" জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন
জোসনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন " ~ ইমন জুবায়ের
কিছু মানুষকে কখনোই ভোলা যায় না, তাঁরা মিশে যান আমাদের চিন্তা ও চেতনায়। ইমন জুবায়ের তেমনি একজন মানুষ। তাই তাকে ভীষণ মনে পড়ে। মনে পড়ে, কারণ তাকে ভালবাসি। আর শুধু আমি নই, আমার মতো অনেকেই ইমন জুবায়েরকে ভালোবাসেন। কেননা, ইমন জুবায়ের একজন 'সহজ মানুষ' ছিলেন।
আমাদের জন্য এটা অপরিসীম লজ্জার বিষয় যে আমরা গুণী মানুষদেরকে তাদের জীবদ্দশায় প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে কুণ্ঠিত হই। লজ্জাবোধ করি। ইমন জুবায়েররের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটে নি। তবু কিছু মানুষ ইমন জুবায়েরকে সবসময়ই ভালবেসেছেন, শ্রদ্ধা করেছেন। তাদের স্মৃতিচারণমূলক স্বীকারোক্তি থেকেই আসুন আমরা প্রয়াত এইন নগর ঋষি শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়ের সম্বন্ধে কিছুটা জানার চেষ্টা করি।
ইমন জুবায়ের ভাই আত্মজীবনীমূলক লেখা খুব একটা লেখেন নি। তবু এ পোস্টের প্রথমদিকে ইমন জুবায়ের ভাইয়ের সামান্য কিছু লেখার লিংক সংযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে - লেখায়, মন্তব্যে কিংবা মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে টুকরো টুকরো ছড়িয়ে আছেন ব্যক্তি ইমন জুবায়ের। আমাদের প্রিয় ইমন ভাই।
আজ থেকে প্রায় দশবারো বছর আগে, আমার বন্ধু ডাঃ শাহাদাত, আমাকে একজন মানুষের কথা শুনিয়েছিলো। বন্ধুর শব্দ ও ভাবগুলো নিজের পাত্রে ঢালার পর ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিস্ট্রির লোক, ঘর ছেড়ে বেরোয় না, জটিল জটিল কথা বলে, খ্যাপা, মাঝে মাঝে সামলানো মুশকিল, কুয়েকি চরিত্র, এয়ারি সাইন, রাশি নিয়ে খেলে; কেউ কেউ বলে পীর, পীরের কাছে গেসিলি, পীর কী কইলো ইত্যাদি।
বলেছিলো কপিল নামের এক লোকের কথা, হাজার বছর আগে কপিল নামের মানুষটা নাকি বাঙালি ছিলো এই ধারণার ডিসকোর্স লিখছেন; কে কপিল, কিংবা কী কপিল সেইসব জানি না; এটার কী গুরুত্ব বুঝি না; গৌতমের ভাবমানসে বাঙলা বলতে চান; তারপর আরও শুনি এই জুবায়েরের বাসায় বিভিন্ন প্রজাতির লোকজন আসে, তখনও-খুব-একটা-বিখ্যাত-হয়নাই-টাইপের লোকেরা উল্টায় পালটায় থাকে, ইমন জুবায়ের সবার মাঝেই; এদের একজন জুবায়ের মালিক, বংশীবাদক, বন্ধু শাহাদাত এই মালিকের কাছ থেকে বাঁশী শিখতে যায়; তারপর আরও কিছুদিন পরে শুনি ব্ল্যাক ব্যাণ্ডের লিরিক্স লিখেন এই ইমন জুবায়ের, জনটন আসে, তাহসান তার কাজিন হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি। -- (ইমন ভাই, কেমন আছেন? --- আকাশ অম্বর)
