আজ আর্জেন্টিনা যখন বেলজিয়ামের সাথে খেলতে নামবে পুরোটা সময় খুবই টেনশনে থাকব। কোন এক অজানা কারনে আলবিসিলিস্তেরা ৯০'র পর আর বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে পারে নি। টানা ৪বার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ঠিকই কিন্তু চারবারই হোচট। আজও আরেক কোয়ার্টারফাইনাল, প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম। বেলজিয়ামের সাথে আর্জেন্টিনার এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে ৪বার। এর মধ্যে দু'বার ওয়ার্ল্ড কাপে। ১৯৮২'র ওয়ার্ল্ডকাপে বেলজিয়াম আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারায়। এর পর আর কোন অঘটন ঘটেনি। মোট চারবারের বাকি তিনবারই আর্জেন্টিনা জিতেছে। এর মধ্যে ১৯৮৬'র বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ডিয়েগো ম্যারাডোনার অনবদ্য ২ গোলে ২-০ গোলে জয় তো আছেই। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। বেলজিয়ামের আছে কোর্তোয়া, কোম্পানি, ফেলানি, লুকাকু আর এডেন হ্যাজার্ডের মত প্লেয়াররা। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা শিবিরে আছে একদল প্লেয়ার যাদের কাজ হচ্ছে খালি মেসির কাছে বল পৌছে দিয়ে সব দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে ভেবে বসে থাকা।
অস্বীকার করার কিছু নেই আজ বিশ্বকাপে চার গোল করা চারবারের বিশ্বসেরা প্লেয়ার মেসির উপর নির্ভর করে আছে পুরো আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার ভাগ্য যে মেসির মতন এক প্লেয়ার তাদের হয়ে খেলছে তা না হলে সেমির স্বপ্ন তো দূরের কথা এবারের ওয়ার্ল্ড কাপের প্লে-অফ পার করতে পারত কি না কে জানে।
আর্জেন্টিনার আজ হারলে অনেক কিছু হারানোর আছে, কিন্তু বেলজিয়ামের কিছুই হারানোর নেই। তারা কখনো সেমিফাইনালেই খেলে নি। তাদের চাপ থাকবে অনেক কম। গত কয়েক ম্যাচের মধ্যে পুরো সামর্থ্যের আর্জেন্টিনাকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। তাদের পাসে মধ্যে কোন সৌন্দর্য ছিলনা, প্লেয়ারদের মধ্যে কোন রসায়ন ছিল না, মেসির পাস বুঝতেই পারছিলনা টিমমেটরা, একেক প্লেয়ার একেক সময় একেক পজিশনে খেলেছে কোন সত্যিকার গেম প্ল্যানের প্রতিফলন দেখা যায় নি। সবাই দেখেছে গত আর্জেন্টিনা-সুইজারল্যান্ড ম্যাচে মেসি আর ডি-মারিয়া কি প্রানান্ত চেষ্টা করেছে গোল করার। কিন্তু মেসিকে কড়া পাহারায় রাখায় মেসি শট নিতে পারে নি বেশি। সেই কাজটি করেছে ডি-মারিয়া। অনেক গুলো শট নিয়েছে গোলে, গোল হয় নি। দলের উপর মেসির হতাশাটা ফুল টাইমের সময়ই স্পষ্ট দেখা গেছে। কিন্তু শেষমেষ খেলা জেতায় তা নিয়ে আর এত নাড়াচাড়া হয় নি। আজও যদি মেসির সতীর্থরা সেদিনের মতই পারফর্ম করে, নিঃসন্দেহে আজকে হেরে বিদায় নিতে হবে আর্জেন্টিনাকে।
তবে সবকিছুর উপর একটা কথা থাকে, সেটা হচ্ছে একা একটা টিমকে বিশ্বকাপ জেতানো বর্তমান পাওয়ার ফুটবলের যুগে অসম্ভব। সব প্লেয়ারের একটা দিন খারাপ যেতেই পারে। তাই আর্জেন্টিনা হারুক বা জিতুক মেসির উপর কোন দায় কেউ চাপাবেন না।
Viva Albiceleste