somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম এসেছিলো বৃদ্ধ বটগাছটার নিচে

৩১ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রেম এসেছিলো। ওই যে বড়ো বটগাছটা দাঁড়িয়ে আছে মাঠের একধারে। ঠিক সেইখানে। একেবারে বৃদ্ধ বটগাছটার ছায়ায় যেখানে লাল লাল বটফল পড়ে কিছুটা রক্তিম হয়ে আছে মাটি, সেইখানে এসেছিলো প্রেম। এসেছিলো গরুর গাড়িতে চড়ে ধীর মন্থর গতিতে। প্রেম মানে প্রেম। কাম নয়। সংসার নয়। শ্বশুর-শাশুড়ি নয়। দ্বায়িত্ব-কর্তব্য নয়। আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব-সামাজিকতা নয়। নির্বান্ধব একাকী এসেছিলো প্রেম। সাথে কাউকে নিয়ে আসেনি।


বটগাছটার সামনে থেকে একটা সরু মাটির পথ এঁকেবেঁকে ঢুকে গেছে গাঁয়ের ভিতর। পথের শুরুতেই একটা পুকুর। পুকুরে স্বচ্ছতোয়া জল। জলের ভেতর থেকে মাঝে মাঝে উপরে উঠে এসে হাপুস-হুপুস করছে কৈশোরে পা দেওয়া একঝাক রুই-কাতলা। কোণার দিকটায় দেখা যাচ্ছে গোল করে বৈঠক বসিয়েছে অর্ধশতাধিক তেলাপিয়া। আর শান্ত জলাশয়ের ঠিক মাঝ বরাবর চোখ উঁচু করে বোমারু বিমানের মতো ধেয়ে আসছে একসারি মাছ। কি যে নাম তাদের - কে জানে!


পুকুরপাড়টা প্রকৃতির যত্নে বেড়ে ওঠা ঝোপঝাড়ে ঘেরা। কোনো মানবের কণ্ঠধ্বনি আকস্মাৎ করছে না পুকুরের ধ্যানভঙ্গ। কেননা পুকুরপাড় এখন জনশূন্য। শুধু পশ্চিমের আকাশ থেকে ঈষৎ রক্তিম আলো এসে ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছটার উর্ধ্বমুখি সবুজ পাতাগুলোকে। দূরদৃষ্টি তীক্ষ্ণ হলে দেখা যাবে তালপাতার প্রান্তে বোনা পাতার প্রাসাদের বারান্দায় বসে কয়েকটা বাবুই বাতাসে দোল খাচ্ছে।
ঈশ্বরের খেয়াল রক্ষার্থে সূর্য ঢলে পড়ছে পশ্চিমে। পৃথিবীর চোয়ালে ছড়িয়ে দিচ্ছে গোধূলির লালরঙ। পৃথিবী আজ লজ্জা পাওয়া নতুন বউ। ঝরঝরে তরতরে হাওয়া এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর চুল। সামনের ওই পুকুরটার নিস্তব্ধ জলে লাগছে কাঁপন। ধুলো উড়ছে পুকুরের পাড় ঘেঁসে চলে যাওয়া সরু পথটার শরীর থেকে। চারিদিকে যখন এমনি শীতল সৌন্দর্যের মাখামাখি তখন কোথা থেকে একটা গরুর গাড়ি এসে থামলো মাঠের ধারে বটফলে আকীর্ণ বৃদ্ধ বটগাছটার রক্তিম মাটি থেকে কিছুটা দূরে, যেখান থেকে একটা পথ শুরু হয়ে জলাশয়ের পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে গাঁয়ের ভেতর।





হইইই... হট হটট হটটট... থাম থামম... বায়, বায়... বায়... থাম, থামম...