ছিন্নস্মৃতি: শৈশব পর্যায় -- ইমন জুবায়ের
স্মৃতির শহর রাজশাহী -- ইমন জুবায়ের
স্মৃতির শহর চট্টগ্রাম -- ইমন জুবায়ের
ইমন জুবায়ের জন্মগ্রহন করেছিলেন ১৯৬৭ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারী, ঢাকায়। বাবা আবদুল মালেক পাটোয়ারী ছিলেন একজন আইনজীবী, মা নুরুন্নেসা হামিদা বেগম। চার বোনের এক ভাই ইমন জুবায়েরের অনেক নোট এবং লেখায় তাঁর স্নেহময়ী মাতামহী আমেনা খাতুনের কথা এসেছে বারবার।
স্কুল জীবন কেটেছে ঢাকা উইলস লিটল ফ্লাওয়ারে (১৯৮৪), এরপর ঢাকা সিটি কলেজে কলেজ জীবন শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ছিলেন জসিমুদ্দীন হলের অনাবাসিক ছাত্র। ।
পছন্দ করতেন ক্রিকটে খেলা, এই বিষয়ে আমার যতদূর মনে পড়ে তার পোস্টও ছিল বেশ কিছু, পছন্দের দল প্রথমে বাংলাদেশ, এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পছন্দের ফুটবল দল ছিল মোহামেডান।
আর পছন্দ করতেন বই পড়তে, প্রচুর বই পড়তে.... ------ (বাংলা ব্লগিং জগতের অন্যতম নক্ষত্র, আমাদের প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই আর আমাদের মাঝে নেই........ --- রেজোওয়ানা)
মধ্য-শীতের জার্নাল -- ইমন জুবায়ের
শেষ শীতের জার্নাল। -- ইমন জুবায়ের
পৌষ বন্দনা: ভোরে, কুয়াশায়... -- ইমন জুবায়ের
সদর দরজা দিয়ে ঢুকে হাতের ডানের ঘরটা। দরজা দিয়ে ঢুকি। তারপর শুধু মনে আছে যে শাদাশাদাফর্সা খালি গায়ের একটা লোক মেঝের উপর পাতা একটা পাতলা তোষক থেকে উঠে আসছেন, আমাকে দেখিয়ে শাহাদাতকে জিজ্ঞেস করছেন – আগে বলো জন্মতারিখ কবে? আর এক প্রাণখোলা হাসি। একটুপর তিনজন তিনটা জায়গায় বসে স্থির হলে আমি মানুষটার দিকে তাকিয়ে আবিষ্কার করলাম লোকটার দুটো চকচকে তীক্ষ্ম চোখ আছে, সেইসাথে আছে এক চমকপ্রদ সেন্স অফ হিউমার, আর সেইসাথে টের পেলাম আমি এক প্রবল পরাক্রম ছারপোকা বাহিনীর আক্রমনের শিকার। বন্ধুপ্রবর আগে ওয়ার্নিং দিলেও আমি এদের আক্রমনের তীব্রতায় মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না। বন্ধুর দিকে তাকিয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছি, উসখুস করতে গিয়েও তাই নিজেকে থামিয়ে দিচ্ছি, নিজেকে এইখানে ঠিক উপযুক্ত মনে হচ্ছে না, হলে এই বাহিনীর আমারে একটু হলেও ছাড় দেয়ার কথা নিশ্চয়ই। যাহোক বন্ধুর