somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধুত্ত.....ভালবাসা.....এবং অতঃপর...........

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে,জানিনে জানিনে,কিছুতে কেনযে মন লাগেনা লাগেনা............সকাল থেকে অবিশ্রান্ত ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে । এর সাথে লোডশেডিং আমাকে কেমন যেন একটা ঘোরের ভেতর ঠেলে দিল । সেই সকাল থেকেই কারেন্ট নেই । আর এমন এক বৃষ্টিস্নাত দিনের কর্মহীনতাই আমাকে এই লেখা লিখতে অনুপ্রাণীত করেছে । বেশ কিছু ফরমাইশি লিখা জমে গেছে এই ক'দিনে । তাই আজ ঋণমুক্তির জন্যই এই লেখা । লোকে বলে মন বিক্ষিপ্ত থাকলে নাকি লিখা ভাল হয় । যদিতা সত্যি হয় তবে ভাল,আর না হলে এই বিরক্তিকর ছেলের আরেকটা বিরক্তিকর লিখা হিসাবেই না হয় এটা থাকবে । বিচারের ভার আপনার উপর ।)





এই মুগ্ধ,ওঠ বাবা । আর কত ঘুমাবি ? আজ থেকে না তোর প্রাইভেট ? এখন না উঠলেতো দেরি হয়ে যাবে । আদর করে ডাকেন মা । হয়ত মায়ের কথা অমান্য করার মত মনমানসিকতা কখনো গড়ে উঠেনি তাই বলেই সে উঠে পড়ল । ঘুম জড়ানো চোখে মাকে জড়িয়ে ধরে বলল "আমার লক্ষী মা,তুমি খাবার দাও আমি আসছি ।"ওহ ভাল কথা,পাঠক আপনাদের সাথেতো মুগ্ধর পরিচয়ই করিয়ে দেইনি । মুগ্ধ দেশের স্বনামধন্য একটি ক্যাডেট কলেজের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র । প্রথমবার ছুটিতে আসার পর তার প্রাইভেট ঠিক করা হয়েছে,আর গল্পের শুরুটা এ সময়েই । অনেক আজাইরা প্যাঁচাল পারলাম । এবার মূল গল্পে ফিরে যাই । আর গল্প শব্দটা ব্যবহার করার ধৃষ্টতা অনুগ্রহপূর্বক ক্ষমা করবেন ।





খেয়েদেয়ে বই গুছিয়ে নিয়ে সাইকেল নিয়ে ছুট লাগাল মুগ্ধ । অল্পক্ষনেই পৌছে গেল স্যারের বাসায় । দেখলো তার আগেই মোটামুটি সবাই পৌছে গেছে । একে একে সে পরিচিত হল কৌশিক,জামান,অর্ক,সুদীপ,রাকিব,আশা,স্মৃতি আর স্নিগ্ধাদের সাথে । এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেট । জীবনের প্রথম টার্মের অমানুষিক জীবনযাপনের পর এরা মাত্র গতকালই বাড়ী ফিরেছে । আজ পরিচিত মুখ না হয়েও এরা মিশে গেছে একে অপরের সাথে।বন্ধুত্তের এক অসাধারন বাতাবরন সৃষ্টি করল এই কয়টি কিশোর কিশোরী । দেখতে দেখতেই ছুটি শেষ হয়ে গেল । আষাঢ়ের মেঘের মত মুখ করে সবাই চলে গেল কলেজে । কালের বিবর্তনে আর সময়ের প্রবাহমানতায় যোগাযোগ হারিয়ে সবাই দুরের মানুষ হয়ে গেল । খন্ড বিখন্ড হয়ে গেল নানা দলে আর উপদলে । গল্পের প্রয়জনেই আসুন আমরা এরকম একটা দলকে লক্ষ করি এবং তাদের নিয়েই এগিয়ে যাই । বহমান কালস্রোতে একঘাতটে আছে মুগ্ধ,সুদীপ আর স্নিগ্ধা । হ্যাঁ,আমার আজকের গল্পে এরাই মুল চরিত্র । আরেকটু সহজ করা যাক,লেখক হিশেবে পুর্নস্বাধীনতা থাকায় আমি সুদীপকে একটু দুরে ঠেলে দিচ্ছি । রইল বাকী স্নিগ্ধা আর মুগ্ধ । এরাই আমার নায়ক আর নায়িকা । এবার কিছুটা সময় স্নিগ্ধার সাথে কাটানো যাক । স্নিগ্ধা একটি গার্লস ক্যাডেটে অধ্যয়নরত এক কিশোরী,যে পাখির সাথে কল্কলিয়ে গান করে,বৃষ্টির সাথে কাঁদে আর বাতাসের সাথে গান করে । জীবনের অনেক কিছুই এখন তার কাছে অজানা । মা আর ভাইবোন মিলে চমৎকার একটা পরিবার তার ,সাথে আছে একঝাক বন্ধু-বান্ধবী । এরকম অনেক বন্ধুর এক বন্ধুই হল মুগ্ধ । ভালই চলছিল ওদের পড়াশুনা,আনন্দ আর অবশ্যি বন্ধুত্ত । কালের ঘড়ি জায়গা বদল করল দুবার এবং চলে আসলো ২০০৮ সাল ।





