আফ্রিকায় এক কৃষক সুখি ও পরিতৃপ্ত জীবন যাপন করতো। সে সুখি কারণ তার যা ছিল তাতেই ছিল সে খুশি। আবার সে সন্তুষ্ট ছিল বলেই সে সুখী ছিল।একদিন একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি তার কাছে হীরের মহিমা কীর্তন করে হীরের ক্ষমতা সম্পর্কে অনেক কথা বললেন। তিনি জানালেন '' তোমার যদি বুড়ো আঙ্গুলের আকারের একটা হীরে থাকে তবে সম্ভবত একটি দেশের মালিক হতে পারবে''। এই বলে বিজ্ঞ ব্যাক্তিটি চলে গেলেন। কিন্তু সেই রাতে কৃসক আর ঘুমাতে পারলেন না। তার মনে সুখ ছিল না, কারণ হীরের অভাবে সে ছিল অতৃপ্ত। অতৃপ্ত বলেই সে ছিল অসুখী।
পরদিন থেকেই কৃষক তার খামারবাড়ি বিক্রি করার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিল। শেষপর্যন্ত বিক্রি করে তার পরিবারকে একটি নিরাপদ জায়গায় রেখে সে বেরিয়ে পড়লো হীরের খোজঁ করতে। সারা আফ্রিকা সন্ধান করেও কোথাও নসে হীরে পেল না। সারা ইউরোপ খুজলো কিন্তু সেখানেও সে কিছু খুজে পেল না। যখন সে স্পেনে গের তখন সে ছিল শারিরীক, মানসিক এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সম্পূর্ন বিদ্ধস্ত। চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে সে বার্সেলোনা নদীতে ঝাপ দিয়ে আত্ন্যহত্যা করলো।
এদিকে যে লোকটা খামার বাড়ি কিনেছিলো সে একদিন সকালে ক্ষেতের মাঝখানে দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট নদীটির উটকো জল খাচ্ছিল। নদীর ওপারে একটি পাথরের টুকরোর উপর সকালের রোদ পড়ে রামধনুর মতো বিচিত্র রং ঝকমক করে উঠলো। বসার ঘরের টেবিলেরর উপরে পাথরটি বেশ ভালো দেখাবে মনে করে লোকটিপাথরটি কুড়িয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরলো। সেদিন বিকেলেই সেই বিজ্ঞ ব্যাক্তিটি বাড়িতে এসে টেবিলের উপরে জকমকে পাথরটি দেখে জিজ্ঞেস করলো '' হাফিজ কি করে এসেছে'' হাফিজ ছিলো পুরোনো মালিকের নাম। খামার বাড়ির নতুন মালিক বললেন '' না, কিন্তু একথা জিজ্ঞেস করছেন কেন'' বিজ্হ ব্যাক্তিটি বললেন, '' অই পাথরটি একটি হীরে, আমি হীরে চিনি''। মালিক কিন্তু মানতে চাইল না।
সে বললো,'' না এটি একটি পাথর। আমি এটি নদীর ধারে কুড়িয়ে পেয়েছি। আমার সঙ্গ আসুন, দেখেবেন সেখানে এই ধরনের আরও অনেক গুলো পাথর রয়েছে। তারা দুজনে কিছু পাথর কুড়িয়ে পরীক্ষার জন্য জহুরির কাছে পাঠালো। পাথরগুলো হীরেই। দেখা গেলো সমস্ত একর জুড়েই অজস্র হীরে ছড়ানো রয়েছে।
এই গল্পটি আমাদের কে কি কি শিক্ষা দেয়?
এই গল্পটি আমাদেরকে ৫ টি শিক্ষা দেয়।
১. হাতের কাছের সুযোগটিকে যথার্থভাবে সদ্বব্যবহার করাই সঠিক মনো ভাব। একরের পর একর বিস্তৃত হীরে ভরা ক্ষেতটি ছিল হাতের কাছের সুযোগ। সোনার হরিণের সন্ধানে না ছুটে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রাপ্ত সুযোগের সদ্বব্যবহার করাই উচিত।
২. নদীর অপর পারের ঘাসকে অনেক সবুজ মনে হয়। দূরবর্তী সম্ভাবনা মানুষকে অনেক বেশি উজ্জ্বল মনে করে।
৩.প্রাপ্ত সুযোগকে কতাজে না লাগিয়ে যারা সূদুরের স্বপ্নে বিভোর তারা জানে না যে অই সুযোগটি পাওয়ার জন্য অনেকেই উন্মুখ হয়ে আছে। সে খুশ হবে অই সুযেগটি পেলে।
৪. সুযোগ সম্ভাবনার বোঝার ক্ষমতা যাদের নেই তারা সুযোগ দরজায় এসে যকন কড়া নাড়ে, তখন আওয়াজ হচ্ছে বলে বিরক্ত হয়।
৫. একই রকম সুযোগ ২ বার আসে না। পরবর্তী সুযোগ হয়তো আরও ভাল হবে কিংবা খুবই কষ্টসাধ্য হবে কিন্তু এই রকম হবে না।