সাথে অন্য অনেক কথাবার্তা চলার পর তিনি যথাসময়ে আমার দিকে মনোযোগ দিলেন এবং ঘড়ির হিসেবে পাক্কা দেড়ঘন্টা নবাগত আমাকে নিয়ে কথা বললেন। তিনি একটু থামলে আমি এই সুযোগে নিজের কিছু কথা বললাম, তারপর বের হয়ে আসার পর আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু আমাকে বললো এত কথা বলতে সে আমাকে আগে কখনও দেখে নাই। ব্যাপারটা আমি কমপ্লিমেন্ট হিসেবে নিলাম। আর বুঝে পেলাম যে মানুষটাকে একটা বহুতল-ভবনের ছোট একটা ঘরে রেখে আমরা এখন শান্তিনগরের রাতের পথ ধরে হেঁটে চলেছি, মানুষটাকে আমার ভালো লাগতে শুরু করেছে। কেন? কারণ কি? তিনি ছারপোকা পালেন বলে? অহংবোধ বাদ দিলে যে জিনিসটা আমায় স্বীকার করে নিতে হয়েছে, সোজা কথায়, এর মতন মানুষ আমি আগে দেখি নাই। ভাবলাম যে বৈশিষ্ট্যগুলো তাকে ঘিরে আছে এটা তাকে আলাদা বানাচ্ছে, এটা স্বাভাবিক। আমি অতিরিক্ত কিছু তার উপর চাপাতে নারাজ। সেটার দরকারও নাই। এমন কাউকে বিশ্বাস করার ব্যাপারে আমি ততদিনে ভালো কঞ্জুস হয়ে উঠেছি। -- (ইমন ভাই, কেমন আছেন? ---আকাশ অম্বর)
স্মৃতি: নয়নের জন্য জোছনা-বিষয়ক দু-লাইনের কবিতা -- ইমন জুবায়ের
সেন্ট মার্টিন: ১৯৯৪; -- ইমন জুবায়ের
ছিন্নস্মৃতি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় (১৯৮৯-৯৫) -- ইমন জুবায়ের
আরমান আনোয়ারের একটি কবিতা -- ইমন জুবায়ের
গত ৩/১/১৩ইং রাতে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় বাংলা ব্লগের সবচেয়ে নিঃস্বার্থ, নিবেদিত ব্লগার ইমন জুবায়ের চিরদিনের জন্য চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
বিশ্ব সভ্যতা, বাংলাদেশের ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম,সুফি মরমিবাদ, শাস্ত্রীয় সংগীত, চিত্রকলা থেকে শুরু করে মিথলজি, বাংলা সাহিত্যের সকল শাখায় ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ।
ব্যান্ড দল ব্ল্যাক' এর গীতিকার (তিনি ব্ল্যাকের প্রায় ৩০টি গান রচনা করেছেন) ইমন জুবায়ের ইতিহাস চর্চা ছাড়াও ছোট গল্প এবং কবিতা লিখতেন। বাংলা ব্লগে অন্যতম সেরা মৌলিক ছোট গল্প লেখক তিনি।
নির্মোহ ও অন্তর্মুখী ব্লগার 'ইমন জুবায়ের'। গত চার বছরের কিছু বেশী সময়ে অসংখ্য এবং বিবিধ বিষয়ে তথ্য সমৃদ্ধ লেখার মাধ্যমে বাংলা ব্লগ জগতকে সমৃদ্ধ করে তুলছিলেন। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক ব্লগ প্রতিযোগিতা, ডয়েচে ভ্যালেতে বেস্ট বাংলা ব্লগ ক্যাটাগরিতে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন (পরে সেটা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন)।
