শুভ আমার অনলাইন ব্লগ বন্ধু ।ডিজিটাল দেশের ডিজিটাল বেকারত্বের দায় ভুলতে শুভ দিনভর প্রাইভেট পড়িয়ে রাতে অনলাইনে ব্লগিং করে।কিছুদিন আগে শুভ বলল, ক্লাস ওয়ান পড়ুয়া ছাএ রাকিবের গল্প।অনেক চেষ্টার পর শুভ রাকিব কে গরু রচনা শেখাল।কিছুদিন পর রাকিবকে গরু রচনা লিখতে দিলে রাকিব যা লিখল তার সারমর্ম হচ্ছে 'আমাদের একটা গরু আছে।গরুটিকে আমরা আদর করে ডাকি লালু ।আমাদের গরুর ৪টি পা,২টি চোখ,২টি শিং,একটি লেজ আছে।গরুর গায়ের রং কালো'। এর ১৫দিন পর স্কুলের মাসিক পরীক্ষায় রচনা এল 'আমাদের নদী'।রাকিব আমাদের নদী রচনায় লিখল 'আমাদের নদীর নাম লালুয়া।লালুয়া নদীর পাড়ে প্রতিদিন আমি আমাদের ৪পা,২শিং,২চোখ,এক লেজ ওয়ালা কালো গরু লালুর রশি ধরে ঘুরে বেড়ায়।ঘুরে বেড়ানোর সময় লালু যখন আম্বা আম্বা করে তখন আমিও আম্বা আম্বা করি।আমি মাঝে মাঝে লালুকে লালুয়া নদীর পানি খেতে দেয়'।রাকিব কিভাবে 'আমাদের নদী' রচনা লিখেছে তা রাকিবের কাছে শুনে শুভ রাকিবকে'আমাদের গ্রাম' রচনা লিখতে দিল।রাকিব আমাদের গ্রাম রচনায় লিখল আমাদের গ্রামের নাম 'আম্বাপুর'।আমাদের গ্রামে ৪পা,২শিং,২চোখ,এক লেজওয়ালা অনেকগুলো লাল,সাদা,কালো রঙের গরু আছে।আমাদের গ্রামে যখন বিয়ে হয় তখন গরু জবাই করা হয়। গরুর ঝাল মাংস খেতে দারুন মজা'।
বাস্তব জীবনের গল্পের পিচ্ছি রাকিবের মত ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের ডিজিটাল দেশ সেবকদের হর্তাকর্তারা সব কিছুতেই বিরোধী দল আর জঙ্গী নিয়ে আসে।ডিজিটাল কায়দায় (?) জয়ী হওয়ার রাত থেকে ডিজিটাল সরকারের ছাত্র সংগঠনের ছাত্র(?) ভাইয়েরা হল দখল,টেন্ডারবাজি,চাঁদাবাজি ইত্যাদি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি শুরু করে দিয়ে যখন অস্ত্রবাজিতে ব্যস্ত তখন একজন ডিজিটাল মন্ত্রী বলে বসলেন, ডিজিটাল সরকারকে বিব্রত করতেই বিরোধী দল কৌশলে তাদের ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের ডিজিটাল ছাত্র সংগঠনে ঢুকিয়ে দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। ডিজিটাল সেবকের ডিজিটাল সংলাপে আমজনতা মুচকি হেসে 'ইস!' বলে চুপ করে গেলেও চুপ হলনা ডিজিটাল সরকারের ডিজিটাল ছাত্ররা।পরিণামে হারিয়ে গেল মেধাবি কিছু মুখ; কলমের বদলে হাতে উঠে এল লাটি।যে হাত দিয়ে কলম ধরত সে হাত দিয়ে লাঠি ধরে ভর করে দাড়িঁয়ে আকাশের পানে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে মেধাবি চোখগুলো আর অন্যদিকে ডিজিটাল ছাত্র সংগঠনের কল্যালে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্টান।বাড়ছে সেশনজট।