গাড়িয়ালের নির্দেশে গাঢ় কালো রঙের হৃষ্টপুষ্ট চলমান পশু দুটি স্থির হলো। থেমে গেল গরুর গাড়ি। থেমে গেল চাকার ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ। ছৈয়ে ঢাকা গাড়ির ভেতর থেকে নেমে এলো একজোড়া পা। শুভ্র। চারিধারে আলতা মাখা। নূপুর পরা। নখগুলোও পেয়েছে লাল নেইলপলিশের ছোঁয়া। নেমে এলো অপ্সরী মর্তের ধুলো-ধূসরিত পথে। আয়তলোচনা এক মেয়ে কোথা থেকে এসে থেমে গেলো এই পড়ন্ত রক্তিম গোধূলীতে একেবারে হৃদয়ের পাশে।


গাড়িয়াল পাশের পুকুর থেকে জল তুলে হাত-মুখ ধুয়ে নিল। মাথার গামছাটা খুলে দুটো ঝাড়ি দিয়ে মুছে নিলো ভেজা শরীর। তারপর উপযুক্ত প্রাপ্য বুঝে নিয়ে আবার গাড়ি ছোটালো পূর্বের পথে। কিন্তু পথের ধুলোর উপরে তখনো দাঁড়িয়ে আছে সেই আয়তলোচনা নারী। দীর্ঘ ঘন চুল তার, মৃদুমন্দ বাতাসে যা সরে সরে যাচ্ছে কানের পাশ থেকে পেছনের দিকে। একটা লালপেড়ে বিয়ের শাড়ি তার কমনীয় শরীরকে জড়িয়ে রেখেছে। গলায় গয়না। আর কানে সোনার দুলও চোখে পড়ে। মাথায় টিকলি। আজ মেয়েটার বিয়ে নাকি? এমন করে সেজেছে কেন? কোনদিকে যাবে সে?


মেয়েটা একটা ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে বৃদ্ধ বটগাছটার অদূরে জলাশয়ের পাশে পায়ে চলা পথের ধূলিতে। হাতে গতরাতে লাগানো মেহেদির রঙ একেবারে টকটক করছে। কপালে একটু দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা যাচ্ছে। চারপাশে কাউকে দেখতে পাচ্ছে না সে। চোখের তারায় কিছুটা উদ্বিগ্নতা। এই অজো পাড়াগাঁয়ে এমন রূপ আর যৌবন নিয়ে কাকে খুঁজতে এসেছে সে? কোথায় গন্তব্য তার? কে জানে!


ব্যাগটা হাতে নিয়ে দুই পা হেঁটে মেয়েটা গিয়ে বসলো বটগাছটার নিচে বিস্তৃত শেকড়ের উপর যেখানে দিনশেষের মৃতপ্রায় আলো অন্ধকারে বিলীন হবার অপেক্ষায় অধীর।




রাখালের আজকের দিনটা যেন কাটছেই না। কি অসম্ভবরকম দীর্ঘ আজকের দিনটা। মনে পড়ছে গতবারের পৌষের মেলার কথা। কানের মধ্যে যেন একটানা বেজে চলেছে এক ষোড়শীর নূপুরের রুণুঝুণু শব্দ। খিলখিল হাসি।


গতবারের পৌষের মেলাটা ছিলো রাখালের জীবনের এক অক্ষয় সত্য। ওদের পাশের গ্রামে প্রতি পৌষেই মেলা বসে। প্রবল অনিচ্ছা স্বত্বেও ছোট ভাইটার আবদারের কাছে হার মেনে গতবার যেতে হয়েছিলো পৌষের মেলায়। ভাইটার বয়স ছ’ বছর। রাখাল তাকে কিনে দিয়েছিল বাঁশি, চরকি আর রঙিন বেলুন। উঠিয়েছিলো নাগর দোলায়। খাইয়েছিলো পিঠাপুলি, মিঠাই, রসমালাই আর সন্দেশ। খুব খুশি হয়েছিল ভাইটা। এতে রাখালের আনন্দও হয়েছিলো বেশ। ভাইকে সাথে নিয়ে মেলা থেকে ফিরছিলো সে। হঠাৎ নূপুরের রুণুঝুণু শব্দে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকালো রাখাল। চোখ আঁটকে গেল অপরিচিত এক আয়তলোচনার চোখে, যেমন করে লোহার বড়শিতে আঁটকে যায় জলচর। ছোটভাইকে তড়িঘড়ি বাড়িতে রেখে রাখাল আবার আসলো পৌষের মেলায়।


