1857 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সময় 26তম স্থানীয় ইনফ্যান্ট্রি লাইট রেজিমেন্ট লাহোর এলাকায় নিযুক্ত ছিল. 1857 সালের 13মে ওই রেজিমেন্টের3800 স্থানীয় সিপাইকে নিরস্ত্র করে দেয়া হয় . যখন ইংরেজ অফিসারদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সিপাইদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বন্ধ হলো না তখন ধর্মপুরের কাছে ওল্ড অফিসার্স কলোনির ওপর হামলা করে একজন ইংরেজ অফিসারকে হত্যা করা হল. বিদ্রোহীরা রাভি নদীর কিনার ধরে পথ চলে অমৃতসরের কাছে আম্বালা পৌছলে স্থানীয় ডিসি ফ্রেডরিক কুপার এলাকার শিখদের সাথে মিলে তাদের গ্রেফতার করেন. 237 জন বিদ্রোহীকে গুলি করে হত্যা করা হয় . 42 জনকে তোপের মুখের সামনে রেখে উড়িয়ে দেয়া হয়. 45জনকে শ্বাস বন্ধ করে মারা হয়. অতপর একটি গর্ত খুড়ে তাতে লাশগুলো নিক্ষেপ করা হয়. ওই গর্তের উপর শিখরা একটি গুরুদুয়ারা বানিয়ে নেয়. কিন্তু 2014 সালে ওই গুরুদুয়ারাটি শিখরা মাটি খুড়ে 1857 সালে মেরে ফেলা মুসলমান ও হিন্দু সিপাইদের হাড় বের করে সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে. ঐ স্মৃতিসৌধ আমাদের বলে মানুষকে বিনা বিচারে তোপের মুখে রেখে উড়িয়ে দেয়ার প্রথা পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শক্তিই শুরু করেছে . আর ISIS এর মতো সংগঠনগুলো সেই প্রথাকেই সামনে নিয়ে এগোচ্ছে.
পশ্চিমা সভ্যতা আমাদেরকে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম দুটি বিশ্বযুদ্ধ দিয়েছে যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়. আর পারমাণবিক বা হাইপারসনিক বোমার মত কিছু গণবিধ্বংসী উপহার.
ব্রাসেলসে আইএস এর হামলা মুসলিম সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে পরিচয় পাচ্ছে. কিন্তু আই এস এর হামলায় সবচেয়ে বেশি নিহত হচ্ছে মুসলিমরা বিশেষত তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়ায়.
আইসিস যোদ্ধা 2015 সালের 13নভেম্বর প্যারিস হামলাকারী সালেহ আবদুস সালামের পরিচয়. আগে বলে রাখি একেও মুসলিম, জিহাদি, অনেকক্ষেত্রে ইসলামিস্ট লেবেলও দেয়া হয়েছে.
আবদুস সালামের মা বাবা আলজেরিয়ান, তবে তার জন্ম বেলজিয়ামে. সে ফ্রান্সেরও নাগরিক. কিছুদিন আগ পর্যন্ত সে ব্রাসেলসে একটি (মদের) দোকানের ম্যানেজার ছিল. মাদকদ্রব্য বিক্রয়ের অপরাধে তার দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়. 2015 সালের ফেব্রুয়ারীতে তাকে হল্যান্ডে একই অপরাধে গ্রেফতার করা হয়. মুক্তি পাওয়ার পর সে আইসিস এ যোগ দেয়. প্যারিস হামলার পর তাকে আইসিস যোদ্ধা আখ্যায়িত করা হয়. তার মদের দোকান থেকে আইসিস সফর করে প্যারিস হামলা আট-নয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়.
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৯