'ইমন জুবায়ের' শুধু সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখেলেও তিনি ছিলেন পুরো বাংলা ব্লগ জগতের 'সম্পদ'। -- (ব্লগার ইমন জুবায়ের একটি নক্ষত্র পতন । (সংকলিত পোষ্ট) ---- মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন)
নীলক্ষেত: পুরনো বইয়ের গন্ধ শোঁকার স্মৃতি -- ইমন জুবায়ের
ব্রেইন ড্রেন -- ইমন জুবায়ের
এবারের প্রবারণা পূর্ণিমার আলোয় যখন বাকখালি নদীতে ঐতিহ্যবাহী জাহাজ ভাসল না -- ইমন জুবায়ের
অপমিত -- ইমন জুবায়ের
যারা তাকে ব্যবহার করেছে, যারা তার কাছ থেকে নিয়েছে, যারা তাকে অবহেলা করেছে, কষ্ট দিয়েছে, আশ্চর্য হইনা, তিনি সব হজম করেছেন, ভয়ংকর মানসিক শক্তির মানুষটা তাদেরই প্রমোট করেছেন, তাদের নিয়েই থেকেছেন। চামড়া জাতপাত কিংবা উপরের তল দেখে নয়, অন্যদের অন্তর্নিহিত সত্তার ভাব টের পাওয়ার গভীর ক্ষমতাসম্পন্ন এক মানুষ তিনি। অস্তিত্ব আগে, এর এসেন্স পরে। উদ্বেগ, শারিরীক সীমাবদ্ধতা, চারপাশের প্রতিকুল পরিবেশ। ‘মাঝে মাঝে ব্লিস হয়...মাঝে মাঝে...’। তাই যখন তিনি লিখছেন টোলটেক সভ্যতা কিংবা গৌতমের কথা, সুমেরীয় সভ্যতা কিংবা লালনের গুরুদের কথা, রাগ বাগেশ্রী কিংবা জন্মদিনের পোষ্ট, পাঠক, আপনি প্রিটেক্সট জানবেন, এবং ভেবে নেবেন। ভেবে নেবেন কোন অবস্থা থেকে তিনি আনন্দ দিয়েছেন, জ্ঞান দিয়েছেন, হেসেছেন, খেলেছেন। কাঠের একটা চেয়ারে বসে হজম করেছেন সবকিছু। এটা কী সহজ ছিলো? ভাবতে গেলে হয়তো আরেকটু স্পষ্ট হবে, যেরকম তাকে ভেবেছি, তিনি তার থেকেও অনেক বহুমাত্রায় খেলে বেড়ানো এক বহুমাত্রিক মানুষ। সহজ মানুষ। আমি শুধু বলতে চাই, তিনি যদি আরেকটু ঘৃণা করতেন, তিনি বেঁচে যেতেন। তিনি যদি স্বার্থপর হতেন, তিনি বেঁচে যেতেন। ঘৃণার চাষ তিনি করেননি। তিনি কোনোকিছুর চাষই করেননি। কেন তিনি ইমন ভাই, কারণ তিনি সব জ্ঞান, স্কিল, এবং প্রজ্ঞার আড়ালে একজন সহজ ভালোমানুষ, যেটা পাওয়া অসম্ভব। এই অসম্ভবের দেখা আমরা পেয়েছি। আমরা তাই যেতাম। কোনো কিছুর আশায় নয়। কোনো বিশ্লেষণধর্মী দুনিয়া উদ্ধার করা বিশ্লেষণ নয়। সঙ্গ দিতে। একজন বন্ধুর সাথে কথা বলতে। অল্প সময়ের এই জীবনে কিছুক্ষণ পথের সঙ্গী হতে, একসাথে হাঁটতে। ‘শোনো, তোমরা তো আর এখানে ঠিক মিষ্টি খাইতে আসো না তাই না’। ইমন ভাই, একটা ভয়ানক বিশাল উপন্যাস লিখেন। ‘হ্যাঁঞ লিখবো। এইতো লিখবো’। সিরিয়াসলি ইমন ভাই। ‘শোনো সব আবার পড়ে ফেলতেছি’। হেসেছেন, খেলেছেন, চলে গেছেন। আর। আমি। আমরা। খালি। হয়ে। গেছি।-- (ইমন ভাই, কেমন আছেন? --- আকাশ অম্বর)
শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়ের ভাইকে নিয়ে কিছু অনন্য লেখাঃ
ইমন জুবায়ের - জন্মলগ্নের শুভেচ্ছা -- আকাশ অম্বর
ইমন ভাই, কেমন আছেন? -- আকাশ অম্বর
বাংলার ভাব, এবং, ইমন জুবায়ের। -- আকাশ অম্বর
ইমন জুবায়ের ও আমার , যাপিত জীবনের জন্য এলিজি । -- মাহমুদ০০৭
ছিন্নস্মৃতিঃ ছেলেটির নাম ইমন জুবায়ের ! -- অপু তানভীর
ইমন; আলসেমী অনেক হল, এবার উঠুন -- অন্যমনস্ক শরৎ
ব্লগার ইমন জুবায়ের একটি নক্ষত্র পতন । (সংকলিত পোষ্ট) -- মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন
বাংলা ব্লগিং জগতের অন্যতম নক্ষত্র, আমাদের প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই আর আমাদের মাঝে নেই........ -- রেজোওয়ানা
ইমন জুবায়ের : শেষ দেখা -- অণৃণ্য
দু:খজনক সংবাদ: ব্লগার ইমন জুবায়ের আর নেই -- রেজওয়ান মাহবুব তানিম
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন, জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন- প্রিয় ইমন জুবায়ের ভাই এর প্রথম মৃত্যূবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। -- কাল্পনিক_ভালোবাসা
শুভ জন্মদিন ইমন জুবায়ের ভাই । -- অপূর্ণ রায়হান
স্মৃতিতে উজ্জ্বল শ্রদ্ধেয় ইমন জুবায়েরঃ
আমার পঠন পাঠনের বয়স সিকিশতাব্দী পার হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস নিয়ে আমার যে মুগ্ধতা তা পাঠ্যবই এমনকি পাঠক্রমবহির্ভূত বইও সেভাবে জাগাতে পারেনি যা পেরেছিলেন প্রিয় ব্লগার ইমন যুবায়ের। তাঁর মোহিনী লেখায় পালযুগের রাজকুমারের মতো যেন ঘোড়া ছুটিয়েছি প্রাচীন বাংলার প্রান্তর থেকে প্রান্তরে। গল্পের ছলে কেবল ইতিহাস শিখিনি, নিয়েছি এই জনপদের প্রতি মায়াজড়ানো ভালবাসার দীক্ষা। তাঁর দু'টি প্রিয় লেখা আমাকে উৎসর্গ করেছিলেন। ভেবেছিলাম যোগ্য হয়ে উঠে তার প্রতিদান দেব। কিন্তু ইমন যুবায়ের নির্মমভাবে ঋণী করে রেখে গেলেন। ঘোরলাগা কোন অলস মধ্যাহ্নে যখন আবার দেশকে নিয়ে ভাববো, 'কিছু একটা' করার সুতীব্র তাড়নায় জর্জরিত হয়ে, বিশ্বাস করুন ইমন জুবায়ের, আপনাকে খুব বেশি মনে পড়বে।আপনাকে খুব বেশি মনে পড়বে ইমন যুবায়ের -- তৌফিক জোয়ার্দার
