উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য প্রতিটি বিমানবন্দরেই রানওয়ে থাকে। বড় এবং ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোয় এই রানওয়ের সংখ্যা থাকে একাধিক। সেগুলোর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থেও নানা বৈচিত্র থাকে। তবে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই কিন্তু তা করা হয়। আসলে বিমানবন্দরের রানওয়ে যারা নির্মাণ করেন, তারা মেরু অঞ্চল এবং কম্পাসের দিক মেনেই তা করে থাকেন।
১. প্রতিটি রানওয়ে’র পরিচয় দুটি সংখ্যার মাধ্যমে দেয়া হয়ে থাকে। এই নম্বরের মাধ্যমেই বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুম থেকে চালক জানেন কোন রানওয়ে ব্যবহার করতে হবে।
২. প্রতিটি নম্বরই কিন্তু কম্পাসের মাপ থেকে নেয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ বিমানবন্দরের রানওয়ে কম্পাসের যে সংখ্যার ওপর অবস্থিত, সেই নম্বরই রানওয়ের পরিচয়।
৩. এখানেও একটা ব্যাপার আছে, কম্পাসের দিকের মাপ যদি ৩ সংখ্যার হয়ে যায় তবে তার প্রথম দুটি সংখ্যা নিয়ে রানওয়ের পরিচয় ঠিক করা হয়। অর্থাৎ যদি কম্পাসে রানওয়ের অবস্থান দাঁড়ায় ১৫০ ডিগ্রি দক্ষিণ-পূর্ব (SE 150)... তাহলে সেটির পরিচয় ১৫ দেয়া হবে।
৪. সংখ্যা দেয়ার ক্ষেত্রেও একটি বিষয় মেনে চলা হয়। আর তা হল, সেটি ০১ থেকে ৩৬ এর মধ্যে থাকতে হবে। এর কারণ হল, ০১ থেকে ৩৬০ ডিগ্রি কম্পাসের মাপ ধরে তা নির্ণয় করা হয়।
৫. নম্বর বসানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি রানওয়ের দু’টো দিকের দুটি আলাদা পরিচয় রাখা হয়। যেমন: রানওয়ের একদিকের নম্বর যদি ১২ থাকে তবে অপর পাশের নম্বর হবে ৩০।
৬. রানওয়ের দুটি দিকের নম্বরের ক্ষেত্রে একটি বিষয় সব সময়ই মেনে চলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আর তা হলো, রানওয়ের দু’পাশের নম্বরের মধ্যে ১৮ সংখ্যার পার্থক্য থাকবে। অর্থাৎ একদিকের নম্বর যদি ১২ হয় তবে অপর পাশের নম্বর হবে ৩০। (১২+১৮=৩০) বা (৩০-১৮=১২) এই অংকের অর্থ হচ্ছে কম্পাসের এক প্রান্তের মাপ যদি ১২০ ডিগ্রি হয়ে থাকে তবে রানওয়ের অপর প্রান্তের মাপ হবে ৩০০ ডিগ্রি। যেহেতু শেষের সংখ্যাটা ফেলে দেয়া হয় তাই রানওয়ের নম্বর প্রথম দুটো দিয়েই ধার্য হয়।
৭. অবশ্য বিখ্যাত ও বড় বিমানবন্দরগুলোতে পাশাপাশি থাকা একাধিক রানওয়ের নম্বর কিন্তু একই রাখা হয়। সেক্ষেত্রে প্রতিটি রানওয়ের সেই সংখ্যার আগে এল (left), সি (center) কিংবা আর (right) যোগ করা হয়।
৮. মেরু অঞ্চলের চৌম্বক মাপের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কখনো কখনো বিমানবন্দরের রানওয়ের নম্বরও পরিবর্তন করা হয়। অবশ্য এটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। বিষয়টি নিয়ে বিতর্কও রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:১৭