মেলার হৈ হুল্লোড় রঙ তামাশা ছাপিয়ে রাখালের কানে এখন শুধু রুণুঝুণূ নিক্কন আর চোখ জুড়ে লেগে আছে আরো একজোড়া চোখ। না, চোখ বললে ঠিক বোঝা যাবে না। বলতে হবে আঁখি, সে যে আয়তলোচনা। ডাগর আঁখি। তার আঁখি জাদু জানে। এক পলকেই কাছে টানে। এ যে বড়ো ভয়াবহ আঁখি। একবার সেই আঁখিবাণে যে ঘায়েল হয়েছে তার আর নিস্তার নেই। রাখাল খুঁজছে এদিকে, ওদিকে, সেদিকে। অবশেষে পেয়েও গেলো। এক চুড়িওয়ালার কাছে বসে আছে মেয়েটা। সাথে আরেকটি মেয়ে। বোধহয় ওর সই।


এতোটা সাহস রাখালের এর আগে কোনোদিনও হয়েছে কিনা মনে নেই কিন্তু ঠিক মনে আছে, রাখাল আর বিলম্ব না করে মেয়েটার পাশে যেয়ে চুড়ি দেখতে শুরু করেছিলো সেদিন। তারপর কয়েকজোড়া লাল কাঁচের চুড়ি হাতে মেয়েটার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,

... এই রঙটা তোমারে খুব মানাইবো। এইটাই নাও।

অপরিচিতের এমন অনধিকার প্রবেশে মেয়েটা একটু অপ্রস্তুত হলেও উপেক্ষা করেনি তার পছন্দকে। হাত থেকে নিয়ে নিলো চুড়িগুলো। একটা একটা করে পরলো দুই হাতে। নেড়ে চেড়ে দেখলো, বাহ, বেশ ভালোই লাগছে। তারপর জিজ্ঞেস করলো,

-- বাড়ি কই তোমার? কোন গাঁও?
... এই তো পাশের গাঁও। উজানপুর।
-- আমার বাড়ি তিন গাঁও পর, সুধানগর। ওই গাঁয়ের কাদির মেম্বর আমার বাবা। আইচ্ছা, তোমার নামটাই তো জানা হইলো না?
... আমার নাম রাখাল। তোমার নাম?
-- হা হা হা, রাখাল আবার কারো নাম হয় নাকি? আমার নাম নূপুর। আর এইটা আমার সই, সুফিয়া। আইচ্ছা এখন তাইলে যাই।


যাই বলে আর দাঁড়ালো না সে। খিল খিল করে হাসতে হাসতে চলে গেল। রাখলের তখনো ঘোর কাটে নি। নূপুরের রুণূঝুণু শব্দ গেঁথে গেছে তার হৃদয়ে। মনের মধ্যে হাবুডুবু খেলছে মেয়েটার উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ। এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। মস্তিষ্কের কোষে কোষে সঞ্চারিত হচ্ছে একটি শব্দ। একটি নাম। নূপুর। নূপুর।


আজ নূপুরের বাড়িতে বিবাহের আয়োজন চলছে। পাত্র হরিপুরের চেয়ারম্যানের ছেলে। কিন্তু দিনটা যেন আজ কাটছেই না রাখালের। কতো যে সব অলীক অদ্ভুত চিন্তা হচ্ছে তার। উফ, কখন আসবে সন্ধ্যা। যে সন্ধ্যার অন্ধকারে তলিয়ে যাবে রাখাল। তলিয়ে যাবে অথচ কেউ জানবে না।