ভাইয়া তুমি নেই তবে তুমি ছিলে এই ব্লগ বা সমগ্র ব্লগসমাজের গর্ব! এমন একটা মানুষও বুঝি খুঁজে পাওয়া যাবেনা যার এ ব্যাপারে দ্বিমত থাকতে পারে। তোমার অবদান শুধু ব্লগেই নয় সঙ্গীত জগতেও কম নয়। তোমার জ্ঞানের পরিধি কত বেশি বিস্তৃত ছিলো তা হয়তো আমার সারাজীবনে পরিমাপ করেও শেষ করা হবেনা। আমি ভেবে পাইনা ইতিহাস, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, মিথ, সঙ্গীত, শাস্ত্র কোন বিষয়েই না তুমি জানতে! তোমার মত আর একটি ইমন জুবায়ের হয়তো শত বর্ষেও জন্মাবেনা এইখানে। আমার ইমন জুবায়ের ভাইয়া -- শায়মা
ইমন জুবায়ের ভাইয়ের সঙ্গে আমার খুব একটা স্মৃতি নেই যে স্মৃতিচারণ করবো। ক্লিশে কথাগুলোও আর বলবার প্রয়োজন নেই। "ব্লগার ইমন জুবায়ের" এটাই আমার কাছে সবচেয়ে কথা, সবচেয়ে বড় স্মৃতি। সহস্র ব্লগারের মাঝে ব্লগার ইমন জুবায়েরকে আমার মনে থাকবে আজীবন। মনে না রেখে উপায় আছে? আমাদের সাক্ষাৎ কোন মিথস্ক্রিয়া নেই তবু শ্রদ্ধা করি, এমন শ্রদ্ধা আদায় করতে পারে কয়জন? ইমন জুবায়ের: এমন শ্রদ্ধা আদায় করতে পারে কয়জন? -- সাইফ সামির
কি লিখবো বুঝে উঠতে পারছি না। সামু'তে অনেক বাঘা বাঘা ব্লগার আছেন। অনেক জনপ্রিয় ব্লগারও আছেন। কিন্তু ইমন ভাইয়ের মত নির্ভেজাল, নিরপেক্ষ, প্রচারবিমুখ আর কেউ ছিলেন বলে আমার মনে হয়না। কি পরিমাণে নিরলস আর জ্ঞানস্পৃহা থাকলে একটা মানুষ একের পর এক টপক্লাস পোস্ট পাবলিশ করে যেতে পারে, তা কারো পক্ষে আন্দাজ করাও কষ্টকর। দিনরাত পড়াশুনা নিয়ে পড়ে থাকতেন। কোন ক্যাচাল পোস্টে গিয়ে জ্ঞান ফলানোর মত কাজ কখনোই করতে দেখিনি ওনাকে।...যেখানেই থাকুন, ভাল থাকবেন ইমন ভাই। -- joos
সবাই নামাজে গেলো। ইমন জুবায়ের এর কফিনবন্দী দেহ মসজিদের বারান্দায়। তাহসান, একসময়ের ব্ল্যাকের মেম্বার, পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো। বললো 'উনি তো একজন ঋষি মানুষ ছিলেন - আমরা দেখেছি ছোটবেলা থেকে, বলতে গেলে ব্ল্যাক তো উনার হাতে গড়া।' তুর্য নামে ইমন ভাইয়ের এক শিষ্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। বললো, 'উনার মত এমন স্পিরিচুয়ালি স্ট্রং মানুষ আমি কম দেখেছি।'
'ইমন ভাই আপনাকে একটু ছুঁয়ে গেলাম' -- কৌশিক
আমিঃ ভাই আমি খেলা দেকতে আইসি আপনে কই.......
ইমন ভাইঃ আমি বাসায়......
আমিঃ ভাই কি কন কিসু বুজি না এসএমএস করেন.....
ইমন ভাইঃ ৩০ মিনিট পরে আবার রিং......
আমিঃ ভাই কি কন বুজি না লাইনটা কেটে দিলাম....হাফ টাই এ ফোন দিলাম.....
ইমন ভাইঃ ইয়েন আমার লেপটপ লাগব......
আমিঃ কি কন এখন??????
ইমন ভাইঃ এখনই লাগব ব্যবস্থা কর....
আমিঃ ওকে আমি লোকটারে ফোন দিয়া পাডাইতাসি......
লোক গেল লেপটপ নিয়া....
