'পোঁদ' শব্দটি মোটামুটি একটি সুশীলজনস্বীকৃত গুরুতর অশ্লীল শব্দ হলেও আঞ্চলিক বাংলার বাগ্বিধিতে এর প্রয়োগবাহুল্য দেখে রীতিমত চমকে গেলাম। ছোটকালে ব্যকরণ ক্লাসে 'একই শব্দের ভিন্নার্থক প্রয়োগ'এর পড়া ঠিকমতো দিতে পারিনি বলে মাস্টারমশায়, মেরে 'পোঁদের ছাল তুলে নেবার' ইচ্ছা পোষণ করেছেন হরহামেশাই। কিন্তু সেদিনের সেই মাস্টারমশায় কি জানতেন, তাঁর সেই মলাটমোড়া ব্যকরণ বইয়ে যেই শব্দটি স্থান পায়নি, তার ব্যবহারিক প্রয়োগের ব্যাপকতা অন্যসব শব্দগুলোকে কীরুপে ছাড়িয়ে গেছে! আঞ্চলিক বাংলায় এই 'পোঁদ' শব্দটি বাক্যের গঠনশৈলী এবং অর্থোদ্যকতাকে কেমনটা অলংকৃত করেছে সেটা সচেতনচক্ষে একটু দেখা নেয়া যাক-
-পোঁদের ছাল তুলে নেওয়া (মর্মন্তুদ বেত্রাঘাত)ঃ যে পড়া ঠিকমতো বলতে পারবে না, মেরে তার পোঁদের ছাল তুলে নেব।
-পোঁদের পালক ছিঁড়ে ফেলা (অতিষ্ট করে তোলা)ঃ ছেলেটা আজ কয়েকদিন ধরে একটা ব্যাডমিন্টন র্যাকেট কিনে দেবার জন্য আমার পোঁদের পালক ছিড়ে ফেলছে।
-পোঁদের বল (শক্তির সর্বাংশ)ঃ প্যাঁকে আটকে যাওয়া রিকশাটা ঠেলতে গিয়ে আমার পোঁদের বল সব বেরিয়ে গেল।
-পোঁদে চর্বি জমা (আয়েসী ভাব অর্জন)ঃ কোনো কাজ-কামের কোনো বালাই নেই, সারাদিন শুয়ে-বসে-খেয়ে ছেলেটার পোঁদে চর্বি জমে গেছে।
-পোঁদ মেরে দেওয়া (বহুবোধার্থক, মোটাদাগে 'সর্বশান্ত করা')ঃ আজ এনামুলের ব্যাটিং দেখেছিস। একেবারে ওয়েস্টিন্ডিজের পোঁদ মেরে দিয়েছে।
-পোঁদের গরজ (অযাচিত দায়)ঃ ওরা ভাই-ভাই কাইজ্যা করছে আমি কেন ছুটাতে যাব? আমার কি পোঁদের গরজ পড়েছে?
-পোঁদকে সূর্য দেখিয়ে ওঠা (বিলম্বিত শয্যাত্যাগ)ঃ ছেলেটা সারারাত ফেসবুকে পড়ে থাকে, আর সকালে পোঁদকে সূর্য দেখিয়ে ওঠে।
-পোঁদ ফেটে যাওয়া (বেদনা-শ্রম-ক্লেশ সহন)ঃ থিসিসের জন্য সারাদিন খাটতে খাটতে আমার পোঁদ ফেটে যাচ্ছে।
পোঁদে লাথি পড়া (কর্মোদ্যোগপ্রাপ্ত হওয়া/সম্বিত ফেরা)ঃ পোঁদে লাথি না পড়লে আবুল কাজটা কখনই ঠিকমতো করবে না।
পোঁদে গু আসা (ইলাভেন্থ আওয়ারে উপনীত হওয়া)ঃ সারাবছর পড়াশুনার কোনো খবর নেই, পরীক্ষা এলে দৌড়াদৌড়ি। পোঁদে গু না আসা পর্যন্ত কোনো কাজই হয়না, তাইনা?
পোঁদে আঙুল দেওয়া (অযথা বিরক্ত করা)ঃ তোকে কে বলেচে ঐ গুন্ডা টাইপ ছেলেটার পোঁদে আঙুল দিতে। এবার ঠ্যালা বুঝবি...।
পোঁদেপোঁদে হাঁটা (পেছন পেছন হাঁটা)- বাচ্চাটার জন্য ঘরের কোনো কাজই ঠিকভাবে করতে পারি না। সারাদিন আমার পোঁদেপোঁদে হাঁটে।
-পোঁদ বাগা দেওয়া (নিতান্ত নিরুপায় অর্থে...)ঃ দিনদিন আয়রোজগারের যে বেহাল অবস্থা, কয়েকদিন পর মহাজনকে পোঁদ বাগা দিতে হবে।
-পোঁদে-পিঠে লাগা (উঠেপড়ে লাগা)ঃ সাইনটা করিয়ে নেবার জন্য স্যারের পোঁদে-পিঠে লাগা ছাড়া উপায় নেই।
... এমনই আরওতো ঢের আছে হয়তো। সবগুলো এইমুহুর্তে মনে পড়ছে না।