কি অদ্ভুত ছেলেটা, চেনা নেই জানা নেই হুট করে বলে বসলো - এই রঙটা তোমারে খুব মানাইবো। এইটাই নাও। - আস্তো পাগল একটা।


বৃদ্ধ বটগাছটার নিচে বসে বসে ভাবছে নূপুর। ভাবতে ভালো লাগছে তার। যে দিন গত হয়ে যায় তার সুখস্মৃতি ভাবলেও মনে সুখ জাগে। ভাবছে আর পথের দিকে চোখ রাখছে। মনে পড়ছে, প্রথম দিন পৌষের মেলায় দেখা হবার পরদিনই আবার ছেলেটার সাথে দেখা হয়েছিলো তার। সকালে ব্রাশ করতে করতে বাড়ির উঠোন পেরিয়ে যখন গেটের বাইরে এসে দাঁড়ালো তখন দেখলো গেটের অদূরে একটি পুরুষমূর্তি। কাছে এগিয়ে গিয়েই চিনতে পারলো সে।

-- রাখাল ! তুমি এইখানে কি করো?
... কিছু না, তোমারে দেখতে ইচ্ছা করলো তাই চইলা আসলাম।


এমন অকপট স্বীকারোক্তি খুব ভালো লেগেছিলো মেয়েটার। মেয়েটাও তো ভীষণভাবে চাইতো কেউ তাকে খুব ভালোবাসুক। তারপর থেকে প্রায়ই আসতো রাখাল। প্রতিদিনই। সন্ধ্যায়, সকালে নয়তো বিকেলে। লুকিয়ে লুকিয়ে আসতো। কাজে ফাঁকি দিয়ে। কিভাবে কিভাবে যেন ধীরে ধীরে প্রেম এসে দুই হৃদয়ের মাঝখানে একটা সেতুবন্ধন রচনা করে দিলো। একদিন আকাশভর্তি নক্ষত্রের নিচে পাশাপাশি বসে রাখালকে জিজ্ঞেস করেছিলো নূপুর,

-- আইচ্ছা রাখাল, আমারে ভালোবাসো ক্যান কইতে পারো?
... সেইটা তো জানি না। তয় তুমি ছাড়া কিচ্ছু ভালো লাগে না। তোমার লাইগা মন ক্যামন করে। ক্যান তুমি কি আমারে ভালোবাসো না?
-- বাসি, অনেক, অনেক ভালোবাসি।


আশ্চর্য! সেই ভালোবাসাই কি তাকে টেনে এনেছে এই সন্ধ্যার আধারে এক বৃদ্ধ বটবৃক্ষের তলে। ভালোবাসে বলেই কি তাকে আজ ঘর ছেড়ে এইখানে এসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। হবে হয়তো। বাঙালি নারী ছাড়া কে আর এভাবে ভালোবাসার মূল্য দিতে জানে? কে আর এমনি করে ভালোবাসতে জানে? বাবা-মা-আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব-সমাজ-সংসার-ধর্ম সবকিছু উপেক্ষা করে বিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে এভাবে অনিশ্চয়তায় গা ভাসাতে বাঙালি নারী ছাড়া আর কি কেউ পারে? এই বৃদ্ধ বটবৃক্ষের নিচে বসে প্রেমময়ী এক বাঙালি নারী অপেক্ষা করছে। অপেক্ষা করছে একজন মানুষের জন্য। একজন প্রেমিকের জন্য।


সন্ধ্যার রেখা দেখা দিয়েছে আকাশে। ম্লান আলোয় ডুবে যাচ্ছে প্রকৃতি। মেয়েটার উদ্বিগ্ন চোখ তাকিয়ে আছে জলাশয়ের পাশের পথটির দিকে। একটি নতুন জীবনের দিকে। একটি নতুন আরম্ভের দিকে। প্রেমের দিকে। ভালোবাসার দিকে।