তখন তারা ক্লাস নাইন এর ক্যাডেট । প্রথম টার্মে কলেজে গিয়ে মুগ্ধর অন্যরকম লাগতে লাগল । কিছুদিন পর সে বুঝতে পারল তার এই শুন্নতা,এই হাহাকার কিসের জন্য । ১৪ বছর বয়সটার গৌরব ধরে রাখতেই সে সফলভাবে প্রেমে পড়েছে এবং ফলাফল রেজাল্ট খারাপ । দুর্দান্ত ভাল ছাত্রটা হঠাৎ বদলে গেল । তার সকল ছটফটানির অবসান করে ছুটি হল । প্রথমদিনেই চলে আসল স্নিগ্ধাদের বাড়ীর সামনে এবং জানতে পারল তার আসার দেরির কথা । অপেক্ষা করতে লাগলো সে কথাটা বলার জন্য । কিন্তু অপেক্ষা করতে লাগলো সঠিক সময়ের জন্য । ঐ ছুটিতেই ছিলো স্নিগ্ধার জন্মদিন । মুগ্ধ অপেক্ষা করছিল জন্মদিনের জন্য । আর মাত্র দুদিন বাকি জন্মদিনের এমন সময় মুগ্ধ আর স্নিগ্ধা গল্প করছে বাসায় বসে । কথায় কথায় মুগ্ধ জানল স্নিগ্ধার গ্রামে যাওয়ার কথা । জানতে পেরেই মুগ্ধ হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসল । তখনি সে বেরিয়ে একটা গিফট শপ এ গিয়ে একটা সুন্দর "I LOVE U" লিখা গিফট কিনল । এবং বাসায় ফিরে সেটা স্নিগ্ধার হাতে দিলো । হঠাৎ অঝোর ধারায় কাঁদতে শুরু করল সে । কোনো জবাব ই দেয়নি সেদিন সে । নতমুখে বেরিয়ে এসেছিল মুগ্ধ,একবুক চাপা উতকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছিল সে । যথারীতি প্রাইভেটে এল মুগ্ধ কিন্তু স্নিগ্ধা অনুপস্থিত । এমন অসহায় পরিস্থিতির মাঝে চলল পাঁচটি দিন । পাঁচদিন পর এল স্নিগ্ধা একটু মুচকি হাসলো সে । পড়া শেষে মুগ্ধ এগিয়ে গেল স্নিগ্ধার দিকে । সাধারন কথার পর হাটতে হাটতে জিজ্ঞেস করলো,"আমার কথার জবাব কিন্তু পাইনি ঐদিন" । স্নিগ্ধার জবাবটা ছিল অসাধারন-"সেটাও কি আমাকে বলে দিতে হবে?"





এরপর থেকে ভালই চলছে এ জুটির । দেখতে দেখতে আড়াই বছর পার করে ফেলেছে এরা । আজ আমি বলছি,সেদিন যে স্নিগ্ধা রাজি হয়েছিল তা ছিল ভালবাসায় নয় ভাললাগায় । কিন্তু আজ পাশাপাশি পথচলায় এরা একজন আরেকজনকে ভালবেসেছে । কাজেই যারা নতুন অবস্থায় আছে তাদের জন্য বলছি এখন হয়তবা অনেকরকম অদ্ভুত অনুভুতি হবে কিন্তু সেসবকে পাত্তা না দিয়ে আরও বেশি আবেগে জড়িয়ে ধর ভালবাসার মানুষটিকে এবং সৃষ্টি কর নতুন সুরের আবেশ । আর সবাই মিলে এই অনণ্যসাধারন বন্ধুদের জন্য প্রানভরে দোয়া করি যাতে কোনো কষ্ট,ভুল-বোঝাবুঝি,বেদনা এদের স্পর্শ না করে । বলুন আমেন......... ।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×