অতি সম্প্রতি এক ভয়ঙ্কর সংবাদ দেখে শিউরে উঠেছি! ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন ও কমিটি গঠনের জন্য এবার টার্গেট করা হয়েছে দেশের প্রতিটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোকে।ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পৌঁছে গেছে সকল জেলা ও থানা কমিটির কাছে।যে শিশুরা এখনও শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা শেখেনি-হাঁটতে শেখেনি মেরুদন্ড সোঁজা করে,সেই শিশুদেরকে নিয়ে ছাত্রলীগের শিশুকিশোর লীগ গঠনের এই কুবুদ্ধি কোন উর্বর মস্তিক থেকে উৎপাদিত হয়েছে সেটা সমগ্র দেশবাসীকে জানানো উচিৎ।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কঁচি কাঁচা শিশুদের যখন বই খাতা কলম নিয়ে স্কুলে গিয়ে ছড়া শেখার কথা সেই সময়ে তাদের দিয়ে রাজনীতির স্লোগান দেয়ানোর মত ধৃষ্টতা দেখানো এক মহা অন্যায়।যে বয়সে শিশুদের মেতে ওঠার কথা গোল্লাছুট কানামাছির মত ছেলে খেলায় সে বয়সে শিশুদেরকে মিছিলে পাঠানোর হীন কর্ম নিশ্চিতভাবেই এক মহাপাপ!!আমাদের দেশের প্রচলিত আইনে একজন ছেলেকে বিয়ে করার জন্য উপযুক্ততা প্রমানের ক্ষেত্রে ২১বছর বয়স বাধ্যতামুল আর মেয়েদের ১৮ বছর। চাকুরীতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও তাই। একজন ব্যাক্তি যে কোনো ধরনের নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলেও তাকে কমপক্ষে ১৮বছর বয়সী হতেই হবে।ঠিক একইভাবে ১৮বছর বয়স পূর্ণ না হলে কোনো সন্তান তার বাবা মায়ের সম্পত্তির মালিকানা পেতে পারেনা।এ ধরনের আইন এর বাধ্যবাধকতা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিদ্যমান।তাহলে কেনো রাজনীতিতে প্রবেশের জন্য একটা সুনির্দিষ্ট বয়সের সীমারেখা থাকবে না?একজন কোমোলমতি শিশুকে রাজণীতির নোংরা নর্দমায় নিক্ষেপ করাটা কি খুব জরুরী!? রাজনীতির অসম প্রতিযোগীতা তাদেরকে জীবণের শুরু থেকেই আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন করে গড়ে তুলবে যা এক সময় ভয়ঙ্কর সামজিক বিপর্যয় ডেকে আনতে বাধ্য! অফিসের পিয়ন কিংবা আয়া পদটির জন্য একজন ব্যাক্তিকে সর্বনিম্ন এস এস সি পাশ করতে হয়-সেখানে একজন শিশু যে কিনা প্রাইমারী স্কুলে বর্ণ পরিচয়ে ব্যাস্ত থাকে সে কিভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মি তথা নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে? যখন শিশুদের মেধা বিকাশের সময় ঠিক তখনই কেনো রাজনীতির ঘুনপোকা তার মগজে ঢুকিয়ে সেই মেধাকে অঙ্কুরেই পচন ধরাতে হবে?? রাজনীতির অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থের এই হীন মানসিকতার বিরুদ্ধে এখনই জোরালোভাবে আমাদের সচেতন অবিভাবক শিক্ষক ও সমাজের প্রগতিশীল ব্যাক্তিদের প্রতিবাদ করতে হবে।তা না হলে আমাদের আগামী প্রজন্ম একটা নষ্ট সময়ে নিমজ্জিত হবে এটা সুনিশ্চিত।রাজনীতির পাশা খেলার গুটি হয়ে আমাদের সন্তানেরা এক একজন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজ ক্যাডার হয়ে গড়ে উঠবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব এমনটা কিছুতেই হতে পারে না।আমরা কিছুতেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে এই মরণ খেলা সমর্থন করতে পারিনা। আওয়ামীলীগের মাননীয় সভানেত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,একজন মা এবং জাতির জনকের শিশুবান্ধব কন্যা বাংলাদেশের অবিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে উদাত্ত আহ্ববান জানাই-বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মকে ধ্বংসের ভয়ঙ্কর এই মরণ খেলা এখনই বন্ধ করুন! তা না হলে ইতিহাস আপনাকে ক্ষমা করবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৮