সেদিন এক দোস্ত রসিকতা(?) করে বলল ,সেদিন হয়ত দুরে নেই যেদিন সেশন জটের কল্যানে আমার ছেলে আমার সাথেই বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ক্লাসে বসবে।শাহবাঘের মোড়ে দাঁিড়য়ে সেদিন দোস্তের রসিকতায় যখন হেসে উঠে জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোাগান দিয়ে দোস্তের পিঠ চাপড়ে দিতে গেলাম তখনি আরেক দোস্ত এসে জানাল বিড়িআর বিদ্রোহের কথা।ঘন্টা তিরিশেকের বিদ্রোহে অকালে না ফেরার দেশে হারিয়ে গেল ৬০-এরও বেশী তাজা প্রান।বিধবা হল সদ্য বিধবা তরুনী;সন্তান হারাল বাবা;মা হারাল প্রিয় সন্তান;শারিরীক নির্যাতনের শিকার হয়ে ওড়নায় মুখ ডেকে বেরিয়ে এল বাসি ফুলের মত কিছু মুখ।বিধবার অবাক চাহনী;সন্তানের 'আমি আব্বুর কাছে যাব,আমার আব্বুকে এনে দাও;সন্তান হারানো মায়ের আর্তনাদে আমজনতা যখন নিরবে চোখ মুচছে তখন গোপনে পাগলা বাবার দরবারে গেল আমাদের এক ডিজিটাল দেশ সেবক।আর কয়েকজন দেশ সেবক খুজঁতে লাগল বিরোধী দল আর জঙ্গী।সে সুগোগ এনে দিল পাশ্ববর্তী দেশের মিডিয়া।পাশ্ববর্তী দেশের মিডিয়ার চাইতেও একধাপ এগিয়ে কয়েকজন সেবক মিডিয়ার সামনে বানী দিল 'বিরোধী দল আর জঙ্গীরাই বিদ্রোহের জন্য দায়ী'।আমাদের একশ্রেনীর 'সুশীল মিডিয়া'ও ডিজিটাল স্টাইলে আমজনতাকে তা খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে গেল।অন্যদিকে আরেক সুশীল মিডিয়া নিয়ে এল ১০টাক অস্ত্রের ইসু।মিডিয়ার সুশীলতায় সেবকরাও ১০টাক অস্ত্রের পিছনে বিরোধী দল আর জঙ্গী কানেকশন খুজতে শুরু করে দিল।
সব কিছুতেই ডিজিটাল সেবকরা ব্যস্ত বিরোধী দল আর জঙ্গী খুজতে আর পাশ্ববর্তী দেশ ব্যস্ত টিপাইমুখী বাঁধ নির্মানে ।টিপাইমুখ বাঁধ যে আরেকটি ফারাক্কা হতে যাচ্ছে তা মানতে নারাজ হয়ে আমাদের এক ডিজিটাল মন্ত্রী মিডিয়ার কাছে বানিজ্যক সমাচারের মত বললেন, 'কিছু লোক না বুঝেই টিফাইমুখ বাঁেধর বিরোধিতা করছে।টিফাইমুখ বাঁধ হলে দুই দেশেরই লাভ হলে আমরা আপত্তি করব না'। কিন্তু একবারও বললেননা দেশের ক্ষতি দেখলে আমরা টিফাইমুখ বাঁধ হতে দেবনা।
প্রিয় পাঠক,ডিজিটাল সেবকদের আগামী দিনের ডিজিটাল স্লোগান যদি 'দেশ মরুভূমি হয়ে যাক তবুও দাদারা খুশি থাক' হয় তাহলে অবাক না হয়ে হাততালি দেওয়ার জন্য রেডী থাকার কথা কি বলা দরকার আছে?-------------------------------------------------------------------------------
ফিচারটি আজকের দৈনিক আমার দেশের ভিমরুলের Click This Link
লিড ফিচার হিসেবে প্রকাশিত।ফিচারটিতে ব্লগার শুভ৭৭ এর একটি পোস্ট এর কিছু অংশ ব্যবহার করা হয়েছে শুভ৭৭ এর অনুমতি নিয়ে।এবং শুভ আমাকে অনুমতি দিয়েছিল আমি আমার ইচ্ছামত পোস্টটির থিম ব্যবহার করতে পারব।