বেশ অনেক দিন আগের কথা। কত দিন আগের, ঠিক মনে নেই। একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম। মুসলিম বিশ্ব শব্দটা সেখানে ব্যবহার করেছিলাম। একজন পন্ডিত ব্যক্তিকে দেখালাম। ভুল-ত্রুটি থাকলে সহি-শুদ্ধ করে দেবেন।
উনি আমাকে বললেন, এই যে আপনি মুসলিম বিশ্ব শব্দটা ব্যবহার করলেন, মুসলিম বিশ্ব বলতে কিছু আছে কি? যদি থাকে তাহলে হিন্দু বিশ্ব, ইহুদি বিশ্ব, খৃষ্টান বিশ্ব, বৌদ্ধ বিশ্ব থাকতে হয় না? পৃথিবীতে সাতটি মহাদেশ আছে, আমরা জানি। তৃতীয় বিশ্ব বলে একটি কথা আছে, তাও জানি। কিন্তু মুসলিম বিশ্ব আবার কী? আপনি লেখায় কখনো এ ধরনের ভৌতিক শব্দ ব্যবহার করবেন না। করলে লেখার মান ভাল হবে না। মনে রাখবেন।
পন্ডিত লোকটিকে আমি অনেক শ্রদ্ধা করি। তিনি অসম্প্রদায়িক আদর্শের মানুষ বলে নিজেকে দাবী করেন। অত্যন্ত জ্ঞানী।
তার কথাটি নিয়ে ভাবতে থাকি। আসলে সত্যি কথাই তো বলেছেন তিনি। মুসলিম বিশ্ব তো একটি ঘোড়ার ডিম। কোন ভূগোল বা মানচিত্র্রে লেখা দেখি না, মুসলিম ওয়ার্ল্ড। লোকটি আসলেই সচেতন ও সংস্কারমনা। যাক, একটা বিদ্যাতো পেলাম। অন্যকেও দান করা যাবে। তারা আমাকেও বিদ্যান ভাববে।
আমি সেই থেকে কান পেতে থাকি। আমার মত কোন মূর্খ মানুষ আবার এ শব্দটি ব্যবহার করে কিনা। করলেই তাকে জ্ঞান দেব।
কিন্তু দেখলাম, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে মুসলিম ওয়ার্ল্ড শব্দ ব্যবহার করেন বার বার। এই যে পন্ডিতদের বাবা বিবিসি, সি এন এন, কথায় কথায় মুসলিম ওয়ার্ল্ড শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। আচ্ছা ওরা কি ভূগোল পড়ে দেখে না? এ শব্দ যে নেই, ওরা কি বোঝে না? আমার সেই শিক্ষক কি শুনতে পান না এ সব উচ্চারণ? কেন তিনি সংস্কার করেন না এ সব সাম্প্রদায়িক বচন-বিশ্বাস?
শুনেছি মহানবী বলেছেন, সকল মুসলিম একটি ভবনের মত। যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তিশালী করে, বেধে রাখে।
তাহলে এ ধারনা থেকেই কি এ শব্দটির আবিস্কার? নাকি এ শব্দটি ব্যবহারের পিছনে অন্যদের রাজনৈতিক কোন উদ্দেশ্য আছে?