার কচ্ছপ রয়েছে।
-প্রথম আলো, ২৫ জুন ২০১২
................................................
প্রিয় জর্জ আমাদের ছেড়ে চলে গেল......নিঃসঙ্গ জীবন থেকে হয়ত সে মুক্তি পেল......তবু খুব কষ্ট হচ্ছে আজ, বন্ধু হারানোর কষ্ট......না দেখা বন্ধু, যেখানে গেলে সেখানে ভাল থেকো...নিজের প্রিয়জনের কাছে গিয়ে আনন্দে থেকো......এতদিন কষ্ট করে আমাদের মাঝে থাকার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ, আমাদের কৃতকর্মের জন্যেও লজ্জিত...ভাল থেক বন্ধু!
পৃথিবী ঢুঁড়েও সঙ্গিনী মিলছে না নিঃসঙ্গ জর্জের!
এখানেই ছিল জর্জের বাসস্থান
ভাল থেক বন্ধু!