খুব সাবধানে ব্যাগের মধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঢুকিয়ে নিচ্ছে রাখাল। শেষ কিছুদিন খুব খাটাখাটনি করেছে সে। বেশ কিছু টাকা পয়সার জোগাড়ও হয়েছে। একটা পুটলিতে ভরে সেগুলো রেখে দিলো ব্যাগের সাইড পকেটে। একটা সোনার চেইন গড়িয়েছিলো নূপুরের জন্য, সেটা নিজের গলায় পরে নিলো রাখাল। ঘরের জানালায় উঁকি দিয়ে দেখলো বাইরের প্রকৃতিতে সন্ধ্যার বিমর্ষ রেখা প্রস্ফুটিত। যাক, অবশেষে এই দীর্ঘ দিনটি শেষ হলো। দেয়ালে টানানো বাবা-মা আর ছোট ভাইটার ছবিটার দিকে তাকালো সে। বড়ো মায়া হলো তার। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়লো দুই ফোঁটা জল। গামছা দিয়ে মুছে নিলো। তারপর ব্যাগ হাতে বাইরের দরজায় এসে চারপাশটা একবার দেখে নিয়েই কিছুটা দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে। বেরিয়ে গেল একটা সংসার থেকে। বেরিয়ে গেল মায়ের মমতা থেকে। বাবার শাসন থেকে। ছোট ভাইয়ের আবদার থেকে, খুনসুটি থেকে। বেরিয়ে গেল সমাজ থেকে। ধর্ম থেকে। পরিচিত আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব-সামাজিকতা থেকে।


কিন্তু কোথায় যাচ্ছে রাখাল? কার কাছে? একটা নারী ছাড়া সে তো আর কিছু নয়। তাহলে কেন এতোদিনের সংস্কার ছেড়ে যাচ্ছে সে? কি আছে ওই নারীতে? শরীর? কিন্তু শরীর তো ও পাড়ার মমতা মাসীর মেয়েরও আছে। কই, সে শরীরের প্রতি রাখালের তো কোনোদিনও কামনা জাগে নাই। অথচ গ্রামের বখাটে ছেলেরা সারাদিন ওই নিয়েই মেতে থাকে।

রাখালের মতো একজন নিতান্তই সাধারণ বাঙালি পুরুষ আর একজন বাঙালি নারীর ভেতর কিসের সন্ধান পেলো যার কারণে তাকে সবকিছু ছেড়ে একটা ব্যাগ ঘাড়ে করে ধুলোময় পথ ঠেলে দ্রুতপায়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে পাশের গ্রামের জলাশয়ের ওপারে বৃদ্ধ বটগাছটার দিকে? সেকি প্রেম?

প্রেম, ভালোবাসা তো এমনই। সব ভেঙে দেয়। চুরমার করে দেয়। ধ্বংস করে দেয় যা কিছু প্রতিষ্ঠিত। আর তারপর আবার নতুন করে সৃষ্টি করে। নতুন করে বাঁচতে শেখায়। নতুন করে ভাবতে শেখায়। একটা সম্পূর্ণ নতুন জীবনদান করে।



অদূরে আবছা অন্ধকারের ভেতর দেখা আচ্ছে একটা সাদা ধুতি আর পাঞ্জাবি পরে কেউ একজন এগিয়ে আসছে সামনের দিকে। তার কাঁধে একটা ব্যাগ ঝুলছে। জলাশয়ের পাশের পথটা দিয়ে দ্রুতপায়ে এগিয়ে আসছে মানুষটা। হাঁটার ভঙ্গিটা নূপুরের অপরিচিত নয়।


নূপুর পাশে ফেলে রাখা ব্যাগটা হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। তারপর এক দৌঁড়ে ছুটে গিয়ে নিজেকে ডুবিয়ে দিলো রাখালের প্রশস্ত বুকে।


সন্ধ্যার অন্ধকারে ডুবে গেল চারপাশ। এখন শুধু পরবর্তী দিনের সূর্যদয়ের অপেক্ষা।



৩০/০৫/২০১৪
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×