ইমন ভাইঃ মহা খুশি.....ইয়েন বলার কিছু নাই.....তারাতারি আস
এমোনি কথা হইছিল গত মাসের ৫ তারিখে ইমন ভাইয়ের সাথে......তিনি নাই আমি যেন শূন্য......ইমন ভাই আমি ইয়েন বলছি...... -- রাতের বেলা
একটা জলজ মাছের গন্ধ বর্ষায় নতুন ম্যাগনিচিউড পায়, একটা অস্থিরতার মধ্যে উদাসীনতার বীজ বুনতে কিছু সময়ের জন্যও একটা লুঙ্গিপরা-স্ট্রাকচার কিংবা লাউশাক-কাঠামো রাস্তার ঐ পাশ দিয়ে হেঁটে যায়। আপনি দৌড় লাগাইলে যাহাকে পাইবেন, আপনি সন্তুষ্ট হইবেন না, ইহা বলিয়া দিতে পারি। কিন্তু আপনি ইহা নিশ্চয়ই জানিবেন, সবকিছু এইখানেই, ইহার মধ্যেই। আর কোথাও কিছু নাই। বাংলার ভাব, এবং, ইমন জুবায়ের। -- আকাশ অম্বর
ব্লগার ইমন জুবায়ের বেঁচে থাকবেন তাঁর লেখা প্রতিটি অক্ষরে, আমরা তার পথ ধরে হয়তো পৌঁছে যাব অনেক দূরে। তাঁর ফেসবুকে প্রিয় কোটেশন ছিল,“সন্তোষের সমান ধন নেই, আর সহ্যের সমান গুণ নেই।”- মা সারদা
আর নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, "কেবলি দর্শক এবং ভাবুক ... এবং এই প্রশ্নে বিভ্রান্ত-
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন
জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন।"
[link|http://www.somewhereinblog.net/blog/deodone/29742933|মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মে, বয়সে নয়- প্রয়াত ব্লগার ইমন জুবায়ের তাঁকে স্মরণ করছি [ফটো ব্লগ]] -- শাকিলা জান্নাত
আমি কোন খেলায় নেই ,গ্যালারিতেও নেই ।আমি ভাল আছি । ভাল থাকা আমির ইমন জুবায়েরের কথা মনে পড়ে । আহ ! ইমন জুবায়েরের জীবন !
রাস্তার টোকাই - তার জীবন ও জীবন, ইমন জুবায়ের এর টাও জীবন ।
কত ফারাক ! এই শুভ ভেবে দেখ কত ফারাক ! ১৫০০ পোস্ট । জীবন কিভাবে ইমন জুবায়ের কে তাড়িয়ে নিয়ে গেল । ইমন জুবায়ের ও আমার , যাপিত জীবনের জন্য এলিজি -- মাহমুদ০০৭
সকাল থেকে কারেণ্ট ছিল না। ল্যাপটপে চার্জ ছিল না। সেলফোনটা বন্ধ রেখেছি সারা দিন। সন্ধ্যার পর ফেসবুকে বসে এই দুঃসংবাদ। ইমন জুবায়ের নেই!
সেই ব্ল্যাক আর নেই। সেই জন নেই। তাহসান নেই। সময় সবাইকে টুকরো-টুকরো করে দিয়েছে। আজ ওদের ইতিহাস হয়ে যাওয়া গানগুলোর পেছনের মানুষটি—আমাদের প্রিয় গীতিকবিও নেই। ইমন জুবায়ের আর লিখবেন না, এই মুহূর্তে এর চেয়ে বড় কোনও সত্য নেই।
মানুষ মারা গেলে আমরা খুব বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠি তাকে নিয়ে। ইমন জুবায়ের সম্বন্ধে অনেক কথাই বলা যায়। কিন্তু বেঁচে থাকতে প্রচারবিমুখ এই মানুষটাকে আজ টেনে হিঁচড়ে আলোর নীচে দাঁড় করাতে কেন যেন বাধছে।
