নাজিম উদ্দিন আহমেদ নামের আরেকজন যুবককে দেশ হারালো যিনি বেঁচে থাকলে হয়তো দেশের নামকরা আইনজীবী হতে পারতেন। রাখতে পারতেন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এমনি করে আমরা ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নামে ৬জনকে হারালাম। যারা প্রত্যেকেই মেধাবী। দিনশেষে ক্ষতি কার হলো? আমাদের, এই দেশের, এই জাতির। এ নিয়ে যাদের মাথা ঘামানোর কথা তাঁরা যেন শুধু তদন্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছেন। তদন্তের সার্থকতা এখনো শূন্য। এভাবে কালক্ষেপণ হতে থাকলে ভবিষ্যতে আমরা মেধাশূন্য জাতিতে পরিনত হবো। তাই সময় এখনই, এখনই এর সমাধান খুঁজতে হবে।
সমাধান খোঁজার আগেই আমাদের দেশের কিছু অতি উৎসাহী বুদ্ধিজীবী নামক প্রজাতি সরকার তথা জনগণকে বিভ্রান্ত করে দেয়, তারা টিভির টকশোগুলিতে টকেটিভের মতো যেসব বক্তব্য ঝাড়েন তা শুনে আমার মনে হয় তারা বুদ্ধিজীবী নন বরং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তাঁরা বলেন ইসলাম শান্তির ধর্ম, সেখানে মারামারির কোন স্থান নেই। তাই যদি হবে তাহলে রাসুলে পাক (সাঃ)-এর সময়ই ওহুদের যুদ্ধ, বদরের যুদ্ধ, খন্দকের যুদ্ধের মতো এত যুদ্ধ হয়েছিল কি বিপক্ষের যোদ্ধাদের আদর করার জন্যে? আবার বলেন লেখার জবাব লেখা দিয়েই দেয়া দরকার। সেজন্য চাপাতি কেন? তাঁদেরকে কে বোঝাবে আমার শত্রু কি আমার নিকট থেকে প্রেসকিপশন নিয়ে সেই অনুযায়ী আমাকে আঘাত করবে? এখন জঙ্গীরা যদি বলে আমরা চাপাতি দিয়েই আঘাত করবো এটাই আমাদের প্রতিশোধের ভাষা। আপনারা ব্লগ লিখে, টকশোতে চাপাবাজি করে তার জবাব দেন কেন, পারলে চাপাতি দিয়েই মোকাবিলা করেন। তখন টকশোজীবীরা কী বলবেন? এভাবেই আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি। তথাকথিত এসব বুদ্ধিজীবীরা আরো যেসব ক্ষতি করছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো, যেসব ব্লগার, কিংবা অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ইসলাম, আল্লাহ, রাসুল (সাঃ)কে অপমান ক’রে কথা বলে তাদেরকে মুক্তমনা কিংবা বিজ্ঞানমনষ্ক লেখকের তকমা লাগিয়ে আরো উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেন। যে জীবনে এক পৃষ্ঠাও বিজ্ঞান পড়েনি কিন্তু ইসলাম ও রাসুল (সাঃ)কে নিয়ে খিসতি-খেউড় করে সেও বনে যায় বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় “মুক্তমনা আর বিজ্ঞানমনষ্ক” শব্দ দু’টি যেন ইসলাম আর রাসুল (সাঃ)কে গালি দেয়ার অলিখিত লাইসেন্স। আমাদের মাননীয় খাদ্যমন্ত্রী জনাব কামরুল ইসলামের সমালোচনার অভাব নেই। কিন্তু একটি কারণে আমি তাঁকে একটা ধন্যবাদ দিতে চাই তাহলো তিনি বলেছেন, “কেউ যদি আমার ইসলাম এবং রাসুল (সাঃ)কে নিয়ে বাজে কথা বলে তাকে কোন ছাড় দেয়া হবে না।”
আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনেক স্বপ্নই ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিছু হচ্ছে কিন্তু একটি স্বপ্ন আমরা বেমালুম ভুলে বসে আছি। রাষ্ট্রীয় মূলনীতির একটি নীতি আমরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনছি না। সংবিধানের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে আমরা আমলে আনার ব্যাপারেও ভাবছি না। বিষয়ি হলো “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি”। এ বিষয়টিতে সরকার কঠিন হলে আমাদের সোনার ছেলেদের ঘাড়ে চাপাতির কোপ প্র্যাকটিস করে জঙ্গীরা হাত পাকাতে পারতো না। যখন একজন ব্লগার উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে প্রকাশ্যে বলেছিলো, “তোদের আল্লাহ্কেও অপমান করলাম, তোদের আইন আদালতকেও অপমান করলাম”। তখনই যদি সরকার কঠিন হতো তাহলে হয়তো এতগুলি তাজা প্রাণ অকালে না-ও ঝরে যেতে পারতো। কারণ যারাই কোন ধর্মের প্রতি এধরণের আচরণ করতে চাইতো সরকারের কঠোরতার কথা মনে করে তা করতো না। ফলে লাভমান হতো দেশ ও জাতি।