যাদের মনে প্রশ্ন জাগছে, কে এই লোক, তারা কষ্ট করে ইমন জুবায়েরকে খুঁজে নেবেন। তিনি আছেন। গানে, ব্লগে, ফেসবুকে, অজস্র লেখায়। তিনি আছেন। তিনি থাকবেন ... ... ... আমাদের জাগিয়ে রেখে মানুষটা ঘুমিয়ে গেছেন -- নাজমুস সাকিব পাখি
গতকাল দিনটি কেবলই এলোমেলো হয়ে রইল! সারাটা দিন কারো সাথে তেমন কথা বলতেও ইচ্ছে করেনি! জানিনা, না ফেরার দেশে চলে যাওয়া এ গুনী মানুষটির শুন্যস্হান আর কেউ কোন কালে পূর্ণ করবে কিনা! বাংলা ব্লগের এ উজ্জল নক্ষত্রের তিরোধানে আমি যার পর নেই দু:খিত, ব্যথিত। ইমন জুবায়ের এক ব্লগ কিংবদন্তীর নাম। -- এস এইচ খান
স্তব্ধ হয়ে রইলাম অনেকক্ষণ। ইমন জুবায়েরের সাথে আমার কখনো সরাসরি কথা... হয়নি, কিন্তু তার সাথে বহুবার যোগাযোগ হয়েছে। আমার এক উপন্যাসে বাহাইজম নিয়ে লিখতে গিয়ে আমি তার সাহায্য নিয়েছিলাম, আলোচনা করেছি সেটা নিয়ে। এসব টপিক নিয়ে আলোচনা করার মত খুব বেশি মানুষ নেই বাংলা ব্লগে।
আমরা যারা ব্লগিংয়ের সাথে অল্প-বিস্তরও জড়িত, তারা সবাই জানি ইমন জুবায়ের ছিলেন সাধু-সন্ত টাইপ মানুষ, তার জীবনের একমাত্র আনন্দই হয়তো ছিল লেখালেখি , আর কী বিচিত্র পরিসর তার লেখার, যেন তিনি এক জ্যান্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। আমার আর তার ব্লগিংয়ের বয়স কাছাকাছি, অথচ যে সময়ে আমি দিয়েছি ১০০ এরও কম পোষ্ট, সে সময়ে তিনি লিখেছেন পুরো ১৫০০ পোষ্ট!! তিনি কেমন মানুষ ছিলেন জানি না, মনে আছে তার একসময়কার প্রোফাইলে লেখা ছিল, "সত্যসন্ধ, নির্লিপ্ত আর একা" কথাগুলো আমাকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে আমি আমার বন্ধুদের প্রায়ই বলতাম, সত্যসন্ধ হও, নির্লিপ্ত হও। পরে জেনেছি এগুলো শুধু শুধু কথা না, তিনি আসলেই তাই ছিলেন, ব্যক্তি জীবনে ছিলেন ভীষণ নির্মোহ, ছিলেন চিরকুমার। 'সত্যসন্ধ, নির্লিপ্ত আর একা' - একজনের জন্য অভিমান! -- মাসুদুল হক ।।
..... ইমন ভাই, আপনি ভালো থাকুন না ফেরার দেশে .....
এই পোস্টটি আমি উৎসর্গ করছি সেই মানুষটিকে; যিনি একটি মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে আমাকে বলেছিলেন,
খুব ইচ্ছে হয় সারাদিন লিখি। লিখে লিখে জীবন কাটাই। কিন্তু হায়! জীবন - জীবিকার সময়কীটটা সব খেয়ে ফেলছে। কিছুই করা হচ্ছে না জীবনে। দিনকে দিন সব জটিল - কঠিন কঠোর, নির্মম হয়ে যাচ্ছে ।
দুপুরে বটগাছের তলায় চিত হইয়া শুইতে বড্ড সাধ হয়। কিচ্ছু ভাবিব না। পাখির ডাক কান পাতিয়া শুনিব। শাহ আব্দুল করিমের গান গুনগুনাইয়া গাহিব। এক চিমটি দুই চিমটি নীল আকাশের মেঘ খাইব ।
তাও পারি না। শার্ট-প্যান্ট ইন করা মেকি ভদ্রলোককে পাছে লোকে যদি কিছু বলে! কিন্তু ইচ্ছে আছে একদিন ঠিকই মাটি মাখা জীবনে নিজেকে নিয়ে যেতে পারব ।